গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী রেসিপি:"থানকুনি ও চিংড়ি মাছ দিয়ে সুস্বাদু বেগুন শুক্তো রেসিপি"🍆🦐🥗
নমস্কার
কেমন আছেন বন্ধুরা?আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের আশীর্বাদে।আজ আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো -"চিংড়ি মাছ দিয়ে অত্যন্ত স্বাদের বেগুন শুক্তো রেসিপি"।
শুক্তো কি?
অনেকের মনে প্রশ্ন হতে পারে শুক্তো রেসিপি কি কিংবা এটি প্রথম শুনছি।শুক্তো হলো ঝাল ও পেঁয়াজ-রসুন ছাড়া তৈরি অত্যন্ত স্বাদের একটি রেসিপি।এছাড়া এতে হালকা তেঁতো জাতীয় কোনো শাক ও যুক্ত করা হয়।মূলত এককথায় বলতে গেলে যে রেসিপিটা ঝাল ছাড়া তৈরি করা হয় তাকে শুক্তো রেসিপি বলে।
এই রেসিপিটি রাত্রে খাওয়া যায় না হালকা তেঁতো শাক মিশ্রিত থাকলে।এছাড়া এটি ঝাল,পেঁয়াজ-রসুন ছাড়া তৈরি করা হয় বলে এটির স্বাদ কম বা এটি স্বাদের হবে না এইরকমটা একদম ভাববেন না।🙅কারণ ঝাল ও পেঁয়াজ-রসুন ছাড়াও অনেক স্বাদের রেসিপি বানানো যায়👌👌 ,যেটি খেলে মাছ-মাংসকেও হার মানায়।
গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার
এই শুক্তো রেসিপিটি গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার।কারণ গ্রামে বহুকাল ধরে এই রেসিপির খুবই কদর রয়েছে।এছাড়া গ্রামের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেমন- বিয়েবাড়ি কিংবা কোনো শ্রাদ্ধানুষ্ঠান বাড়িতে প্রথমেই এই রেসিপিটি দিয়েই শুরু করা হয়।সুতরাং এই শুক্তো রেসিপি গ্রামবাংলার খুবই জমজমাট ও জনপ্রিয় একটি খাবার।যা যা ব্যবহার করা হয়----
মাছের মধ্যে-এটি সাধারণত চিংড়ি মাছ নয়তো টেংরা মাছ দিয়ে শুক্তো রেসিপি করা হয়ে থাকে।🦐🦐
সবজির মধ্যে আবার -বেগুন শুক্তো,পেঁপে শুক্তো ,লাউ শুক্তো ও সজনে ডাটা ইত্যাদি করা হয়।🍆🍆
শাকের মধ্যে- থানকুনি শাক,লেবুর পাতা,কুলেখারা শাক,নিমপাতা নয়তো ব্রাম্মনি শাক যেকোনো একটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।🥗🥗
তাই আমি আজ চিংড়ি মাছ ও থানকুনি দিয়ে বেগুন শুক্তো 🍆🦐🥗তৈরী করবো।কারণ বেগুন শুক্তো বেশি টেস্টি ও বেশি জনপ্রিয় হয়ে থাকে।আর আমার কাছে বেশি ভালো লাগে খেতে।তো চলুন শুরু করা যাক---
উপকরণসমূহ
◆বেগুন- 2 টি
◆থানকুনি শাক- 1 মুঠি
◆চিংড়ি মাছ- 100 গ্রাম
◆লবণ - 1.5 টেবিল চামচ
◆হলুদ - 1 টেবিল চামচ
◆গোটা সরিষা - 1/2 টেবিল চামচ
◆গোটা জিরা - 1/2 টেবিল চামচের কম
◆তেজপাতা - 3 টি
◆জিরা গুঁড়া - 1.5 টেবিল চামচ
◆সরিষার তেল - 80 গ্রাম
◆জল - 1. 5 কাপ
প্রস্তুত প্রনালী
ধাপঃ 1
●প্রথমে আমি আমাদের সবজি বাগান থেকে বেগুন সংগ্রহ করবো।
ধাপঃ 2🍆🍆🍆
●আমি এখানে রান্নার জন্য দুইটি বেগুন নিয়ে নিলাম।
ধাপঃ 3
●বেগুনগুলি বটির সাহায্যে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নেব ।এক্ষেত্রে বেগুনের সাইজ অবশ্যই ছোট করে নিতে হবে।তবেই বেশি স্বাদ হবে শুক্তো।
ধাপঃ 4
●এরপর জল দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নেব বেগুনগুলি।
