"গোয়ালঘরে আগুন লাগার ঘটনা"
নমস্কার
গোয়ালঘরে আগুন লাগার ঘটনা:
কিছু ঘটনা হৃদয়বিদারক।যেটা আমাদের মনে দাগ কাটে।আবার কিছু ঘটনা মর্মান্তিক হয়ে থেকে যায় মানুষের স্মৃতিতে।তেমনি আগুন লাগার ঘটনাগুলিও খুবই স্পর্শকাতর বা মর্মস্পর্শী হয়ে ওঠে।একটু অসাবধানতায় কেড়ে নিতে পারে আমাদের সুন্দর জীবন ও মুহূর্তগুলি।
বলছি সপ্তাহ দুয়েক আগের কথা।গ্রামের একমাথা ঠিক নয়,অলি-গলি ঢুকে গিয়েছে চারিদিকে।তেমনি রাস্তার পাশেই মনোহর দাদুর বাড়ি।এখানে অধিকাংশ মানুষই কৃষি জমি ও গরু-ছাগল পালনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে।মনোহর দাদুর দুই মেয়ে,তবে এক মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকলেও ছোট মেয়ে স্বামী,সন্তান ও বৌমাকে সঙ্গে নিয়ে এখানেই থাকে।মাঠের কাজ শেষে ক্লান্ত শরীরে রাতে তখন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।মাটির দেওয়াল আর বাঁশ ও খড়ের ছাউনিতে ঘরটি।যার মধ্যে মানুষ বাস করে আর তার লাগোয়া করে অন্য পাশে গরু -ছাগলের গোয়ালঘর।এখানের গরুর সাইজ খুবই বড় তাই মুখে সবসময় ঠুসি বেঁধে রাখা হয়।রাতের বেলা তাই সব গরুর গলায় দড়ি পড়ানো থাকে।একেকটি গরুর দাম প্রায় 20 হাজার থেকে 22 হাজার টাকার মতো।
রাত তখন বারোটা নাগাদ।রাস্তা দিয়ে মানুষের চলাচল নেই বললেই চলে।হঠাৎ মনোহর দাদুর গোয়ালঘরে আগুন লেগে যায়।কীভাবে আগুন ধরে গিয়েছে সেটা নিয়ে দ্বিধা রয়েছে সকলের মনে!যাইহোক হাজারো প্রশ্নকে পিছনে ফেলে কিভাবে জানি, মনোহর দাদুরা টের পেয়ে গেল।কিন্তু তখন বেশ দেরি হয়ে গেছে।গরুগুলি ভয়ে লাফালাফি করতে লাগলো।একটি গরুর বাচ্চা দড়িসহ বাঁশের খোটা উপরে ফেললো।গরুগুলো ডাকতে লাগলো।মানুষেরা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তাই তাদের সারাও মেলেনি তেমনভাবে।জানা যায় গোয়াল ঘরের ঘুটে থেকে নাকি আগুন লাগার এই দুর্ঘটনা।
মনোহর দাদু-ই গরুর দেখাশুনা করে সবসময় ,এমনকি মাঠেও চড়তে নিয়ে যায়।তাই গোয়াল ঘর যখন আগুন ধরে গিয়ে জ্বলছিল তখন তিনি বয়স হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও গরুর ছটফট দেখে ছুটে যান সেখানে।তারপর গরুর গলার দড়ি খুলে দেন তাতে তার হাতে ও গলায় কিছুটা আগুনের আঁচ লাগে।তবে তিনি ভেবেছিলেন,বাড়ির প্রধান যেহেতু তিনি, তাই তিনি হাসপাতালে পড়ে থাকলে গরু কে দেখবে আর বাকীদেরই বা কি হবে। এইসমস্ত কথা পরে মনোহর দাদুর মুখ থেকেই শুনেছিলাম।খড়ের চালের ছাউনি,বাঁশ ও ঘুঁটে পুড়ে গিয়েছে।সঙ্গে বড় গরুর শরীর অনেকখানি পুড়ে গিয়েছে আর একটি বাছুরের কিছুটা পুড়ে গিয়েছে।টানা কয়েক দিন চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা গরুর জন্য।কিন্তু পরশুদিন যখন জানতে পারলাম তাদের একমাত্র সম্বল গরুটি আর বেঁচে নেই তখন খুবই খারাপ লাগলো মন থেকে।যদিও আমারও গরুর প্রতি আলাদা একটা টান ও ভালোবাসা কাজ করে মন থেকে।আগুন নিমিষেই ধ্বংস করে দিতে পারে সুন্দর জীবন ও সুন্দর কোনো কিছুকে।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
