"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা -০৪ ( আমার শেষ উৎসবের স্মৃতি) "বারাসাতে মা কালি পূজার উৎসব"
নমস্কার
"আমার বাংলা ব্লগ" এরসঙ্গে জড়িত সকলকে জানাই আমার প্রানঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।বিশেষকরে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই @rme দাদা এবং @moh.arif দাদাকে এত সুন্দর প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্যে।তো চলুন চোখ রাখা যাক আমার শেষ উৎসবের স্মৃতির পাতায়----
(কালি মায়ের মূর্তি)
(সন্ধ্যায় আমার সেলফি)
উৎসব মানে আনন্দ
উৎসব মানে মন মাতানো ছন্দ
উৎসব মানে হিন্দু -মুসলিম ভাতৃত্ব
উৎসব মানে সবার ঊর্ধ্বে জেগে ওঠা মনুষ্যত্ব
উৎসব মানে হিংসা-বিদ্বেষ ,জাতিভেদ ভুলে
উৎসব মানে হিন্দু-মুসলিম একে অপরের হাতে হাত ধরে
উৎসব মানে আত্মার আত্মীয়
উৎসব মানে আমরা সবাই বাংলা মায়ের সন্তানীয়।।
আমার ছোট্ট স্বরচিত একটি কবিতা দিয়ে শুরু করলাম শেষ উৎসবের স্মৃতি সম্পর্কে।
(সোমতীর্থ মন্দির)
(মন্দিরে যাওয়ার প্রবেশ দ্বার)
(লোকাল গোলাপ সংঘ ক্লাবের মায়ের প্রতিমা)
(লোকাল পাড়ার মায়ের প্রতিমা)
■ উৎসবে জাতিভেদের উর্দ্ধে ভাতৃত্ববোধ:
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
উৎসব মুহূর্তটিই অত্যন্ত আনন্দের।উৎসবের মধ্যে দিয়েই হিন্দু -মুসলিম ভাতৃত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাই সেটা যেকোনো ধরনের উৎসব হতে পারে।যেমন-ঈদ,দুর্গাপূজা, কালীপূজা।যে উৎসব সব মানুষের মনে নতুন উদ্দীপনায় ভরিয়ে দেয়।উৎসব মানে দীর্ঘদিন পরে আত্মার পরম আত্মীয়ের সঙ্গে জমানো হাজারো কথা বিনিময় করে মনের ভাব প্রকাশ করা।উৎসব মানে কোনো একজনের বা এক ধর্মের আনন্দ নয় বরং বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সঙ্গে সম্মিলিত ভাবে আনন্দটাকে ভাগ করে নেওয়ার সুন্দর মুহূর্ত।উৎসবের মাধ্যমে আপনজনের সঙ্গে এক গভীর মেলবন্ধন।
[পূজা আয়োজিত ক্লাব এবং থিমের নাম]
(সিকিমের নামচির চারধাম)
নবপল্লী আমরা সবাই ক্লাব(মন্দিরের প্রবেশ দ্বার)
(চারধামের ভিতরে ঝিনুকের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি মায়ের প্রতিমা )
■কালিপুজো উৎসব পালন:
সাল 2018 ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর 24 পরগনা জেলার অন্তর্গত বারাসাত শহর।যে শহরে বাঙালিদের অর্থাৎ বিশেষ করে হিন্দুদের বিখ্যাত কালীপূজা উৎসব হয়।তবে কালীপূজা উৎসবে কালিমায়ের মূর্তির থেকে বেশি আকর্ষণীয় সাজানো প্যান্ডেল হয়ে থাকে।সেখানে বিভিন্ন দেশ-বিদেশের নানা ঐতিহাসিক থিম তৈরি করে প্যান্ডেলের সাহায্যে তুলে ধরা হয় মানুষের সম্মুখে।আর ঝাকে ঝাকে মানুষ বিভিন্ন দেশ-বিদেশ থেকে এসে বারাসাতের কালীপূজা উৎসব উপভোগ করেন এবং প্যান্ডেল দেখতে সমাগম হন। পাঁচদিনব্যাপী এই উৎসব পালন করা হয় আর সঙ্গে ঢাক-ঢোলের শব্দ।