ধাপঃ 5🥗🥗🥗
●এরপর চলে যাবো আমাদের পুকুরের পাড়ে থানকুনি শাক সংগ্রহ করতে।
ধাপঃ 6
●থানকুনি শাক তুলে নিলাম এক মুঠি এরপর এটির পাতা ভালোভাবে বেছে নিয়ে ধুয়ে নিতে হবে জল দিয়ে।তো আমার ধুয়ে নেওয়া হয়ে গেছে থানকুনি শাকগুলি।
ধাপঃ 7🦐🦐🦐
●এবারে কিছু চিংড়ি মাছ কেটে ধুয়ে নিয়ে তেল দিয়ে ভেঁজে নেব চুলায় মিডিয়াম আঁচে ।ভেঁজে নেওয়া হয়ে গেলে নামিয়ে নেব একটি পাত্রে।
ধাপঃ 8
●এরপর আমি মসলার সব উপকরণগুলি নিয়ে নিলাম চিংড়ি মাছ ও থানকুনি শাকসহ।
ধাপঃ 9
●এবারে চুলায় কড়াইটি মিডিয়াম আঁচে বসিয়ে দেব।কড়াইতে তেল দিয়ে গরম করে নেব।
ধাপঃ 10
●এরপর তেলের মধ্যে গোটা সরিষা ও গোটা জিরে দিয়ে নেড়েচেড়ে ভেঁজে নেব।
ধাপঃ 11
●এবারে ধুয়ে রাখা বেগুনগুলি তেলের মধ্যে দিয়ে দেব।
ধাপঃ 12
●লবণ ও হলুদ দিয়ে দেব বেগুনের মধ্যে স্বাদ অনুযায়ী।এরপর কিছুসময় নেড়েচেড়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দেব 5 মিনিট মতো।
ধাপঃ 13
●5 মিনিট পর বেগুন কমে আসলে তার মধ্যে দিয়ে দেব ভেঁজে রাখা চিংড়ি মাছগুলি।তারপর নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নেব।
ধাপঃ 14
●এরপর জল দিয়ে দেব 1.5 কাপ পরিমাণ।তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দেব 10 মিনিট মতো।
ধাপঃ 15
●10 মিনিট পর বেগুনগুলি সেদ্ধ হলে নেড়েচেড়ে থানকুনি শাকগুলি দিয়ে দেব।এছাড়া আলাদা সুগন্ধির জন্য কয়েকটি তেজপাতা ধুয়ে দিয়ে দেব বেগুনের মধ্যে।
ধাপঃ 16
●এরপর বেগুনগুলি খুব ভালোভাবে ঘেঁটে গলিয়ে নিয়ে ভেঁজে গুঁড়া করে রাখা জিরা গুঁড়া দিয়ে ছড়িয়ে দেব।এরপর আরও 5 মিনিট ফুটিয়ে নেব।
ধাপঃ 17
●বেগুন যত মিশে যাবে সবকিছুর সঙ্গে তখন এর স্বাদ দ্বিগুণ হবে।তো এইবার বেগুনটি নেড়েচেড়ে নামিয়ে নেব একটি পাত্রে।
সর্বশেষ ধাপ
●তো তৈরি করা হয়ে গেল আমার গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী রেসিপি: "থানকুনি ও চিংড়ি মাছ দিয়ে অত্যন্ত স্বাদের বেগুন শুক্তো রেসিপি"।এরপর গরম গরম ভাতের সঙ্গে এটি পরিবেশন করতে হবে।চাইলে আপনারা ও এভাবে একদিন ট্রাই করে দেখতে পারেন,তখন বুঝবেন কতটা স্বাদের খেতে রেসিপিটি।
বেগুন গুলো সুন্দর ঝুলে আছে। রান্নাটি দেখে মনে হচ্ছিল এখনই শুরু করি লুচি দিয়ে। অসাধারণ। ধন্যবাদ বোন।
হি হি হি।বেশ বলেছেন দাদা,অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ওয়াও আপু গ্রাম বাংলার সুন্দর একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন। সত্যি আমার কাছে খুবই লোভনীয় লাগছে মনে হচ্ছে খুব মজা হয়েছে। আসলে আপু আমরা যখন গ্রামের বাড়িতে থাকতাম। তখন থানকুনি পাতা প্রায় খেতাম ভরা ভেজে খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে। আর থানকুনি পাতা দিয়ে যে কোন তরকারি রান্না করলে খেতে খুবই দারুণ লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে এতো সুন্দর গ্রামের রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