টুইটার লিংক
দিদি বিষয়টি জানতে পেরে খুব খারাপ লাগলো। হঠাৎ গোয়াল ঘরে আগুন এর কবে পরে। এবং লোকটি অনেক চেষ্টা করে গরু গুলোকে আগুন এর হাত থেকে রক্ষা করে। এর পরে চিকিৎসা করার পরে ও মারা যায়। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। অনেক বড় একটা ক্ষতি হয়ে গেলো। দোয়া রইল যেনো সৃষ্টিকর্তা তাদের ক্ষতি পুরুন করে দেন।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া, ঘটনাটি আসলেই দুঃখজনক।ধন্যবাদ আপনাকে।
নিরীহ প্রাণীটা এরকম আগুনে পুড়ে কতটা কষ্টে মারা গিয়েছে সেটা চিন্তা করতেই বেশি খারাপ লাগছে। আপনার মনোহর দাদুর গরু গুলোর প্রতি যথেষ্ট ভালোবাসা রয়েছে এজন্যই আগুনের মধ্যে গিয়ে গরু গুলোর দড়ি খুলে দিয়েছে। তবে গল্পটা পড়ে অনেক কষ্ট লাগলো।
ভাইয়া আমার দাদু নই, ওরা সম্পূর্ণ আলাদা অর্থাৎ বিহারী।গ্রাম সম্পর্কে দাদু বলা হয় আরকি, ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে কিছু কিছু ঘটনা অনেক কষ্ট দেয় এবং হৃদয়ের দাগ কাটে। নিরীহ ও অবলা প্রাণীগুলো কত কষ্টে এভাবে আগুনে পুড়ে গেছে আসলে ভাবতে গা শিহরণ দিয়ে উঠছে। খুবই দুঃখজনক একটি ঘটনা। এ সময়টা আগুনের ব্যাপারে আমাদের সবাইকে অনেক সাবধানে থাকতে হবে এবং সচেতন থাকতে হবে। গল্পটা পড়ে অনেক কষ্ট লাগলো। সৃষ্টিকর্তা তাকে ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা দেক।
আপনার সুন্দর মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ আপু।
ঘটনাটা আসলেই অনেক বেদনাদায়ক এবং কষ্টের। এরকম একজন সহায় সম্বলহীন গরিব মানুষের এত বড় একটা ক্ষতি হয়ে গেল, এটা তো আসলে কোন প্রকারেই মেনে নেওয়া যায় না। সত্যি কথা বলতে গোয়াল ঘরে অনেকেরই দেখেছি আগুন লেগে যায়। ঘুটে থাকার জন্য কিংবা অনেক সময় মশা তাড়ানোর জন্য গোয়াল ঘরে ধোঁয়া দেয়, সেখান থেকেও আগুন ধরে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত গরুটা কে আর বাঁচানো গেল না, এটাই হলো সব থেকে বড় কষ্টের বিষয়।
ঠিক বলেছো দাদা,আসলেই শেষটা খুবই কষ্টের।ধন্যবাদ তোমাকেও।
চুরি ডাকাতি হলেও কিছু অবশিষ্ট থাকে,কিন্তু আগুন একেবারে সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে যায়। আগুনে পুড়ে কতো মানুষের স্বপ্ন যে শেষ হয়ে যায় নিমিষেই,তার কোনো হিসাব নেই। যাইহোক মনোহর দাদুর গোয়াল ঘরে আগুন লেগে, তাদের গরু ও বাছুরের শরীরে আগুনের আঁচ লেগে পরবর্তীতে মারা যায়,এটা জেনে ভীষণ খারাপ লাগলো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া, আগুনে সবকিছু শেষ করে দেয়।ধন্যবাদ আপনাকে ও।