আমার অনুভূতির মিশেলে:"একটি কলম"(10% বেনিফেসিয়ারী লাজুক খ্যাককে)
নমস্কার
একটি কলম:
আমি খুবই ছোট্ট একটি জড় বস্তু।আমার বসবাস মানুষের ছোট্ট বুক পকেটে,ব্যাগের কোণে রাখা ছোট্ট প্লাস্টিকের বক্সে কিংবা ট্রেন-বাসে বিক্রেতার হাতে হাতে আবার কখনো বা ঝুলন্ত অবস্থায় দোকানের সামনে। মানুষ আমাকে ভালোবেসে প্রয়োজনে টাকা দিয়ে কেনে কেউ সস্তায় আবার কেউবা দামে।একদিন আমাকে উপহার হিসেবে নিয়ে যাওয়া হলো এক প্রেমিকের কাছে।দোকানদার একগাদা সোনালী রঙের চিকচিকি জড়িয়ে দিলেন আমার গাঁয়ে তাতেই আমার দম বন্ধ হওয়ার জোগাড়।তবুও প্রেমিক মানুষের উপহার হতে পেরে আমি ধন্য।
আমাকে সযত্নে নিয়ে বুক পকেটে রাখা হলো।
বাড়ি গিয়ে আমার গায়ে জড়ানো ব্যান্ডেজ খুললো প্রেমিক।প্রেমিকের ভালোলাগা প্রদর্শন হলো আমার শরীরে কয়েকটা চুম্বনের মাধ্যমে।তারপর টেবিলের কোণে রাখা কলমদানিতে আমার স্থান হলো।সেখানে আমার মতো আরো কয়েকজন রয়েছে। যাদের জীবন অর্ধেক ফুরিয়েছে আবার কারো শূন্য দেহ পড়ে রয়েছে।হয়তো তারাও সবাই একদিন আমার মতই রঙিন ছিল এখন তাদের রং ফুরিয়েছে।পরদিন থেকেই আমার প্রয়োজন হলো প্রেমিকের নিজ নাম লেখার ,কখনো বা ছবি আঁকার আবার কখনো সাদরে আলতো ছুঁয়ে রেখে দেওয়ার।আমিও প্রতিদিন স্কুলে যাই কিন্তু খুবই কম কাজে লাগি।এভাবে স্মৃতি হিসেবে রইয়ে গেলাম প্রায় একটি বছরের কাছাকাছি।শরীরে আর আগের মতো রং নেই,তাই আমার গুরুত্ব কমেছে ,কমেছে আমার প্রতি ভালোবাসা।
এভাবে বিরক্তির পাত্র হয়ে কয়েকটি দিন কাটলো আমার।হয়তো আগামীদিনই আমার শেষ দিন।সেটার ভয় কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল আমাকে।পরদিন ভয়টা সত্যি হলো -সমস্ত রং ফুরিয়ে আমি নিঃসার দেহ নিয়ে জঞ্জালের পাত্র হলাম।আমার স্থান কলমদানি থেকে ডাস্টবিনে হলো।সেই যে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার ভয়ানক পরিস্থিতিতে দুমড়ে মুচড়ে গেল আমার শরীরের কয়েকটি অংশ।আমিই হচ্ছে সেই প্রেমিকার দেওয়া ছোট্ট উপহার একটি কলম।
(আসলে রং ফুরালে কোনো কিছুরই গুরুত্ব থাকে না।সেটা যেকোনো ছোট থেকে বড় ,সাধারণ থেকে অতিসাধারণ জিনিসই হোক না কেন।রংহীন সবকিছুই অচল পৃথিবীতে।যতদিন সবকিছু নতুন থাকবে ততদিনই তার কদর, পুরোনো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুই মলিনতায় ভরা।)
আশা করি কলমের জীবনকাহিনীটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।
টুইটার লিংক
আমি মনে করি পৃথিবীতে কেউই তার নিজের অবস্থানটা সঠিক জায়গায় ধরে রাখতে পারে না একটা সময় সেটা হারাতে হয়, হোক সেটার নিজের ইচ্ছায় অথবা মৃত্যুর মাধ্যমে। আসলে যখন আমাদের কোন কিছুর প্রয়োজন হয় আমরা তখন সেই জিনিসটা পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ি কিন্তু যখন প্রয়োজন শেষ হয়ে যায় তখন তাকে ছুড়ে ফেলে দিতে আমরা বিন্দুমাত্র ভাবি না। আসলে এই কলমের ক্ষেত্রেও তাই এভাবে আসলে আমি কখনো ভাবি নি। আপনার এই পোস্ট করে আমার খুবই ভালো লাগলো দিদি, খুবই চমৎকার কিছু কথা আপনি আমাদের মাঝে লিখেছেন।
পাঠকের ভালো লাগলেই লেখকের সার্থকতা।খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার মন্তব্য পড়ে,অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু একদম ঠিক বলেছেন যতদিন রং থাকে ততদিন সব জিনিসের কদর।কলোমটির ও তাই ।আপনি অনেক ভেবে লিখেছেন।একটা কলমের জীবনে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত যা হয় সব কিছুর জীবনেও ঠিক তাই।কলমটি প্রথমে বুক পকেট তারপর ডাস্টবিন।ডাস্টবিনে যাওয়ার আগেরদিন কলোমটিরও চিন্তা হয় যে কাল তার শেষ দিন।সবার ক্ষেত্রেই একই মনে হয় তাহলে।ধন্যবাদ আপু ভালো লিখেছেন ব্লগটি।
