পরিবেশ দূষণ এর অপর নাম প্লাস্টিক। 10% লাজুক শেয়ালের জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ- ১৭ জ্যৈষ্ঠ /৩১ মে | ১৪২৮, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিস্টাব্দ| মঙ্গলবার | গ্রীষ্মকাল |


আসসালামু-আলাইকুম।

কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের সঙ্গে পরিবেশ সংক্রান্ত কিছু বিষয় আলোচনা করব। ছোটবেলায় বইতে পড়েছিলাম আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তাই নিয়েই আমাদের পরিবেশ। অর্থাৎ আমাদের চারপাশের সবকিছু পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। মাটি, বায়ু, জল, উদ্ভিদ, মানুষ কোন কিছুই এর বাহিরে নয়। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে মানুষ পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সচেতন হতে শুরু করে।

garbage-2729608_1920.jpg

Source

উন্নত বিশ্বের দেশগুলো পরিবেশ বিপর্যয় রোধে বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ নিলেও এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো। বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশের অবস্থা এ ব্যাপারে খুবই খারাপ। বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণের জন্য যে উপাদান গুলি দায়ী তার মধ্যে প্রধান একটি হচ্ছে প্লাস্টিক পণ্য এবং পলিথিন। প্লাস্টিক হচ্ছে এমন একটি পণ্য যা সহজে মাটিতে মিশে না। ক্ষেত্রবিশেষে প্লাস্টিক মাটিতে 50 বছর থেকে শুরু করে প্রায় 200/300 বছর পর্যন্ত অবিকৃত অবস্থায় থেকে যায়। যা ধীরে ধীরে মাটির উর্বরতা শক্তি ধ্বংস করে দেয়। এই পলিথিন শুধু মাটি বা পানিকে দূষিত করে না, পলিথিন পোড়ানো হলে তা থেকে যে ক্ষতিকর কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস নির্গত হয় তা পরিবেশ এবং মানুষের জন্য ভয়ঙ্কর রকম ক্ষতিকর। আমাদের দেশে আইন করে পলিথিন উৎপাদন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও কার্যত এর ফলে কিছুই হয়নি। অনিয়ন্ত্রিত পলিথিন উৎপাদন এবং যত্রতত্র এর ব্যবহার সর্বত্রই আমাদের চারপাশে লক্ষ করা যায়। নদী-নালা, খাল-বিল, চাষাবাদের জায়গা শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা সর্বত্রই পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী এক ভয়াবহ জট সৃষ্টি করেছে।

earth-158806_1280.png

Source

আশ্চর্যের বিষয় শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর সবচাইতে গভীরতম স্থান প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা ট্রেঞ্চেও সাম্প্রতিক সময়ে পলিথিন এর অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায় দূষণের মাত্রা কতটা ভয়াবহ পর্যায়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে একটি ভিডিওতে দেখলাম জার্মান সরকার এসব প্লাস্টিক পণ্য দূষণ রোধে কি ব্যবস্থা নিয়েছে। সেখানে প্লাস্টিকের কোন বোতলজাত সামগ্রী কিনলে তার সঙ্গে অতিরিক্ত কিছু মূল্য কেটে রাখা হয়। যা পরবর্তীতে নির্দিষ্ট স্থানে জমা দিলে সমপরিমাণ মূল্য ফেরত পাওয়া যায়। এ থেকে জনগণ যেখানে সেখানে প্লাস্টিক পণ্য ফেলা থেকে বিরত থাকে এবং এই পণ্য গুলি পুনরায় রিসাইকেল করে ব্যবহার উপযোগী করা হয়।

scrapyard-2441432_1920.jpg

Source

এখনই সময় সিদ্ধান্ত নেবার। তা না হলে হয়তো এমন সময় আসবে যখন চাইলেও কিছু করা সম্ভব হবে না। সরকারের উচিত এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া। সেই সঙ্গে প্রত্যেকটি মানুষকে সচেতন হতে হবে এ ব্যাপারে। প্রয়োজনে প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প পণ্য ব্যবহারে সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে। প্রত্যেকেই যার যার নিজের অবস্থান থেকে একটু সচেতন হলেই রোধ করা সম্ভব এই ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ।

contamination-4286704_1920.jpg

Source

আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

Sort:  
 2 years ago 

পরিবেশ দূষণ এর অপর নাম প্লাস্টিক ঠিক বলেছেন ভাইয়া। চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে উপস্থাপনা করেছেন। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।

 2 years ago 

আপনার জন্যও শুভকামনা দারুন একটি মন্তব্য করে সাথে থাকার জন্য।

 2 years ago 

আপনি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। পরিবেশ দূষণ রোধে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর জন্য সর্বপ্রথম আমাদের সচেতন হতে হবে। আমরা যদি সচেতন না হই সরকারের কঠোর বিধিনিষেধও কিছু করতে পারবে না। ধন্যবাদ ভাইয়া এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। শুভকামনা রইলো।

