আমার ভাবনা। 10% লাজুক শেয়ালের জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আজ- ১৩ বৈশাখ /২৬ এপ্রিল | ১৪২৮, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিস্টাব্দ| মঙ্গলবার | গ্রীষ্মকাল |


আসসালামু-আলাইকুম।

evolution-g55c5e8546_1920.jpg

Source

"কুল্লু নাফসিন জাইকাতুল মাউত" ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন শরীফের একটি আয়াত। যার অর্থ প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। পৃথিবীর প্রায় সব ধর্মেই মৃত্যুর ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হয়েছে। আনুমানিক 500 কোটি বছর বয়সের এই পৃথিবীতে মানুষের উৎপত্তি কিভাবে সে সম্পর্কে যথেষ্ট বিতর্ক থাকলেও আধুনিক মানুষ বা Modern humans (Homo sapiens), ল্যাটিন ভাষায় যার অর্থ wise man এর উৎপত্তি আনুমানিক 2 লক্ষ বছর আগে। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে ধীরে ধীরে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ ঘটতে থাকে। আদিম, অসহায় এক প্রাণী থেকে বুদ্ধিবৃত্তির শিখরে আরোহন করে এই প্রজাতি।

neon-g043dc76a6_1920.jpg

Source

আধুনিক মানুষের জীবনকাল খুবই সীমিত। ৬০, ৭০ বা বড়জোর 100 বছর। এই সময়ের বেশিরভাগটাই কেটে যায় খাদ্য চিন্তা, জৈবিক তাড়না আর বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজন মেটাতে। বেশিরভাগ মানুষই জীবন সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করেনা। জীবনের উদ্দেশ্য, জন্ম-মৃত্যু বা মৃত্যু পরবর্তী ভাবনা তাদের চিন্তা ভাবনাকে কখনোই আলোড়িত করে না। গতানুগতিক পদ্ধতিতে অন্ন বস্ত্রের চাহিদা মেটাতে মেটাতেই এক সময় মৃত্যুর দরজায় এসে উপস্থিত হয়।

man-gc02c0cf65_1920.jpg

Source

এই গতানুগতিক প্যাটার্ন এর বাইরে সবসময়ই কিছু ব্যতিক্রমী মানুষ থাকে। যারা তাদের সীমিত আয়ুষ্কাল এর বাইরে তাদের চিন্তা ভাবনা ও কর্মকাণ্ডের দাঁড়া মানবসমাজে অমরত্ব লাভ করে। এটা হচ্ছে কর্মের মাধ্যমে অমরত্ব লাভ কিন্তু কিছু মানুষ আছে যারা জৈবিক অমরত্ব লাভের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদের অগ্রগতিও নিতান্তই কম নয়। বার্ধক্যের জন্য যে হরমোন বা উপাদানগুলো দায়ী সে গুলোকে শনাক্ত করে বৃদ্ধি রোধ করতে পারলেই হয়তো অমরত্ব বা দীর্ঘজীবন লাভ করা সম্ভব এটাই তাদের সর্বশেষ ধারণা। আমি অমরত্ব বিশ্বাস করি না কিন্তু দীর্ঘ জীবন লাভের আকাঙ্ক্ষা আমার বহুদিনের। ইচ্ছে হয় পৃথিবীর শেষ অবধি পর্যন্ত দেখে যাই। আর পরকাল সে তো এমন একটা জগত যেখান থেকে ফিরে আসার কোন পদ্ধতি নেই। মৃত্যুই হচ্ছে সেখানে পৌঁছার একমাত্র বাহন। সবশেষে কবিগুরুর ভাষায় বলতে ইচ্ছে করে,

মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে,
মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।

আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

Sort:  
 2 years ago 

চর্ম চোখে দেখা এই পৃথিবী ছেড়ে কেই বা না দেখা ভুবনে যেতে চায়। এই অনিশ্চয়তার জন্যই মানুষ মৃত্যুকে এত ভয় পায়। আসলে অমরত্ব লাভ করা যে সম্ভব না এটা মানুষ খুব ভালোভাবে জানে। তারপরেও শুধু এই পৃথিবী ছেড়ে না যাওয়ার বাসনা থেকেই অমরত্তের খোঁজ করে যাওয়া। ভালো লিখেছো।

 2 years ago 

মানুষের সীমাহীন অতৃপ্তি সব সময় তাকে তাড়িত করে। এটাই মনে হয় প্রধান কারণ। অতৃপ্তি আর আকাঙ্ক্ষা থেকেই মানুষ অমরত্তের সন্ধান করে।

