প্রতিযোগিতা- ৫৩ ||"ব্রাম্মী ও থানকুনি শাক দিয়ে কুমড়ো ফুলের দই বেগুন শুক্তো রেসিপি"
নমস্কার
ব্রাহ্মী ও থানকুনি শাক দিয়ে কুমড়ো ফুলের দই বেগুন শুক্তো রেসিপি:
বন্ধুরা,শুক্তো রেসিপি হচ্ছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার।যেটা খুবই জনপ্রিয় এবং পুরোনো কালের ঐতিহ্যকে বহন করে।বর্তমানে যদিও এর কদর কিছুটা কমেছে।কিন্তু আমাদের বাড়িতে শুক্তো রেসিপি মাঝে মাঝেই তৈরি করা হয়।আর এই রেসিপি আমার এতটাই পছন্দের, যে শুধুমাত্র শুক্তো রেসিপি দিয়েই আমি একথালা ভাত সাবার করে ফেলি।তাছাড়া এটা শরীরের জন্যও খুবই উপকারী।তাই আজ আমি তৈরি করেছি "ব্রাহ্মী ও থানকুনি শাক দিয়ে কুমড়ো ফুলের দই বেগুন শুক্তো রেসিপি"।এমনিতেই বেগুন খেতে আমি অনেক পছন্দ করি।প্রতিদিন কোনো না কোনো পদ থাকেই বেগুনের।তাছাড়া দেখলাম গাছে অনেক বেগুন রয়েছে এবং আজ অনেক কুমড়ো ফুলও ফুটেছে।তাছাড়া থানকুনি শাকের ক্ষেত তো রয়েছেই আমাদের।তাই একে একে তুলে নিয়ে টক দই দিয়ে শুক্তো রেসিপি বানিয়ে ফেললাম, এটা কিন্তু খেতে দারুণ স্বাদের ও মজাদার হয়েছিল।শুক্তো রেসিপিতে দেওয়া থানকুনি শাক ও ব্রাম্মী শাকের অনেক গুনাগুন রয়েছে।এগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।যেমন ব্রাম্মী শাকের উপকারীতা---
● স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ব্রাহ্মী শাক।
●ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে ব্রাম্মী শাকের ভূমিকা অপরিসীম।
●বাতের ব্যথা কমাতে ব্রাম্মী শাক খুবই উপকারী।
থানকুনি শাকের উপকারীতা---
●মুখে ঘা ও অন্যান্য ক্ষতে উপকার দেয় থানকুনি শাক।
●থানকুনি পাতা সর্দির জন্য উপকারী।
●পেটের অসুখে থানকুনির ব্যবহার আছে।
●এছাড়া থানকুনি পাতা আমাশয়ে ভাল কাজ করে।
আশা করি আপনাদের কাছেও আমার তৈরি রেসিপিটি অনেক ভালো লাগবে।তো আর কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক----
উপকরণসমূহ:
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
কুমড়ো ফুল | 15 টি |
বেগুন | 1 টি |
থানকুনি শাক | 1 মুঠো |
ব্রাম্মী শাক | 1/2 মুঠো |
টক দই | 4 টেবিল চামচ |
টমেটো | 2 টি |
চিনি | 1/3 টেবিল চামচ |
লবণ | 1 টেবিল চামচ |
হলুদ | 1/2 টেবিল চামচ |
পাঁচফোড়ন গুঁড়া | 1/3 টেবিল চামচ |
কালোসরিষা গুঁড়া | 1.5 টেবিল চামচ |
জিরা গুঁড়া | 1.5 টেবিল চামচ |
ধনিয়া গুঁড়া | 1 টেবিল চামচ |
সরিষার তেল | 5 টেবিল চামচ |
পদ্ধতিসমূহ:
ধাপঃ 1
প্রথমে আমি আমাদের গাছ থেকে টাটকা বেগুন ও কুমড়ো ফুল তুলে নিলাম।এরপর কিছু থানকুনি ও ব্রাম্মী শাক তুলে বেছে নিলাম।
ধাপঃ 2
এরপর একটি বটির সাহায্যে বেগুনগুলি ধুয়ে কেটে নিলাম।কুমড়ো ফুল ও শাকগুলি ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে কেটে নিলাম।
ধাপঃ 3
এবারে একটি পরিষ্কার কড়াই নিয়ে মিডিয়াম আঁচে চুলায় বসিয়ে দিলাম।কড়াইয়ের মধ্যে কালো সরিষা,জিরা,গোটা ধনিয়া এবং পাঁচফোড়ন দিয়ে দিলাম পরিমাণ মতো।তারপর নেড়েচেড়ে হালকা ভেজে নিলাম।
ধাপঃ 4
এখন গোটা মসলাগুলি ভেজে নেওয়ার পর শীল-পাটায় বেঁটে গুঁড়ো করে নিলাম।
ধাপঃ 5
গুঁড়ো মসলাগুলি একটি পাত্রে তুলে নিলাম।
ধাপঃ 6
এরপর পুনরায় আবার চুলায় কড়াই বসিয়ে পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে হালকা গরম করে নিলাম।
ধাপঃ 7
এবারে তেলের মধ্যে কেটে রাখা টমেটোর পিচগুলি দিয়ে দিলাম।
ধাপঃ 8
এখন টমেটোগুলি নেড়েচেড়ে হালকা গলিয়ে নিলাম।
ধাপঃ 9
এরপর টমেটোর মধ্যে বেগুনের পিচগুলি দিয়ে দিলাম।
ধাপঃ 10
এখন বেগুনের মধ্যে পরিমাণ মতো হলুদ দিয়ে নেড়েচেড়ে কিছুক্ষণ ভেজে নিলাম।
ধাপঃ 11
এবারে ভেজে নেওয়া বেগুনের মধ্যে কুমড়ো ফুল দিয়ে নেড়েচেড়ে ভেজে নিলাম।
ধাপঃ 12
এখন ভেজে নেওয়া বেগুন ও কুমড়ো ফুলের মধ্যে ব্রাম্মী ও থানকুনি শাক দিয়ে নেড়েচেড়ে ভেজে নিলাম।তারপর পরিমাণ মতো লবণ দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দিলাম।কারণ আমি এতে কোনো জল ব্যবহার করবো না।
