"জীবনের প্রথম ভোট দেওয়ার অনুভূতি"

কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আমিও বেশ ভালোই আছি।আজ আমি @green015 হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে সম্পূর্ণ নতুন একটি অনুভূতি নিয়ে।

জীবনের প্রথম ভোট দেওয়ার অনুভূতি:

বন্ধুরা,আমাদের কমিউনিটিতে রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা করা যেহেতু সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ তাই আমি ওই বিষয়ে কোনো কিছুই লিখতে চাইনা।শুধুমাত্র আজ আমি আমার জীবনের প্রথম ভোট দেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করবো।তো কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক---

সকলের জীবনের প্রথম কোনো কিছুর অনুভূতিটা একটু ব্যতিক্রমধর্মী হয়ে থাকে।আমার জীবনেও সেটাই হয়েছে।প্রথমত একটু ভয় ভয় লাগছিল কিভাবে ভোট দেব, কতক্ষণ লাইন টানতে হবে এবং কত দূরের পথ যেতে হবে।আসলে যখন আমার পরিবার কলকাতায় ছিলেন তখন তারা পৌরসভার ভোট দিতেন।কিন্তু এখন যখন আমরা স্থান পরিবর্তন করেছি সেহেতু আমাদের পঞ্চায়েত ভোট দিতে হবে।

এমনিতেই নতুন জায়গা তার উপরে আবার আমি নতুন ভোটার।তাই উত্তেজনাটা একটু বাড়তি ছিল আমার।অবশ্য এখানের ভোটের বিষয়টি আমার সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সবার কাছেও নতুন ছিল।যাইহোক সবাই স্থির করলাম যে, আগে আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়বো মা,বাবা এবং আমি।একটি টোটো ঠিক করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম কিন্তু অনেক সকালে যেতে সে রাজি নই।

যেকোনো জায়গায় লাইন টানা খুবই বিরক্তিকর।তারপর আবার যখন তখন বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা।তাই আমরা ভিড় এড়ানোর জন্য ভোর 5 টায় উঠে ফ্রেস হয়ে নিলাম।বাড়ি থেকে 6 টায় বেরিয়ে পড়লাম খাড়গ্রামের মোড় থেকে টোটো ধরবো বলে।কতটা দেরি হবে সেই চিন্তা করেই এক বোতল জল ও সঙ্গে ছাতা নিয়ে নিলাম।খাড়গ্রামের মোড়ে যেতেই দেখলাম কোনো টোটো নেই।তাই গলির মধ্যে দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম।

সকালে প্রকৃতির মাঝ দিয়ে হাঁটতে ভালোই লাগছিল।এই রাস্তা আমার জন্য একেবারেই নতুন ছিল।যেতে যেতেই দেখলাম দুর্গা বাড়ি।এই দুর্গা বাড়িটি জমিদার বাড়ির মতো তৈরি করা আর এর ভিতরে দুর্গাপূজা করা হয়।পথ চলতে চলতে অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সুন্দর সুন্দর কিছু দৃশ্য অবলোকন করলাম।কিছু ছবিও সংগ্রহ করে নিলাম ফোনে,কয়েকটি ছবি ইতিমধ্যেই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে ফেলেছি।আমরা পথ চলতে চলতেই দেখলাম একটি বড় পুলিশের গাড়ি সামনে দিয়ে চলে গেল।

সকাল 7 টা থেকে ভোট দেওয়া শুরু হবে।যদিও আমাদের স্লিপ আগে থেকেই ছিল, গিয়েই শুধু লাইনে দাঁড়িয়ে পড়তে হবে।6.30 এর মধ্যে আমরা পৌঁছে গেলাম ভোটকেন্দ্রে।খাড়গ্রাম জুনিয়র হাইস্কুল ও পাশাপাশি নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে ভোট দিতে হবে।আমাদের সিরিয়াল নং অনুযায়ী
নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে ভোট দিতে হবে।গিয়েই দেখলাম লাইন দেওয়া শুরু হয়েছে।6 জন মহিলার পর আমি ও মা লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম।বাবাও অপর পাশে পুরুষের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লেন।

আগে যাওয়ার এটাই সুবিধা কম লাইন টানতে হয়।ঠিক 7 টা থেকে ভোট দেওয়া শুরু হলো,6 জনের মধ্যে আরো তিনজন পরে এসে ঢুকে পড়লেন আমাদের লাইনে।বিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে আমরা এক এক করে ভোট দিলাম।কিন্তু অনেকটাই দেরি হলো কারন তিনটি ব্যালটে ভোট দিতে হবে।সেটাও আবার সেখানে বসা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রত্যেকটি ব্যালট প্রত্যেকজনকে ভাঁজ করে দেখিয়ে দিচ্ছেন।সেই ভাঁজ খুলে সিল মেরে পুনরায় ভাঁজ দেওয়াটা আসলেই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।যাইহোক আমরা 8.10 এর মধ্যে ভোট দেওয়া সম্পন্ন করলাম।ততক্ষনে খুবই রোদ উঠেছে তাই ছাতা মেলে বাড়ির জন্য হেঁটে রওয়ানা হলাম।

পথে আসতে আসতেই রোদ ও বৃষ্টি একসঙ্গে শুরু হলো।আমরা বাড়ি গেলেই দাদা ভোট দিতে গিয়েছিল পরে।আর দাদা যেতে যেতেই অনেক ভিড় হয়ে গিয়েছিল।আমার দাদার 4 থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা রোদে দাঁড়িয়ে লাইন টানা লেগেছিল।যাইহোক আমরা সুষ্ঠুভাবে ও শান্তিপূর্নভাবে ভোট দিতে পেরেছি এটাই ভালো লাগার বিষয় ছিল।

আশা করি আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের অনুভূতিটি ভালো লাগবে।সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ও সাবধানে থাকবেন।

💐💐ধন্যবাদ সকলকে💐💐

ক্যামেরা: poco m2

অভিবাদন্তে: @green015