নাটক রিভিউ - এক পায়ে জুতা অন্য পা খালি ..!!
আসলে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে বেঁচে থাকার জন্য সবকিছুই প্রয়োজন এজন্য মাঝে মধ্যেই বিনোদন বা সিনেমা এসব দেখার মাঝেও একটা আত্মতৃপ্তি বা সুন্দর জীবন জড়িয়ে রয়েছে৷ যদিও বা সেই আগের মত আর সিনেমা হল যাওয়া হয় না ৷ কারণ সময়ের দাবিতে বা আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা আজ আমাদের হাতের মুঠোয় এসেছে ৷
একটা সময় ছিল প্রতিনিয়তই নাটক সিনেমা এসব নিযে পড়েছিলাম৷ কিন্তু সময়ের তাগিদের জীবনের জীবিকার তাগিতে এখন প্রতিনিয়ত ব্যস্ততার জীবন অতিবাহিত করতে হয় ঐ
যাহোক গতকাল এত ব্যস্ততার মাঝেও মোবাইল ফোনটি নিয়ে ইউটিউবে একটি নাটক দেখতে ইচ্ছে করল৷ যদিও আমি মোশারফ করিম এই নাটকগুলোই বেশি দেখে থাকি ৷তাই তো তার নাম সার্চ দিয়েই নাটক খুঁজতে লাগলাম৷ হঠাৎ করেই নাটকের নামটি চোখে পড়ল৷ এক পায়ে জুতো আরেক পায়ে খালি
নামটি শুনেই প্রথমত ইন্টারেস্টিং লাগছিল ৷ আর নাটকটি পুরোটাই দেখেছি৷ আর সেই দেখার অভিজ্ঞতা এবং কি আমার মতামত সবকিছু নিয়েই নাটকটি আপনাদের মাঝে রিভিউ করতে চলেছে আশা করছি ভালো লাগবে৷
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
নাটকের নাম | এক পায়ে জুতা অন্য পা খালি |
---|---|
পরিচালক | শামর্স করিম |
অভিনয়ে | মোশারফ করিম ও নাবিলা |
দেশ | বাংলাদেশে |
ডুরেশন | ৪৪.৫৭ |
নাটকের লিংক |
কাহিনী সংক্ষেপে
নাটকের শুরুতেই যদি বলি তবে মোশারফ করিম একজন মার্কেটিং সেলসম্যান চাকরি,করে ৷ অর্থাৎ দোকানে দোকানে মাল বিক্রি করে বেড়ানোর কাজ ৷আর অন্যদিকে নাবিলা হলেন একজন বাড়িওয়ালার মেয়ে যে বাড়িতে মোশারফ করিম ভাড়াটিয়ে হিসেবে থাকে ৷
মোশারফ করিম গ্রাম থেকে শহরে এসেছে তিনি একজন শিক্ষিত এবং ভদ্র ব্যক্তি তথাপিও তার মা-বোন গ্রামে বসবাস৷ যেহেতু জীবন জীবিকার তাগিদে মোশারফ করিম তার এই সেলস মার্কেটিং চাকরিটাই বেছে নিয়েছে। মোশারফ করিমের একজন খুবই সাধারণ এবং দরিদ্র পরিবারের তাই প্রতি মাসের তা ইনকামের বেতনের টাকাটা তার পরিবারের কাছেই পৌঁছে দেয় ৷ তার মা বোনের কাছে৷ সব মিলিটার এই ছোট্ট মার্কেটিং সেলসম্যানের চাকরিতে নিয়ে যায় জীবন ৷
একদিন হঠাৎ করে কি হলো মোশারফ করিম তার চাকরিরত যে ডিউটির জুতা প্যান্ট এসব থাকে তার মধ্যে জুতো জোড়া খারাপ হয়ে গেছিল ৷ আর যার জন্যই স্যান্ডেল পরে ডিউটি রত ছিল চাকরিতে৷ ঠিক এমন মুহূর্তে তার বস এমন শারীরিক সাজসজ্জা দেখে তাকে জিজ্ঞেস করেছে তার পায়ের জুতা নেই কেন ? বেহায়া মোশারফ করিম সবকিছু সত্য কথা বলে ৷
এরপর তারপরের দিন মাত্র ৩০০ টাকা দিয়ে এক জোড়া জুতা জোড়া কিনে মূলত চাকরিকে বাঁচানোর জন্যই ৷ এমন মুহূর্তে তার পরের দিন সকালবেলা নিজেই জুতা কে পালিশম্যান করে ছাদে শুকাতে দিয়েছিল ৷ আর এমন মুহূর্তেই বাড়িওয়ালার মেয়ে ছাদে আসে ছাদে৷ আসার মূল কারণ কয়েকটি বখাটে ছেলে প্রতিদিনই তাদের বাসার নিচে এসে চিল্লাচিল্লি বিভিন্ন ধরনের কটুক্তি দেখায় নাবিলাতে অর্থাৎ বাড়িওয়ালার মেয়েকে৷
