"চলিলাম মাছ ধরিতে"(10% বেনিফেসিয়ারী লাজুক খ্যাককে)
নমস্কার
কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আজ আমি আবারো হাজির হলাম একটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে।ভিন্ন কিছু লিখতে আমার খুবই ভালো লাগে।সেই ভালো লাগা থেকেই আমি আজকেও চলে আসলাম আপনাদের সামনে।
চলিলাম মাছ ধরিতে:
লোকেশন
আমাদের বাড়ির সামনেই সুন্দর একটি ক্যানেল আছে অনেকেই জানেন হয়তোবা।আর এই খালে সারাবছরই প্রচুর পরিমানে মাছ পাওয়া যায়।তাছাড়া বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর মানুষ এই ক্যানেলে মাছ ধরতে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে।কেউ সাইকেল নিয়ে, কেউ বাইক নিয়ে আবার কেউ বা টোটো নিয়ে।কিন্তু শুধু পুরুষ মানুষ নয়,আদিবাসী মহিলারা ও মাছ ধরতে আসেন।তবে মাছ ধরার মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে।কেউ খাপ জাল দিয়ে, কেউ বাঁশের তৈরি আটোল পেতে,কেউ কারেন্ট জাল দিয়ে আবার কেউ নেট জাল দিয়ে।সকলের সঙ্গেই রয়েছে ইয়া বড়ো বড়ো মাছ ধরার খারুই।যাইহোক প্রচুর মাছের সমাহার এই ক্যানেলে।তাই আমি ও বাবা বেরিয়ে পড়েছি খাপ জাল ও ছোট একটি বালতি নিয়ে।আমার মাছ ধরতে খুবই ভালো লাগে।এই খাপ জালটি কিন্তু আমার বাবার নিজের হাতে বোনা।এইরকম আরো অনেক খাপ জাল বাবা নিজের হাতে বুনেছেন সম্পূর্ণ,অনেক আত্মীয়দেরকেও কয়েকটি দান করেছেন নিজ হাতে বোনা খাপ জাল।
আমাদের বাড়ির সামনে ক্যানেল থাকলে ও অতটা মাছ ধরা হয় না।কারন সত্যি কথা বলতে দুইদিন পুঁটি মাছ খেয়ে আর রুচি থাকে না আমাদের।যদিও বাজারে পুঁটি মাছের দাম ও কদর কম নয়।এইসব মাছ শরীরের জন্য খুবই উপকারী তাই দাম ও বেশ চড়া।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো,এইবছর পুরো ক্যানেল কচুরিপানায় ঢেকে ছিল এবং জলের পরিমাণ অনেকটাই বেশি।ফলে বেশি মাছ জন্মাতে পারিনি আর কেউ সেভাবে মাছ ধরতে ও পারিনি।কচুরিপানার আমদানি দেখে বাড়ি ফিরে গেছে অনেক মানুষ খালি খারুই নিয়ে।
লোকেশন
আপনারা অনেকেই জানেন, রাসপূর্ণিমার সময় মাছেরা এতটাই মেতে ওঠে ও ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়াই যেন এক অস্থিরতার বহিঃপ্রকাশ।তো রাসপূর্ণিমার ঠিক আগের দিন জল কমিয়ে দেওয়া হয় ,যার জন্য কিছু কচুরিপানা জলের স্রোতে ভেসে চলে যায়।তবে কোথাও কোথাও গিয়ে আটকে থাকে।যাইহোক দলে দলে মানুষ টের পেয়ে জাল ও আটোল পেতে ,খাপ জাল দিয়ে মাছ ধরে নিয়ে গেল।হরেক রকমের মাছ,কিন্তু আমার বাবার বাড়ির কাজ থাকায় মাছ ধরতে যাননি রাসপূর্ণিমার দিনে।আমার বাবা আবার কোনো কাজ অসম্পূর্ণ অবস্থায় রেখে দিতে পছন্দ করেন না।তাই সেদিন কাজ কমপ্লিট হয়ে গেলে রাসপূর্ণিমার পরের দিন আমি ও বাবা মাছ ধরতে বের হলাম।যদিও ক্যানেলে মাছেদের কোনো সাড়া ছিল না।অনেক্ষন ধরে জাল বাইতে বাইতে অনেক দূরের তালবন অব্দি চলে গিয়েছিলাম আমরা কিন্তু তেমন মাছ পায়নি।যেখানে অন্যান্য বছর এই বালতির হাফ কিংবা ফুল ভর্তি থাকে পুঁটি ও ল্যাটা মাছে ।এক জায়গায় তো শোল মাছের বাচ্চা চড়ছিল, সেখানে জল পুরো লাল-হলুদ রঙের হয়ে গিয়েছিল।মনে হচ্ছিল যেন আগুনের গোলা।আমরা অল্প কিছু মাছ পেয়েছিলাম।যার মধ্যে--পুঁটি,ল্যাটা,তিলে কাঁকড়া,টেংরা,একটি শিং মাছের বাচ্চা ছিল ইত্যাদি।
লোকেশন
