"মন খারাপের ভোর"(10% বেনিফেসিয়ারী লাজুক খ্যাককে)
নমস্কার
বন্ধুরা, আশা করি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।আজ আমি কোনো রেসিপি বা কোনো অঙ্কন শেয়ার করবো না আপনাদের সঙ্গে।আজ আমার মন খারাপের অনুভূতি ভাগ করে নেব আপনাদের সঙ্গে।
(দিদিমার ছবি)
[সবগুলো ছবি পিসীমার ম্যাসেঞ্জার থেকে সংগৃহীত]
আজ ভোর থেকেই মনটা খুবই খারাপ।যখন কানাডা থেকে আসা ফোনকলে শুনলাম আমাদের অতি আপনজন আমার এক দিদিমা এই পৃথিবীতে আর নেই।তখন মনটা বিষণ্নতায় ভরে গেল নিমিষেই।😢😢যদি ও সেটি সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ে অর্থাৎ অনেক দূরের দেশে।তবুও মানুষের প্রতি মানুষের মনের বা আত্মার যে ভালোবাসার টান তা কখনো ভুলে থাকা যায় না, মনে হয় সে একেবারেই কাছে অবস্থান করছে।কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারছি না যে তিনি আর নেই।কারণ তিনি আমাদেরকে বড্ড বেশি ভালোবাসতেন,সর্বদা লেখাপড়ায় উৎসাহ দিতেন আমাদেরকে।তিনি আমার বাবার সৎ কাজের সবসময় প্রশংসা করতেন, আমার দাদা ও আমার লেখাপড়ার ক্ষেত্রে সর্বদা উৎসাহ দিতেন ও খুবই ভালোবাসতেন আমাদেরকে ।সবশেষে আমার মায়ের রান্না তিনি খুবই পছন্দ করতেন ব্যক্তিগতভাবে।কয়েক দিন আগেই আমাদের পরিবারের সকলের সঙ্গে দিদিমার কথা হলো,তাই বারবার মনে পড়ছে ও চোখের সামনে ভেসে উঠছে তার হাসিমাখা মুখখানি।
(মা সরস্বতী পূজায় পরিবারের সঙ্গে কাটানো আমার পিসীমাদের ঘরে দিদিমার শেষ মুহূর্ত)
তিনি এতটাই লেখাপড়াকে ভালোবাসতেন এবং গুরুত্ব দিতেন যে তিনি তার সব ছেলেমেয়েদেরকে লেখাপড়ার মাধ্যমে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।লেখাপড়ার মাধ্যমে তার প্রত্যেকটি ছেলেমেয়ে নিজের দেশ থেকে বিদেশের বুকে ইঞ্জিনিয়ার ও ডাক্তার হয়ে যেতে পেরেছিলেন ।তার ছেলেমেয়েদের অবদানের কথা আজ নাই বা বললাম।তিনি একজন সফল ব্যক্তি ও ভাগ্যবতী বলা যায়।
অবশ্য দিদিমার ছেলেমেয়েরা আমেরিকা,লন্ডন ও সৌদি আরবের মতো বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল বহুবছর ।কিন্তু 8-9 বছর হলো সবাই একটি অবস্থানে অর্থাৎ কানাডায় টরেন্টো সিটিতে পরিবারের সঙ্গে স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে বসবাস করছেন তাই দিদিমা তাঁদের প্রত্যেককে খুবই কাছে পেয়েছিলেন।সেদিক থেকে বলতে গেলে দিদিমা খুবই লাকি ।
(দিদিমার 72 তম জন্মদিন)
সরস্বতী পূজার দিনে কিছু সময় পর্যন্ত পরিবারের সকলের সঙ্গে সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়ে হঠাৎ অসুস্থবোধ করেন দিদিমা তখন তাকে icu তে ভর্তি করা হয়, সেখানেই তিনি 3-4 দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হঠাৎ গতকাল মারা যান। এছাড়া কানাডায় ওমিক্রনে খুবই কড়াকড়ি ব্যবস্থা পালন করছেন প্রশাসন।ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে, কত আশা ছিল আর একটিবার তিনি নিজের দেশের মাটিতে পা রাখবেন আমাদের বাড়িতে ও আসবেন।এমনকি ভিসার কাজ ও চলছে কিন্তু নিয়তির কি নির্মম পরিহাস ।😔😔
এই মুহূর্তে আমার বলার ভাষা ও কিছু লেখার প্রতিও ইচ্ছেবোধ হচ্ছে না।কারণ হঠাৎ ভালো মানুষের মৃত্যু খুবই বেদনাদায়ক,তিনি খুবই ভালো একজন মানুষ ছিলেন এবং 73 বছর বয়সে ও তিনি বই পড়তেন ও হাঁটাচলায় সচ্ছল ছিলেন।কঠিন সময়টাকে অতিক্রম বা পার করে যখন মানুষ স্বাভাবিক অবস্থার জীবনে ফিরে আসতে যাবে তখনই আচমকা বড়ো আঘাত মেনে নেওয়া সত্যিই ভীষণ কষ্টের।সবসময় লেখাপড়াকে কদর করতেন ও ঠাকুর ভক্ত ছিলেন মানুষটি।হয়তো তিনি আমাদের মাঝে আর নেই কিন্তু তার থেকে পাওয়া ভালোবাসা ও আশীর্বাদ রইয়ে যাবে সর্বদা আমাদের সঙ্গে। তাই ঈশ্বরের কাছে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।🙏🙏 এতক্ষন যে দিদিমার কথা বললাম তিনি অন্য কেউ নয়, আমার ছোট পিসীমার শাশুড়ি।
আজকের মতো ব্লগটি এখানেই শেষ করছি।সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।এছাড়া আমার লেখার মধ্যে কোথাও ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
শুনে খুব খারাপ লাগলো আপু। আপন মানুষ যদি দূরে থাকুক তারা সব সময় আমাদের কাছে আছে বলে মনে হয়। দূরত্ব শুধুমাত্র দেহের কিন্তু মনের দূরত্ব কখনো হয়না। মন খারাপ করবেন না আপু।
ধন্যবাদ আপু💝।
আপু কষ্ট পাবেন না সৃষ্টিকর্তার কাছে সব সময় মন খুলে তার জন্য প্রার্থনা করবেন দেখবেন এই দুনিয়ায় কিছুদিনের জন্য থাকতে না পারায় কি হয়েছে! পরের দুনিয়ায় আজীবন একসাথে এর চেয়েও বেশি সুন্দর মুহূর্ত কাটাতে পারবেন এই প্রার্থনা করি। এবং সৃষ্টিকর্তা আপনার মনকে শান্ত করে দিন এই কামনা রইল।
ধন্যবাদ ভাইয়া💝।
দিদি পোষ্টটি পড়ে সত্যি মনটা খারাপ হয়ে গেলো ৷ আপনার দিদি-মার ছবিটি দেখে মনে হচ্ছে এখনো তিনি বেচে আছেন ৷ কিন্তু কি করবেন বলেন সবাইকে এ পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে ৷এটাই নিয়তীর নিয়ম মেনে নিতেই হবে৷আমারও দিদিমার কথা মনে পড়ে গেলো আমাকে ও খুব ভালোবাসতো তার সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলো মনে পড়ে যাচ্ছে ৷
যাই হোক আপনার দিদিমা যেন সর্গবাসি হন এই কামনা করি ইশ্বরের কাছে
ধন্যবাদ দাদা💐।