"অহরহ ঘটে চলেছে চুরির ঘটনা" (শেষ পর্ব)
নমস্কার
অহরহ ঘটে চলেছে চুরির ঘটনা (শেষ পর্ব):
কিছু ঘটনা যেমন অনেক বেশি ভাবনার তেমনি কিছু ঘটনা বেশ হৃদয়বিদারক।যেটা আমাদের মনে দাগ কাটে।আবার কিছু ঘটনা মর্মান্তিক হয়ে থেকে যায় মানুষের স্মৃতিতে।তেমনি এই ঘটনাটি স্পর্শকাতর বা মর্মস্পর্শী না হলেও বেশ ভাবনার।সেই বাস্তবে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনায় শেয়ার করবো আজ আপনাদের সঙ্গে।
তো বন্ধুরা, আমি আগের দিনে বলেছিলাম,আমাদের গ্রামে বাঙালির সংখ্যা অনেক কম।আর নন বাঙালি অর্থাৎ বিহারী,সাঁওতাল ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষকে জায়গা দিয়ে এখানে বসানো হয়েছে।তারা-ই এখন আধিপত্য বিস্তার করে বসে গেছে এবং বাঙালির জিনিস চুরির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে।অর্থাৎ একপ্রকার উড়ে এসে জুড়ে বসার মতোই অবস্থা বলা চলে।হঠাৎ চেঁচামেচিতে আমার ঘুম ভাঙলো ভোরে,উঠেই মায়ের মুখ থেকে শুনতে পেলাম-----
রমেশ মিস্ত্রি ভাইয়ের গরু চুরি হয়ে যাচ্ছিল রাত্রে।রমেশ পেশায় একজন মিস্ত্রি অর্থাৎ মানুষের কাঠের ঘর তৈরি করার কাজ করেন তিনি।এছাড়া এই সময়ে সরকারি ক্যানেল পাড়ের কিছু খেজুর গাছও তুলে থাকেন রস সংগ্রহ করে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে।তো তারা মূলত তিন ভাই।সব ভাই আলাদা খাওয়া দাওয়া করে কিন্তু ছোট্ট একটি ভিটায় সবাই একত্রেই বসবাস করে।বাস চলাচল করা পিচ রাস্তার পাশেই তাদের বাড়ি।যেহেতু অল্প ভিটা তবুও তারা তার মধ্যে অনেক গরু, হাঁস, মুরগি,ছাগল ইত্যাদি প্রাণী পালন করে থাকেন।গরুগুলি তার ছোট ভাইয়ের।আর এই ছোট ভাইয়ের সংসারে রমেশ মিস্ত্রির বাবা ও মা থাকেন।তার বাবার বয়স হওয়া সত্ত্বেও গরুর দেখাশুনা করেন।কিন্তু এতগুলো গরু ঠিকভাবে সামলাতে পারেন না বলে গরু বিক্রির জন্য কথাবার্তা চলেছিলো কিছুদিন আগেই।দরদাম অব্দি কথা হলেও তারা সেই গরু বিক্রি করতে রাজি হন নি।ওখানেই মূলত বাঁধলো একটা রহস্য।ঠিক তার কয়েকদিন পর এই ঘটনা অর্থাৎ সেদিন রমেশ খেজুর গাছ কেটে রসের জন্য পাত্র পেতেছেন।
রাত তখন প্রায় তিনটে'র কাছাকাছি।একটি লরি গাড়ি এসে থামলো রমেশ মিস্ত্রির বাড়ির সামনে।গরুর গোয়াল ঘরটি রাস্তার ঠিক পাশেই,একজন লোক রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে।আর অন্যজন লোক প্রথমে গোয়ালঘরের তালা ভেঙে কিংবা শিকল কেটে ভিতরে প্রবেশ করলো।তারপর সমস্ত গরুর গলার দড়ি কেটে দিলো।তারপর শুয়ে থাকা বড় গাভী গরুর দড়ি কেটে যেই না ওঠানোর চেষ্টা করেছে চোরগুলি,ওমনি বড় গরু এক লাফে পাশের মাঠে ধানবনে পালিয়ে গেল দৌড়ে।