"কিছু ধারণা পাল্টাতে"[বিষাক্ত চন্দ্রবোড়া সাপ](10% বেনিফেসিয়ারী লাজুক খ্যাককে)
নমস্কার
কেমন আছেন বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।যাইহোক আজ আমি নতুন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।মাঝে মাঝেই কিছু ধারণা পাল্টে যায় যেটি মনকে বড়ো নাড়িয়ে দেয় আর তাই সেগুলো আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভালোই লাগে।সেটি হলো---"কিছু ধারণা পাল্টাতে"।
■বাঁচিয়ে রাখি কিছু সাহস:
বন্ধুরা,প্রথমেই বলে রাখি আমি সাপকে খুবই ভয় পাই।তারপরও কিছু সাহস বাঁচিয়ে রেখেছি মনে।কারন আমি গ্রামের মেয়ে ফলে গ্রামেই আমার জন্ম,শৈশব কেটেছে এবং এখনো গ্রামেই আমার জীবন কাটছে।অবশ্য মাঝে কয়েকবছর পড়াশুনার সুবাদে শহরের হাওয়ায় কেটেছে আমার জীবন পরিবারের সঙ্গে।যাইহোক গ্রামের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসার টানেই আবার ফিরে এসেছি গ্রামে।তো গ্রামে রোজ রোজ বিভিন্ন ধরনের সাপ,রক্তচোষা গিরগিটি,চেলা,বিষাক্ত বিছা,আরশোলা,জোক ইত্যাদি দেখেই আমার বেড়ে ওঠা।তো আজ একটি সাপের সম্পর্কে লিখবো বলে হাজির হয়েছি আপনাদের সামনে।তো চলুন শুরু করা যাক---
আমাদের বাড়ির সামনের মেঠো পথের একপাশে জমি ও কয়েকটি বাড়ি থাকলে ও অন্য পাশে বেনাগাছ বা বিভিন্ন ধরনের আগাছায় ভর্তি তার পাশেই ক্যানেল ভর্তি কচুরিপানা।তাই নানা ধরনের সাপের বসতি এখানে।সারাবছর তাই সাপুড়ে আসতেই থাকে এখানে আর বড়ো বড়ো সাপ ধরে নিয়ে যায়।কখনো কালকেউটে,কেউটে কখনো আবার এই চন্দ্রবোড়া সাপ। তেমনি গতদিন তিনজন এসেছিলেন সাপ ধরতে আর আমাদের বাড়ির সামনে মেঠো রাস্তার উল্টোদিকের এই ঝোপ থেকে সাপটি ধরেছিলেন।অবশ্য ধরার আগে আমাদের অনুমতি নিয়েছিলেন।
চন্দ্রবোড়া সাপ
সাপটি হলো চন্দ্রবোড়া ।এই সাপ খুবই বিষাক্ত হয়,কামড়ালেই শেষ।এরা গুটিয়ে গোল হয়ে থাকে।আমাদের এদিকে তো এই সাপ বেশি দেখা যায়।সাপ ধরার পর সাপুড়েরা আমাদের বাড়িতে প্রায় জল খেতে আসে, এইবার ও এসেছিলেন। তাই তারা জল খাওয়ার পর নিজে থেকেই আমাদেরকে ঝুড়ি খুলে সাপ দেখিয়েছিলেন।আর আমি কয়েকটি ছবি তুলে রেখেছিলাম আপনাদের কিছু ধারণা পাল্টাতে।তবে ঝুড়ির বড়ো সাপটি নয়,ছোট বেশ চাকচিক্য যে সাপটি ওটা আমাদের বাড়ির সামনে থেকে ধরেছিলেন।
সাপুড়েরা জল খেতে এসে আমাদের বাড়িতে ও একটি চন্দ্রবোড়া সাপ দেখে ধরতে চেয়েছিলেন।কিন্তু আমরা ধরতে দিইনি ,কারণ আমরা মা মনসাদেবীর ভোগ দিই এবং মনসা গাছও রয়েছে আমাদের বাড়িতে।তাই আমরা কখনো সাপ মারিনা ও কোনো সাপুড়েকে আমাদের বাড়ির মধ্য থেকে ধরতেও দিইনা।অবশ্য আমরা সেটি দেখতে পায়নি।যাইহোক কখনো আমাদের জালে সাপ জড়িয়ে গেলে বাবা জাল কেটে ছাড়িয়ে দেন।
■কিছু ধারণা পাল্টাতে:
