কখন আমরা করোনা ভাইরাস সবচেয়ে বেশী ছড়াই? [এবং একটা ঘোষনা]

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

এই করোনা প্যান্ডেমিক কন্ট্রোল না হওয়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা কারণ হচ্ছে আমাদের জ্ঞানের অভাব। আবার দেখা যায়, অনেক সময় জ্ঞান থাকলেও আমরা সেই জ্ঞানটাকে কাজে লাগাইনা সঠিক ভাবে। এই মহামারীর শুরু থেকে আইসোলেশান বা কোয়ারেন্টাইকেই বেশী গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। মহামারী সংক্রমণ রোধে এর কোন বিকল্প নাই। আমরা কয়জন সঠিক পদ্ধতিতে একটা পালন করছি? আমরা কি পারছি নিজেরা আক্রান্ত হবার পর আমাদের পরিবাবের অন্যদেরকে এর সংক্রমণ থেকে বাচাতে? চলুন আজকে আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টা জানার চেষ্টা করি।

covid.jpg
এই ছবিটি পিক্সাবে থেকে নেয়া

মোটামুটি প্রত্যেকটি জীবানুবাহিত রোগেরই একটা ইনকিউবিশান পিরিয়ড থাকে। একটা জীবানু শরীর ঢুকার সাথে সাথেই রোগ লক্ষণ দেখা যেতে নাও পারে। শরীরে জীবানু ঢোকার পর থেকে রোগ লক্ষণ দেখা দেয়া পর্যন্ত এই অন্ত্যবর্তীকালীন সময়কেই বলা হয় ইনকিউবিশান পিরিয়ড। একেক রোগের ক্ষেত্রে এসময় একেক রকম। আবার জীবানু ঢুকলেই যে সবারই রোগ লক্ষন দেখা দিবে এমন কোন নিশ্চয়তাও নেই। অনেকের ক্ষেত্রেই কোন রোগের লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ ছাড়াই জীবানু শরীর থেকে নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে।

যেসব রোগের জীবানু বাতাস-বাহিত (যেমন করোনা ভাইরাস) বা হাসি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়, সেগুলোর জীবানু, “ রোগ-লক্ষণ বিহীন ব্যক্তির” শরীর থেকেও অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও এমনটিই হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, করোনা ভাইরাস আমাদের শরীর ঢোকার পর, রোগ লক্ষণ দেখা দেয়ার দুইদিন আগে থেকে শুরু করে রোগ লক্ষণ দেখা দেয়ার তিন দিন পর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী ছড়ায়। আমরা সবাই জ্বর, সর্দি কিংবা কাশি শুরু হবার পর আইসোলেশানে যাই, কিন্তু তার দুইদিন আগ থেকেই আমরা কিন্তু আমাদের আপনজনকে ভাইরাস উপহার দিয়ে ফেলেছি, নিজেদের অজান্তেই!

আবার হয়ত অনেকের ক্ষেত্রেও এমনও হতে পারে যে, এক পরিবারের একজন বাইরে থেকে জীবানুটা বহন করে নিয়ে এসেছেন মাত্র, তিনি দিব্যি সুস্থ, তার কোন রোগ লক্ষণই দেখা যায় নাই। কিন্তু পরিবারের অন্যেরা একের পর এক অসুস্থ্য হচ্ছেন। যিনি বাইরে যাওয়া আসা করেন, কোন লক্ষণ না থাকায় আইসোলেশানে থাকেন নাই কিন্তু ভাইরাস ঠিকই ছিল তার মধ্যে। কিংবা উনার জ্বর হবার সাথে সাথেই আলাদা রুমে থাকা শুরু করেছেন। তারপরও অন্যেরা আক্রান্ত হয়েছেন। কারণ উনি ইনকিউবেশান পিরিয়ডে ভাইরাস ছড়িয়েছেন।