অন্যদিকে তাদের একটি পোষ্য কুকুর ছিল, যে খুবই অলস এবং ভীতু।তাই কুকুরটি দুইবার ঘেউ----ঘেউ--- করে উঠলো।অন্যদিকে যেহেতু গাছে পাত্র পাতা রয়েছে রস সংগ্রহের জন্য তাই রমেশ মিস্ত্রির ঘুম ভেঙে গেল।তাই টের পেয়ে তিনি তাড়াতাড়ি উঠে পড়লেন।ততক্ষনে চোরেরা লরি নিয়ে পালিয়ে গেল, সম্ভবত লরির মধ্যে আরো মানুষ ছিল নিঃশব্দে।
রমেশও একজন বাঙালী।তো আশেপাশে অনেক স্থানীয় মানুষ কিংবা আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের গরু-ছাগল রয়েছে। কিন্তু চোরেদের টার্গেট বাঙালির জিনিসকে ফোকাস করা।অবশ্য চোর এক্ষেত্রে চুরি করতে ব্যর্থ হয়েছে।তো এটাই ছিল চুরির ঘটনার শেষ পর্ব।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
টুইটার লিংক
চুরির ঘটনা টা শুনে সত্যি খারাপ লাগলো ৷ আসলে সাধারন পরিবারে গরু ছাগল এসবই তো সম্পদ ৷ দিনশেষে যদি এগুলোর উপরে ফোকাস দেয় তাহলে আর কি বা করার৷ রমেশ দিকটা আমি বেশ ভালো বুঝেতেছি তার কেমন লাগছে ৷
ঠিক বলেছেন দাদা,ধন্যবাদ আপনার সু'মতামত দেওয়ার জন্য।
আপনার এই গল্পের পূর্ববর্তী পর্ব আমি পড়েছিলাম৷ আজকে এর পরবর্তী পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো৷ আসলে আপনাদের বাড়ির পাশের এই লোকগুলো যেভাবে নির্যাতন করে চুরির ঘটনা চালিয়ে যাচ্ছে তা খুবই খারাপ একটি বিষয়৷ গরিব মানুষের আসল সম্পদ হচ্ছে তাদের লালন পালন করা গরু ছাগল৷ তারা তাদেরকে অনেক ভালোবাসে এবং তাদের দ্বারাই তাদের জীবন পরিচালনা হয়৷ সেই সম্পদগুলোকে যদি ওই আদিবাসীরা চুরির ঘটনা ঘটায় তাহলে তার থেকে বড় কষ্টের আর কিছুই হতে পারে না৷
যথার্থ-ই বলেছেন, আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো ভাইয়া।
আমারও অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার প্রতি।
😊😊
বছর দুয়েক আগে তোমাদের ওদিকে গিয়েছিলাম, ওখানে আসলেই বিহারী,সাঁওতাল ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি। আসলে গ্রাম বাংলায় গরু চুরির এই টেকনিকটা আমার কাছে একেবারে নতুন মনে হল। তবে শেষ পর্যন্ত যে চোর চুরি করে নিয়ে যেতে পারিনি, এটাই সব থেকে বড় ব্যাপার।
এটার কারণ কি বোন ? এটা ঠিক বুঝতে পারলাম না।
দাদা,এই লেখার প্রথম পর্বটা হয়তো তুমি খেয়াল করোনি।ওটা পড়লেই তুমি সব বুঝতে পারবে😊, আর এই সব সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ি আমাদের এখান থেকে দূরে থাকলেও আনাগোনা সবসময় বাড়ির পাশ দিয়েই।
ঠিক আছে বোন, এই লেখার প্রথম পর্বটা তাহলে পড়ে দেখবো আমি ।
একদম দাদা😊.