"অতীতকে ভুলে যাওয়াটা অহংবোধেরই পরিচয়"
নমস্কার
অতীতকে ভুলে যাওয়াটা অহংবোধেরই পরিচয়:
অতীত যা আমাদের জীবনের অনেক স্মৃতিময়,আবেগময়,বেদনাময় টুকরো টুকরো স্মৃতির খন্ড চিত্র।একরাশ অতীত আমাদের ফিরিয়ে দেয় ভালো লাগার অনাবিল আনন্দ,আবার একরাশ অতীত আমাদেরকে ভাসায় বেদনার ডুবসাগরে।আবার কখনো একরাশ স্মৃতিরা পাল তুলে পাড়ি দেয় দূর সাগরে ,কখনো আবার উড়ে যায় নীল আকাশের রক্তিম আভায়। আর যা কিছুই হোক না কেন, অতীত আমাদের পিছু ছাড়ে না।অতীত আমাদের বেঁচে থাকার রসদ আমাদের শিক্ষা দানের মাধ্যম হয়ে টিকে থাকে।তাই চাইলে অতীতকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না সহজেই।কিন্তু কিছু মানুষ অতীত জীবনকে ভুলে যায় অহংবোধের কারণে।তারা তাদের অতীতে কাটানো সেই সমস্ত মুহূর্তগুলিকে চিরতরে মাটিচাপা দিতে চায়।লোকসম্মুখে নিজের অহংবোধকে তুলে ধরতে চায় অন্য মাত্রায়।
মানুষ সর্বদাই পরিবর্তনশীল।এই পরিবর্তনের পিছনে কিছু কারণ থেকেই যায় আবার অনেকে কারন ছাড়াই পরিবর্তন হয় নিম্ন মানসিকতার জন্য।এটা আমার বাস্তবে দেখা অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি--এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা অতীতে মাটির ঘরে বসবাস করতো কিংবা ভিটে-মাটি ছাড়া আশ্রয়হীন ছিল।সময় একভাবে যায় না, তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা নিজ পরিশ্রমে এখন একটি অবস্থানে এসেছেন।ধরুন, একতলা বিল্ডিং কিংবা বসার জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন।সেই একই মানুষ কিভাবে এতটা পরিবর্তন হতে পারে?সেই মানুষেরা এখন মাটিতেই পা ফেলতে চায় না, সবুজ গ্রামের প্রকৃতি দেখলে টিটকারী দেয়।
আজব দুনিয়ায় অদ্ভুত মানুষের চিন্তাভাবনা দেখলে কিছু কিছু সময় আমি নিজে থমকে দাঁড়ায়।যারা আশ্রয়হীন কিংবা মাটির ঘরে বসবাস করতো তারা কিভাবে মাটিকে অস্বীকার করতে পারে! কিভাবে মাটিকে অবজ্ঞার চোখে দেখতে পারে!কিভাবে মাটির পরিবেশ ও প্রকৃতিকে অবমাননা বা ঘৃণা করতে পারে! এটা কি অহংকারের পরিচয় নয়?নিম্ন অবস্থা থেকে উপরে ওঠে পূর্বের সেই অবস্থানকে খুব সহজেই ভুলে যাওয়াকে অবশ্যই অহংকার বলে আমার মনে হয়।কিছু বেদনাময় ও আঘাতময় স্মৃতি ভুলে অবশ্যই নতুনভাবে জীবন শুরু করা উচিত।তার মানে এটা নয়,নিজের পূর্বের অবস্থানকে চিরতরে মন থেকে বিলীন করে দেওয়া।
পৃথিবীতে বড় বড় মনীষীদের জীবন বৃত্তান্তের দিকে তাকালে দেখা যাবে, তারা অতীত ঘটনা বা স্মৃতিকে আগলে ধরেই এগিয়ে গিয়েছেন।অতীতের ভালো-মন্দ জীবন থেকে সর্বদা শিক্ষা নিয়েছেন।
অতীতকে ভুলে যাওয়াটা কী অহংকার নয়?অতীতকে কত সহজেই মুছে ফেলা যায় তাইনা!অথচ আমি মনে করি অতীতের কষ্টকে আগলে ধরেই তাদের এই সফলতা,কিছু করতে পারার মতো অভিজ্ঞতা সঞ্চার হয়েছে।সে লোকসম্মুখে যতই অতীতকে তুলে ধরতে না চাওয়ার প্রচেষ্টা করুক না কেন মন থেকে ঠিকই স্মরণ করে।তবে অবশ্যই এটা তার অহংবোধেরই পরিচয় বহন করে।মানুষ প্রথমে খারাপ অবস্থান থেকে ধীরে ধীরে ভালো অবস্থানে যেতে সক্ষম হয়।তাই বলে অতীতকে ভুলে যাওয়া কখনোই উচিত নয়, অতীত ধরেই এগিয়ে যেতে হবে বহুদূর তেপান্তরের মাঠ-ঘাট পেরিয়ে সফলতার শীর্ষে।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
টুইটার লিংক
আসলে আপনার প্রতিটি কথার সাথে আমি সহমত। কারণ এই পৃথিবীতে যারা তাদের পূর্বের অবস্থাকে ভুলে যায় তারা কখনোই একজন ভালো ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারেনা। আসলে মানুষ যতই উন্নতির সর্বশিখরে পৌঁছে যাক না কেন মানুষ তার অতীতকে কখনো ভুলে যেতে নেই। কারণ এই অতীতের সময় গুলো মানুষের জীবনে প্রধান পরিচয় হয়ে দাঁড়ায়। আর যে ব্যক্তি অতীতের কথা গুলো মনে রেখে আজও মানুষের কল্যাণে সবসময় নিজেকে থাকে তারাই প্রকৃত মানুষ।
একদম-ই তাই দাদা।অতীতকে আগলে যারা ভালো কাজ করে তারাই প্রকৃত মানুষ।ধন্যবাদ আপনাকে।
সবকিছুর ই ভালো দিক এবং মন্দ দিক পাশাপাশি থাকে। কোন একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি বাক্যে উপসংহার টানা ঠিক নয়। আপনি যে উদাহরণ দিয়েছেম, গবীর থেকে শিখড়ে পৌঁছে শিকরকে অস্বীকার করা- এটা অবশ্যই অহংকার থেকেই আসে। তবে এমনো অনেক মানুষ আছে, যাদের অতীত খুবই ভয়ংকর দু:স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়! তাদের ক্ষেত্রে সেই সব ভয়ংকর অতীত মনে রাখার কোন মানেই নেই।
কিছু বেদনাময় অতীত ভুলে যাওয়া অবশ্যই প্রয়োজন এটা আমিও বলেছি আপু,ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামত ব্যক্ত করার জন্য।
আপনার কথাগুলোর সাথে আমি একেবারে একমত পোষণ করছি৷ কারণ আমাদের কখনোই আমাদের অতিতকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়৷ আমরা অনেক মানুষ আছেন যারা ধীরে ধীরে বড় উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে৷ তারা কখনোই তাদের ওদেরকে মনে রাখে না৷ প্রতিনিয়ত যারা যত উচ্ছশিখরে পৌঁছে যাচ্ছে তারা তাদের অতিতকে যেন তুচ্ছ মনে করে ফেলছে৷ এটি কখনো ঠিক নয়৷ যারা অতীতকে মনে রাখে এবং তা মনে মধ্যে রেখে প্রতিনিয়ত সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে তারাই প্রকৃত সাফল্যবান ব্যক্তি৷ এরকম সাফল্যবাব ব্যক্তি অন্যের সাফল্য দেখেও কখনোই অহংকার করে না৷ সে বুঝতে পারে যে ঐ ব্যক্তিটিও হয়তো অতীতকালে কোন খারাপ পরিস্থিতির শিকার হয়েছে এবং এখন সে উচ্ছ শিখরে পৌঁছে যাচ্ছে৷
অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷
আসলেই অতীতকে কখনোই তুচ্ছ ভাবা উচিত নয়,আপনার সুন্দর ভাবনা উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
একদম ঠিক অতীতকে ভুলে যাওয়াটা অহংবোধেরই পরিচয়।আসলে কেউ জন্ম থেকে বড়োলোক হয়ে জন্মায় না।অনেকেই আছে নিজের কঠোর পরিশ্রম করে জিরো থেকে হিরো হয়ে যায়।আসলে আমারা যতো বড়ো অবস্থায় যাই না কেন মাটিকে ও অতিতকে অস্কিকার করা মানে নিজের অস্তিত্ব কে অস্বিকার করা।শুভ বুদ্ধি উদয় হোক সে সকল লোকদের যারা কিনা নিজের অতীত ভুলে যায়।
একদম ঠিক বলেছেন দিদি,মাটি ও অতীতকে ভুলে যাওয়ার অৰ্থ নিজের অজান্তেই তার অস্তিত্বের কথা ভুলে যাওয়া।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অতীতকে ভুলে যাওয়া নিঃসন্দেহে অহংকার, এটা ঠিক কথা বোন। কারণ যে মানুষ মাটির সংস্পর্শে থেকে হঠাৎ করে বিল্ডিংয়ের মালিক হওয়ার পরে সেই মাটিকেই তুচ্ছ মনে করে, তার মত ছোট মানসিকতার লোক পৃথিবীতে নেই। তবে যারা ছোটবেলা থেকে টাকা পয়সা দেখে বড় হয় তাদের ভিতরে এই অহংকারটা খুব কম থাকে। কিন্তু যারা হঠাৎ করে বড়লোক হয়ে পড়ে, তারা নিজেদেরকে এমন কিছু মনে করে যে অহংকারে মাটিতে পা পড়ে না। এদের থেকে সবসময় দূরে থাকাই ভালো।
ঠিকই বলেছো দাদা,একটা অবস্থানে জন্ম থেকে মানসিকতা তৈরি করা আর ছোট থেকে হঠাৎ বড়লোক হয়ে অহংকার করা আলাদা মানসিকতার।ধন্যবাদ সুন্দর মতামত ব্যক্ত করার জন্য।