আর সেদিন ওই বাড়িওয়ালার মেয়ে রাগ করে সেই বখাটে ছেলেগুলোকে তাড়ানোর জন্যই মোশারফ করিমের ৩০০ টাকা দিয়ে এক জোড়া জুতার শুকাতে দেওয়া ঐখান থেকে একটি জুতা ঢিল মেরে বখাটে ছেলেদের উদ্দেশ্যে ৷ এমন মুহূর্তে মোশারফ করিম সাহেব তার চাকরিতে যাওয়ার জন্য সবকিছু প্রস্তুতি নেওয়ার পর দেখছে একটা জুতো নেই ৷তারপর বাড়িওয়ালার মেয়েকে ছাদে দেখে পেয়ে তাকে জিজ্ঞেস করার পর তিনি সব কিছু বললেন৷
এমন অবস্থায় মোশারফ করিম নিচে সেই বখাটে ছেলের দিকে আসে তার জুতোটা নিকে৷ কিন্তু বখাটে ছেলেগুলো মোশারফ করিমের উপর অত্যাচার নিপীড়ন করে৷ মোশারফ করিম তবুও তাদের কাছে অনেক মিনতি করার পরও জুতাটা দিল না ৷তারপর অসহায় হয়ে এক পায়ে জুতা অন্য পা খালি হয়েই তার মার্কেটিং সেলসম্যানের চাকরির ডিউটিতেই চলে গেলেন৷ কিন্তু ডিউটিরত অবস্থায় তার বস তার এমন আচরণ দেখলে নিশ্চয়ই রাগ করবে ৷ এবং এখান থেকে বাঁচতে সে তার খালি পায়ে ব্যান্ডেজ করে যাতে বস বুঝতে না পারে৷ তার এক পা খালি কেন
এমন অবস্থায় তার বস দেখে তার সমস্ত কথাগুলো শুনে তাকে তিনদিনের ছুটি মঞ্জুর করে৷
এভাবে করে দুইদিন পার হয়ে যাওয়ার পর তিন দিনের দিন জুতা ছাড়া তো চাকরিতে প্রবেশ নিষেধ কি করে জুতা জোড়া কিনবে৷ তারও টাকা পয়সা নাই তার কাছে ৷ যাহোক এমন অবস্থায় তার আরেকটি জুতা সেই জুতাটাও নীলিমা বুখাটে ছেলেগুলোকে ছুরে মারে৷ এর মূলত একটা উদ্দেশ্য রয়েছে যে নীলিমা চায় মোশারফ করিম পুরুষ হিসেবে যাতে তাদের বিরুদ্ধে লড়তে পারে৷ কিন্তু মোশারফ করিম একজন মহাপুরুষ হয়েও প্রতিটা সময় নীরবতা এবং সাধারণভাবে জীবন যাপন করে৷
যাহোক এমন অবস্থায় তৃতীয় দিন চাকরির ডিউটিতে যাবে ঠিক তখনই ওই বখাটে ছেলেগুলোকে আবার বলে সে জুতা জোড়া দিতে৷ কিন্তু তাদের শর্ত ছিল নাবিলা কে তার হয়ে চিঠি লিখি প্রেমপত্র দেওয়ার ৷ যাহোক অবশেষে উপায় না পেয়ে করিম উপায় না পেয়ে নিজে প্রেমপত্র দেখে নাবিলা কে পৌঁছে দেয় ৷আর এটা পেয়ে নাবিলে অনেক রাগান্বিত হয়ে তার বাবাকে বিচার দেয় ৷এমন অবস্থায় বাড়িতে বিশাল একটা বৈঠক হওয়ার পর মোশারফ করিম সবকিছু মাথা পেতে সব দোষ নিজের ঘরে নিয়ে সবার কাছে ক্ষমা বাসা বাড়ি থেকে চলে যায়৷ কিন্তু এর কিছুদিন পর নাবিলা সবকিছু তার বাবাকে সত্য ঘটনা টা বলে ৷ এবং যে তখন তার বাবা অনেকটা আফসোস করে বলে যে তাকে আবারও আমাদের বাসায় ফিরিয়ে আনতে হবে ৷ এমন অবস্থায় নাবিলার বাবার ফোনে ফোন আসে মোশারফ করিমের দেয়া নাম্বার থেকে ৷কিন্তু তার আগে মোশারফ করিম যখন তাদের বাসা বাড়ি থেকে চলে যায় তখন এই পকেটমার তার ফোনটি চুরি করে ৷এবং সেই পকেটমার লোকটাই অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে একটি পাঙ্গু হয়ে যায় ৷কিন্তু কিন্তু তার দেয়া নাম্বারে ফোন দেয়ার জন্যই নীলিমার পরিবারসহ সবাই হসপিটালে যায় ৷ বাসা বাড়িতে ফেরার পর তার কিছুক্ষনের প্রতি মোশারফ করিম তাদের বাড়িতে হাজির এ দেখে তো সবাই অবাক৷
কিন্তু সেই হসপিটালে থাকা লোকটি যে মোশারফ করিম নয় নাবিলের পরিবার সেটা জানে না৷
যাহোক অবশেষে সব ভুলভ্রান্তির পর আবারও মোশারফ করিম তাদের বাসা বাড়িতেই অবস্থানরত করে তার চাকরি নির্বাহ করে ৷ আর মেইন কথা হলো নাবিলা, মনে প্রানে মোশারফ করিমকে ভালোবাসে ৷
সর্বোপরি নাটকের যে দিকটি আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করেছে তা হলো মোশারফ করিমের ধৈর্য সাধারণ জীবন যাপন ৷তিনি কিন্তু পারলেই সে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেতে পারো৷ কিন্তু সেটা করেনি নীরবে তা সহ্য করেছে৷
যাদের কাছে ওই এক জোড়া জুতা ছিল সামান্য আর মজা করার তালবাহানা ৷ মোশারফ করিমের কাছে সেই এক জোড়া জুতা ছিল তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ কিংবা তার কিংবা তার চাকরি বাঁচানো মরার লড়াই ৷
কারণ তার কাছে খুব বেশি টাকা নেই যে সে নতুন জুতা কিনবে ৷ যা হোক সবশেষে নাবিলা তাকে একজোড়া নতুন জুতা কিনে দেয়৷ আর এখানেই নাটকটির সমাপ্তি ঘটে ৷
নাটকের লিংক
বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের নাটক গুলো দেখতে ভীষণ ভালো লাগে বিশেষ করে নাটকের নাম গুলো আরো বেশি সুন্দর হয়ে থাকে। আপনি আজকে যে নাটকটি রিভিউ করেছেন এই নাটকটি আমি এর আগে দেখি নাই কিন্তু আপনার রিভিউ করে বুঝতে পারলাম নাটকটি অনেক সুন্দর। অনেক সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে না ধরে সহ্য করাটাই ভালো নাটকে এই অংশটি বেশ ভালো হবে ফুটে তুলেছে। এত সুন্দরী নাটক আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জি ভাই নাটকের মধ্যে ফুটে উঠেছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ না সহ্য করার শাক্তি ৷ আর নাটকটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে ৷
খুব সুন্দর একটি নাটক এর রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। মোশারফ করিমের নাটক আমার অনেক ভালো লাগে। সব সময় তার নাটক দেখার চেষ্টা করি। তবে সময় স্বল্পতার কারনে তেমন একটা নাটক দেখা হবে না৷ আজকে আপনার এই নাটকের রিভিউ এর মাধ্যমে এই নাটকটি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য৷
যাগ আপনিও তাহলে নাটক দেখেন শুনে ভালো লাগলো ৷ তবে সময় বুঝে নাটকটি দেখবেন ৷ যেখানে কিছু বাস্তবতা ফুটে উঠেছে ৷
চেষ্টা করব সময় পেলে অবশ্যই নাটকটি দেখার। রিভিউ থেকে ধারণা নিয়ে নিলাম।
আপনি আজকে মোশারফ করিমের একটা নাটক রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন দেখে পুরো রিভিউটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আমি নাটকের রিভিউ পোস্ট পড়তে খুবই পছন্দ করি। তেমনি আমার কাছে এই নাটকটার রিভিউ ভালো লেগেছে। নাবিলা তো মনে প্রানে মোশারফ করিম ভালোবাসে। আমি সময় পেলে অবশ্যই এই নাটকটা দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব। কারণ পুরো নাটকের রিভিউ অসম্ভব ভালো লেগেছে।
হ্যা আপু সময় পেলে অবশ্যই নাটকটি দেখবেন ৷ অনেক ভালো লাগবে ৷
মোশারফ করিমের নাটক গুলো আগে দেখা হতো, তবে এখন খুব একটা দেখা হয় না ব্যস্ততার কারণে। আসলে ব্যস্ততার কারণে খুবই কম নাটক দেখা হয়, মাঝে মধ্যে দেখে থাকি। এই নাটকটা কিন্তু অনেক সুন্দর ছিল। শেষে দেখলাম নাবিলা তাকে একজোড়া জুতা কিনে দিয়েছিল এই বিষয়টা দেখে ভালো লেগেছে। আর এরই মাঝে নাটকটা শেষ হয়ে গিয়েছিল দেখলাম। আমি ভাবতেছি সময় পেলে এই নাটকটা দেখব। দেখতে ভালো লাগবে মনে হচ্ছে।
জি ভাই মোশারফ করিম এর নাটক গুলো অনেক ভালো লাগে ৷ অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই নাটকের রিভিউ পরে সুন্দর মতামতের জন্য ৷