যেকোনো রঙিন জিনিসের সঙ্গে মানুষের জীবনের ও সাদৃশ্য রয়েছে আপু,অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি ঠিকই বলেছেন রং ফুরালে কোন কিছুরই গুরুত্ব থাকেনা। সত্যিই যতদিন একটা জিনিস নতুন থাকে ততদিন তার গুরুত্ব খুবই বেশি থাকে যখন তা পুরাতন হয়ে যায় তখন তার গুরুত্ব কেউ দেয় না। সত্যি বলেছেন আপনি যে রংহীন সবকিছুই অচল পৃথিবীতে। সত্যি মানুষের ইচ্ছায় সে একটা জিনিস কিনেছে এবং তার প্রয়োজনে ব্যবহার করে ওই জিনিসটিকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে পৃথিবী খুবই অদ্ভুত তাই না। যাই হোক খুবই ভালো লিখেছেন এমনিতে।
আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো ভাইয়া।ঠিকই বলেছেন, রংহীন সবকিছু অচল।ধন্যবাদ আপনাকে গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
আপনি ঠিক বলেছেন এই দুনিয়ায় অনেক বড় স্বার্থপর।আপনি যতক্ষণ রং ছড়াতে পারবেন ভাল।রং শেষ হয়ে গেল আপনাকে ভালো লাগাও শেষ হয়ে যাবে।আমাদের চারপাশে এমন কিছু মানুষ আছে যারা স্বার্থের জন্য ব্যবহার করে স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে ছুড় মেরে ফেলে দেয়।আপনি সুন্দর একটি কলমের আত্ম কাহিনী শেয়ার করেছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ একটি ইউনিক গল্প লেখার জন্য।
যথার্থ বলেছেন আপু,রং ফ্যাকাসে হয়ে গেলে গুরুত্ব ও যেন কেমন ফ্যাকাসে হয়ে যায়।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যি আপু পৃথিবী বড় অদ্ভুত। কলম কেনো যেকোন জিনিসের যতক্ষণ রং থাকবে,তার কদর ততক্ষণে থাকবে।প্রথমে কতো যত্ন করে পকেটে রেখেছে, তারপর প্রয়োজন শেষ হলেই ডাসবিনে ফেলে দিয়েছে। আসলে প্রয়োজন শেষ হলে সব কিছুই শেষ হয়ে যায়।ধন্যবাদ আপু।
সবই প্রয়োজনের খেলা আপু,অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে কি কর্মক্ষমতা কমে আসলে ,তার গুরুত্ব কমে যায়। তাছাড়া পুরোনো হলে ও যত্ন কমে যায়, আর যদি রংহীন হয় তাহলে তো আরো নেই যতই প্রেমিক কিংবা প্রেমিকার দেওয়া গিফট হোক না কেন। যাই হোক কলমের আত্মকাহিনী ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ
ঠিক বলেছেন আপু,প্রেমিকের দেওয়া গিফট ও তখন তুচ্ছ মনে হয়।ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।
দিদি এটা শুধু কলম নয় ৷ বাস্তবে জীবনে ও তুমি আমি যতদিন কিছু দিতে পারবো ৷ ততদিন ভালো আর যখন দিতে পারবে না তখন ছুড়ে ফেলবে ৷
যে কলম দিয়ে জীবন চলে আজ সমস্ত জীবন রযেছে কাগজে কলমে লিপিবদ্ধ ৷ তবুও তার গুরুপ্ত ফুরিয়ে গেলে তাকে ফেলে দেয় ৷
প্রিয় দিদি কমল নিয়ে লেখা সত্যি দারুন লিখেছেন ৷ সব কথা বাস্তবিক ছিল ৷ ধন্যবাদ দিদি ভালো থাকবেন ৷
মানুষ এখন শুধু প্রয়োজনের পিছনে দৌড়ায়, ধন্যবাদ দাদা।
এই কলমের কাহিনীটির সঙ্গে মানুষের জীবনের খুব মিল আছে । কলমের যেমন ধীরে ধীরে কালি শেষ হয়ে গেলে জীবন নিঃশেষ হয়ে যায় মানুষের জীবনও ধীরে ধীরে সময় ফুরিয়ে যায়। খুব সুন্দর কলমের কাহিনী উপস্থাপন করেছেন। প্রতিটি লাইন পড়তে খুব ভালো লাগছিল। লেখার মধ্যে কেমন একটা আকর্ষণ ছিল। প্রেমিকার স্মৃতি শেষমেষ ডাস্টবিনে গিয়ে শেষ হলো। প্রতিটি জিনিসই এমন শুরুর দিকে যে মূল্য থাকে শেষের দিকে আর কোনই মূল্য থাকে না ।
ঠিক বলেছেন আপু,সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু যেন ফিকে হয়ে যায়, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যি আমাদের প্রয়োজনে যখন আমরা একটি জিনিস ব্যবহার করি তা ফুরিয়ে গেলে আমরা তাকে ডাস্টবিনে ফেলে দিই। আমাদের পৃথিবী কতই অদ্ভুত। ভালোবাসার মানুষকে কলমটি দেওয়ার পর নতুন নতুন যত্ন করে রেখে দেয় কিন্তু আস্তে আস্তে সেই কলমটি ব্যবহার করে যখন তার কালি ফুরিয়ে যায় তখন সেই কলমটিকে তা সে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। যতদিন সেই জিনিসের রং থাকে ততদিন তাকে যত্নে রাখে কিন্তু যখন ওই জিনিসটার রং আর থাকে না তখন সেই জিনিসটির গুরুত্ব আর দেয় না। আপনি অসাধারণ একটি গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন যা পড়ে আজকে অনেক কিছুই বুঝতে পারলাম।
রংহীন জীবন কেউ পছন্দ করেন না,আপনার গঠনমূলক মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে।