"অষ্টমী পূজা দেখার কিছু মুহূর্ত"
নমস্কার
অষ্টমী পূজা দেখার কিছু মুহূর্ত:
পৃথিবীতে যখন অরাজকতা,অধর্ম,অশান্তি ও হিংসা বিরাজ করে এবং চারিদিকে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে হাহাকার ধ্বনি হয় তখনই মা দেবী দুর্গার আবির্ভাব হয় মর্ত্যলোকে।পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে মাত্র কয়েকটি দিনের জন্য তিনি তার বাহন সিংহ ও সন্তানদেরকে নিয়ে মর্ত্যলোকে আবির্ভূত হন শত্রুদের বিনাশ করতে।
অষ্টমী পূজার দিনে আমি আমার বাবা মায়ের সঙ্গে লোকাল পূজা দেখতে বের হয়েছিলাম।আমার বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে লোকাল পূজাগুলি হচ্ছে।তাই বেশি দূরে না হওয়াতে আমরা বিকেলের দিকে সাজুগুজু করে বেরিয়ে পড়লাম।এরপর পায়ে হেঁটে প্রকৃতি দেখতে দেখতে পূজা মন্ডপে উপস্থিত হলাম।গ্রামে পায়ে হেঁটে পূজা দেখার আনন্দই আলাদা।
পূজা মন্ডপে পৌঁছেই দেখলাম অনেক মানুষের আনাগোনা ও ভালোই ভীড় রয়েছে।যদিও এখানে পরপর তিনটি পূজামন্ডপ রয়েছে।তার মধ্যে একটি জমিদার বাড়ির।প্রথমত এত মানুষ থাকবে বুঝতে পারিনি তবে গ্রামের পূজাতে মানুষের সমাগম দেখে ভালোই লাগছিলো।মন্ডপে গিয়েই দেখলাম মায়ের গলায় সুন্দর ফুলের মালা পরিয়ে দিচ্ছেন দুটি সরু বাঁশের সাহায্যে ওখানকার পূজাকমিটির লোকজন।আমরা দূর থেকে মাকে প্রণাম করলাম।সবাই চুপচাপ বসে আছে, কেউবা পূজার থালা হাতে কিংবা এমনি পূজা দেখতে আসছেন।
এখানে লোকাল পূজা দেখাটা আমার জন্য একেবারেই নতুন ছিল।তাছাড়া খেয়াল করলাম,সবাই পাড়ার পূজা দেখতে গেলেও কেউ ছবি তুলছিল না সেইসময়, যেটা আমার জন্য কিছুটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল।তবুও সংকোচ কাটিয়ে কিছু ছবি তুলেই ফেললাম।যদিও পুরোহিত ও অন্যান্য মানুষ মন্দিরের মধ্যে সবসময় ছিলেন।এরপর আমরা দ্বিতীয় ঠাকুর দেখতে রওয়ানা দিলাম।
পথে যেতে যেতেই এই দৃশ্যগুলি চোখে পড়ে।দ্বিতীয় পূজা মন্ডপের আগেই এই গেটটি সাজানো হয়েছে।লোকাল এই দুটি ঠাকুরের পূজা মন্ডপ একদম রাস্তার পাশেই।সুতরাং পূজা দেখার জন্য সবাইকে রাস্তায় ভীড় জমাতে হয়েছে।তারই মাঝ দিয়ে মাঝে মাঝেই যানবাহন চলাচলের জন্য সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।এই পূজা মন্ডপে গিয়েও দেখি একইরকম অবস্থা।মানুষের ভালোই ভিড় লেগে আছে।আর মন্দিরের মধ্যে ও প্রাঙ্গনে অনেক মানুষ বসে আছে।তাই সেখানে ওই মুহূর্তে ছবি তোলা অসম্ভব ছিল।
ফলে আমরা জমিদার বাড়ির মধ্যে যেখানে পূজা হচ্ছিল সেই পূজা দেখতে গিয়েছিলাম।সেখানে অবশ্য অনেক সময় ছিলাম এবং সন্ধ্যেতে বলিদানের মুহূর্তগুলি উপভোগ করলাম।যেটি পরের পোষ্টে অবশ্যই শেয়ার করবো আপনাদের সঙ্গে।যাইহোক সেখানেও বহু মানুষের ভিড় ঠেলে কোনোরকম ছবি তুললাম, যদিও সন্ধ্যার দিকে ঠাকুরের সামনে সবসময় পুরোহিত থাকেন পূজা করার জন্য।এরপর আমরা বাড়ির দিকে পুনরায় রওয়ানা দিলাম।
ফেরার পথে সেই দ্বিতীয় ঠাকুরের ছবিটি তুলে নিলাম।রাস্তাজুড়ে অনেক মানুষ ছিলেন,মন্ডপে ধনুচির ধোঁয়ায় তখন চারিদিকে মুখরিত সুবাস ছড়িয়ে পড়ছে।তাই মায়ের ছবিও কিছুটা ঝাপসা এসেছে।এরপর আবার সেই প্রথম মন্দিরে পুনরায় আসলাম।সেখানে কমিটির এক কাকুর সঙ্গে আমার বাবার আগে থেকেই ভালো সম্পর্ক রয়েছে।তাই তিনি দেখা হতেই কথা বললেন এবং মহা অষ্টমী পূজার প্রসাদ খেয়ে যেতে বললেন।ততক্ষনে বুঝেছিলাম কেন এত ভীড় জমিয়েছে মানুষ!
আসলে মানুষ সাধারণত মহা অষ্টমী পূজার দিনে সকালের দিকে অঞ্জলি দিয়ে থাকেন।কিন্তু এই বছর অষ্টমী পূজা শুরু হয়েছে সন্ধ্যার কিছুটা আগেই।তাই সবাই অঞ্জলি দেওয়ার জন্য সেই সকাল থেকে অপেক্ষা করছে মন্দির প্রাঙ্গনে উপবাস থেকে।এইজন্য মানুষের কোনো কমতি ছিল না, আমরা দূরে দাঁড়িয়ে পুরোহিতের পূজা করা দেখছিলাম।তারপর অঞ্জলি দেওয়ার মন্ত্রপাঠ শুনলাম, যদিও অন্যান্য বছর সন্ধ্যার সময় সন্ধ্যাআরতি হয়ে থাকে।কিন্তু এইবছরের সময়সূচি অনুযায়ী রাত আটটার পর ছিল সন্ধ্যা আরতি।তাই আমরা আর দেরি না করে ফল প্রসাদ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করলাম।তো এটাই ছিল আমার মহাঅষ্টমী পূজা দেখার অনুভূতি ও মুহুর্তগুলি।
আশা করি আপনাদের কাছেও অনেক ভালো লাগবে আমার আজকের পোষ্টটি।সকলে ভালো থাকবেন ও সুস্থ থাকবেন।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
ফটোগ্রাফার | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান,পালসিট |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
অষ্টমী পূজা দেখার মুহূর্ত গুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপু।পূজায় অনেক আনন্দ করেন আপনারা।বছর ঘুরে আসেন আপনাদের ঠাকুর।ভালো লেগেছে পোস্টটি।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।