জেনে ভালো লাগলো ,আপনার অনুভূতি।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
শুক্ত কি? আমার আগে জানা ছিল না । আপনার পোষ্টের মাধ্যমে স্পষ্ট ধারণা পেলাম । ছোটবেলায় থানকুনি পাতা কাঁচা খেয়ে ফেলতাম । শরীরের জন্য বেশ উপকারী । বেগুন ও থানকুনি দিয়ে মজাদার একটি শুক্তো রেসিপি শেয়ার করেছেন । ধন্যবাদ দিদি আপনাকে
হ্যাঁ ভাইয়া, আমরাও থানকুনি পাতা কাঁচা খাই।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপু থানকুনি ও চিংড়ি মাছ দিয়ে সুস্বাদু বেগুন শুক্তো রেসিপি তৈরি করেছেন। জাস্ট অসাধারণ একটা রেসিপি। সবকিছু সুন্দরভাবে তৈরি করে শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে। রেসিপির কালারটা হয়েছে চরম। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ভাইয়া।
বেগুন শুক্তো এই নাম প্রথম শুনলাম। আপনি খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে বেগুন শুক্তো কি এবং কিভাবে রান্না করতে হয়। আপনার বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে যে এটি খেতে বেশ মজাদার। আমি আগে কখনো এরকম রেসিপি খাইনি। আপনার খাবারটা বেশ লোভনীয় লাগছে দেখতে। আপনাকে ধন্যবাদ। নতুন একটি রেসিপি আপনার কাছ থেকে শিখতে পারলাম।
হ্যাঁ আপু, খেতে খুবই মজা।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
থানকুনি ও চিংড়ি মাছ দিয়ে সুস্বাদু বেগুন শুক্তো রেসিপি আগে কখনো দেখিনি দেখে তো খেতে ইচ্ছা করছে আপু অনেক সুন্দর করে রেসিপি তৈরি করেছেন দারুন হয়েছে আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভালো থাকুন
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার সুন্দর মতামত জানানোর জন্য।
থানকুনি ও চিংড়ি মাছ এর সাথে বেগুন দিয়ে অনেক সুন্দর একটি রেসিপি তৈরি করেছেন
যেটা দেখতে অনেক সুন্দর লাগতেছে তাহলে খাইতে অনেক মজা হবে । তাছাড়া ধাপগুলো অনেক সুন্দর উপস্থাপন করেছেন । আপনার জন্য শুভকামনা রইল
হ্যাঁ ভাইয়া, খেতে খুবই মজা।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
দিদি একদম নতুন রেসিপি দেখলাম,কখনো এমন করে রেসিপি খাইনি।তবে রেসিপিটি দেখতে যেমন সুন্দর লাগছে,তেমনি মনে হয় খেতে অনেক দারুন।রান্নার সাথে সাথে উপস্থাপনা অনেক সুন্দর।অনেক ধন্যবাদ।
এভাবে অবশ্যই একদিন খেয়ে দেখবেন দাদা।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এভাবে অবশ্যই একদিন খেয়ে দেখবেন ভাইয়া।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক লোভনীয় একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। দেখে যেন লোভ সামলাতে পারছিনা। আমার কাছে আপনার রেসিপি টা অনেক ভাল লেগেছে। ধাপে ধাপে আমার জন্য যে আপনার রান্না পদ্ধতি তা উপস্থাপন করেছেন যা অসাধারণ ছিল। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
জেনে ভালো লাগলো ,আপনার অনুভূতি।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ভাইয়া।