ধাপঃ 13
এবারে ঢাকনা খুলে নেড়েচেড়ে বেগুনগুলি গলিয়ে মিশিয়ে নিলাম শাকের মধ্যে।
ধাপঃ 14
এখন সেদ্ধ বেগুনগুলি পাত্রে নামিয়ে কড়াইতে তেল দিয়ে নিলাম।তেলের মধ্যে টক দই দিয়ে দিলাম পরিমাণ মতো।
ধাপঃ 15
এরপর টক দইয়ের মধ্যে বেগুনগুলি ঢেলে দিলাম।তারপর সামান্য চিনি ও গুঁড়ো করা মসলা পরিমাণ মতো দিয়ে দিলাম।
ধাপঃ 16
এবারে সমস্ত উপকরণ একত্রে ভালোভাবে মিশিয়ে নেড়েচেড়ে নিলাম।
শেষ ধাপঃ
সবশেষে একটি পাত্রে রেসিপিটি নামিয়ে নিলাম।তো তৈরি করা হয়ে গেল আমার "ব্রাহ্মী ও থানকুনি শাক দিয়ে কুমড়ো ফুলের দই বেগুন শুক্তো রেসিপি"।
পরিবেশন:
এখন এটি গরম গরম ভাত কিংবা রুটির সঙ্গে পরিবেশন করতে হবে।এটি খেতে খুবই সুস্বাদু ও মজাদার হয়েছিল।
পোষ্ট বিবরণ:
বিষয় | প্রতিযোগিতা- ৫৩ | "ব্রাহ্মী ও থানকুনি শাক দিয়ে কুমড়ো ফুলের দই বেগুন শুক্তো রেসিপি" |
---|---|---|
শ্রেণী | রেসিপি | |
ডিভাইস | poco m2 | |
অভিবাদন্তে | @green015 | |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
টুইটার লিংক
প্রথমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি । বিশেষ করে শুক্তো আমার কখনো খাওয়া হয়নি এজন্য এগুলো বানাতেও খুব একটা পারি না । আপনার রেসিপিটা কিন্তু ভালো লাগলো আনকমন হয়েছে । ব্রাহ্মী শাকের নামও প্রথম জানলাম ।
আপু,এগুলো তৈরি করতে বেশি কঠিন নয়।আপনি শুধু ঝাল ছাড়া লাউ কিংবা বেগুন জাতীয় সবজিতে হালকা তেতো জাতীয় জিনিস দিলেই শুক্তো রেসিপি কমপ্লিট।ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমে আপনাকে জানাই আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আপনি বেশ সুন্দরভাবে ব্রাম্মী ও থানকুনি শাক দিয়ে কুমড়ো ফুলের দই বেগুন শুক্তো রেসিপি তৈরি করে শেয়ার করেছেন আপু। আসলে অনেকগুলো উপাদানের মাধ্যমে যেকোনো রেসিপি তৈরি করলে খেতে বেশ সুস্বাদু লাগে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি রেসিপি তৈরি করে পর্যায়ক্রমে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া, আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে।
কি সুন্দর দেখার মতো একটি ইউনিক রেসেপি শেয়ার করলেন ৷ এতো গুলো উপাদান দিয়ে রেসেপি করেছেন ৷ তবে একটা বিষয়ে খুব ভালো লাগলো ৷ সেটা হলো এই রেসিপি টা খেলে যে অনেক উপকার তা উল্লেখ করেছেন ৷ সবমিলে দারুন একটি রেসেপি ৷ ব্রাম্মী ও থানকুনি শাক দিয়ে কুমড়ো ফুলের দই বেগুন শুক্তো রেসিপি৷ আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল দিদি ৷ এ প্রতিযোগিতার একটা হলেও হতে পারেন ৷
আপনার কথা পূর্ণতা পেয়েছে দাদা।একটি অবস্থানে থাকতে পেরে আমি অনেক খুশি, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
শুনে খুশি হলাম দিদি
😊😊
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। বেশ কয়েকটি উপকরণ দিয়ে মজাদার একটি রেসিপি তৈরি করেছেন। তবে এভাবে শুক্তো রেসিপি তৈরি করে কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপিটা দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই মজা হয়েছে। তৈরি করা ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আপু,খুবই মজার হয়েছিল খেতে।ধন্যবাদ আপনাকে ও।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
Thank you so much.
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য।ব্রাম্মী ও থানকুনি শাক দিয়ে কুমড়ো ফুলের দই বেগুন শুক্তো রেসিপি সুন্দর ভাবে তৈরি করেছেন ।এমন ধরনের রেসিপি কোনদিন খাওয়া হয়নি, একদিন বাড়িতে তৈরি করে খেয়ে দেখব ।রেসিপিটা খেতে কেমন লাগে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি ইউনিক রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
অবশ্যই তৈরি করে খেয়ে দেখবেন আপু,দারুণ মজার খেতে।ধন্যবাদ আপনাকে।