"আমাদের প্রতিবেশীর হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা"
নমস্কার
আমাদের প্রতিবেশীর হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা:
বন্ধুরা, প্রতিনিয়ত আমরা সংবাদমাধ্যম কিংবা লোকমুখে মানুষের নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনে থাকি।কিন্তু কখনো কি আপনার বাড়ির পাশের কেউ হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে কিংবা নিখোঁজ হওয়ার পিছনের কারন কি তা জানতে পেরেছেন? এমনি কয়েকটি ঘটনা আমার দেখা রয়েছে আমাদের প্রতিবেশীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। কয়েকদিন আগে আমাদের এক প্রতিবেশী হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল,চলুন সেটাই বলি আপনাদের সঙ্গে----
বছর দুয়েক হলো চিত্তবাবু তার পরিবারকে নিয়ে আমাদের এখানে এসেছেন।যদিও তার বাড়িঘর আগে থেকেই তৈরি ছিল,তাদের গ্রামের আরেকজন দেখাশুনা করতেন।চিত্তবাবু আগে গ্রামে বাস করতেন ,সেই সূত্রে তার বাবা ও মা গ্রামে রইয়ে গিয়েছিলেন।চিত্তবাবুর দুই মেয়ে ও একটি ছোট ছেলে।অল্প কয়েকদিন হলো গ্রাম থেকে চিত্তবাবুর বাবা-মা এখানে এসেছেন।
কয়েক দিন আগের কথা।চিত্তবাবুর স্ত্রী রান্না সেরে কোনো কারণে বাইরে গিয়েছিল।কিন্তু সে তাদের খাবার ঢাকতে ভুলে যায়, তখনই হয় মুশকিল।সেই ঢাকনাহীন তরকারি তারপর তার স্বামী ,ছেলে ও শ্বশুরকে খেতে দেয়।এরপর-ই তাদের শরীরের অবস্থা খারাপ হতে থাকে।বমি ও ডায়রিয়া হয়ে যায় পরিবারের লোকজনের তখন তারা আন্দাজ করে যে,তরকারীতে নিশ্চয়ই বিষাক্ত টিকটিকি পড়েছিল।তাই খাবার জিনিস আলগা করে ফেলে রাখাটা উচিত নয়। তাদের অনবরত বমি ও টয়লেট হওয়ার জন্য তারা বর্ধমানের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যায়।হাসপাতালে বয়স্কদের আলাদা রুম তাই স্বাভাবিক ভাবেই চিত্তবাবুর বাবাকে অন্য বিল্ডিং এ নিয়ে যাওয়া হয়।কিন্তু চিত্তবাবু ও তার ছেলেকে একই বিল্ডিং এ রাখা হয়।
চিত্তবাবুর বাবার বয়স এখন 83 বছর।তাছাড়া সে গ্রামের মানুষ হওয়ায় এখানের সবকিছুই তার কাছে অপরিচিত।আর বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নতুন জায়গায় সে একেবারেই বোকা।টানা দুই থেকে তিনদিন হাসপাতালে রাখার পর চিত্তবাবু ও তার ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হলে তারা বাড়ি চলে আসে।পরের দিন সকালে চিত্তবাবুর বাবাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা কিন্তু চিত্তবাবু হাসপাতালে যেতে দেরি করেছিলেন।তারপর যে বিল্ডিং এ তার বাবা ভর্তি ছিল সেখানে জিজ্ঞাসা করাতে তারা জানালেন যে,অনেক আগেই হাসপাতাল থেকে চিত্তবাবুর বাবা চলে গিয়েছেন।
বর্ধমান শহর বড়,তাই হঠাৎ করে চেনা মানুষ পাওয়াও কঠিন।এদিকে চিত্তবাবু হাসপাতালের চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করার পর তার বাবাকে না পেয়ে বাড়ি চলে আসলেন।অন্যদিকে চিত্তবাবুর বাবা হাটতে হাটতে বিরহাটায় চলে আসে।তারপর সেখানে এক দোকানে এসে বসে,দোকানদার তাকে মুড়ি খেতে দেয়।চিত্তবাবুর বাবা এমনই বোকা যে সে বাড়ির ঠিকানা অব্দি বলতে পারেন না।দিনের শেষে তিনি ওই দোকানের বাইরেই রাত কাটান।বয়স্ক লোক এইকারনে মানুষ তাকে কিছু কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করে।দুইদিন এভাবে পার হয়ে যায় মুড়ি ও বিস্কুট খেয়ে।চিত্তবাবু খোঁজাখুঁজি করতে থাকে প্রতিনিয়ত।তিন দিনের দিন তিনি তার বাবাকে বিরহাটায় পেয়ে বাড়ি নিয়ে আসেন।
চিত্তবাবুর বাবা 70 থেকে 80 টাকার মতো সাহায্য পেয়েছিলেন কিন্তু তা থেকে ব্যয় করেছিলেন মাত্র 5টাকা কিংবা 10 টাকা।এভাবেই চিত্তবাবুর বাবা হঠাৎ নিখোঁজ হয়েছিল।প্রথমত জেনে আমাদের খুবই খারাপ লাগছিল পরে অবশ্য খুঁজে পাওয়ার খবর শুনে ভালো লেগেছে।তবে আমি মনে করি,বয়স্ক বাবার প্রতি চিত্তবাবুর আরো দায়িত্বশীল হওয়া জরুরী ছিল এক্ষেত্রে।বন্ধুরা, আপনাদের কি মতামত?
