হ্যালো বন্ধুরা,
আশা করছি সবাই ভালো আছো। আমি আছি মোটামোটি, তবে শেষ সময়ে এসে অফিসের কাজের চাপে আটকে গেছি। আজও খুব ভোরে অফিসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে হয়েছিলো। মোটামোটি ঘুমটা আজও বাসের মাঝে সেরে নিয়েছি। কারন সকালে ঢাকায় বৃষ্টি ছিলো, আর বৃষ্টি মানেই সড়কের উপর বাড়তি জ্যাম। ভোর সকালে বের হলেও সড়কের জ্যামের কারনে অনেকটা সময় লেগেছিলো অফিসে আসতে, তবে ভাগ্য ভালো সঠিক সময়ে ঘুমটি ভেঙ্গেছিলো, না হলে জরিমানাটা শরীরের উপর দিয়ে যেতো মানে উল্টো পথে আবার হেঁটে আসতে হতো, হি হি হি।
কথা হলো আমাদের সমাজ ব্যবস্থাটা নষ্ট হয়ে গেছে না না না ভুল বললাম সমাজ ব্যবস্থাটা না বরং সমাজের মানুষগুলো নষ্ট হয়েগেছে আর এই কারনেই নষ্ট হয়েছে সমাজ ব্যবস্থাপনা। আমরা চাইলেও আজকাল কোন ভালো কাজ করতে পারি না, আমরা চাইলেও আজকাল ভালো থাকতে পারি না। একটু ট্রাই করে দেখুন আপনি চাইলেও সমাজের জন্য মঙ্গলজনক কোন ভালো কাজ করতে পারবেন না, কারন সমাজের মাঝে থাকা দুষ্টু মানুষগুলো আপনাকে ভালো কাজ করতে দেবে না। আসলে ভাবখানা এই রকম যে, আমরা সমাজের হর্তাকর্তা, ভালো করি কিংবা মন্দ করি সেটা শুধুমাত্র আমরাই করবো, অন্য কাউকে সম্মুখে আসতে দিবো না। আর হচ্ছেও তাই, আপনি চেষ্টা করে দেখুন তাদের উপেক্ষা করে ভালো কিছু করতে পারেন কিনা?
আসলে এই সমাজ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন দরকার, তবে তার জন্য দরকার সমাজে থাকা মানুষগুলোর মানসিক পরিবর্তন। মুখোশের আড়ালে থাকা মানুষগুলোকে সামনের সারি হতে সরানো দরকার, দরকার ভালো মনের মানুষগুলোকে পেছন হতে টেনে সামনে নিয়ে আসা। আপনি একটু লক্ষ্য করে দেখুন সমাজের মাঝে থাকা ধর্মীয় কিংবা সামাজিক নানা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে কাদের রাখা হচ্ছে, যাদের সমাজে বেশী প্রভাব কিংবা টাকা রয়েছে তাদের, কিন্তু তারা কি আদৌ ভালো মনের মানুষ? মোটেও না, তাহলে এদের সামনে রেখে ভালো কিছুর প্রত্যাশা কিভাবে করেন? এরা যেমন মুখোশ পড়ে নিজেদের আড়াল করে রাখে ঠিক তেমনি অন্যদেরকে মুখোশের ভিতর ঢুকতে বাধ্য করে। তবে এদের দেখে মাঝে মাঝে আমারও মনে চায় নিজেকে মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে রাখি, নিজের ভেতরের ক্ষোভগুলোকে মুখোশের ভেতর আটকে রাখি, কারন আমি চাইলেই কেউ আমার পাশে দাঁড়াবে না, আমি আওয়াজ দিলেও কেউ আমাকে সমর্থন করবে না, আমি এগিয়ে আসলেও কেউ আমার পেছনে থেকে সাহস জোগাবে না, এটাই বাস্তবতা!
যাইহোকা, ভিন্ন ধরনের কিছু অনুভূতি নিয়ে আজকের কবিতাটি লেখার চেষ্টা করেছি, যেখানে প্রধান উপজীব্য বিষয় ছিলো মুখোশ। মুখোশের নানা দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছি কিন্তু দিন শেষে নিজেকেই মুখোশের ভেতর রাখতে বাধ্য হয়েছি, কারন মানুষ কিংবা সমাজ ব্যবস্থা আমার প্রকৃত অবস্থা না বরং আমার মুখোশের উপরে থাকা কৃত্রিম সত্তাটি দেখতে বেশী পছন্দ করে, আর তাই আমিও নিজের প্রকৃত অবস্থাটি আড়াল করে রাখি মুখোশের সাহায্যে, কারন বাস্তবতা অস্বীকার করার সাধ্য আমার নেই। চলুন কবিতাটি পড়ি-
আমি জানি মুখোশের আড়ালের
প্রকৃত চেহারাটি অধিক সুন্দর
কৃত্রিম উজ্জ্বলতায় ঢেকে রাখা
প্রকৃত চেহারাটি থাকে অনুজ্জ্বল।
আমি জানি মুখোশের কদর সর্বদা বেশী
কৃত্রিমত্বায় সকলের আগ্রহটা বেশী
প্রকৃত বিষয়ে মানুষের আগ্রহ কম
নিজের সৌন্দর্যে তাই আস্থা কম।
আমি জানি অন্যের কিছুতে থাকে আকর্ষণ
নিজের বিষয়গুলো কাড়ে না নজর
তাইতো ছুটে সবাই মুখোশের পিছনে
নিজের বিষয়গুলো পড়ে থাকে আড়ালে।
আমি জানি নিজের ভালোটা সকলে বুঝে
মন্দের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে চলে
মিছে মিছে বেহুশের মতো চলছে ছুটাছুটি
মুখোশে আড়াল থাকে বিবেক-বুদ্ধি।
আমি জানি সত্যিটা থাকতে পারে আড়ালে
প্রকৃত বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ঢাকতে
দিনশেষে অনেকেই হয়তো ব্যথিত হৃদয়ে
মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে রাখে নিজেকে।