 2 years ago 

প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই এতো সুন্দর করে সাজিয়ে লেখার জন্য।আমরা সৃষ্টির সেরা জীব কিন্তু দেখেন সব থেকে বড় ভুল গুলোও আমরা করে থাকি। আমরা কিন্তু সব কিছু জানি এবং বুঝি যে কোন কাজ ভালো কোন কাজ খারাপ তারপর ও বেশীই খারাপ কাজে লিপ্ত হয় কারণ আমরা দুনিয়াবি মায়ার জড়িয়ে গেছি।কেউ আমরা মরতে চাই না।

 2 years ago 

এটা ঠিক যে দুনিয়ার আসক্তি সবচাইতে বড় আসক্তি। ক্ষণকালের এই জীবন এই স্থায়ী সত্যটি জানা সত্ত্বেও আমরা আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে যাই এই দুনিয়ার মোহে।

 2 years ago 

অমরত্বের লোভ শুধু মাত্র বৃক্ষই করতে পারে। মানুষ নয়।

যে কারনেই মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা বঙ্গভূমির প্রতি কবিতায় লিখেছেন

জন্মিলে মরিতে হবে,
অমর কে কোথা কবে

তারপারও মানুষ বাচিতে চায় চিরজীবন। আপনার লেখাটি তথ্যবহুল। লেখালেখি চালিয়ে গেলে মন্দ হবে না। ভাল থাকবেন ভাই।

 2 years ago 

আসলে এগুলো ঠিক লেখালেখি নয়। আমার ভেতরের কিছু জিজ্ঞাসা, কিছু অনুভূতি, যা আমাকে সব সময় ভাবায়। আপনার অভিমত ব্যক্ত করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

মানুষ কি বার্ধক্যের জন্য মারা যায়?

তবে এটা সত্য মরতে আমাদের হবেই,তবে আপনার মত পৃথিবীর শেষ অব্দি পর্যন্ত দেখে যেতে।কিন্তু পৃথিবীর মানুষ গুলো বড্ডো স্বার্থপর।এখানে থেকে কোনো লাভ নেই,বরং পাপের ভার টা একটু বেশি হয়ে যাবে।আর মানুষের মৃত্যুর খবর শুনতে শুনতে অনেটাই বোর হয়ে যাচ্ছি।যত তারাতারি কেটে পরা যায় ততই ভালো।☺️

 2 years ago 

মানুষ আসলে কিসের জন্য মারা যায় সেটাও একটা বিতরকের বিষয়। তবে বার্ধক্য অপ্রতিরোধ্য। স্বাভাবিকভাবে জড়া আপনাকে গ্রাস করবেই। যার ফলাফলস্বরূপ মৃত্যু অনিবার্য। তবে আমার আকাংখা দীর্ঘ জীবনের। মাঝে মাঝেই ইচ্ছা হয় পৃথিবীর শেষ অব্দি দেখে যেতে। আর সব রহস্য ভেদ করতে।

 2 years ago 

এই গতানুগতিক প্যাটার্ন এর বাইরে সবসময়ই কিছু ব্যতিক্রমী মানুষ থাকে।

এই ব‍্যতিক্রমধর্মী মানুষদের জন‍্যই কিন্তু পৃথিবী টা এতোটা এগিয়েছে। মানুষের সারাজীবন বেঁচে থাকতে চান তাহলে সেটা কাজের মাধ্যমে বেঁচে থাকতে হবে নতুবা এটা অসম্ভব। এবং এরজন‍্যই আপনাকে সবার থেকে আলাদা হতে হবে। অন্ন বস্ত্রের চিন্তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

 2 years ago 

সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন। অল্প কথায় আপনার মন্তব্যটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। অন্নবস্ত্রের চিন্তা থেকে বের হয়ে আসাটাই আমাদের মত গরীব দেশের মানুষদের পক্ষে বড় একটি চ্যালেঞ্জ।

 2 years ago 

পৃথিবীতে মানুষের বেঁচে থাকার বড় শখ, তবে সময়ের সাপেক্ষে নিজেকে চলে যেতে হয়। এই নিয়ে আফসোস করার কিছুই নেই। তাই গুরুজনে বলে গেছেন সময়ের কাজ আমাদের সময়ে করা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago (edited)

বলা যত সহজ করা ঠিক ততটাই কঠিন। মৃত্যু যখন দুয়ারে উপস্থিত হবে শুধুমাত্র পবিত্র আর মহৎ হৃদয়ের মানুষের পক্ষেই তাকে সাদরে আমন্ত্রণ করা সম্ভব।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60754.23
ETH 2913.09
USDT 1.00
SBD 2.31