সবথেকে দুঃখের বিষয় হলো-সকলেই আমাদের বাড়ির সামনে ক্যানেল থেকে- বোয়াল মাছ,তেলাপিয়া মাছ,শোল,কুঁচে ,কই মাছ,পোনা মাছ নানান মাছ ধরে নিয়ে যায়।কিন্তু আমরা বড়ো শোল মাছ পেলেও কখনো বোয়াল মাছ ,তেলাপিয়া ও কুঁচে মাছ ধরা দেয়নি।কিছু কিছু মাছ আমাদের কিনে খেতে হয় আমাদের ক্যানেলেরই অন্যের ধরা মাছ থেকে।আমরা সকাল থেকে 11 টা অব্দি মাছ ধরে বাড়ি ফিরলাম।আশা করি আমার আজকের লেখা অনুভূতিটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।
🌸ধন্যবাদ সকলকে🌸
ক্যামেরা: poco m2
অভিবাদন্তে: @green015
আপনার মাছ ধরার অনুভূতিটা পড়ে সেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেল। আসলে নিজের হাতে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা। বোয়াল মাছ,তেলাপিয়া মাছ,শোল,কুঁচে ,কই মাছ,পোনা মাছ নানান মাছ ধরে নিয়ে যায় লোকেরা।আপনার বাবার কাজ থাকায় রাসপূর্ণিমার পরের দিন গিয়ে অন্যান্য মাছ পেলে ও বোয়ালমাছ পাননি।আপনার মাছ গুলো দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। এই তাজা তাজা মাছ গুলো যদি বেশি করে পিঁয়াজ আর বেগুন দিয়ে চচ্চড়ি করা হয় তাহলে অনেক মজা লাগে।
ঠিক বলেছেন আপু,মাছ ধরতে সত্যিই মজা লাগে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক দিন পর জাল দিয়ে মাছ ধরা দেখলাম।আমাদের এদিক এই জাল কে তরুয়াজাল বলে।এটা দিয়ে মাছ ধরা বেশ কঠিন।ফটোগ্রাফ গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে।এরপরের বার বেশি মাছ পাবেন আর বড় মাছ পাবেন,দোয়া করে দিলাম।
ঠিক বলেছেন দাদা,আর এই জালটি আমার বাবার নিজে হাতে বোনা।এটা খুবই ভারী,বাবা একাই খাপ মারতে পারে এই জালে।ধন্যবাদ আপনাকে।
বাপ মেয়ে তাহলে সকাল সকাল মাছ ধরতে বেরিয়ে পরলেন। এভাবে জাল দিয়ে মাছ ধরা দেখতে আমার দারুন লাগে। জাল ছুঁড়ে দেয়ার দৃশ্য সত্যিই অসাধারণ লাগে আমার কাছে। বেশ কিছু দেশীয় মাছ দেখলাম পেয়েছেন, এরসাথে আবার বড়বড় কাঁকড়া রয়েছে। বড় মাছ পাননি বলে আফসোস করবেন না। ইনশাআল্লাহ একদিন বড় মাছ পাবেন।
দোয়া রইল।
ভাইয়া, এই কাঁকড়াগুলি খুব বেশি বড় নয় মাঝারি ধরনের।ধন্যবাদ আপনাকে।
দিদিমণি তোমার মাছ ধরার অনুভূতির পড়ে আমার সেই ছোটবেলার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল।আমার নানী বাড়িতে দেখতাম মামারা জাল দিয়ে পুকুর থেকে মাছ ধরত। আর আজ আপনার পোস্ট পড়ে সেই নানিবাড়ির কথা মনে পড়ে গেল।জাল থেকে যে মাছগুলো ছুটে ছুটে যেত আমরা সেই মাছগুলো ধরে ধরে পাতিলে রাখতাম।পুরো শরীরে কাদা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে লাগতো।এত চমৎকার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি মনি♥
কাদায় নেমে আমি তো এখনো মাছ ধরি আপু,হি হি।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য।
খুব ভালো লাগলো মাছধরার অভিজ্ঞতা পড়ে। আমি কখনও এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হইনি। তবে ইচ্ছে আছে সুযোগ পেলে অবশ্যই হব।এই ক্যানেলের কাঁকড়া শুনেছি খুব টেস্টি হয় অন্য কাঁকড়ার চেয়ে। এটা একদমই ঠিক মনে হল যে নিজেদের ক্যানালের মাছ অন্যের থেকে পয়সা দিয়ে কিনতে হলে গায়ে খুব লাগে।
আমাদের বাড়ির সামনেই ক্যানেলটি দিদি, তবে এটি সরকারী ক্যানেল।আর এই কাঁকড়ার চেয়ে পাতি কাঁকড়া বেশি টেস্টি হয় দিদি।ধন্যবাদ আপনাকে।