আরেকটু সহজ ভাবে দেখি আমরা। ধরুন, সোমবারে আমার জ্বর, সর্দি এবং কাশি শুরু হল। আমি সাথে সাথেই আলাদা রুমে থাকা শুরু করলাম, অর্থাৎ আমি আইসোলেশানে চলে গেলাম। কিন্তু আমি শনি এবং রবিবারে অলরেডি ভাইরাস ছড়িয়েছি অন্যদেরকে। মংগল, বুধ এবং বৃহস্পতি বারেও আমি ভাইরাসে বেশী হারে ছড়াতে থাকব। অর্থাৎ শনি থেকে বৃহস্পতি, এই ছয়দিন আমি সবচেয়ে বেশী ভাইরাস ছড়াবো অন্যদের মাঝে।

তাহলে কি করনীয়?
যদি সন্দেহ হয় যে আমি কোন ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে গিয়েছি, তাহলে সেই দিন থেকেই আলাদা থাকা শুরু করব। মোটামুটি ২ সপ্তাহ আইসোলেশানে থাকতে হবে, কেননা করনো ভাইরাসের ইনকিউবিশান পিরিয়ড ধরা হয় ১৪ দিন পর্যন্ত। মানে হচ্ছে যে ভাইরাস শরীরে ঢোকার ১৪ দিনের মাথায়ও দেখা দিতে পারে। তাই যদি সম্ভব হয় পি সি আর টেস্ট করে ফেলব অথবা ১৪ দিন আলাদা থাকব।


একটা ঘোষণা

আমি @amarbanglablog এর সকল আডমিন এবং মডারেটরদের প্রতি কৃতজ্ঞ আমার প্রত্যেকটি পোষ্টে সাপোর্ট দেবার জন্যে এবং কয়েকটি পোষ্টকে টপ টেন এ স্থান দেবার জন্যে। যদিও বাংলা আমার মাতৃভাষা কিন্তু কিবোর্ড দিয়ে লেখাটা আমার জন্যে খুবই সময় সাপেক্ষ্য ব্যাপার। যখন বাসায় থাকি, বাচ্চার জন্যে লাপটপ খুলি না। অফিসে বসে রুগী দেখার মাঝে মাঝে একটু একটু করে লেখার চেষ্টা করি। আমার লেখার মাধ্যমে যেন রিডাররা কিছুটা হলেও উপকারী তথ্য পান এমন লেখার চেষ্টা করি। করবও মাঝে মধ্যে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু রিগুলার সম্ভব হচ্ছে না। একই কারণে অন্যদের সাথে ইন্টারএক্টও করা হচ্ছে না। একই সময় ডিউটিতে থাকায় হ্যাং আউটেও থাকা হয় না। ফলশ্রুতিতে আমার আশংকা হচ্ছে যে অচিরেই হয়ত একটিভ ইউজার এর খাতা থেকে আমার নামটা কাটা পড়বে। তাই আমি আগে থেকেই ভলান্টারি ছুটি নিয়ে নিচ্ছি। ইংরেজিতে কিংবা সর্ট পোষ্ট লেখার অপশান থাকলে হয়ত আমার জন্যে সুবিধা হত। তারপরও চেষ্টা থাকবে মাঝে মধ্যে একটাদুইটা পোষ্ট লেখার জন্যে। সবাই সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন কোয়ালিটি পোষ্ট করার জন্যে।

সবার প্রতি শুভেচ্ছা রইল।


আজকে তাহলে এ পর্যন্তই।ভাল থাকুন সবাই।
হাফিজ
ওমান

Sort:  
 3 years ago 

আপনার পোস্ট গুলো অনেক তথ্যবহুল হয়। আপনার দেওয়া তথ্য হতে আমি অনেক উপকার পেয়েছি।
সময় পেলে মাঝে মাঝে আমাদের কে পোস্ট উপহার দিবেন। বিশেষ করে আমি আপনার পোস্টর জন্য আধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। আপনি পোস্ট লেখার জন্য বাংলা ভয়েস টাইপিং ইউজ করতে পারেন। সঅময় অনেক কম লাগবে। ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আপনার লেখা খুবি ভাল এবং আপনি সত্যিই বলেছেন আমরা এই করোনা মহামারীর সময় আমাদের জ্ঞান কাজে লাগাই না। আপনার পোষ্ট থেকে অনেক কিছু শেখার আছে আমি মনে করি । আশাকরি এই ধরনের শিক্ষা মূলক পোষ্ট আরো করবেন । ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57050.09
ETH 3060.34
USDT 1.00
SBD 2.32