থানকুনি পাতার স্বাদের বড়া রেসিপি || Bengali Recipe by @hafizullah

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

Recipe Cover-thankuni bora.png

হ্যালো বন্ধুরা,

গত কয়েক দিন আগে গ্রামের বাড়ীতে গিয়েছিলাম আর নিজেকে রিচার্জ করে নিয়ে আসছি হা হা হা। তবে শুধু নিজেকে রিচার্জ করে ফিরি নাই বরং সাথে করে কিছু নিয়েও আসছি। আসলে আমি গ্রামের বাড়ীতে যতবারই যাই, খালি হাতে ফিরতে পারি না। তবে বিষয়টি আমার কাছে কষ্টদায়ক হলেও বেশ ভালো লাগে। বুঝলেন না কষ্টদায়ক বিষয়টি কি? আরে ভাই বোঝা টানার বিষয়টি আমার জন্য সত্যি কষ্টকর কারন আমাদের দেশের যানবাহনের যে অবস্থা, বোঝা জাতীয় কিছু বহন করাটা বেশ কষ্টকর।

জ্বী আমি যখন গ্রামের বাড়ী হতে ঢাকায় ফিরি তখন বোঝা জাতীয় কিছু বহন করে নিয়ে আসতে হয়। তবে এবার বেশী এনেছি পেঁপে। গাছের টাটকা ফল বলে কথা। সবচেয়ে বড় কথা হলো এগুলো কীটনাষকমুক্ত এবং শতভাগ ফ্রেস। তাই কষ্ট হলেও বোঝা টানার বিষয়টি মেনে নিয়েছি। তাছাড়া আম্মুর রাগের একটা বিষয়ও রয়েছে। আনতে পারবো না যদি এই কথা বলি তাহলে বুঝতেই পারছেন আমার অবস্থা কি হতে পারে, হি হি হি।

তবে আজ আমার পছন্দের একটি বিশেষ পাতার রেসিপি শেয়ার করবো সেটা হলো থানকুনি পাতা। নিশ্চয় আপনারা থানকুনি পাতা চিনেন, না চিনলেও সমস্যা নেই আজ দেখে চিনে নিবেন। এটা নানা প্রাকৃতিক গুন সম্পন্ন একটি ঔষুধি পাতা। বিশেষ করে পেটের নানা জাতীয় সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর এটি। শহরের বাজারসমূহে এগুলো বেশ ভালো দামে বিক্রিও হয়। তবে আমি ফ্রি’তে আনি, একদমই টাকা লাগে হি হি হি। আজকের রেসিপিটি হলো থানকুনি পাতার পাকোড়া বা বড়া যেটাই আপনি বলেন। চলুন দেখি তাহলে রেসিপিটি-

IMG20220313154738_01.jpg

উপকরণ সমূহঃ

  • থানকুনি পাতা
  • ধনিয়া পাতা
  • পেঁয়াজ
  • কাঁচা মরিচ
  • মসুর ডাল পেষ্ট
  • হলুদ গুড়া
  • মরিচ গুড়া
  • ধনিয়া গুড়া
  • লবন
  • তেল।

প্রস্তুত প্রণালীঃ

IMG20220313145501.jpg

শুরুতে মসুর ডালগুলোকে কিছু সময়ের জন্য ভিজিয়ে নিয়েছি এবং তারপর সেগুলোর পেষ্ট তৈরী করেছি।

IMG20220313145247_01.jpg

IMG20220313183331_01.jpg

এরপর থানকুনি পাতাগুলোকে পরিস্কার করে নিয়েছি ধুয়ে তারপর কুচি কুচি করে কেটে নিয়েছি, যাতে বড়া তৈরী করতে সুবিধা হয়।

IMG20220313183452.jpg

IMG20220313183815_01.jpg

তারপর থানকুনি পাতার কুচির সাথে মসলাসহ সকল উপকরণগুলো দিয়ে মিশ্রণ তৈরী করে নিয়েছি।

IMG20220313183850_01.jpg

এরপর মিশ্রণগুলো হতে অল্প অল্প পরিমান নিয়ে বড়া তৈরীর জন্য গোলাকৃতির করে নিয়েছি।

IMG20220313184037_01.jpg

IMG20220313184359.jpg

তারপর একটা প্যান চুলায় দিয়েছি এবং তাতে কিছু পরিমান তেল ঢেলেছি। তেলগুলো গরম হওয়ার পর মিশ্রণগুলো হতে অল্প পরিমানে নিয়ে গোলাকৃতি করে তেলে ছেড়েছি।

IMG20220313184606_01.jpg

IMG20220313185152_01.jpg

এগুলোকে বেশ কিছুটা সময় তেলে ভেজেছি এবং উল্টে পাল্টে দিয়েছি। বাদামী রং হওয়ার আগ পর্যন্ত এগুলোকে ভেজেছি।

IMG20220313190659_01.jpg

এবার দেখুন কতটা স্বাদের লাগছে, লাগছে কি বেশ স্বাদের হয়েছে। এটা যেমন স্বাদের ঠিক তেমনি কিন্তু স্বাস্থ্যকর। আপনারা হয়তো প্রথমবার দেখলেন এই রেসিপিটি, তাহলে দেখতে থাকুন আর আমি স্বাদ নিতে থাকি হি হি হি।

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break.png
Leader Banner-Final.pngbreak.png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break.png

New Benner ABB-6©.png

Sort:  
 3 years ago 

শহরের বাজারসমূহে এগুলো বেশ ভালো দামে বিক্রিও হয়। তবে আমি ফ্রি’তে আনি, একদমই টাকা লাগে হি হি হি।

ঔষধি গুণসম্পন্ন থানকুনি পাতা ফ্রিতে পাওয়া গেলে ভালোই হতো ভাইয়া। তবে পোড়া কপাল কেউ আর ফ্রিতে দেয় না। তবে যাইহোক ভাইয়া আপনি থানকুনি পাতা দিয়ে ও মসুর ডাল দিয়ে এত সুন্দর ভাবে বড়ার রেসিপি তৈরি করেছেন যে দেখে লোভ সামলাতে পারছিনা। আপনার তৈরি করা এই মজার রেসিপি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আমি অবশ্যই এই রেসিপি তৈরি করে খেয়ে দেখব। ধন্যবাদ আপনাকে মজা একটি রেসিপি তৈরি করে সকলের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 3 years ago 

হা হা হা যাবে তো, কেন যাবে না আপনি মাটিসহ ফ্রিজে রেখে দিবেন।

 3 years ago 

ভাইয়া, আমাদের বাড়িতে ও প্রচুর পরিমানে থানকুনি পাতা হয়েছে।আমিও একটি রেসিপি বানিয়ে রেখে দিয়েছি এক দুইদিনের মধ্যে শেয়ার করবো।আপনার থানকুনি পাতার বড়ার কালারটি চমৎকার হয়েছে 👌👌আর এটি খেতে ও অসম্ভব টেস্টি।আর যাইহোক পেটের অসুখ সারবে এটি বলতে পারি।আমিও একদিন থানকুনি পাতার বড়া বানিয়ে খেয়েছিলাম।বেশ ভালোই লাগে।ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

