"সকলকে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার শুভেচ্ছা ও দাওয়াত এবং নাড়ু রেসিপি"(10% বেনিফেসিয়ারী লাজুক খ্যাককে)
সকলকে জানাই"কোজাগরী লক্ষ্মী মায়েরপূজার"শুভেচ্ছা
আজ পূর্ণিমা রাত।এই দিনে লক্ষ্মীপূজা হয়েছে সারাটা দিন ধরে।তাই আজকের রাত জাগরণ রাত।পূর্বে মানুষ এই নীতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন সারারাত জেগে কিন্তু এখন আর তা প্রচলন নেই।আমার মায়ের মুখে শুনেছি মা যখন ছোট ছিল তখন অর্থাৎ পূর্বে বাচ্চারা চাঁদের ফুটফুটে আলোয় লুকোচুরি খেলতো,বড়োরা হাডুডু খেলতো এবং সারাগ্রামে একটি কিংবা দুটি টেলিভিশন থাকায় সিডিতে সিনেমা দেখতেন গ্রামবাসী জড়ো হয়ে।যাইহোক আজ লক্ষ্মীপূজা অর্থাৎ দুর্গাপূজার পর এই লক্ষ্মীপূজা বিশেষভাবে পালিত হয় ঘরে ঘরে।এমনিতেই প্রতি বৃহস্পতিবারে অনেকেই লক্ষ্মীর ব্রত করেন।কিন্তু এটি হল "কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা" ।তাই এই পূজা সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে বড়ো করে ঠাকুর ডেকে কিংবা বাড়িতে ঘরোয়া ভাবে ছোট করে পুঁতি পড়ে করা যায়।কারণ লক্ষ্মীদেবী ধনসম্পদের দেবী এবং সুখ -শান্তির দেবী।তাই পরিবারের কল্যাণের জন্য এই পূজা করা হয়।আমি ও আজ সারাদিন নির্জলা উপোস থেকে এই পূজা করেছি ঘরোয়াভাবে পুঁতি পড়ে।তাই সারাটা দিন পূজার উপকরনাদি সাজাতে পুরোটা সময় ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে কেটেছে।
এই লক্ষ্মীপূজায় যার যেমন সামর্থ্য সে তেমনভাবেই পালন করেন।কিন্তু লক্ষ্মীপূজার কিছু বিশেষ খাবার প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয়।তারমধ্যে নারিকেলের নাড়ু,খই এবং আতপ চাউল,কলা,বাতসা এবং পঞ্চমিষ্টি সহযোগে তৈরি নৈবেদ্য অন্যতম।এছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রত্যেকের বাড়িতে এই দিনে লুচি,সুজির হালুয়া,খিচুড়ি ,নারিকেলের নাড়ু এবং খই বাড়িতেই তৈরি করে প্রসাদ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।এছাড়া অন্যান্য ফলমূল তো আছেই।আমরা যেহেতু ঘরোয়াভাবে করেছি তাই শুধুই মা বাড়িতে পুরোনো ধান দিয়ে খই ভেজেছিলেন আর আমি নারিকেলের নাড়ু বানিয়েছিলাম।আজ সকাল থেকেই সারাদিন পূজা হয়েছে।রাত সাড়ে সাতটা অব্দি সময় ছিল পূজা করার।এইজন্য আমি সন্ধ্যায় পুঁতি পড়ে লক্ষ্মীমায়ের ঘট স্থাপন করে পূজা সম্পন্ন করেছিলাম সময়ের মধ্যে।পূজা শেষে লক্ষ্মীমাকে প্রণাম করে তারপর নৈবেদ্য মেখে দেবীমাকে সবকিছু অল্প অল্প করে সমর্পণ করতে হয়।সবশেষে সকল মানুষকে রাত্রে ও পরদিন সকাল অবধি পূজার প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
গত বৃহস্পতিবারের @hangout এ আমাদের প্রিয় মডারেটর শুভ দাদা আমাকে নারিকেলের নাড়ু রেসিপির কথা বলেছিলেন।তখন দুর্গাপূজা চলাকালীন সময় ছিল।কিন্তু আমি বলেছিলাম নারিকেলের নাড়ু দুর্গাপূজার সময় অতটা জনপ্রিয় নয় কিন্তু লক্ষ্মীপূজার সময় বেশি জনপ্রিয়।
সেইভাবে দেখতে দেখতে লক্ষ্মীপূজা এসে গেল।আর সকলের বাড়িতে সকাল থেকেই ধুম পড়েছে এটা ওটা তৈরির।
[তো @shuvoদাদা আপনাকে লক্ষ্মীপূজার শুভেচ্ছা ও পূজার প্রসাদ এবং নারিকেলের নাড়ু খাওয়ার দাওয়াত দিলাম।এছাড়া আমার শ্রদ্ধেয় সকল এডমিন ও মডারেটর দাদারাসহ ,আমার প্রিয় আমার বাংলাব্লগবাসীর সকলকে জানাই লক্ষ্মীপূজার শুভেচ্ছা ও প্রসাদ খাওয়ার দাওয়াত।আশা করি ভার্চুয়ালি হলেও সাদরে গ্রহণ করবেন সকলেই।যদি আমি নিজে হাতে আপনাদের সকলকে প্রসাদ এবং নারিকেলের নাড়ু খাওয়াতে পারতাম তো আমার বড়োই আনন্দ হতো।]
নারিকেলের নাড়ু তৈরির সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি:-
উপকরণ:
1.গোটা নারিকেল - 4 টি
2.চিনি - 250 গ্রাম
3.ছোট এলাচের গুঁড়ো - 2 টি (অপশনাল)
4.গুঁড়ো দুধ - 3 টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রনালী:
●প্রথমে আমি 4 টি গোটা নারীকেল নিয়ে নিলাম।
●নারীকেলগুলির গায়ের ছুবলি দা এর সাহায্যে পরিস্কার করে নিলাম।
●এরপর দা দিয়ে সবগুলো নারিকেল মাঝবরাবর ফাটিয়ে নেব।
●একটি হাত কুরানীর সাহায্যে নারিকেলগুলি ছোট ছোট করে কুরিয়ে নিলাম।
●তো আমার সব নারীকেল কুরানো শেষ।
●এরপর আমি পরিমাণ মতো নারিকেলের মধ্যে চিনি দিয়ে দেব।
●এবার চিনি নারিকেলের সঙ্গে মিশিয়ে নেব।যত ভালোভাবে মেশানো হবে নাড়ু ততটাই মজার হবে খেতে।
●তো আমার নারিকেলের সঙ্গে চিনি মেশানো হয়ে গেল।
●এরপর একদম লো আঁচে একটি কড়াই ধুয়ে বসিয়ে দেব চুলায়।তারপর 2 টি এলাচের মুখ ফাটিয়ে হালকা করে ভেঁজে নেব।এটি নাড়ুর সুন্দর স্মেলের জন্য।
●এরপর পাটায় রেখে গুঁড়ো করে নেব।
●আবার পুনরায় চুলায় কড়াই বসিয়ে দেব।
●এবার চিনি মিশ্রিত নারীকেলগুলি ঢেলে দেব কড়াইতে।তারপর একটি বড়ো চামচের সাহায্যে অনবরত নাড়তে থাকবো ।যাতে নিচে পুড়ে না যায়।
●এরপর নারিকেল সেদ্ধ হয়ে নারিকেল থেকে বের হওয়া জল শুকিয়ে আঠার মতো করে নেব।
●এবার নারিকেলের মধ্যে গুঁড়ো দুধ ছড়িয়ে দেব।
●তারপর সুগন্ধির জন্য এলাচের গুঁড়ো ছড়িয়ে দেব।
●সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নেব ভালোভাবে।
●তারপর আরও কিছু সময় অনবরত নেড়েচেড়ে নামিয়ে নেব।
●এরপর হাতের তালুতে একটু সরিষার তেল মেখে গরম গরম অল্প অল্প নারিকেল নিতে হবে।
●তারপর গোল আকারের করে নাড়ু বানিয়ে নেব।
●তো আমার সকল নাড়ু তৈরি করা হয়ে গেছে।এইবার মা লক্ষ্মীদেবীর প্রসাদ হিসেবে ব্যবহার করেছি।
আমার লোকেশন
পূজা শেষে সকলকে নাড়ু ও সকল প্রকার ফলমূল প্রসাদ বিতরণ করতে হয়।
লক্ষ্মীমা সকলকে যেন মঙ্গল করেন এবং সুখ -শান্তি দান করেন এই কামনায় করি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
সকলেই ভালো এবং সুস্থ থাকবেন।
আপু আপনার দাওয়াত গ্রহণ করলাম। আমি প্রতি বছর আমার এক বন্ধুর বাড়িতে পুজোর সময় নাড়ু খাই। এবারে খেয়েছি। অনেক ভালো লাগে নারিকেল নাড়ু। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আমি অনেক অনেক খুশি হলাম ভাইয়া যে আপনি আমার দাওয়াত গ্রহণ করেছেন এটা জেনে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।ভালো থাকুন সবসময়।
নারিকেলের নাড়ু আমার খুব পছন্দের আর খেতেও দারুন লাগে। আজকে আমিও খেয়েছি, ভালোই লাগলো অনেকদিন বাদে খেয়ে। যাইহোক তোমার নাড়ু বানানোর রেসিপি অনেক ভালো হয়েছে।
ঠিক বলেছেন দাদা।নারিকেলের নাড়ু অনেক মজার হয় খেতে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
অনেক সুন্দর একটি নাড়ু রেসিপি, আপু। ছবিটিতে দেখে অনেক ভালো লাগছে।নাড়ু আমার একটি প্রিয় খাবার। আর আমাদেরকে নাড়ু বানানোর প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে দেখানোর জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ।
আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে আমি খুবই আনন্দিত।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া,আপনার সুচিন্তিত মতামত জানানোর জন্য।
প্রথমেই ধন্যবাদ দিদি আমন্ত্রণ দেওয়ার জন্য। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও যাওয়া সম্ভব না দূরত্বের কারণে। নাড়ু আমার বেশ পছন্দের খাবার। নারিকেলের নাড়ুটা খুব সুন্দর তৈরি করেছেন। দেখেই খেতে ইচ্ছা করছিল।
ভাইয়া, কি আর করা যাবে।দূর থেকে উপভোগ করতে হবে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
উপস্থাপনা টা দারুন হয়েছে। মা লক্ষী দেবী সকলের মঙ্গল করুক এই কামনা করি। আমাদের বাড়ির পূজা সকলের মাঝে ভাগ করার জন্য অনেক শুভেচ্ছা তোমাকে। দেবী মা লক্ষী দেবী মায়ের কৃপা সদা আমাদের সকলের উপর যেনো থাকে, এই কামনা করি মায়ের কাছে।
ঠিক বলেছো দাদা।লক্ষ্মীদেবী সবার মঙ্গল করুকএই কামনায় করি।অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।
নারকেলের নাড়ু আমার অনেক পছন্দের খাবার।দেখলে মনে হয় যে যত দিবেন অত খেতে পারব। আপনার রেসিপি টা দেখে মনে হচ্ছে যে নাড়ু গুলো অনেক সুস্বাদু হয়েছে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপু চলে আসুন আমাদের বাড়ি।নাড়ু খাওয়ার দাওয়াত রইলো।নাড়ুর পরিমাণ নিয়ে সমস্যা হবে না।😊হ্যাঁ এটি খুবই স্বাদের হয়েছিল।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
নারিকেলের নাড়ু পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর। পূজা নিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন আপনি। আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া আর ভালবাসা রইলো প্রিয় আপু।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া।নাড়ু সবারই প্রায় পছন্দের।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
🙏🙏🙏❤️❤️❤️
😊😊
অনেক সুন্দর নাড়ু বানিয়েছেন আপু। ছবিগুলো ভালো ছিল। দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। ধাপগুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাদের জন্যই তো শেয়ার করা ভাইয়া।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
নারিকেলের নাড়ু সত্যিই অসম্ভব ভালো লাগে খেতে। এতো সুস্বাদু এগুলো মুড়ির সাথে খেতে ভালো লাগে। আপনি এত সুন্দরভাবে পরিবেশন করেছেন মনে হচ্ছে অত্যন্ত সুস্বাদু হয়েছে
আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু
আপনি ঠিক বলেছেন ভাইয়া মুড়ি -খইয়ের সঙ্গে খুব ভালো লাগে নাড়ু।হ্যাঁ এটি খুব সুস্বাদু হয়েছিল।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সুচিন্তিত মতামত জানানোর জন্য।
নারিকেলের নাড়ু আমার অনেক বেশিই প্রিয়। তবে বানাতে পারিনা বান্ধুবিদের বাসায় আগে পুজো হলে স্কুল,কলেজে নিয়ে আসতে বলতাম। কলেজ শেষ হয়ে গেলো আর কিছুই করার নাই এখন।
আপু আপনি এভাবে বানিয়ে দেখবেন একদম সহজ বানানো।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।