"দ্বিতীয়বার ভোট দেওয়ার অনুভূতি"

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার

বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই?আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।আমিও বেশ ভালো আছি।যদিও মাঝে মাঝেই বৃষ্টির দেখা মিলছে তবে গরমের তীব্রতা কমছে না।প্রকৃতি কোনো ভাবেই তার শীতলতা খুঁজে পাচ্ছে না।যাইহোক তাই আজ আমি একটি সম্পূর্ণ নতুন অনুভূতি নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছি আপনাদের মাঝে।

দ্বিতীয়বার ভোট দেওয়ার অনুভূতি:

GridArt_20240513_154344065.jpg

নতুন কোনো জায়গা কিংবা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়ার আগেই আমার একটু বেশি চিন্তা হয়।আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।আসলে আপনারা অনেকেই জানেন, আমার আর দুইদিন পর থেকেই এক্সাম রয়েছে।যে এক্সাম-ই হোক না কেন সেটা একটা বাড়তি চাপের বলে আমি মনে করি।তাই কয়েক দিন ধরেই বেশ চাপে রয়েছি।তার উপরে ভোট দেওয়ার বিষয়টি কম বড় কাজ নয়।আর একটি নাগরিকের প্রধান কাজ বা অধিকার হচ্ছে ভোটদান অর্থাৎ এটি প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব বা কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।আমাদের কমিউনিটিতে রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা করা যেহেতু সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ তাই আমি ওই বিষয়ে কোনো কিছুই লিখতে চাইনা।আমি শুধুমাত্র আমার দ্বিতীয়বার ভোটদানের অনুভূতিটাই শেয়ার করবো।

IMG_20240513_082858.jpg

আজ আমাদের এখানে লোকসভা নির্বাচনের ভোট।অনেকটা চাপের মধ্যে দিয়ে যেহেতু আমার দিন অতিবাহিত হচ্ছে তাই সকাল থেকেই শরীরটা দুর্বল অনুভব করছিলাম।তার উপরে বমি হয়ে আমার অবস্থা পুরো খারাপ হয়ে গিয়েছে তাই বাড়ি থেকে বের হতেও বেশ দেরি হয়ে গিয়েছিল।মূলত সকাল 7 টা থেকে বিকেল 5 টা পর্যন্ত ভোটদানের সময়।আমরা সবসময় চেষ্টা করি সকালে যাওয়ার যাতে ভিড় কম থাকে।তাই বাড়ি থেকে 6.30 মিনিটে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলাম মা এবং আমি।বাকিরা পরে যাবে ভোট দিতে।তো বাড়িতেই আমরা স্লিপ পেয়ে গিয়েছি তাই শুধু গিয়েই লাইনে দাঁড়াতে হবে।আমাদের বাড়ি থেকে ভোট কেন্দ্র 2 কিলোমিটার দূরে।তাই মা ও আমি পায়ে হেঁটেই গেলাম,গিয়ে দেখলাম অনেক মানুষের ভিড় জমেছে।প্রথমবারের ভোট ও এই একই কেন্দ্রে হয়েছিল,অনেকেই আবার টোটো করে যাচ্ছে ভোট দিতে।আগেরবার কাগজের ব্যালটে ভোট দিতে হয়েছিল যেটা বেশ সময়সাপেক্ষ ছিল।কিন্তু এইবার যেহেতু লোকসভা নির্বাচন তাই শুধুমাত্র মেশিনে একটি বোতাম টিপে দেওয়া কাজ।তো আমি ও মা আমাদের পার্ট নং বলতেই ওখানে ফোর্সরা দেখিয়ে দিলেন কোন লাইনে দাঁড়াতে হবে।

সেনাবাহিনীগুলি খুবই কড়াভাবে নজরদারি করছেন এবং তারা সবাই নন-বাঙালি।তো তারা কাউকেই ফোন নিয়ে ঢুকতে দিচ্ছেন না ভোট কেন্দ্রের মধ্যে।তাই আমাকে ফোন রাখতে বললো বাইরে কারো কাছে।কিন্তু এখানে যেহেতু আমরা নতুন তার উপরে সবাই অপরিচিত মানুষ।কার কাছে ফোন বিশ্বাস করে রাখবো সেটা নিয়েই বাঁধলো মুশকিল।তাছাড়া আগেই বলেছি এখানে বাঙালি ও শিক্ষিতের সংখ্যা কম এবং খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যা বেশি।তাই সবাই বাটন ফোন ব্যবহার করে, যাইহোক ফোর্সের একজন লোক আমাকে বাইরে ফোন রাখতে বললেন।তখন চোখে পড়লো--একজন দিদি অনেকের ফোন জমা রাখছেন তাই বাধ্য হয়ে তার কাছে জমা রাখলাম।দিদিটা আমার অপরিচিত তবে তিনি মিষ্টি সুরে বললেন যে,ফোন নেওয়ার সময় নিজ দায়িত্বে নিতে হবে।

