প্রতিযোগিতা-২৪ || আমার প্রিয় শৈশব বন্ধুত্বের স্মৃতি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ- ২৬ই, আশ্বিন | ১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | শরৎকাল ||



istockphoto-839296132-612x612.jpg

Images

হ্যালো, আমার বাংলা ব্লগ বাসী কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি নতুন পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে৷

আমার বাংলা ব্লগ মানেই যেন নতুন কিছু এটা আসলে বলে শেষ করার মতো নয় ৷ প্রতিনিয়ত যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে আর সত্যি বড় দাদার প্রতি কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে আর পাচ্ছিনা ৷আমার বাংলা ব্লগ এভাবেই এগিয়ে যাগ আরও বহুদূর ৷

তো বন্ধুরা আর বেশি কথা না বেরিয়ে এবার চলুন দেখি আসা যাক আমার স্কুল জীবনের বন্ধুত্বের স্মৃতির সেই পুরনো কথা গুলো ৷ আসলে সময়টা যে কিভাবে চলে গেল সত্যি তা নিজেও বলতে পারলাম না ৷আজকে শুধু সেই চোখের পাতায় এগুলো সেই পুরনো দিনের মুহূর্তের কাটানো গুলো শুধু ভাবি মাঝে মাঝে ৷ তখন মনে হয় জীবন কি এটাই ৷ হয়তো বা তাই ৷
বন্ধু শব্দটি ছোট হলেও এর ভিতরে থাকা প্রতিদিন শব্দ যেন অনেক কিছু যা আসলে ভাষায় বলে বা লিখে বোঝা সম্ভব না এটা হল একটি অন্তরের অন্তস্থল থেকে ৷ তবে আমার মতে বন্ধু হলো সেই যে তোমার পাশে সব সময় সুখে দুখে এমনকি জীবন বাজি রেখেও তোমার পাশে থেকে যায় ৷ সেটাই হলো তোমার আসল জীবনের বন্ধু ৷

বন্ধু আসলে কোন বয়স বা ধনী-গরীব উঁচু নিচু ধর্ম বর্ণ কোন কিছু মানে না ৷ আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার স্কুল জীবনের বন্ধু স্মৃতির কথাগুলো শেয়ার করব ৷ আসলে সবাই বেশ ভালো ভালো কথা উপস্থাপন করেছে৷ সবাই শুধু কলেজ লাইফের হাই স্কুল লাইফের কিংবা ভার্সিটি লাইফের বন্ধুদের কথাই শেয়ার করছে ৷ কিন্তু খুব কম পোস্টে দেখেছি সেই শৈশব জীবনের বন্ধুর কথা বলতে ৷

india-4217625_640.jpg
Images

আমি আজকে আমার শৈশব স্কুল জীবনের স্মৃতির কথা শেয়ার করতে ইচ্ছুক ৷ কারণ আমি মনে করি শৈশব জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল সারা জীবনের স্মৃতি৷ যদিও সেই সময়টাতে আমরা বন্ধুর মর্ম টা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি নি ৷তবে একটা পর্যায়ে সেই শৈশব জীবনের বন্ধু স্মৃতি তাই সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে৷ সেই ছোট্টবেলায় পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতাম কত বন্ধুবান্ধব মিলে৷ কত দুষ্টমি স্কুলে ক্লাসের সময় দুষ্টামি নিজে দোষ করে অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া এতে সে ক্ষুব্ধ হয়ে আবার মারা-মারি করা ৷ কাগজের টুকরো দিয়ে ঢিল মারা৷ এ নিয়েই স্কুলের কতো বিচার এক পর্যায়ে বাবা মা স্কলে ডেকে আনা৷ তারপর আবার নিজের দোষটা নিজে স্বীকার করা ৷ যতই দুষ্টামি মারামারি হোক না কেন একটা সময় আবার সেই এর কাঁধে কাঁধ ওর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্কুলে চলাফেরা ৷