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
টুইটার লিংক
সত্যি বলেছেন আপু বয়স্ক লোকদের প্রতি একটু বেশি খেয়াল রাখা দরকার। আসলে খাবার সব সময় আমাদের ঢেকে রাখা উচিত। একটু বেখিয়ালির জন্য অনেক বড় দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। যাইহোক অবশেষে চিত্তবাবার বাবাকে পেয়েছে এটাই অনেক। ধন্যবাদ আপু সচেতনা মূলক একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু,বেখেয়ালি অনেক সমস্যা ডেকে আনে।ধন্যবাদ আপনাকে।
উনাকে শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেছে এজন্য ভগবান কে ধন্যবাদ।কত দূর্ঘটনা ঘটতে পারত কিন্তু ভগবান উনাকে নিরাপদে রেখেছেন। আর দোকানদার কেও ধন্যবাদ দিতে হয় খাবার আর আশ্রয় দেওয়ার জন্য। ধন্যবাদ দিদি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন দাদা,দোকানদার ভালো কাজ করেছিলেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
খুঁজে পেয়েছে জেনে আমারও ভালো লাগলো।আসলে বয়স্ক মানুষ তার উপরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলেন তাই হয় তো বা ভয়ে বাড়ির ঠিকানা ভুলে গিয়েছিলেন। আসলে আমাদের খাবার সব সময় ঢেকে রাখা উচিত। ঢেকে রাখতে তো এমন বিপদ আসতো না চিত্তবাবুর পরিবারে। প্রতিবেশি কেউ নিখোঁজ হলে কিংবা বিপদে পরলে সত্যি খুব খারাপ লাগে।ধন্যবাদ সুন্দর একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করার জন্য।
ভয়ে বাড়ির ঠিকানা ভুলে যান নি দিদি,আসলে উনি নতুন এসেছিলেন এখানে গ্রাম থেকে।ধন্যবাদ আপনাকে।
চিওবাবুর বাবার বয়স হয়েছে। আর অনেক আগের লোক সেজন্য এইসব শহরের ব্যাপারটা উনি বুঝবেন না এটাই স্বাভাবিক। তবে হ্যা ঠিক বলেছেন চিওবাবুর আরও সিরিয়াস হওয়া দরকার ছিল। যাইহোক আশাকরি ভবিষ্যতে আর এইরকম ঘটনা ঘটবে না। এবং উনি অনেক টাকা পেলেও তা থেকে খুবই সামান্য খরচ করেছেন নিজের জন্য।।
আসলেই গ্রামের মানুষের কাছে শহরে নতুন হলে ঘোলাটে লাগে,ধন্যবাদ ভাইয়া।
হ্যাঁ আপু আপনি একদম ঠিক বলেছেন আমিও আপনার সাথে একমত বয়স্ক বাবার দিকে তার আরো একটু বেশি দায়িত্বশীল হওয়া দরকার ছিল। চিত্তবাবু যদি সেদিন সময় মত যেতো তাহলে তার বাবা এভাবে হারিয়ে যেত না আর উনি এত কষ্ট পেত না। যাইহোক শেষমেষ যে উনি উনার বাবাকে ফিরে পেয়েছেন এটা জেনে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আসলেই বয়স্কদের প্রতি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন, ধন্যবাদ আপু
বেশ কিছু বয়স্ক মানুষ রয়েছে যারা এরকম ভাবে হারিয়ে যায়। তেমনি চিত্তবাবুর বাবা ও হারিয়ে গিয়েছিল হসপিটাল থেকে। যদিও ওনার ছেলে উনাকে প্রত্যেকটা জায়গায় খুঁজেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, এটা জেনে আমার কাছেও ভালো লেগেছে। এরকম বয়স্ক মানুষদের প্রতি খেয়াল রাখাটা অনেক জরুরী। কারণ যে কোন সময় যে কোন সমস্যাও হতে পারে।
আপনার সুন্দর গঠনমূলক মতামত তুলে ধরার জন্য, ধন্যবাদ আপু।
হঠাৎ করে যদি কাউকে এভাবে খুঁজে না পাওয়া যায় তখন সত্যি খুব খারাপ লাগে। বৃদ্ধ লোকটা দেখছি হসপিটাল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল যার কারনে হারিয়ে গিয়েছিল। বিরহাটায় চলে যাওয়ার কারণে ওখানে একটা দোকানে যাওয়ার কারণে দোকানদার খাবার দিয়েছিল। যাইহোক লোকটা যে ওনার বাবাকে শেষ পর্যন্ত পেয়ে গিয়েছে এটা শুনেই ভালো লাগছে।
আপনার মতামত জেনে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ ভাইয়া।
সত্যি কথা বলতে সব বয়স্ক মানুষদেরকে বাচ্চা ভাবা উচিত।কারন বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই মানুষ গুলো বাচ্চার মতোই হয়ে যায়। চিত্তবাবুর বাবার বয়স অনেক হয়েছে।তিনি এই শহরের তেমন কিছুই জানেন না।চিত্তবাবু হাসপাতালে যেতে দেরি করায় চিত্তবাবুর বাবা চলে গেলেন।যাই হোক তাকে খু্ঁজে পাওয়া গেলো জেনে ভালো লাগলো। দোকানদারকে ধন্যবাদ দেয়া উচিত তার বাবাকে সাহায্য করেছিলেন বলে।ধন্যবাদ দিদি
আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনার সুন্দর মতামত জেনে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আপু।
আপনার সেই প্রতিবেশি যথেষ্ট সৌভাগ্যবান যে তার বয়স্ক হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুঁজে পেয়েছেন। একে তো গ্রামের সহজ সরল মানুষ, তার উপর ছিলেন অসুস্থ। চিত্তবাবুর আসলেই আরো বেশি সচেতন হওয়ার দরকার ছিলো। তবে অবশেষে যে সুস্থভাবে বাসায় ফিরে এসেছেন, তাই জেনে ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ দিদি,সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।