IMG_20240513_084532.jpg

মা এবং আমি 37 জনের পর লাইন দিলাম।খুবই রোদ তাই কিছুটা সময় ছাতা মাথায় দিয়ে লাইন টেনেই যাচ্ছি কিন্তু লাইন এগোচ্ছে না।কারন 37 জনের পর দাঁড়ালেও সেই কোটা পৌঁছেছে 60 জনের মতো।কারন যখনই বাচ্চাসহ কোনো মা যাচ্ছেন, আবার কোনো বয়স্ক বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা যাচ্ছেন তারা বিনা লাইনে সরাসরি ভোট দিয়ে বের হয়ে আসছেন।তাই বেশ দেরি হলো আমাদের ভোট দিতে, তারপর কাঙ্ক্ষিত সময়ে ভোট দিয়ে বাইরে বের হয়ে সেই দিদির কাছে চলে গেলাম।এরপর নিজের ফোন খুঁজে নিয়ে আবার বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলাম ছাতা মাথায়।কারন রোদের তীব্রতা বেড়েছে আর আসার পথে এই ছবিগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।মজার বিষয় হচ্ছে- ছোট্ট একটি কাঁচা আমও কুড়িয়ে পেয়েছিলাম পথিমধ্যে।তো এটাই ছিল আমার দ্বিতীয়বার ভোট দেওয়ার অনুভূতি।।


আশা করি আমার আজকের অনুভূতিটি আপনাদের সকলের কাছেই ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান,খাঁড়গ্রাম

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি অনুভূতি শেয়ার করেছেন। আসলে আপু আমরা যে বাংলাদেশের নাগরিক তার একটি পরিচয় হচ্ছে আমরা একজন ভোটার। আমাদের সম্মিলিত ভোটের মধ্য দিয়ে কাঙ্খিত একজন ফলাফল হয়ে আমাদের সেবা করার জন্য একজন নির্বাচিত হয়। যদি আমি এখনো কোন ভোট প্রদান করিনি। তবে এখন উপজেলার ভোট চলছে আর এই ভোট আপনি দিতে পেরে বেশ খুশি এবং আপনার মতের যজ্ঞপার থেকে আপনি ভোট দিয়েছেন ‌। আর এই দ্বিতীয়বার ভোট দেয়ার অনুভূতিটি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

হ্যাঁ ভাইয়া, যোগ্য ব্যক্তিকেই ভোট দিয়েছি, ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

যাক আপু এটা জেনে বেশ ভালো লাগলো আপনি দ্বিতীয় বার ভোট দিতে পেরেছেন। কিন্তু আমি এখন পর্যন্ত একবারের অধিক ভোট দিতে পারি নাই। কি করে ভোট দিব বলেন, ভোট দিতে যাওয়ার আগেই বলে তোমার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে 🤣। আপনাদের যেমন লোকসভা নির্বাচন হয়েছে ঠিক তেমনি আমাদেরও কিছুদিনের মধ্যেই উপজেলা নির্বাচন হবে। দেখি এবার দিতে পারি কিনা।

 last year (edited)

ভাইয়া, সবখানেই এই সমস্যা রয়েছে।তবে এটা যেহেতু লোকসভা নির্বাচন সেহেতু খুবই সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। নন-বাঙালি ফোর্সরা কড়া নজর দিয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আমাদের এখানেও ভোটের কার্যক্রম চলছে আপু। তবে তার আগে আপনারা ভোট দিতে পেরেছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। আসলে প্রত্যেক জন মানুষের ভোট দেওয়া নাগরিক দায়িত্ব। তবে অনেক সময় ভোট নিয়ে বিভিন্ন কথা শোনা যায় তাই ভালো লাগে না। ধন্যবাদ আপু।

 last year 

হুম আপু,নানা কথাবার্তা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে হয়েই থাকে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

