"বাড়ি ফেরার গল্প"(শেষ পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার

বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই?আশা করি ঈশ্বরের কৃপায় সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।আমি কয়েকদিন ধরে শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ। এলার্জির সমস্যাটা বেশ বেড়ে গেছে,তার উপরে আবার এক্সামের ব্যস্ততা।শত ব্যস্ততার মাঝেও এখানে পোষ্ট না করলে আমার ভালো লাগে না।তবুও মাঝে মাঝেই কখনো মিস হয়ে যায়।যাইহোক আপনাদের মাঝে আজ শেয়ার করবো বারাসাত থেকে কিভাবে বাড়ি ফিরলাম সেটা নিয়ে।তো চলুন শুরু করা যাক---

বাড়ি ফেরার গল্প (শেষ পর্ব):

IMG_20230627_151521.jpg

বন্ধুরা,অনেকেই জানেন আমার কিছু ব্যক্তিগত প্রয়োজন মেটাতে কয়েকদিন আগে আমি চিরচেনা সেই বারাসাত শহরে গিয়েছিলাম।কিন্তু দুঃখের বিষয় সেখানে আমার একটি কাজ মিটলেও আসল কাজটি মেটেনি।তারপর আমরা শপিং সেরে সোজা বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে কলনী মোড়ে হেঁটে আসলাম।

চারিদিকে মাইকের বাজনা আর পুজোর ঘন্টার ধ্বনির শব্দে গমগম করছিল পরিবেশ।কারন অনেক জায়গায় পূজা হচ্ছিল।আর কলনী মোড়ে ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সামনে তো পূজার সঙ্গে সঙ্গে খিচুড়ি প্রসাদের আয়োজন ও করছিলেন ওখানকার মানুষেরা।

কলনী মোড় থেকে বাসে উঠে পড়লাম,একদম বাসের পিছন দিকে সিটও পেয়ে গেলাম।বাসে উঠলেই আমার বেশ অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।কোনোরকমে চুপচাপ বসে পরিস্থিতির সামাল দিলেও গন্তব্য স্থান মনিরামপুর নেমে পড়লাম।তারপর কিছুটা হেঁটেই মনিরামপুর ঘাট এবং গঙ্গা নদী পাড়ি দেওয়ার জন্য হাঁটা শুরু করলাম।অতিরিক্ত গরম ও অস্বস্তি লাগার ফলে আমার একটু বমিও হলো।যদিও দুপুরে বেশ নিরিবিলি এক দোকানের পিছন সাইডে চলে গিয়েছিলাম অবস্থা বুঝে।যাক মাথা থেকে যেন একটা বোঝা নামলো এমন মনে হচ্ছিল বমি হওয়ার পর।তারপর খেয়াঘাটের টিকিট কাটতেই দেখলাম বোট ছেড়ে দিয়েছে।পুনরায় একটি বোট আসলো তারপর সেটায় উঠে নদী পার হলাম।

IMG_20230627_151538.jpg
শেওরাফুলি ঘাটে গিয়েই সোজা চলে গেলাম শেওরাফুলি বাজারে।যদিও শেওরাফুলি স্টেশন বাজারের মধ্যে দিয়েই যেতে হয় তাই ভাবলাম বাজার করে নিয়ে যাই।কিন্তু দুপুর হয়ে যাওয়াতে খুব কম সংখ্যক দোকান ছিল সেখানে।এরপর আমরা পটল,কাকরোল,ঢেঁড়স,আলু,শসা,লেবু,কাঁচা লংকা ইত্যাদি সবজি কিনলাম।তারপর ফিরে আসতেই দেখলাম অনেক সুন্দর সুন্দর পাকা আম ।তাই 2 কিলো আম্রপালি আম ও 1 কিলো হিমসাগর আম কিনে নিলাম।