তাহলে তো আপনারা যখন খুশি সেগুলোর রেসিপি করতে পারেন, দারুণ আপু।

 3 years ago 

একদম👍ভাইয়া।

 3 years ago 

যখন গ্রামের বাড়ী হতে ঢাকায় ফিরি তখন বোঝা জাতীয় কিছু বহন করে নিয়ে আসতে হয়।

ভাইয়া এই কথাটি কিন্তু আপনি একদম ঠিক বলেছেন। যখন গ্রামের বাসা থেকে ফেরা হয় তখন অনেক ভারী জাতীয় ব্যয় বহন করতে হয়। কারন গ্রামের বাড়ি থেকে ফেরার সময় আমার মা আমার পছন্দের জিনিসগুলো ব্যাগে ভরে দেন। ভালো লাগলো আপনার এই কথাগুলো পড়ে। আসলে আমাদের অনুভূতিগুলো একই রকম। তাই আমাদের কথাগুলোর সাথে অনেক মিল আছে। তবে আজকে আপনি এত মজার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন ভাইয়া কি আর বলবো। আপনার রেসিপিগুলো বরাবরই আমার ভালো লাগে। তেমনি আজকে আপনি খুবই মজার ও লোভনীয় একটি রেসিপি তৈরি করেছেন। থানকুনি পাতার স্বাদের বড়া দেখে লোভ সামলানো মুশকিল। গরম গরম স্বাদের বড়া খেতে খুবই ভালো লাগে। অনেক মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে। সেইসাথে আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। 💝💝💝💝

 3 years ago 

আর কষ্টও হয়, কারন আমাদের দেশের বাসের যে কঠিন অবস্থা, জান বেরিয়ে যায়।

 3 years ago 

দাদা, আপনি যে থানকুনি পাতার কথা বলছেন, এই পাতা আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। ছোট থেকেই মা চাচীদের কাছ থেকে শুনে এসেছি এই পাতার রস করে খেলে অথবা শাক হিসেবে রান্না করে খেলে গায়ের ব্যথা ভাল হয়ে যায়। আর এই থানকুনি পাতা দিয়ে বড়া তৈরি করা যায় এটা জানতাম না। আপনার তৈরি করা থানকুনি পাতার বড়া দেখে খুবই লোভনীয় মনে হচ্ছে। মচমচে এই বরা খেতে মনে হয় খুবই সুস্বাদু হয়েছে। আপনার ভিন্ন স্বাদের থানকুনি পাতার বড়া রেসিপি দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। আর এই ভালোলাগার রেসিপিটি আমাদের মাঝে উপহার হিসেবে দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 3 years ago 

আসলে এই পাতাগুলোকে নানাভাবে খাওয়ার চেষ্টা করা হয়, কারন অনেকেই এমনিতে রস খেতে পারেন না। তাই ভর্তা কিংবা বড়া তৈরী করলে সবাই খেতে পারেন।

 3 years ago 

থানকুনি পাতা খেতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে ।বিশেষ করে এটি যখন পোড়া আলু দিয়ে ভর্তা করা হয় তখন বেশি ভালো লাগে খেতে।আর এই থানকুনি পাতার গুনাগুন এবং উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো সবাই কমবেশি জানি ,খুবই উপকারী একটি ঔষধি পাতা।তবে আজকে আপনার কাছ থেকে নতুনভাবে খাওয়া শিখলাম ভাইয়া। এভাবে একদিন তৈরি করে খেতে হবে।

 3 years ago 

আচ্ছা নতুন একটা আইডিয়া পেলাম তাহলে পোড়া আলু দিয়ে ভর্তা, একদিন ট্রাই করে দেখবো এটা।

 3 years ago 

হা হা হা থানকুনি পাতা চিনব না তা কি করে হয়।
থানকুনি পাতার ঔষধি গুনে ভরপুর। শরীরের ভিবিন্ন ধরনের রোগের ক্ষেত্রে বিশেষ উপকারী এই পাতা।তবে পেটের অসুখের সময় এই পাতার ব্যবহার বেশি লক্ষ করা যায়। আপনি সেই পাতা দিয়ে খুব সুন্দর একটি পাকুড়া রেসিপি বানিয়েছেন ভাইয়া। আমার খুব ভালো লেগেছে। এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

চিনেন আপনি এইডা কেমনে হলো, আচ্ছা তাহলে আপনার পেটেও গন্ডগোল আছে হা হা হা বুঝছি এইবার।

