আজ- ১ শ্রাবণ /১৬ জুলাই | ১৪২৯, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিস্টাব্দ| শনিবার | বর্ষাকাল |
আসসালামু-আলাইকুম।
কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। ভ্রমণ করতে কার না ভালো লাগে। সে কাছে বা দূরে যেখানেই হোক না কেন। আমার কাছে ভ্রমণ অনেকটা নেশার মতো। আমাদের দেশে ঈদ পরবর্তী সময়ে মানুষের মধ্যে ভ্রমণ পিপাসা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। কারণ ঈদের পরে প্রায় সবাই নিজেকে কিছুটা কর্মব্যস্ততা থেকে দূরে রাখে আপনজনের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য। বিশেষ করে বিভিন্ন অঞ্চলের বিনোদন কেন্দ্রগুলো এ সময় থাকে পরিপূর্ণ। সবাই পরিবার পরিজন নিয়েন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে।
আমাদের ফরিদপুর শহরে বিনোদন কেন্দ্রের ব্যবস্থা তেমন একটা নেই বললেই চলে। তাই মানুষ যেখানে একটু সৌন্দর্যের ছোঁয়া পায় সেখানেই দলবেঁধে সমবেত হয়। বর্তমানে ফরিদপুর শহর থেকে একটু দূরে মোহাম্মদপুর বাজারের কাছে অবস্থিত নিচু এলাকাটি মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বর্ষাকালে পানিতে এই এলাকাটি সম্পূর্ণ প্লাবিত থাকে। দেখতে অনেকটা বিলের মত হয়ে যায়। এখানে এলাকার কিছু তরুণ ছেলেরা একটি ভাসমান রেস্তোরাঁ বানিয়েছে। মাত্র ৫০ টাকা টিকিটের বিনিময়ে নৌকা ভ্রমণ সেই সঙ্গে হালকা নাস্তার ব্যবস্থা আছে। গত বছরও বন্ধু রূপকের সঙ্গে গিয়েছিলাম এই জায়গায়। খুবই ভালো লেগেছিল আমার কাছে। আর সে আকর্ষনেই গতকাল আবারও ঢু মারলাম একই জায়গায়। আসলে বর্ষাকালে জায়গাটি পদ্মা নদীর পানি দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে আবার নদীতে পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এখান থেকেও পানি নেমে যায়।
রূপক এর সঙ্গে বের হওয়া হয় না বেশ কিছুদিন। ঈদ পরবর্তী সময়ে প্রত্যেকেরই কিছু কিছু পারিবারিক ব্যস্ততা থাকে যে কারণে চাইলেই সময় বের করা সম্ভব হয় না। তাই বিকেলে ফোন দিতেই রাজি হয়ে গেলাম ঘুরতে যাবার জন্য। সঙ্গে থাকলো আরেক বন্ধু। তিনজন কাঙ্খিত স্থানে পৌঁছে দেখলাম লোকে লোকারণ্য চারিদিক। ফেসবুক, ইউটিউব আর বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে প্রচারণা এখনো কোনো ব্যাপারই নয়। ভালো কিছু করলে নিমেষের মধ্যেই তা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। গত বছর যখন এখানে এসেছিলাম তখন মানুষ এই জায়গাটি চিনতোই না অথচ এবার দেখলাম সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। যদিও পানি এখন অনেকটাই কমে গেছে কিন্তু তাতে মানুষের আগ্রহে মোটেই ভাটা পড়েনি। সামনে হয়তো পানি আবার বাড়লে আরো বেশি লোকসমাগম হবে এই জায়গাটিতে। কিছু প্লাস্টিকের ড্রাম এর ওপরে কাঠের পাটাতন তুল দিয়ে শক্তপোক্ত করে বানানো হয়েছে এই রেস্টুরেন্ট। সেই সঙ্গে সেট করা হয়েছে ইঞ্জিন চালিত মোটর। যার মাধ্যমে অনেকটা নৌকার মতো চলাচল করতে পারে এই রেস্টুরেন্ট। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন মানুষ বসার মত ক্যাপাসিটি আছে এই রেস্টুরেন্টে। খাবার হিসেবে পাওয়া যায় চা, কফি, ফুচকা, চটপটি, নুডুলস আরো অনেক কিছু। দামও খুব একটা বেশি না। ভোজন বিলাসী হিসেবে রূপকের বেশ সুনাম আছে আমাদের মধ্যে। সুতরাং নৌকা ভ্রমন করবো আর কিছু খাব না তা তো হয় না। আমরা দুজন অর্ডার করেছিলাম শুধু কফি আর রুপক নিজের জন্য বেছে নিয়েছিল ঝাল ফুচকা। সত্যি বলতে কি কফির মান এতটাই খারাপ যে কেউ যদি এখানকার কফি একবার খায় তাহলে যতদিন মনে থাকবে আর কোনদিন সে কফি খাবে না। আমার কাছে এমনটাই মনে হয়েছিল কফি খাবার পর। তবে রূপকের ফুচকাটা বেশ হয়েছিল। যাই হোক প্রায় পৌনে এক ঘন্টা তিন জনে নৌকা ভ্রমণ সেইসঙ্গে কফি আর ফুচকা খাবার মধ্যে দিয়ে দারুণভাবে সমাপ্ত হলো আমাদের বৈকালিক ভ্রমণ। এরপর সন্ধ্যা নামতেই বাইক নিয়ে ফিরতি পথ ধরলাম বাড়ির দিকে। আসলে বন্ধুরা থাকলে সবকিছুই ভালো লাগে।
আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
Photographer | @ferdous3486 |
Device | Samsung M21 |
Location | Mohammadpur,Faridpur |
আসলে ভাই আমিও অনেক ভ্রমন প্রিয়সো মানুষ। সময় স্বল্পতা এবং ব্যবসার ব্যস্ততার কারণে এখন আর সময় করতেই পারছি না। যাইহোক নিজে না পারলে কি হবে আমার বাংলা ব্লগ এর ভাই ব্রাদাররা ভ্রমণ করে এবং সেই ভ্রমণের আনন্দঘন মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করে এটা দেখেই কিছুটা হলেও ভালো লাগছে। সব মিলিয়ে আপনার ভাসমান রেস্টুরেন্ট ভ্রমণ ও বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি পোস্টটি পড়ে আমি নিজেও অনেক আনন্দ উপভোগ করেছি। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে আপনার আনন্দ ভ্রমণের আনন্দঘন মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য।
আসলে ইচ্ছা থাকলেই সব সময় সবকিছু করা যায় না। যেমন আপনি ভ্রমণ ভালোবাসলেও সময় স্বল্পতা ও ব্যস্ততার কারণে খুব একটা বের হতে পারেন না। আশা করি সবকিছু কাটিয়ে উঠে আপনিও ভ্রমনে বের হতে পারবেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য
দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভাসমান রেস্টুরেন্ট ভ্রমণ করতে গিয়ে অনেক চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন বন্ধুদের সঙ্গে। এরকম রেস্টুরেন্ট আমাদের এদিকে একটা আছে তবে এখন পর্যন্ত আমার যাওয়া হয়নি ।ভাবছি ঢাকা যাওয়ার আগে একবার ঘুরে আসব। সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
এসব ক্ষেত্রে রেস্টুরেন্ট গুলোর চাইতে আশেপাশের পরিবেশ কিরকম সেটার উপর ভ্রমণের ইচ্ছা বেশি নির্ভর করে। তবে একবার ঘুরে দেখতে পারেন আশা করি খুব একটা খারাপ লাগবে না।
বন্ধুদের সাথে ভাসমান রেস্টুরেন্টের ঘুরাঘুরি করে চমৎকার একটি সময় কাটিয়েছেন। আপনার নৌকা ভ্রমণ দেখে ভালো লাগলো কতদিন নৌকা ভ্রমণ করা হয়নি। নদীর ফটোগ্রাফ গুলো অনেক চমৎকার ছিল বিশেষ করে গোধূলি বেলায় পানির রংটি একটি অন্যরকম রূপ ধারণ করেছে। ধন্যবাদ ভাই আপনার চমৎকার উপভোগ্য সময় গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য
সত্যি বলতে কি এ ধরনের ঘোরাঘুরি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর সাথে যদি বন্ধুরা থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই। নদী আর এর আশেপাশের পরিবেশ আমাকে বরাবরই খুব আকর্ষণ করে। ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।