আজকে আমার শৈশব জীবনের একজন বন্ধুর কথা আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি ৷ তার নাম আফিব যদিও সে আবার মুসলিম ৷ মুসলিম হলেও তার সাথে আমার সাথে তার গভীর সম্পর্ক ৷আমরা প্রতিদিন একসাথেই স্কুলে যেতাম তাদের উৎসবের সময় আমিও তাদের বাড়িতে গেছি আমার অনুষ্ঠানের সময় আমিও তাকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে এসেছি৷ যদি আমাদের বাড়ির কিছু দূরে তাদের বাড়ি ৷ আমি যদি একজন স্কুলে না যেতাম তো সেও যেত না ৷ আর সেও যেদিন যেত না ঠিক আমিও সেদিন যেতাম না ৷এতটাই গভীর সম্পর্ক ছিল ৷

তার বাবার আবার ব্যবসা ছিল তারা আর কি ধনি ছিল ৷ আর আমার বাবা একজন কৃষক ৷
সে আবার স্কুলে যাওয়ার আগে আমার বাড়ি আসবে আমি যাব কি না ৷ তারপর দুজনে মিলে স্কুলে যেতাম ৷ ওর আবার স্কুল ব্যাগ আছে কিন্তু আমার নাই এতে আমার খুবই মন খারাপ লাগে ৷ বাড়িতে রোজ বলি একটা ব্যাগ নেওয়ার জন্য ৷ কিন্তু দেবে দেবে বলে আর খোজ নাই ৷ একদিন আফিব তার পুরাতন ব্যাটা আমাকে দিয়ে শেয়ার একটা নতুন ব্যাগ নিয়েছিল ৷যদিও আমি নিতে চাই নি সে আমাকে জোর করে দিয়েছে ৷ যাহোক তারপর আমি তার সেই পুরনো ব্যক্তি নিয়ে এবং বাড়িতে এসে বলি যে আমি একটা আমার বন্ধু ব্যাগ নিয়েছি যদিও বাড়ি থেকে একটু রাগারাগি করছিল তারপরে সে আফিবের মা বলেছিল যা আমি দিয়েছি ৷তারপর থেকে তো আর কিছু বলেনি ৷ যাহোক বন্ধু তুই আমার প্রতিদিন টাকা নিয়ে যেত৷ কিন্তু আমি তো আর প্রতিদিন টাকা নিয়ে যেতে পারিনি তবুও তার টাকা দিয়ে কেনা খাবার টি দুজনের সমান ভাবে ভাগ করে খেয়েছি৷ আসলে প্রতিটা দিন প্রতিটা মুহূর্ত দুজনে একসাথে কাটিয়েছিল৷ স্কুল ছুটি আসার পর দুজনেই মিলিয়ে খেলাধুলা৷ সেই সময়টা আমার আজও মনে পড়ে ৷ এভাবে দেখতে দেখতে কিভাবে যে পাঁচটি বছর কেটে গেল৷ দুজনে একসাথে সমাপনী পরীক্ষা দেওয়ার পর দুজনে পরীক্ষায় জিপিএ ফাইপ পেয়েছিলাম৷ দুজনের মনের আনন্দদায় ছিল সত্যিই অনেক আনন্দদায়ক৷ ভেবেছিলাম দুজনে এখন হাই স্কুল লাইফে সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটাবো আর পড়াশোনার মেতে উঠবো৷ কিন্তু সেই আনন্দ আর হয়ে উঠলো না তা ধনী বাবা তাকে উচ্চমানের পর লেখার জন্য তার মামার বাড়ির একটি ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাবে৷ তারপর আর কি করার হঠাৎ কর একদিন একদিন সেই আফির বন্ধুত্ব এসে বলল আমি আমার মামার বাড়ি যাচ্ছি সেখান থেকেই পড়ালেখা করবো৷ আরেকজনের কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে দু চোখের জল সে বলেছিল ভালো করে পড়ালেখা করার কথা৷ আমিও তাকে বলেছি তুমিও ভালো করে পড়ালেখা করো৷

