"ব্যস্ত সময়ের অনুভূতি"
নমস্কার
ব্যস্ত সময়ের অনুভূতি:
সবাইকে জানাই উষ্ণ ধোঁয়াযুক্ত শ্বেত কুয়াশার একরাশ শুভেচ্ছা।শীতকাল চলে এসেছে তাই ভোর হলেই স্বাভাবিক ভাবেই আলসেমি ভাব কাজ করে মনে।তেমনি শুক্রবার সকালে আমার টিউশন পড়া থাকে।তাই ভোরে উঠে বাস ,ট্রেন ধরতে হয়।আর এগুলো সবই চলে নির্দিষ্ট সময় ও নিয়মে।মাঝে মাঝেই স্যার আবার হঠাৎ করেই পড়ানোর কথা বলেন।তেমনি স্যারকে জিজ্ঞাসা করাতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্যার আমাকে ফোন করে বললেন, তিনি শুক্রবার পড়াতে পারবেন না।কি আর করা!তাই বৃহস্পতিবার হ্যাংআউট থাকায় আর হোয়্যাটসআপ মুখো হইনি।
এমনিতেই তো আমি দেরিতে উঠি কিন্তু পড়ার দিনে ভোর 6 টায় উঠে পড়ি।যেহেতু পড়ার ঝামেলা নেই তাই 6.45 এর দিকে উঠে পড়লাম।তারপর হোয়্যাটসআপ চেক করতেই দেখলাম স্যার রাত্রে বলে দিয়েছিলেন আজ পড়ানোর কথা।এটা দেখেই আমি কিছুটা চিন্তিত কারন আগের সপ্তাহেও পড়তে যাওয়া হয়নি।সেদিন আবার কলেজে এডমিশন ডেট ছিল তাই ভাবলাম দেরি হলেও যাবো।এডমিশনের ফি ছিল 2660 টাকা।সকাল 7 টার বাস ছাড়িয়ে গেল,রেডি হয়ে বের হতে হতে অনেকটা বেজে গেল।তাই টোটো ধরার জন্য হাঁটা শুরু করলাম।কিন্তু কোনো টোটোর দেখা নেই।অবশেষে অনেক পথ হাঁটার পর একটি টোটোর দেখা পেয়ে উঠে পড়লাম।তারপর টোটো থেকে নেমে যেখানে আমি 7.13 এর ট্রেন ধরি সেখানে 8.30 এর ট্রেন ধরলাম।এভাবে বর্ধমান স্টেশন পৌঁছে আবার হাঁটা শুরু করলাম স্যারের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
বর্ধমান শহরের স্টেশনের কাছাকাছি দোকানপাটগুলি তখন গমগম করছে (বিভিন্ন রং-বেরঙের টুনি বাতি,মোমবাতি,ঠাকুরের বিভিন্ন অসাধারণ মূর্তি,ফুলের ইয়া বড় বড় মালা,আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ এবং বিভিন্ন ধরনের রঙের বাহারে তৈরি প্রদীপগুলি) দিয়ে।আর এ সবেরই আয়োজন দীপাবলি ও কালীপূজাকে ঘিরেইকারন এই সময়ে আনন্দের শেষ থাকে না মানুষের মনে।তারপর স্যারের বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় 9.30 টার কাছাকাছি বেজে গেল।অনেকটাই পড়ানো হয়ে গিয়েছিল তবুও স্যার আমাকে কিছুই বললেন না।যাইহোক তারপর বাকি সময় পড়া শেষ করে বাইরে বের হয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে যাব বলে টোটোর সন্ধান করলাম।কিন্তু কোনো টোটো-ই আমাদের কলেজের দিকে যেতে রাজি হলো না।ভাবলাম মাঝে রাজ কলেজ পড়বে তখন টোটো পাবো।এই আশা নিয়ে স্যারের বাড়ি থেকে হেঁটে রাজ কলেজ আসলাম।কিন্তু সেখানে কয়েকজন টোটোওয়ালার কাছে জিজ্ঞাসা করেও সেই একই কথা শুনতে পেলাম।অর্থাৎ কেউ আমাদের কলেজের দিকে যাবে না,তাই বাধ্য হয়ে আবারো হাঁটা শুরু করলাম।