কিন্তু সকাল থেকে রাত 1 টা পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ভিড় উপচে পড়ে পূজামন্ডপে।ফলে যদিও চেনাজানা মানুষের কাছ থেকে পুজো দেখার পাশ জোগাড় করা হয় তবুও তা নিরর্থক।কারণ প্রচণ্ড বড়ো লাইন টেনে প্যান্ডেলের মধ্যে এক ঝলক প্রতিমা দর্শন করতে হয়।লাইন টানতে টানতে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে পা ঝিম ধরে যায় এক পলক কালিমায়ের দর্শনে।আবার এখানে প্যান্ডেল ১ম,২য়,৩য় স্থান হিসেবে ও ঘোষিত হয় প্রতিযোগিতার মতো।এভাবে পালিত হয় অমাবস্যা তিথিতে কালীপূজা উৎসব।
কে.এন. সি.রেজিমেন্ট ক্লাব (হিমাচলের দেবভূমি)
(মন্দিরের ভিতরে মায়ের মূর্তি)
(আমি এবং আমার পরিবার)
(বাইরে বের হওয়ার দ্বার)
■আমার কালীপূজা দেখার স্মৃতি:
দিনের বেলার থেকে রাতে কালীপূজা দেখতে বেশি মজা।কারণ রাতে বেশ লাইটিং এর ব্যবস্থা থাকে ।তাই আমার পরিবার সিদ্ধান্ত নিল যে,আমরা প্রতিমা দেখতে রাতে বের হবো এক ঘুম দিয়ে।ফলে সময় নিয়ে দেখা যাবে।যে কথা সেই কাজ।ঘড়িতে এলার্ম দেওয়া।এক ঘুম দিয়ে রাত 2 টার সময় উঠে ফ্রেশ হয়ে রাত 3 টার সময় কালীপূজা দেখতে রওনা দিলাম বাড়ি থেকে।যেতে যেতে পথে লোকাল কালিপ্রতিমা এবং শিবের সোমতীর্থ মন্দিরটি দর্শন করলাম।তারপর অনেকটা সময় নিয়ে আমরা রাতে ঘুরে ঘুরে কালিমাকে এবং প্যান্ডেল পরিদর্শন করলাম।কিছু ছবিও তুললাম।আমাদের কোনো লাইন টানতে হয়নি তবুও কিছু মানুষের জমায়েত দেখা গিয়েছিল পূজামণ্ডপে।তাছাড়া এখানে কালিমায়ের মূর্তির চেয়ে বেশি টাকা প্যান্ডেলে খরচ করে থাকে।আমরা প্রায় ভোর অব্দি পূজা কাটিয়ে সকালে বাড়ি ফিরে আসলাম।একদিনে সব প্যান্ডেল দেখা সম্ভব নয় তাই পরদিন আবার একইভাবে বের হলাম।এই ছিল আমার শেষ উৎসব স্মৃতি।
নবপল্লী ব্যায়াম সমিতি(মণ্ডপটি 14 হাত লম্বা গীর্জা)
(ভিতরে মায়ের মূর্তি)
নবপল্লী এসোসিয়েশন ক্লাব (2018 এর রাশিয়ার বিশ্বকাপ ফুটবল)
(মন্দিরের ভিতরে মায়ের মূর্তি)
(আমি ও আমার পরিবার)
(রেশমি সুতোর কাজ)
■আমার কামনা:
গত 2 বছর উৎসব পালন করা হয় না।এক বছর ব্যস্ততার কারণে আর এক বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে সেই উৎসবটা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।আশা করি পরিস্থিতি ভালো হলে এই উৎসব আবার কাটাতে পারবো এই কামনাই করি।সুতরাং আমার শেষ উৎসব স্মৃতি ছিল দারুণ আনন্দের।
রেজিমেন্ট ক্লাব (থাইল্যান্ডের প্যাগোডা)
(মায়ের মূর্তি)
পায়োনিয়ার আথলেটিক ক্লাব (হরিদ্বারের মনসা মন্দির)
(মন্দিরের ভিতরে মায়ের মূর্তি)
(দেওয়ালের গায়ে তৈরী কিছু মূর্তির ছবি)
আশা করি সকলের কাছে ভালো লাগবে আমার শেষ উৎসব স্মৃতি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ক্যামেরা: mi a1
অভিবাদন্তে: @green015