 3 years ago 

কী বলব ভাইয়া বুঝতে পারছি না। প্রতিনিয়ত আপনি নতুন নতুন রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেন। আপনার রেসিপি গুলো দেখে আমিও শিখতে পারি আমার কাছে খুব ভালো লাগে। এই থানকুনি পাতা রস করে খেয়েছি। কিন্তু কোনদিন এভাবে বড়া করে খাওয়া হয়নি। এটি আমার কাছে একদম ইউনিক একটি পোস্ট । বড়া তৈরির প্রতিটি ধাপ আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। পরবর্তীতে অন্য কেউ দেখলে খুব সহজেই তৈরি করে নিতে পারবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

এইডা কিন্তু সত্যি না, আমি কিন্তু অনেক রেসিপি জানি না। তবে হ্যা, সাধারণ নিয়মের বাহিরে কিছু করতে ভালো লাগে। আর এই রেসিপিটি আমার বোনের কাছ হতে শিখেছিলাম।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া খুব ভালো লাগলো আপনার কথা শুনে।

 3 years ago 

ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন ভাইয়া। থানকুনি পাতার ভর্তা খেয়েছি অনেক বার তবে থানকুনি পাতার বড়া এই প্রথম দেখলাম। দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া গ্রামে নিজেদের ফল এবং সবজি গুলো কীটনাশক মুক্ত হয়ে থাকে। থানকুনি পাতার মধ্যে যে ঘ্রাণ থাকে সেটি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আমি অনেকবার খেয়াল করেছি এই থানকুনি পাতা শহরের বাজার থেকে কিনে আনলে এরমধ্যে এই ঘ্রাণ টি থাকে না। যার কারণে এর স্বাদ তেমন একটা ভালো লাগে না।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

আমিতো ভর্তা সব সময় খাই, তবে এবার বোনের কাছে শুনেছিলাম বড়ার কথা তাই বানিয়ে ফেললাম।

 3 years ago 

আসলেই ভাই বাংলাদেশের যাতায়াত ব্যাবস্থার যে হাল বউ নিয়ে কোথাও যাইতেও ভয় লাগে😁

এখনো আম্মাকে ভয় পান পাবেনি তো কারণ সন্তান মায়ের কাছে সব সময় সেই ছোট্ট থেকে যায়।

হাফিজ ভাইয়া মানেই ইউনিক রেসিপি ইউনিক কাজ কিছুদিন আগে মুলা নিয়ে যে আন্দোলন হলো তার সাথে কি এটা যোগ করে ফেলেছেন ভাইয়া😁😁অনেক সুন্দর একটি রেসিপি করেছেন গ্রামের বাসায় থেকে থানকুনি পাতার বরা এখনো খাইনি খেতে হবে
😍😍😍

 3 years ago 

সত্যি কথা এটা, আমি এই জন্য কোথায় বউ নিয়ে গেলে ট্যাক্সিতে যাওয়ার চেষ্টা করি, মানুষের মুখ দোষ যেন না লাগে হা হা হা।

 3 years ago 

😁😁😁

 3 years ago 

থানকুনি পাতা রান্না করে এবং আলু পোড়া দিয়ে ভর্তা করে খেয়েছি। তবে থানকুনি পাতার বড়া কখনো খাওয়া হয়নি এবং আপনার এই পোষ্টের মধ্যে প্রথম দেখতে পেলাম। আশা করি সামনে খেতে পারবো কেননা এই রেসিপির লিংকটি রেখে দিয়েছি, ফ্যামিলিকে দেখিয়ে এভাবে করে খাব। অনেক ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময় এই কামনা করি।

 3 years ago 

এবার এটাও ট্রাই করে দেখেন ভাই। আমি অবশ্য এখনো আলু পোড়া দিয়ে খাই নাই।

 3 years ago 

আলু পোড়া দিয়ে থানকুনি পাতা দিয়ে সুন্দর করে আলু ভর্তার মত করে মেখে নিবেন সাথে কিছু শুকনো মরিচ এবং সরিষার তেল দিবেন, দেখবেন এটি খুবই সুস্বাদু হবে।ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 90226.35
ETH 3085.20
USDT 1.00
SBD 2.94