এরপর হসপিটালের কাছে পৌঁছাতেই ভাবলাম স্টেশন কিংবা স্যারের বাড়ি যেখান থেকেই টোটোতে উঠে কলেজ যাই না কেন ভাড়া তো একই।কিন্তু অর্ধেক পথ যখন চলেই এসেছি তখন বাকি পথও হেঁটে যাবো।সেই ভেবে হাঁটতে হাঁটতে ভাবলাম মনে হয় আমি গলি ঘুলিয়ে ফেলছি।কারন সবসময় টোটোওয়ালারা বিভিন্ন গলি দিয়ে নিয়ে যায়।তাই সবই কমবেশি চেনা ছিল কিন্তু পায়ে হেঁটে কেমন অচেনা লাগছিল।তবুও মনে বিশ্বাস নিয়ে হাটতে লাগলাম ভাবলাম যেকোনো পথ তো চেনা পথে গিয়ে মিশবেই।যাইহোক ওদিকে আমার জুতার উপর চাপ পড়ছে সঙ্গে পায়ে ফোসকা উঠে ব্যথাও ধরেছে।তাইজন্য বেশ কষ্টও হচ্ছিল সবদিক দিয়েই।তারপর কলেজ পৌঁছে দোতলায় উঠতেই দেখি এডমিশনের জন্য ইয়া বড় লাইন পড়েছে।যদিও আমি আমার একজন বান্ধবীকে জায়গা রাখতে বলেছিলাম,সেইমতো লাইনের প্রথম দিকে বান্ধবীদের কাছে চলে গেলাম।ওদিকে যন্ত্রনায় পা টনটন করছে তার উপরে লাইন টানা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না।তাই আমার ফ্রেন্ডরা সবাই আমার কথা শুনে তাদের লাইনের মধ্যে ঢুকিয়ে নিল।টাকা জমা দিয়েই আমরা কয়জনে লাইব্রেরির কার্ডের কাজটিও সেরে নিলাম।তারপর টোটো ধরে সোজা স্টেশন এসে ট্রেনে উঠলাম বাড়ির আসার উদ্দেশ্যে।এটা ছিল আমার ব্যস্ত সময়ের একটি অনুভূতি।
আশা করি আমার আজকের অনুভূতিটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
টুইটার লিংক
শুক্রবার অনেকের জন্য বেশ আলসেমির দিন, তবে আপনি দেখছি সারাদিন বেশ ব্যাস্ততার মধ্যে কাটিয়েছেন। স্যার হঠাৎ করেই পড়াবে বলায় বেশ তাড়াহুড়ো করেই যেতে হয়েছে। আমিও আজ সারাদিন ভীষণ ব্যাস্ত সময় পার করেছি।
ভাইয়া, অনেকের জন্য বললে ভুল হবে।কারন আমাদের দেশে রবিবার আলসেমির দিন থাকে, হি হি।ধন্যবাদ আপনাকে।
হা হা 😄
ভুলে গিয়েছিলাম আপনাদের ওখানে রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন 👌
☺️☺️
মানুষ বলতে ব্যস্ততা। আসলে পড়াশোনা এবং নিজের কিছু কাজ থাকলে এমনিতে ঝামেলা হয়। মানুষ কোন কোন কাজে ব্যস্ত থাকে। আপনার ব্যস্ত সময়ের অনুভূতি পড়ে খুব ভালো লাগলো। বেশ ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। যাইহোক বুদ্ধি করে লাইনের মধ্যে ঢুকিয়ে গেলেন এতে করে সময় এবং কষ্ট কিছুটা বাঁচলো। লাইব্রেরির কার্ডের কাজ টি সম্পূর্ণ করে নিয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া,মাঝে মাঝেই বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ হাসিল করতে হয়।ধন্যবাদ আপনাকে।