উৎসব নিয়ে কবিতার ছন্দটি বেশ দারুন হয়েছে। মনে হচ্ছে খুব আনন্দ উপভোগ করেছেন পরিবারের সবাই মিলে। আসলে উৎসবের বিশেষ দিনগুলো পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দ উপভোগ করার দারুন একটা সুযোগ তৈরী করে দেয়। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
হ্যাঁ, ভাইয়া সত্যি অনেক আনন্দঘন মুহূর্ত কাটিয়েছিলাম পরিবারের সঙ্গে।জানি না কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং এই রকম আনন্দের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।সেই অপেক্ষাতেই আছি।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।আপনার মুল্যবান মন্তব্যের জন্য।
আগে যখন দাদু বাড়িতে থাকতাম তখন আপনাদের ধর্মীয় উৎসব গুলো আমার খুব কাছ থেকে দেখা হতো কারণ দাদুবাড়ির পুরো এলাকাটা ছিল আপনাদের ধর্মালম্বী মানুষের বসবাস যাইহোক আমার এই সম্পর্কে মোটামুটি অভিজ্ঞতা আছে শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য
আপনার অভিজ্ঞতা জানতে পেরে খুব ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।
আপনার শেষ উৎসব সম্পর্কে অনেক সুন্দর লিখেছেন।আর কবিতা আকারে লেখায় উপস্থাপনা বেশ ভালো হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে ।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।আপনার প্রশংসা ভরা মন্তব্য শুনে খুশি হলাম।
পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে বারাসাত এ মা কালি পূজা বিখ্যাত। সকল ধর্মের মানুষ খুব আনন্দের সাথে এই পূজা উপভোগ করে। সত্যি খুব আনন্দঘন মুহূর্ত ছিলো। ধন্যবাদ ।সুন্দর কবিতার মধ্যে দিয়ে উপস্থাপন ও ছবি গুলি দারুন হয়েছে।
একদম ঠিক দাদা।খুব আনন্দঘন মুহূর্ত ছিল।কিন্তু এখন তা শুধুই স্মৃতি।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
উৎসব নিয়ে আপনার স্বরচিত ছন্দটি আমার বেশ ভাল লেগেছে। আমাদের পাশের গ্রামেও যখন কালীপূজা সহ অন্য পূজা হয়ে থাকে তখন দেখা যায় মুসলিম এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে পরস্পর সহযোগিতা একটি অসাধারণ সম্পর্ক। বারাসাত অঞ্চলটি এর আগে ইতিহাস পড়ার সময় জেনেছিলাম। পরিবারের সাথে উৎসব গুলো পালন করার আনন্দটাই আলাদা। ধন্যবাদ
ঠিক বলেছেন ভাইয়া।পরিবারের সঙ্গে উৎসব কাটানোর মজাটাই অন্যরকম।ধন্যবাদ আপনার সুচিন্তিত মতামত প্রদানের জন্য।
কিউট সেলফি আর অনেক সুন্দর আলোকচিত্রগুলো । অনেক সুন্দর ব্লগ! ইন্ডিয়ান মেয়েরা অনেক রূপবতী ও গুনবতী হয় আর আপনিও তার ব্যাতিক্রম নন আপু ❤️💕💖
ইন্ডিয়ান মেয়েদের থেকে বাংলাদেশী মেয়েরা রূপের ও গুণের দিক থেকে কোনো অংশে কম নয় আপু।সবই ঈশ্বরের দান।ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।আপনার মন্তব্য শুনে একটু বেশি লজ্জা পেলাম 💝💝💝
অনেক সুন্দর হয়েছে আপু আপনার এন্ট্রি, শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপু।আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য😊😊