ভিন্নস্বাদে: "কেওড়া দিয়ে বড়ো কাঁকড়ার টক রেসিপি"

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার

কেমন আছেন বন্ধুরা?

আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আজ আমি আবারো হাজির হলাম নতুন একটি রেসিপি নিয়ে আপনাদের মাঝে।আমি সবসময় চেষ্টা করি রেসিপির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কিছু করার।কারন নতুন স্বাদের আনন্দ নিতে সকলের ভালো লাগে।তাই আজ আমি শেয়ার করবো- "কেওড়া দিয়ে বড়ো কাঁকড়ার টক রেসিপি"।

কেওড়া দিয়ে বড়ো কাঁকড়ার টক রেসিপি:

IMG_20221101_153145.jpg

IMG_20221101_144441.jpg

বন্ধুরা, কিছুদিন আগে আমি এই কেওড়া ফলের একটি শরবত রেসিপি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম।এই ফলের স্বাদ টক জাতীয়।যেটা খেতেই বেশ রুচি ফিরে আসে খাবারে।তাছাড়া এই ফলটি সুন্দরবনে বা লবনাক্ত এলাকায় পাওয়া যায়।এটা কোনো বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না আর গেলেও খুবই কম।আমার কেওড়া ফলগুলো কিছুটা পেকে গিয়েছে ।যাইহোক আমি এটি সুন্দরবনের বড়ো কাঁকড়া দিয়ে রান্না করেছি।বড়ো কাঁকড়ার রেসিপি যে না খাবে, সে কখনো এর স্বাদ অনুধাবন করতে পারবে না।যাইহোক আজ আমি টক জাতীয় একটি রেসিপি উপস্থাপন করছি।আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের কাছে।তো চলুন শুরু করা যাক---

উপকরণসমূহ:

CollageMaker_20221101_144809776.jpg

উপকরণপরিমাণ
কেওড়া ফল
বড়ো কাঁকড়া2 টি
লবণ2 টেবিল চামচ
হলুদ1.5 টেবিল চামচ
পেঁয়াজ কুচি2 টি
জিরা ও শুকনা মরিচ বাটা4 টেবিল চামচ
তেজপাতা2 টি
গোটা শুকনা মরিচ4 টি
সরিষার তেল3 টেবিল চামচ
জল

প্রস্তুতপ্রণালি:

ধাপঃ 1

IMG_20221101_143402.jpg
প্রথমে আমি দুটি বড়ো কাঁকড়া নিয়ে নেব।

ধাপঃ 2

IMG_20221101_143413.jpg
এবারে কাঁকড়া দুটি বটির সাহায্যে কেটে পরিষ্কার করে ধুয়ে নেব।

ধাপঃ 3

IMG_20221101_153231.jpg
◆চুলায় একটি কড়াই মিডিয়াম আঁচে বসিয়ে দেব এবং সামান্য লবণ ও হলুদ মেশানো জল দিয়ে কাঁকড়াগুলি সেদ্ধ করে ভেঁজে নেব নেড়েচেড়ে।এরপর একটি পাত্রে নামিয়ে নেব।

ধাপঃ 4

IMG_20221101_143301.jpg
এখানে আমি কিছু কেওড়া নিয়ে নিলাম।কেওড়াগুলির মুটকি ফেলে দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিলাম জল দিয়ে।

ধাপঃ 5

IMG_20221101_143630.jpg
এরপর পরিমাণ মত একটি পাত্রে জল নিয়ে নেব।তারপর চুলায় মিডিয়াম আঁচে বসিয়ে দেব।এবারে কেওড়াগুলি হালকা করে সেদ্ধ করে নেব।কেওড়ার গায়ে হালকা ফাটল ধরলে নামিয়ে নেব।

ধাপঃ 6

IMG_20221101_143319.jpg
তো আমার কেওড়া সেদ্ধ করা হয়ে গেছে ।এখন ঠান্ডা হতে রেখে দেব কিছুক্ষণ।সেদ্ধ কেওড়াগুলি ঠান্ডা হয়ে গেলে হাত দিয়ে কেওড়ার দানা ফেলে দেব ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে।

ধাপঃ 7

IMG_20221101_143332.jpg
এরপর কেওড়ার খোসা চটকে রস বের করে নেব।তো আমার কেওড়ার রস বের করে নেওয়া হয়ে গেছে।

ধাপঃ 8

IMG_20221101_144154.jpg
পুনরায় চুলাতে কড়াই বসিয়ে সামান্য তেল দিয়ে নেড়েচেড়ে কেওড়ার রস দিয়ে দেব।

ধাপঃ 9

IMG_20221101_144224.jpg
কিছুক্ষণ পর স্বাদ অনুযায়ী লবণ ও হলুদ মিশিয়ে তরকারিটি নেড়েচেড়ে নেব এবং বলক আসলে ভেঁজে রাখা কাঁকড়াগুলি দিয়ে ফুটিয়ে নেব।

ধাপঃ 10

IMG_20221101_144007.jpg
তো আমি এখানে বটির সাহায্যে পেঁয়াজ কুচি করে কেটে নিলাম।

ধাপঃ 11

IMG_20221101_143944.jpg
এরপর সামান্য জল দিয়ে জিরা ও শুকনো মরিচ মিহি করে বেঁটে নেব শীল-পাটার সাহায্যে।তারপর একটি পাত্রে তুলে নেব।

ধাপঃ 12

IMG_20221101_144031.jpg
এবারে তেজপাতা ও গোটা শুকনা মরিচ নিয়ে নেব কয়েকটি।

ধাপঃ 13

IMG_20221101_153215.jpg
এরপর তরকারিটি পাত্রে নামিয়ে কড়াইতে তেল দিয়ে দেব।একইসঙ্গে তেজপাতা ও শুকনা গোটামরিচ দিয়ে নেড়েচেড়ে ভেঁজে নেব 3 মিনিট মতো।3 মিনিট পর পেঁয়াজ কুচি ও সমস্ত বাটা মসলা দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নেব।

ধাপঃ 14

IMG_20221101_144331.jpg
মসলা কষিয়ে নেওয়া হয়ে গেলে তরকারীটি কড়াইতে ঢেলে দিয়ে মিশিয়ে নেব এবং কয়েক মিনিট ফুটিয়ে নেব।তো আমার রেসিপিটা তৈরি করা হয়ে গেছে।

ধাপঃ 15

IMG_20221101_144417.jpg
এখন এটা কড়াই থেকে নামিয়ে নিলাম একটি পাত্রে।তো তৈরি করা হয়ে গেল আমার "কেওড়া দিয়ে বড়ো কাঁকড়ার টক রেসিপি"।

পরিবেশন

IMG_20221101_144355.jpg
এবারে এটি গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করতে হবে।এটা দেখতে যতটা সুন্দর ও লোভনীয় খেতে, তার থেকে অনেক বেশি স্বাদের ও টেস্টি।

আশা করি আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের রেসিপিটা ভালো লাগবে।সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ও সাবধানে থাকবেন।

🌸🌸🌸ধন্যবাদ সকলকে🌸🌸🌸

ক্যামেরা: poco m2

অভিবাদন্তে: @green015

Sort:  
 2 years ago 

আপু কেওড়া ও সুন্দরবনের আবার বড়ো কাঁকড়াও সুন্দরবনের। সুন্দরবনের সাথে আপনার সম্পর্ক তো ভালই দেখতেছি। এর আগে কেওড়া ফলের জুস দেখেছিলাম আর আজকে দেখলাম কেওড়া আর কাকড়ার টক রেসিপি। একটি কথা সত্যি বলেছেন এই রেসিপি কেউ না খেলে, ইহার স্বাধ কেউ অনুধাবন করতে পারবে না। ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাইয়া, দুটোই সুন্দরবনের।আপনার সাবলীল মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আপু আমি কখনো কেওড়াও খাইনি কাকড়াও খাইনি। তাই এগুলো খেতে কেমন সেটি আসলে আমি জানিনা। ওইযে আপনি বললেন যে কখনো খাইনি সে আসলে কখনো অনুধাবন করতে পারবে না😊।রেসিপি দেখে ভালোই মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ আপনাকে আপু সুন্দর এই রেসিপির জন্য।

 2 years ago 

সত্যিই আপু ,এর অফুরন্ত স্বাদ না খেলে বোঝা সম্ভব নয়।আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

কাকড়া খেয়েছি পতেঙ্গা বীচে ভাজা । কিন্তু কেওড়া ফলটি ট্যাং ফল নামেও পরিচিত। কাকড়া কাটা বেশ কঠিন তাই এটা করাও হবে না। তাবে কোথাও কিনতে পাওয়া গেলে খেয়ে দেখবো। রেসিপির নামটা জানা হলো আপনার রেসিপি দেখে। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য

 2 years ago 

আমার কাছে তো খুবই সহজ লাগে আপু কাঁকড়া কাটতে।অবশ্যই সুযোগ পেলে খেয়ে দেখবেন।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনার রেসিপিটি দেখে অনেক ইউনিক মনে হচ্ছে। তবে কেওরা কখনো খাওয়া হয়নি কাকরাও খাওয়া হয়নি। রেসিপি- ধরন দেখে মনে হচ্ছে রেসিপিটি অনেক সুস্বাদু হয়েছে। রিসিপির কালার টা অনেক সুন্দর আসছে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপনের জন্য।

 2 years ago 

হ্যাঁ আপু,খুবই সুস্বাদু রেসিপি।আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

কেওড়া ফল এই প্রথম দেখলাম আর কাকড়া জীবনে একবার খেয়েছি। ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে আপনার রান্না। এর পর সুন্দরবন গেলে সাথে করে কেওড়া ফল নিয়ে আসব। ধন্যবাদ দিদি।

 2 years ago 

অবশ্যই নিয়ে আসবেন ভাইয়া, দারুণ টেস্টি ফল।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

কি বলবো আপু খুব ইউনিক একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন যেটি প্রথমবারের মতো দেখতে পেলাম তাও আপনার মাধ্যমে।কেওড়া দিয়ে বড়ো কাঁকড়ার টক রেসিপি খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

 2 years ago 

আপনার কাছে রেসিপিটা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago (edited)

রেসিপি দেখে তো জীভে জল চলে আসল।বানিয়ে খেতেও ইচ্ছা করছে খুব।কিন্তু এমন ২টি উপাদানের রেসিপি বানিয়েছেন যা আমাদের এলাকা তে বিরল।তবে এই খাবারের অনেক নাম ডাক শুনেছি দক্ষিণবঙ্গের বন্ধুদের কাছে।ধন্যবাদ দিদি দারুন একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

হ্যাঁ এটা দক্ষিণের দিকেই পাওয়া যায় বেশি।ধন্যবাদ দাদা,আপনার অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য।

 2 years ago 

কেওড়া আমরা যেখানে থাকি সেখানে তেমন একটা পাওয়া যায় না তাই এই রেসিপিটি আমাদের আর করে খাওয়া হয় না। কেওড়া দিয়ে বড়ো কাঁকড়ার টক এই রেসিপিটি আমি অনেক আগে খেয়েছি। এই রেসিপিটি আমার ঠাকুরমা খুব ভালোভাবে করতে পারত। অনেকদিন আগে খেয়েছি তাই এর স্বাদ কেমন ছিল সেটা ভুলে গেছি।

 2 years ago 

আপনার ঠাকুরমার কথা জেনে ভালো লাগলো দাদা।এর স্বাদ টক স্বাদের।ধন্যবাদ আপনার মতামত জানানোর জন্য।

 2 years ago 

সেই অনেক দিন আগে কাকড়া খেয়েছি ৷ তবে এখন কাকড়া দেখাই যায় না ৷ আপনি খুব চমৎকার করে কেওড়া দিয়ে বড়ো কাঁকড়ার টক রেসিপি টি রান্না করেছেন ৷ দেখে তো মনে হয় অনেক টেস্ট হয়েছে ৷

 2 years ago 

হ্যাঁ,অনেক টেস্টি ছিল।আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60752.38
ETH 2453.49
USDT 1.00
SBD 2.63