আমি জানি মুখোশটি পেতে পারে প্রাধান্য
আমি জানি হৃদয়ের যন্ত্রনাগুলো এখানে নগন্য
আমি জানি মুখোশটি হতে পারে আমারও প্রিয়
আমি জানি মুখোশে আড়াল করা যায় দুঃখগুলো
আমি জানি দিনশেষে আমিও মুখোশের কাছে বন্দি
আমি জানি সকলেই পছন্দ করে মুখোশের কৃত্রিম হাসি।
Image taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
সমাজের আমূল পরিবর্তন সেদিনই হবে যেদিন সমাজের মানুষগুলোর মানসিক পরিবর্তন হবে। পিছনের সারির মানুষগুলো সামনে সারিতে এসে কাজ করবে। তবে সমস্যা হচ্ছে প্রভাব-প্রতিপত্তি, যশ-খ্যাতি এসবের কারণে অনেক ভালো মানুষই মুখোশের আড়ালে থেকে যায়। চাইলেও পারেনা ভালো কিছু করতে। সমাজ তাদের বাধ্য করেছে মুখোশের আড়ালে বন্ধি থাকতে। ভালো লিখেছেন কবিতাটি ❤️🌼
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার এই ধরনের কবিতাগুলো বরাবরই অনেক গুরুগম্ভীর হয়ে থাকে।এবারো তার ব্যতিক্রম নয়।
প্রতিটা লাইনই বাস্তবিক এবং এগুলোই প্রতিনিয়ত আমাদের সমাজে হয়ে আসছে।যার পরিবর্তন আমাদের একার দ্বারা সম্ভব না।দরকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
আমার প্রিয় লেখক "স্যার হুমায়ুন আহমেদ" এর লেখায় পড়েছিলাম প্রতিটা মানুষের নাকি দুইটা দিক থাকে একটা হলো পুর্ণিমার মত আলোকিত অপরটি আমবস্যার মত অন্ধকার । মানুষ সব সময় চাই তার আলোকিত দিকটা প্রকাশিত হোক । অন্ধকারটা লুকিয়ে রাখতে চাই ।
আপনার আজকের কবিতাটি খুব সুন্দর ছিল । মুখোশের আড়ালে কল্যাণ অকল্যাণ উভয়ে থাকতে পারে । নির্ভর করবে তার অন্ত্রের প্রকৃতির উপরে ।
আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা নিজেও কোন ভালো কাজ করবে না অন্যকেউ ভালো কাজ করতে দিবে না। আর আমাদের সমাজে এমন কিছু টাকাওয়ালা মুখোশধারী মানুষ রয়েছে যারা নিজের ক্ষমতার দাপটে বা টাকার অহংকারে সবকিছুকেই তুচ্ছ মনে করে। হয়তো তার টাকা আছে তাই বলে সে ভালো মানুষ হতে পারে এটার কোন গ্যারান্টি নেই। এই সমাজের মানুষগুলোর মুখোশ যদি একবার খোলা যেত তাহলে হয়তো আমরা মানুষ দেখতাম না মানুষরূপী সেই কুৎসিত চেহারাগুলো দেখতাম। দারুন একটি কবিতা লিখে শেয়ার করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। ♥️♥️♥️
বাসে যে ঘুমায়, বাড়তি ভাড়া দেন তো😉😉।যাই হোক আসলেই আমরা মানুষরা নষ্ট হয়ে গিয়েছি বিদায় আমাদের সমাজ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।যাই হোক কবিতাটা বেশ বাস্তব ধর্মী।
অনেক বেশি বাস্তবতা আছে কবিতাটাতে। সত্যি ই ভাইয়া আমরা সবাই মুখ ও মুখোশের মাঝখানে আছি । ধন্যবাদ আপনাকে।
মানুষ এখন ভালোর চাইতে মন্দ জিনিসটারই গুরুত্ব দেয় একটু বেশি। তবে আপনার বক্তব্য এবং কি কবিতাতে একেবারে সুস্পষ্ট বর্তমান বাস্তবতা। যেখানে মুখোশ পর া লোক গুলোই সাধু সন্ন্যাসী বেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে সমাজে। আর যাদের মুখোশ নেই তারা পরিত্যক্ত বস্তুর মত পড়ে আছে আধারে। আমাদেরকে এত সুন্দর একটা কবিতা উপহার দেওয়ার জন্য, আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম।
কিছু মুখোশ হয় মন্দ এবং কিছু মুখোশ হয় ভালো। তবে এটা সত্যি যে আমাদের আজকালকার সমাজে খারাপ মুখোশধারীর সংখ্যায় খুব বেশি। কবিতাটির মধ্যে অনেক নতুনত্ব খুঁজে পেয়েছি ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাই আপনার কবিতাটি পড়ে আমার জাপানি একটি ছবির ডায়লগ মনে পড়ে গেল ডায়লগটি ছিল এমন “Destroy the musk of death and there you will see nothing”
.আসলে আপনি মন চাইলে ভালো কিছু করতে পারবেন না, কারণ এ সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে রয়েছে অসৎ দুর্নীতিবাজ লোকদের আনাগোনা। আমি আপনার সাথে একমত এই সমাজের পরিবর্তন দরকার সবার আগে দরকার মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন। আমার মতে ভালো সাজার মুখোশটা ভাঙতে না পারলে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব নয়।