প্রথমেই বলতে চাই একজন সুনাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করেছেন জেনে ভালো লাগলো দিদি। আপনার মায়ের সাথে ভোট দিতে গিয়েছিলেন এবং অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত ভোট দিয়ে মোবাইল খুজে নিয়ে বাড়িতে এসেছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার জীবনে দ্বিতীয়বার ভোট দেয়ার অনুভূতি পড়ে অনেক ভালো লাগলো দিদি। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

আপনার সুন্দর মতামত জেনে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

দ্বিতীয়বারের মতো ভোট প্রদানের অনুভূতি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ভোট দিতে ভালো লাগে যদি এমন সুন্দর কড়া নিরাপত্তা থাকে। যাইহোক আপনার অনুভূতি পড়ে কিন্তু বেশ ভালো লাগলো। দোয়া করি আপনার দল যেন বিজয়ী হন।

 last year 

একদম-ই তাই।সঠিকভাবে ভোট দিতে ভালো লাগে, ধন্যবাদ।

 last year 

ভোট দেওয়া একজন নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য।ভোট দেওয়ার অনুভূতিটা আসলে অনেক আনন্দের।ভোট দেওয়ার সময় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।আর আপনি আপনার মার সঙ্গে ভোট দিতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার দ্বিতীয়বার ভোট দেওয়ার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

 last year 

হ্যাঁ আপু,এই অনুভূতিটা ভালো লাগার মতোই।ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

ভোট কেন্দ্র তো দেখছি অনেক দূর আপনাদের বাসা থেকে। ২ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে ভোট কেন্দ্রে যেতে তো তাহলে অনেক সময় লেগেছে। যাইহোক সিরিয়াল ধরে ইভিএম পদ্ধতিতে তাহলে ভোট দিয়েছেন। ভোট দিতে কিন্তু বেশ আনন্দ লাগে। আমিও উপজেলার নির্বাচনে এই মাসের ৮ তারিখ ভোট দিয়েছি। যাইহোক এতো সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। পরীক্ষার জন্য শুভকামনা রইল।

 last year 

আসলেই ভাইয়া, ভোট দিতে ভালো লাগে।আর ইভিএম পদ্ধতিতেই ভোট হয়েছে, ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আমিও সব সময় সকাল বেলা ভোট দিতে পছন্দ করি বোন। ওই সময়টাতে ভিড় একটু কম থাকে। তবে মোবাইল নিয়ে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না কেন , এটা আমি বুঝলাম না। আমি তো যতবারই ভোট দিয়েছি, ততবারই মোবাইল নিয়েই ঢুকেছি। তবে তুমি যে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিয়ে, একটা কাঁচা আম কুড়িয়ে পেয়ে সেটা সাথে নিয়ে সুস্থ ভাবে বাড়ি আসতে পেরেছো, এটাই অনেক। হা হা হা...🤭

 last year 

তবে মোবাইল নিয়ে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না কেন

দাদা,এইবার খুবই কড়াকড়ি।ফোর্সের লোকেরা সেই গার্ড দিচ্ছেন, সবাইকে চেক করে করে স্লিপ দেখে তারপর সেই স্কুলের মধ্যে ঢুকতে দিয়েছে।আর আমি মনে করি লোকসভা নির্বাচনের মতো সব ভোট এভাবেই হওয়া উচিত সঠিকভাবে।

 last year 

এটা আমিও শুনেছি বোন, নির্বাচন কেন্দ্র গুলোতে অনেক কড়াকড়ি চলছে। নির্বাচনের স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য এটি জরুরি একটি পদক্ষেপ।

 last year 

একদম-ই তাই দাদা।আশা করি তোমাদের ওদিকেও এমন হবে।

 last year 

আমাদের এই দিকে জুন মাসের ২ তারিখে ভোট বোন। এখন দেখা যাক, কি হয় সেই দিন।

 last year 

হুম, আর আমার ও মায়ের দেওয়া হয়ে গেছে।দাদা আর বাবা তোমাদের ওদিকে দেবে জুনের 1 তারিখ মনে হয়।

 last year 

ঐদিন আমিও ভোট দেবো বোন। আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম ২ তারিখে আমাদের ভোট, পরে জানতে পারি যে ১ তারিখে আমাদের ভোট দেওয়ার দিন।

Coin Marketplace

STEEM 0.09
TRX 0.30
JST 0.035
BTC 110927.66
ETH 3906.43
USDT 1.00
SBD 0.58