আমাদের হিন্দু সনাতন ধর্মালম্বীদের ১২ মাসে ১৩ পার্বন বলা হয় ৷ কারণ আমাদের প্রতিটি মাসেই কোন না কোন পুজো রয়েছে ৷ আর এই কারণে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বারো মাসে তেরো পার্বণ কথাটি উল্লেখ রয়েছে। তো যাই হোক আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি৷ রাস পূর্ণিমার দিনে রাসলীলার পূজার করার অভিজ্ঞতা ও তার সাথে কিছু আলোকচিত্র ৷ এই রাস লীলা পূজা ৭ তারিখে অর্থাৎ সোমবার ছিল সেদিন ৷ প্রতি বছরই এই উৎসবটি পালন করে থাকি৷ আর এবারও তার ব্যতিক্রম নয় আমরা সবাই আমাদের গ্রামের সবাই মিলে চাঁদা তুলে এই উৎসবটি করি৷ যেহেতু আমাদের পূর্বপুরুষ থেকে করে আসছে তাই তার ব্যতিক্রম না করে প্রতি বছরই আমরা এই উৎসবটি খুব আনন্দের সহিত উদযাপন করি ৷ যদিও খুব একটা বড় ধরনের করতে পারি না ৷ তবে যতটুকু সম্ভব শুধু কার্যক্রম টাই করে থাকি৷

তো সবার আগে বলতে হয় যে এই রাস লীলা কী কেন রাসলীলা সব কেন পালন করা হয়৷
মানব রূপে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সর্বোত্তম লীলা এই রাসলীলা উৎসব৷ কার্তিক মাসে পূর্ণিমার রাতে এই উৎসবটি পালিত হয় ৷ রস থেকে রাসলীলার উৎপত্তি। রস থেকে বোঝায় আনন্দ উৎসব মুখর পরিবেশ৷ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে ঘিরে এই লীলা উৎসব পালিত হয়। কারণ এই কার্তিক পূর্ণিমা রাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনের সকল গোপিনীদের ও রাধা সহ আনন্দে উৎসবে মেতেছে উঠেছিল৷ এই পূর্ণিমার রাতেই অর্থাৎ আমরা যেটাকে চন্দ্রগ্রহণ বলে থাকি ৷ আর এই কারণেই প্রেম বন্ধনের শ্রী রাধারানী কৃষ্ণের প্রেমে মাতোহারা হয়ে এই লীলা উৎসব পালিত হয় ৷ আর এরপর থেকেই প্রতিটি ধর্মলম্বী মানুষ এই পূর্ণিমার চন্দ্রগ্রহণ তিথিতে এই উৎসবটি পালন করে থাকে৷

এবার আসি পুজোর সময়!!!!

লোকেশনঃ

আমরা সেদিন এরা আসলে উচ্চ কে কেন্দ্র করেই আট প্রহর ব্যাপি মহানাম সংকীর্তন এর আয়োজন করেছিলাম৷ যে তুই কলিযুগে কোন মুক্তি নেই আর তাই জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্তই এই কৃষ্ণ নাম কি মুখে জব করতে হবে৷ সেদিন সকাল থেকেই এই মহানাম সংকীর্তন চলতে থাকে এবং কি সারারাত ব্যাপী৷ আর আসলে পুজো করা হয় ওই রাতেরই সময়। তো এদিকে মহানাম সংকীর্তন চলিতেছে আর আরেক দিকে রাশ পুজো করার সমস্ত আয়োজন গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ আয়োজন করতে ছিল৷ সেদিন আমাদের পরিবারের সবাই পুজোতে ব্যস্ত ছিল৷ যেহেতু গ্রামের পুজো সবাইকে এগিয়ে যেতেই হবে ৷ কারণ এই পুজোর আয়োজন অনেক অনেক মানুষের প্রয়োজন৷

যদিও আমিও সেদিন সারাদিন অনেক ব্যস্ত সময় ছিলাম৷ যাহোক সেদিন ঠিক রাত বারোটার সময় পুজো সবকিছু আয়োজন কমপ্লিট হওয়ার পর পুরোহিত মশাই চলে আসে৷ আর এরপরে আমরা পুজোর কার্যক্রম শুরু করি পূজোর উপকরণের মধ্যে ফলমূল দুধ কলা আরো অনেক কিছু ৷ এরপর পুরোহিত মশাই সমস্ত পুজোর উপকরণ ভালোভাবে সাজিয়ে নিলেন৷ এবার পুজো করার মুহূর্ত তখন গ্রামের সকল ছোট বড় সবাই মিলে বসে পুজে৷
পুরোহিত মাসে জোরে জোরে মন তথা ভাগ্য পাঠ করছিল আর আমরা মন দিয়ে সেগুলো শুনে শুনে বলছিলাম৷ এরপর পুজো শেষ হওয়ার পর আমরা সবাই দু'হাত করজোড়ে প্রণাম করি৷
আর এরপর আসলো রাসলীলার কাজ ৷ অর্থাৎ এখানে একটি ছোট্ট মন্দির বানানো হয়েছে৷ আর মন্দিরের চারদিকে শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি বানানো হয়েছে৷