বন্ধুরা, পূর্বে আমার ধারণা ছিল সাপুড়ে মানে যারা সাপ ধরে শুধুমাত্র সাপ খেলা দেখায় এবং বিভিন্ন ঝাড়ফুঁক মেরে গাছগাছড়ার শিকড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে।এছাড়া ভাবতাম সাপ ধরে একবার বিষ নিয়ে মেরে ফেলে সাপকে।হয়তো আমার মতো অনেকের এই একই ধারণা থাকবে।কিন্তু সব সাপুড়ে সাপ খেলার জন্য বা সাপকে বিষ নিয়ে মেরে ফেলার জন্য সাপ ধরেন না।এই যে সাপুড়েকে দেখতে পাচ্ছেন এবং যারা তার সঙ্গী আছেন তারা সাপ ধরে চিড়িয়াখানায় কর্মীদের কাছে এক একটি সাপকে 500 থেকে 600 টাকা দরে বিক্রি করেন। চিড়িয়াখানার কর্মীরা সাপকে সংরক্ষণ করে বারবার বিষ সংগ্রহ করেন ঔষুধ তৈরির জন্য এবং সাপের বংশবৃদ্ধি করতেও সাহায্য করেন।সম্ভাবত ,যারা সাপ খেলা দেখান তারা সাপের বিষদাঁত ভেঙে ফেলেন কিন্তু এনারা সাপের কোনো বিষদাঁত ভাঙেন নি।
আশা করি আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা ধারণাগুলি ভালো লাগবে।সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ও সাবধানে থাকবেন।
টুইটার লিংক
সাপ আমি ভিষণ ভয় পাই, আপনি তো সাহস করে ছবি তোলতে পেরেছেন। বাড়িতে সাপের আছে আপনার ধরতে দেন নি,আমি হলে তো আর বাড়িতেই থাকতে পারতাম না সব সময়ই সাপের কথা মাথায় আসতো।ধন্যবাদ
আমিও ভয় পাই আপু,ধন্যবাদ আপনাকে।
নতুন কিছু অভিজ্ঞতার সাথে পরিচিত হতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগলো। আমি অবশ্য,সাপকে ভয় পায় না। নতুন কিছু জানতে পেরে আপনার ধর্ম রীতি নীতি দেখতে পেলে খুব ভালো লাগলো বিস্তারিত সুন্দর আলোচনা করেছেন বর্ণনা করেছেন এই বিষয়ে। তাই অনেকটা জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
আসলে দিদি প্রত্যেকটা পেশারই কিছু নিয়ম কানুন আছে এবং সাপুড়েরাও তারা তাদের ওই নিয়মকানুন গুলো নিয়েই কাজ করে, আর তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। তবে প্রত্যেকটা প্রাণীরই মানবজাতির জন্য উপকার এবং অপকার দুটোই রয়েছে আমরা যারা সেটা বুঝতে পারি তারা সেভাবেই কাজ করি। কিন্তু যারা বুঝতে পারে না তারাই হয়তো প্রাণীটিকে মেরে ফেলে। সব মিলিয়ে আপনার আজকের এই ব্লগটি আমার কাছে দারুণ লেগেছে অনেক অজানা বিষয়কে তুলে ধরেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন ,সবই নিয়ম-কানুনে বাধা।ধন্যবাদ আপনাকে ,আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ভাইয়া।
সাপ দেখলে আমার কাছে ভীষণ ভয় লাগে। একবার তো আমাদের বাড়িতে ছোট একটি সাপের বাচ্চা ঢুকেছিল দেখে তো আমার কাছে ভীষণ ভয় লেগেছে। আমি তো দুই তিন দিন ধরে ঘুমাতে পারিনি। কিন্তু আপনার সাপের ফটোগ্রাফি দেখে খুবই ভালো লেগেছে।
হি হি ,আমি ও ভয় পাই।তবে রোজ দেখি আর আমাদের ঘরে ও মাঝে মাঝেই ছোট ছোট সাপ একবারে 3-4 টা করে ঢোকে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
সাপ দেখলে আমার কাছে ভীষণ ভয় লাগে। বিশেষ করে বিষাক্ত সাপগুলো খুবই মারাত্মক হয়ে থাকে কামড় দিলে জীবন বাঁচানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে। যাই হোক আপনার পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া, বিষাক্ত সাপ কামড়ে দিলেই শেষ।ধন্যবাদ আপনাকে।