শেওরাফুলি স্টেশন এসেই দাদা টিকিট কেটে নিয়ে আসলো।তারপর আমরা বরফ গোলা জল খেলাম।বরফের টুকরো,বিটলবন ও লেবু দিয়ে তৈরি জলটি দারুন স্বাদ লেগেছিল।এরপর আমরা আলাদা আলাদা বগিতে উঠে পড়লাম।আমি অবশ্য লেডিস কামরায় উঠেছিলাম তাই ভিড় কম ছিল।যেতে যেতেই এক পেয়ারা বিক্রেতা ট্রেনে উঠেছিল।সবাই পেঁয়ারা কিনে খাচ্ছিল।আমিও কিনে ফেললাম দুটো পেয়ারা।উনি অবশ্য পেয়ারাগুলি কেটে বিটলবন মিশিয়ে দিচ্ছিলেন তাই আমি একটা পেয়ারা কেটে নিয়েছিলাম।পেয়ারাগুলি খেতে খুবই ভালো লাগছিল।

IMG_20230627_151459.jpg
মাঝপথে আসতেই আবহাওয়া কালো হতে লাগলো।ঝড় বইতে শুরু করলো সঙ্গে খুবই বৃষ্টি।ট্রেনের জানলা দিয়ে বৃষ্টির জল ঢুকে গায়ে এসে লাগছিল।অনেকেই ভিজে যাচ্ছিল তাই সবাই সামনের জানলাগুলি বন্ধ করার চেষ্টা করছিল।কিন্তু কোনো মহিলাই বন্ধ করতে পারছিল না।তখন ট্রেনের কামরায় তিনজন পুরুষ মানুষ ছিল,যারা সবাই কোনো না কোনো জিনিস বিক্রি করতে ট্রেনের লেডিস কামড়ায় উঠেছিল।তারাই জানলা ও ট্রেনের দরজা বন্ধ করতে সাহায্য করেছিল আমাদেরকে।অনেকক্ষণ বৃষ্টি হওয়ার পর থেমে গেলে তারা আবার দরজা ও জানলা খুলে দিয়েছিল।

আমাদের স্টেশনে নামতেই দেখলাম তখন কোনো বৃষ্টি হচ্ছে না।যদিও মাঝপথে বাড়িতে ফোন করেই জানতে পেরেছিলাম- আগেই এখানে ঝড় ও বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে।তারপর দাদা গ্যারেজ থেকে সাইকেল নিয়ে নিলো।দাদার সাইকেল করেই বাড়ি ফিরে আসলাম।তো এটাই ছিল আমার বারাসাত যাওয়া-আসার পুরোটা সময়ের শেষ পর্ব।

আশা করি আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের পোষ্টটি ভালো লাগবে।সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ও সাবধানে থাকবেন।

💐💐ধন্যবাদ সকলকে💐💐

পোস্ট বিবরণ:

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসpoco m2
ফটোগ্রাফার@green015
লোকেশনবর্ধমান
Sort:  
 last year 

আপনার বাড়ি ফেরার শেষ পর্বটি পড়ে বেশ ভালো লেগেছে আমার। বিশেষ করে ট্রেনের মধ্যে থেকে বিট লবণ দিয়ে মাখানো পেয়ারা খাওয়ার বিষয়টা আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। কারণ ওই সময় পেয়ারা খেতে খুবই ভালো লাগে। যাহোক শেষ পর্যন্ত স্টেশনে এসে আপনার দাদার সাইকেল চড়ে বাড়িতে যেতে পেরেছেন এটা জেনে আমার খুবই ভালো লেগেছে। দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

পেয়ারা বিটলবন দিয়ে খেতে আসলেই বেশ টেস্টি লাগে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

বাড়ি ফেরার এই কাহিনী বিস্তারিত পড়ে অনেক ভালো লাগলো। নতুন একটি স্থান তুলে ধরেছেন, নতুন স্থানের ধারণা জানতে পারলাম আপনার আজকের এই পোষ্টের মধ্য থেকে।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 56586.95
ETH 2389.49
USDT 1.00
SBD 2.34