আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ ব্যবহারের আন্তরিকতা ]
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি বেশ ভালো আছি এবং ভালো থাকার চেষ্টা করছি। আজকে আবার আবোল তাবোল জীবনের গল্প নিয়ে কিছু অনুভূতি শেয়ার করবো। তবে একটা কথা আবোল তাবোল জীবনের গল্পে শেয়ার করার সকল কনটেন্ট কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং সত্যি ঘটনার উপর ভিত্তি করে লেখা, কিছু যেমন নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা ঠিক তেমনি কিছু অন্যের বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা হতে নেয়া। আসলে সকল বিষয় কিংবা অনুভূতি শুধুমাত্র নিজের জীবনের হয়ে থাকে না, আমরা পারস্পরিক সম্পর্ক কিংবা পরিচয়ের সূত্রে অনেকের কাছ হতে অনেক ঘটনা শুনে থাকি। আজকে তেমন একটা ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, যা একজনের বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা হতে শেয়ার করেছিলেন, আমার ঠিক মনে পড়ছে না এটা শেয়ার করেছিলাম কিনা?
আজকে যে ঘটনাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো সেটা হলো প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা। বাসে একদিন এক ভদ্রলোকের সাথে পরিচিত হয়েছিলাম, যিনি দীর্ঘ সময় দুবাই প্রবাসী ছিলেন। দুবাই আমরা সবাই চিনলেও এর দেশের নাম হয়তো আমরা সবাই চিনি না, কারন দুবাই নামটি আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশী পরিচিত, এটা হলো মূলত সেই দেশের বৃহৎ ও জনবহুল শহর আর সেই দেশটির নাম হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত। ভদ্রলোক কুমিল্লার হলেও এখন ব্যবসা করেন মানিকগঞ্জে, কাপড়ের ব্যবসা করছেন। তার জীবনের অনেকগুলো গল্প আমার সাথে শেয়ার করেছেন। দুবার শহরের যেমন অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, ঠিক তেমনি শেয়ার করেছেন দুবাই থেকে ফিরে আসার পর বাংলাদেশের নানা প্রতারণার গল্প, সেগুলো অন্য দিন শেয়ার করবো।
আসলে আমরা বাস্তব জীবন হতে অনেক শিখি কিন্তু সেগুলোকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারি না। বাস্তবায়নের যে ইচ্ছা নেই সেটা কিন্তু না, অনেক সময় আমরা পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারনেও করতে পারি না। যে বিষয়টি আমাদের দেশের মানুষ প্রবাসে গিয়ে ভালোভাবে উপলব্ধি করেন। ইচ্ছা থাকলেও সেই বিষয়গুলো নিজের দেশে ফিরে আসার পর বাস্তবায়ন করতে পারেন না। যেমন সেটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে, তেমন সেটা আইন মানার ক্ষেত্রে, আর প্রতারণার বিষয়টি নাই বললাম। প্রবাসে জীবনে তারা যতটা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন, ঠিক ততোটাই ব্যবহারের দিক হতে, এটা নিয়ে অনেক প্রশংসাই আমরা শুনতে পাই নানা মাধ্যমে।
তবে উনি যে বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়েছেন সেটা হলো স্থানীয় মানুষদের ব্যবহার, যা আমরা হয়তো অনেকেই জানি না। আবার অনেকেই যেটা জানি সেটা ভিন্ন রকম। আসলে সবার সাথে সব সময় একই ব্যবহার হয় না, মাঝে মাঝে কিছুটা ভিন্ন রকমও হয়ে থাকে। সকলের বিষয়গুলো সব সময় সুখকর হয় না, এর সাথে অবশ্য নানা কারণ ও ঘটনা জড়িত থাকতে পারে। যাক আমরা সেদিকে যাবো না। মূল বিষয়ে ফিরে আসি। সেই ভদ্রলোকের দৃষ্টিতে স্থানীয় মানুষদের ব্যবহার তাদের ভদ্র ও নৈতিকভাবে ভালো থাকার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আমি জিজ্ঞেস করলাম সেটা কেমন, তারা কিভাবে আপনাদের সাথে ভালো ব্যবহার করেন?
উনি বললেন, তাদের মাঝে আন্তরিকতা এবং উপকার করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশী এবং নিজের অবস্থান নিয়ে তারা কখনোই অহংকার কিংবা কাউকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন না। একটা উদাহরণের মাধ্যমে সেটা সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিলেন আমাকে। ধরুণ আপনি ফ্রি ভিসায় সেখানে গিয়েছেন, যে কোন শহরে গিয়ে আপনি কাজ করতে পারবেন। যেখানে থাকেন সেখান হতে অনেক দূরে একটা কাজ পেলেন, বাড়িতে রং করার কাজ। কাজ শেষে আবার সন্ধ্যায় মূল সড়কে ফিরে আসলেন কিন্তু তখন কোন বাস ছিলো না সেখান হতে ফিরে আসার। অগত্যা আপনি বাসের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে বসে আছেন। হঠাৎ করে দেখবেন খুব দামি এবং সুন্দর একটা প্রাইভেট কার আপনার সম্মুখে এসে থেমে যাবে।
কারের গ্লাস নেমে যাবে এবং কেউ একজন মাথা বের করে আপনাকে জিজ্ঞেস করবে তুমি কোথায় যাবে? তোমার কাজ কি শেষ? আপনি যদি উত্তরে বলেন আমি অমুক জায়গায় যাবো এবং আমার কাজ শেষ। সেই লোক তাৎক্ষনিকভাবে আপনাকে বললে আসো আমার গাড়িতে আসো এবং আমার পাশে বসো। আপনার শরীর নোংরা কিংবা আপনার পোষাক আসাক ভালো না, তাতে সে কিছুই মনে করবে না বরং তার পাশের সীটে আপনাকে বসতে বলবে। তারপর জিজ্ঞেস করবে আপনি সেই দেশের ভাষা বোঝেন কিনা এবং বলতে পারেন কিনা?
আপনি যদি সেই ভাষায় কথা বলতে পারেন, তাহলে প্রথমেই আপনাকে জিজ্ঞেস করবে কাজ শেষে কিছু খেয়েছেন কিনা? টাকা পেয়েছেন কিনা? কোন সমস্যযা হয়েছে কিনা? আপনি যদি তখন না খেয়ে থাকেন এবং সেটা বলেন, তাহলে সে তার পকেটের পয়সা খরচা করে আপনাকে খাওয়াবে। আপনার সাথে নানা বিষয় নিয়ে গল্প করতে থাকবে। তার গন্তব্য অন্য দিকে হলেও আপনাকে আপনার গন্তব্যে নামিয়ে তারপর সে তার নিজের গন্তব্যে যাবে। এতোটুকু শুনেই আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সত্যি ব্যবহার, আন্তরিকতা এমনটাই হওয়া উচিত। আজ এখানেই শেষ করলাম।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/hafizdhaka/status/1756538507143594220
আসলে ভালো-মন্দ মিলিয়েই তো মানুষ। এটা ঠিক যে পরিবেশ আমাদের স্বভাব এবং আচরণের উপর অনেক বেশি গুরুত্ব ফেলে। সেই লোকের উদাহরণ গুলো পড়ে মনে হলো, প্রকৃতপক্ষে মানুষের তো এমন আচরণ ই করা উচিত! তবেই না মানুষ মানুষের জন্য! একটু ভালো আচরণ করা, সুযোগ পেলে উপকার করা, একটু খোঁজ নেয়া যে খেয়েছে কিনা ইত্যাদি। আর আমাদের দেশে কেউ বিনয়ের সাথে কথা বললে, সেটাকে অনেকেই দুর্বলতা ভেবে বসে।
একদমই ঠিক বলেছেন, আমাদের মানসিকতার পরিবর্তনের কারনে কেউ চাইলেও নরম বা বিনয়ের সাথে কথা বলতে পারেন না। অনেক ধন্যবাদ।
ভাই গল্পটা পড়ে বুঝতে পারলাম যে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসাটা অনেক বেশি যেটা আমাদের দেশে খুব একটা লক্ষ্য করা যায় না। আমাদের দেশের মানুষের যার একটু টাকা হয়েছে তার অহংকারে মাটিতে পা পড়ে না আর গরিবদের কি বলবো গরিবরা তো সবসময়ই লাঞ্ছিত আর অবহেলিত এ সকল অহংকারী ব্যক্তিদের কাছে। অনেক সুন্দর একটি শিক্ষনীয় পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
আসলেই ভাই, আমাদের বাঙালিদের ব্যবহারটা যদি এমন হতো তাহলে আমাদের সমাজের পুরো চিত্রটাই পাল্টে যেতো। ধন্যবাদ
অবশ্যই ভাই আমাদের বাঙালীদের ব্যবহারের অনেক পরিবর্তন এর প্রয়োজন রয়েছে। আসলে মানুষ পাল্টালেই সমাজ পাল্টে যায়।
নিজের জীবনের সাথে ঘটে যাওয়া এবং পরিচিত মানুষদের বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা শুনতে খুব ভালো লাগে। অনেক সময় নিজের জীবনে সেটা কাজে লাগানো যায়। যাইহোক যারা দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকে, তারা বাহিরের দেশের কালচারের সাথে অনেকটা মিশে যায়। তাছাড়া বাহিরের দেশের মানুষদের চলাফেরা, ভদ্রতা দেখতে দেখতে নিজেরাও অনেকটা তেমনই হয়ে যায়। তাদের মধ্যে আন্তরিকতা অনেক। কেউ রাস্তা ঘাটে বিপদে পরলে সর্বোচ্চ সাহায্য করার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রবাসীরা যখন বাংলাদেশে ফিরে আসে, তখন না চাইলেও অনেক কিছুর তুলনা করে ফেলে। আসলে আমাদের দেশের মানুষজন এবং সার্বিক পরিস্থিতির সাথে, বিদেশের পার্থক্য আকাশ পাতাল। যাইহোক পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যা এটা ঠিক বলেছেন, অন্যের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নানাভাবে আমাদের শিক্ষা দিয়ে থাকে। অনেক ধন্যবাদ
ভাই আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আসলে সকল কথাগুলো বাস্তবতার সাথে মিল রয়েছে। আমরা বাস্তব জীবনে অনেক কিছু শিখি কিন্তু সেই জিনিসগুলো শিখেও আমরা বাস্তবায়ন করি না। আসলে প্রবাস জীবনে যারা কষ্ট করে বড় হয় এবং যতগুলো আইন মানে এই কষ্টটা দেশে এসে বিন্দু পরিমাণ করতে চায় না এবং দেশে এসে আইন ও মানে না মযার কারণে আমরা শিখি ঠিকই কিন্তু সেগুলো আমরা বাস্তবে কাজে লাগাই না। তেমনি অনেক কিছু আমাদের জীবনে শেখা হয় কিন্তু মানা হয় না।
কিছু কিছু দেশের কালচার অনেক ভালো। সেগুলো আসলেই এমনিতেই উন্নত দেশ হয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়নি। তাদের কাজকর্ম এবং তাদের নৈতিকতা সবকিছু মিলিয়ে তারা আজকে উচ্চশিক্ষা করে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। আপনার পরিচিত লোকটির গল্পগুলো আমাদের সাথে বিস্তারিত শেয়ার করলেন। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এমন সুন্দর ব্যবহার আসলে সব দেশের মানুষই করতে পারে না। এবং সব মানুষের কাছ থেকেও আশা করা যায় না। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।