গ্রামের পুরনো ঐতিহ্য "লক্ষি পুজোর গান" !! @shy-fox 10% beneficiary
আমার বাংলা ব্লগ
আজ শনিবার ১৫ অক্টোবর ২০২২ ইং
বাংলা ২৮ আশ্বিন ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসলে আজকে একটি নতুন টপিক নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম ৷ যেটা হলো লক্ষ্মী পুজোর গান৷ আপনারা হয়তোবা সবাই ভালো হবে বুঝতে পেরেছেন কিনা তা জানি না৷ তবে যারা গ্রামে বসবাস করে বা করেছে তারা হয়তো এই লক্ষ্মী পূজার গানের বিষয়ে বেশ ভালো ধারণাই আছে বলে আমি মনে করি৷ তো বর্তমান এই আধুনিক যুগের আধুনিক যন্ত্রপাতির যুগে সেই পুরনো ঐতিহ্যবাহী জারি, সারি ,ভাটিয়ালি, যাত্রাপালা ,অনেকটাই বিলুপ্তির পথে ৷বলতে গেলে এখন এই আধুনিক সামাজিক গণ মাধ্যম প্রযুক্তির জগতে সবকিছুই হাতের মুঠো এনে দিয়েছে ৷ আজ আমি এমনই একটি টপিক নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি ৷ যেটা হয়তো আমার বাংলা ব্লগের সবাই এ বিষয়ে জানে না ৷ চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক আমার ব্লগের মেইন বিষয়ে ৷
তাহলে সর্বপ্রথম আমাদের যেতে হবে ৯০ দশকের আগের ঘটনায়৷ ঠাকুর দাদা বা ঠাকুর দিদির মুখে শোনা কথা ৷ সে সময় নাকি গ্রামের পাড়ার মহল্লায় গানের আসর বসতো ৷ আর গ্রামের সবাই মিলে সেই গানের আসরে বসে গান উপভোগ করতো ৷ সেখানে বিভিন্ন বই নিয়ে গানের আসর বসতো আসলে যেখানে অভিনয়ের মাধ্যমে বই বা কোন হিস্টোরি কে একটি চলচ্চিত্র হিসেবে উপস্থাপন করার করত৷ যেটা আমরা বর্তমান সিনেমা বা মুভির মধ্যে দেখে থাকি ৷ ঠিক তেমনি তখনকার সময় এসব গানের আসর ৷
বিশেষ করে এটা গ্রামের লক্ষ্মী পূজার সময় প্রচলিত বেশি ছিল ৷ লক্ষ্মী পূজার পর টানা তিন দিন চলছিল এই গানের আসর৷ অর্থাৎ লক্ষ্মী পূজার ধাম থাকে সহজ কথা বলতে গেলে মন্দির আর লক্ষ্মী মন্দির এই এসব গানের আসর জারি শারি ভাটিয়ালি কিংবা সামাজিক যাত্রাপালা পরিচালিত হতো ৷ আসলে তখনকার সময় তো টিভি সিডি বা মোবাইল ফোন এরকম ধরনের কোন যন্ত্রপাতির ব্যবহার ছিল না ৷ আরে এসব আনন্দ বিনোদনের প্রধান মাধ্যম ছিল এই এগুলো যাত্রাপালা সারারাত বসে যাত্রাপালা উপভোগ করে৷
গত কয়েকদিন আগেই লক্ষ্মীপুজো হয়ে গেল ৷ এটাও হিন্দু একটি ধর্মীয় এবং কি বেশ বড় উৎসব একটি ৷
আসলে কি লক্ষি ধনসম্পদের দেবী ৷ আর যে ঘরে লক্ষী থাকে সে ঘরে ধনসম্পদের ভরা এবং কি সুখ বিরাজ করে৷ আর এজন্যই হিন্দুদের ঘরে ঘরে এই দিনটিতে লক্ষ্মীপূজো করা হয়৷ আর এ লক্ষী পুজোকে ঘিরে আমার গ্রামের পাশে থাকার একটি গ্রামের লক্ষ্মী পূজার ধাম ছিল ৷ আর সেখানেই একদিন এই লক্ষ্মী পূজার গান শুনতে যাওয়া আর গিয়ে কিছু আলোচিত্র বা ফটোগ্রাফি করি,৷ যদিও সবই ছিল রাতের আঁধারে৷
ঠিক আমার যতটা জানা সবারই হয়তো বা এসব লোকসংস্কৃতি সেই পুরনো ঐতিহ্য ও আগের মতো আর দেখা যায় না৷ শহরে আছেন শুধু কনসার্ট, ড্যান্স ,পার্টি,, এসবের মাঝে আজকের বর্তমান দুনিয়া৷ কিন্তু গ্রামের কিছু কিছু অঞ্চলে এখনো সেই পুরনো ভাটিয়ালি পালা গান কিংবা সামাজিক যাত্রাপালা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় ৷ কারণ গ্রামের মানুষ এখনো কিছু কিছু সেই পুরনো ঐতিহ্য ও লোকশিল্প ধরে রেখেছে ৷ যদিও আগের চেয়ে অনেকটাই বিলুপ্তির পথে তবে এই লক্ষ্মী-তে প্রায় এসব যাত্রাপালার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে ৷ আর এই যাত্রাপালা অনুষ্ঠান দেখার অভিজ্ঞতা থেকে আজকের টপিক আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম৷