সেই দুচোখের জলে ভেসে যাওয়া দুজন বুকে জড়িয়ে নেওয়া ৷ এখন সে তার মামার বাড়ি ফরিদপুর থেকে বড় হয়ে উঠছে এসএসসি তো সেবার খুব ভালো পয়েন্ট পেয়েছে৷ আর আমি রয়ে গেলাম আমার সেই গ্রামের হাই স্কুলেই বড় হয়ে ওঠা৷ আসলে জীবনটা এটাই হয়তো যদি আমারও বাবার ধন দৌলত থাকতো তাহলে হয়তোবা আমিও অনেক বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করতে পারতাম ৷ যাহোক সবই ভাগ্যের লেখা৷

আজও সেই বন্ধুর সাথে কথা হয় ফেসবুকে৷ যদিও গত ঈদের সে বাড়ি এসেছিল দুজনে মিলে আড্ডা আর আনন্দ ৷ কিন্তু সেই শৈশবের দিনগুলোর মত যেন আর ভালো ভাবেই হয় না৷ এখন বন্ধু শুধুই বলে কিরে কেমন আছিস দিনকাল কেমন পড়ালেখার কি খবর৷ এতোটুকুই সে আজ অনেক বড় হয়েছে বড় কলেজে পড়ালেখা করতেছে৷
ভালো থাকুক সুস্থ থাকুক এমনটাই প্রতিনিয়ত আমি কামনা করি ৷

ভুল যদি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন!!

অভিবাদন্তে: @gopiray

99pyU5Ga1kwqSXWA2evTexn6YzPHotJF8R85JZsErvtTWY3VVxYro9QwSgYBVma2r6zMsUCfiScNG3aceJ1PNdabrBYVxvV9UcUsf85FyULtJ9cFP8hHoivRJNEz2dc5Wn.png

Sort:  
 2 years ago 

আমাদের মত মধ্যবিত্তদের হাজারো স্বপ্ন থাকলে সেগুলো ভেঙ্গে যায় স্বার্থের কারণে। আপনার বন্ধুর টাকা ছিল বলে আপনার বন্ধু তার মামার বাড়ি থেকে অনেক ভালো প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে অনেক ভালো রেজাল্ট করেছে।আর সামথ্য এর কাচছে আপনি হেরে গিয়েছেন।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল

 2 years ago 

আপনি ঠিক বলেছেন আসলেই বন্ধুত্বের নেই কোন ভেদাভেদ। ধনী,গরীব, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সবার সাথে বন্ধুত্ব করতে পারে এটা স্বাভাবিক। আমার একটা জিনিস খুবই ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে আপনার বন্ধু নিজের ব্যাগ আপনাকে দিয়ে ওর জন্য আবার আরেকটি নতুন ব্যাগ নিয়ে নিল।যাদের টাকা-পয়সা বেশি তারা তো গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যায়।আমার সবচেয়ে বেশি খারাপ লেগেছে যখন আপনার বন্ধু আপনাকে ছেড়ে ওর মামার বাড়িতে চলে যায় ভালো করে পড়ালেখা করার জন্য। আপনি খুব সুন্দর করে আপনার শৈশবের স্মৃতি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

আসলে ধর্ম বর্ন উচু নিচু এটা মখ্য বিষয় না ৷ দিনশেষে সবাই মানুষ ৷ ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ৷

 2 years ago 

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে ভাই এই দুনিয়াতে টাকার প্রয়োজন আছে। আর টাকার জন্য অনেক কিছু করা যায়। যাইহোক আপনার বন্ধুর টাকা ছিল যার কারণে সে ভালো লাগে পড়াশোনা করতে পেরেছে।

 2 years ago 

জি ভাই টাকা ছাড়া দুনিয়া কেউ কারো নয়
তবে আমি এতেই খুশি ৷
ধন্যবাদ সুন্দর করার জন্য ৷

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64182.74
ETH 2768.00
USDT 1.00
SBD 2.66