সেদিন দিনটি ছিল গত বুধবার আর সেদিন সপ্তাহের শেষ পোস্টটি করেই সন্ধ্যা নাগাদ৷ গ্রামের সেই লক্ষ্মী মন্দির ধামে গিয়েছিলাম যাত্রাপালা গান উপভোগ করার জন্য৷ গিয়ে দেখছি প্রচুর পরিমাণ লোকের আগমন হয়েছে গ্রামের সব নারী পুরুষ ছোট-বড় সবাই যেন এ যাত্রাপালা দেখতে ভিড় জমেছে৷ আর লাইটের আলোয় আলোকিত সুন্দর একটি রঙ্গমঞ্চ৷ বেশ ভালোই লাগছিল পরিবেশটা৷ যাহোক এতো মানুষের ফিরে আসলে অনুষ্ঠান দেখাটাই বড় মুশকিল ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ চারদিকে শুধু খুসখুস করছি একটুখানি দেখার জন্য৷ কিন্তু এত লোকের সমাগম যে দেখতেই পারছি না ৷ যাহোক ওইভাবেই একটু কষ্ট করেই চারদিকে ঘুরে ফিরে কিছু ছবি তোলার চেষ্টা৷ আর তার কিছুক্ষণ পরেই একটু ফাঁক পেলেই নিজের জায়গা দখল করে নিলাম৷ এরপর কিছুক্ষণ সেই সামাজিক যাত্রাপালার অভিনয় উপভোগ করছি৷ আর ভাবছিলাম সত্যি সেই আগের পুরনো ঐতিহ্য যদি এখনও টিকে আছে বা ধরে আছে সেটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া৷ যে সময় মানুষের বিনোদনের একমাত্র বিনোদন মাধ্যম যাত্রাপালা গুলো৷
যাই হোক আমি কিছুক্ষণ দেখার পর ছোট্ট একটি ভিডিও ধারন করি ৷ যেটা আপনাদের কে দেখানোর জন্য করেছি ৷ যাতে আপনারা সবাই ভালো করে বুুঝতে পারেন ৷
নিচে তার ভিডিও দেওয়া হলো:
তবে আমি বেশিক্ষণ দেরি করিনি শুধু কিছুক্ষণ দেখার পরেই রাত গভীর হওয়াতে আমি বাড়ি চলে এসেছি৷ কারন ঘুম দেওয়াটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো ৷ যদিও অনুষ্ঠান সারারাত ধরে চলছিল গ্রামের মানুষ প্রত্যেক জানাই ছিল এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য৷ আর আমি বাড়ি থেকেই মাইকের আওয়াজ বেশ সুন্দর শুনছিলাম ৷ আর এসব নিয়েই ভাবতেই ভাবলাম যে বিষয়ে একদিন আপনাদের মাঝে একটি ব্লগ উপস্থাপন করব ৷ সেই পুরনো দিনের ঐতিহ্য লক্ষ্মী পূজার গান ৷ আর তাইতো আজকেই ইচ্ছে হলো আপনাদের মাঝে সেই পুরনো দিনের ঐতিহ্য তে তুলে ধরি৷
তো বন্ধুরা এই ছিল আমার আজকের লক্ষি পুজোর গান শোনার অনুভুতি ৷ আপনাদের কাছে এই পুরনো ঐতিহ্য যাত্রা পালা গানগুলো বিষয়ে কিছু জেনে থাকলে অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন ৷
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @gopiray |
ডিভাইস | রিয়েলমি সি বারো |
@gopiray
সবাইকে ধন্যবাদ
সবাইকে ধন্যবাদ
এটা পুরোপুরি নতুন বিষয় ছিলো আমার কাছে। আগে কখনো নামই শুনিনি। খুব ভালো লাগল আপনার থেকে নতুন জিনিস জেনে।
ধন্যবাদ আপনি এই বিষয়ে জানেন না ৷ কিন্তু এখন জানতে পারলেন৷
আমি আসলে লক্ষ্মীপূজোর নাম শুনেছি কিন্তু লক্ষ্মীপূজোর গান এটা আমার জন্য একেবারেই নতুন। কিন্তু হ্যাঁ আপনি কিছু কথা ঠিক বলেছেন আগেকার সময় ভাটিয়ালি, জারি, সারি গান গুলো ছিল অনেক ঐতিহ্যবাহী। কিন্তু এখন এইসব কিছুর প্রচলন নেই বললেই চলে। আর এখন তো সকল আধুনিক নাচ গানের চলাচল। আমি এরকম স্টেজে নাচ গানের অনুষ্ঠান কখনোই দেখিনি। আপনি এই পোস্টে প্রায় অনেক কিছুই লিখেছেন। আর ভিডিওটি দেখে ও ভীষণ ভালো লেগেছে।
আপু খুব সুন্দর এবং চমৎকার মন্তব্য করেছেন ৷ সেই পুরনো ঐতিহ্য জারি সারি গান এখন বিলুপ্ত ৷আর এখন তো ডিজিটাল ৷
ধন্যবাদ আপু এভাবেই পাশে থাকবেন ৷
জি ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন বর্তমানের আরিফিন রুমি মার্কা আর আধুনিক গানের নিচে চাপা পড়ে হারিয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী জারি, সারি ,ভাটিয়ালি, যাত্রাপালা গান আর নাটক সমূহ। আমাদের গ্রামে এসব না হলেও পাশের গ্রামে হতো। কলেজে থাকার সময় একবার গিয়েছিলাম। আপনাদের এখানে তো অনেক মানুষ জমায়েত হয়েছে। আর সবাই চুপচাপ বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
খুব সুন্দর এবং ঠিক বলেছেন আরফিন রুমি আর আধুনিক যুগে ৷ সেই পুরনো যুগের ঐতিহ্য বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ৷
ধন্যবাদ মতামতের জন্য