 2 years ago 

আপনার সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। জনগণ যতদিন পর্যন্ত সচেতন না হবে ততদিন পর্যন্ত কোনো লাভ নেই। ধন্যবাদ আপু

জি একদম রাইট বলছেন এই প্লাস্টিকের কারণেই পরিবেশটা নষ্ট হয়ে যায়। আপনি সুন্দর একটা পোস্ট করেছেন। উপস্থাপন খুবই সুন্দর হয়েছে ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে এতো সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

এখনই সচেতন না হলে সামনে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। তাই সময় থাকতেই সচেতন হওয়া উচিত। ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago (edited)

বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণের জন্য যে উপাদান গুলি দায়ী তার মধ্যে প্রধান একটি হচ্ছে প্লাস্টিক পণ্য এবং পলিথিন।

মূলত মানুষ যতদিন সচেতন না হবে ততদিন সরকার কতৃক যত প্রকার সিদ্ধান্তই নেয়া হোক না কেন তাতে কোন প্রকার লাভ হবে না। আরো মজার বিষয় আমি দেখলাম কোন একটা দেশে বাসের টিকিট এর দাম নেয়া হচ্ছে বোতলের বিনিময়ে। যা হোক পোষ্ট টি দারুন হয়েছে। বর্তমানে মানুষের সচেতনতা দরকার। আমি নিজেই হয়তো এখানে বুলি ছেড়ে কালকে আবার পরিবেশ নষ্ট করতে লেগে যাবো। তখন আর মনে থাকবে না আমি এই পোষ্ট টি পড়েছিলাম। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

জি ভাই ঠিক বলেছেন। সবকিছুর আগে দরকার মানুষের সচেতনতা। তবে সবার আগে নিজেকে ঠিক করতে হবে। ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য।

 2 years ago 

আপনি একদম ঠিক বলেছেন প্লাস্টিক আমাদের পরিবেশকে এমন ভাবে দূষিত করছে যা আমরা কল্পনা করতে পারছি না ।কারণ এই একটি পদার্থ যা কখনো মাটির সাথে মিশে যায় না ।অনেক বছর পরেও মাটির নিচে ঠিক একই রকম থাকে। তার ফলে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে। আমাদের এখনই সময় এই ধরনের প্লাস্টিক জাতীয় জিনিসপত্র ব্যবহার থেকে বিরত থাকা। অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের অন্ন তুলে ধরেছেন আপনার জন্য শুভকামনা।

 2 years ago 

হয়তো আপনার মত শিক্ষিত মানুষেরা এ দূষণ সম্পর্কে অবগত আছেন কিন্তু আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই এ ব্যাপারে কোন ধারণা নেই। যাই হোক ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

আপনার টাইটেল দিয়ে পড়ে একদম বাস্তব কথা মনে হচ্ছে। সত্যি প্লাস্টিক পরিবেশ দূষণের প্রধান একটি কারণ। এ কারণে আমি সবসময়ই চেষ্টা করে প্লাস্টিকের যেকোনো কিছু রাস্তাঘাটে না ফেলতে। এমনকি আমি এখন চেষ্টা করছি প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে দেওয়ার। আর যদিও ব্যবহার করে থাকি নির্দিষ্ট একটি জায়গায় ফেলার চেষ্টা করি সব সময়। আমরা একজন একজন করে এভাবে যদি এগিয়ে যাই তাহলে আমাদের পরিবেশ টা আরো অনেক বেশী সুন্দর হয়ে উঠবে। খুব সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। খুব ভালো লাগলো পড়ে।

 2 years ago 

ব্যক্তি পর্যায়ে আপনার মত মানুষের সচেতনতা একসময় হয়তো আপনার আশেপাশের মানুষকেও প্রভাবিত করবে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে আপনার মত মানুষ সমাজে কয়জন। আশা করি সবাই একদিন আপনার মত হবে
ধন্যবাদ আপু

 2 years ago 

পরিবেশ দূষণের অপর নাম প্লাস্টিক আপনি ঠিকই বলেছেন। যেটা পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে সহজে পচে না। সেই জন্য এটা খুবই মারাত্মক ক্ষতিকারক ।অনেক ভালো কিছু লিখে আমাদের মাঝে তুলে ধরে পড়ে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

আশা করি আপনার মত একদিন আমরা সবাই এ ব্যাপারে সচেতন হব। আর প্লাস্টিক নামক এই ব্যাধি থেকে পরিবেশ রক্ষা পাবে। ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

আপনি একটা কথা ঠিক বলেছেন সময় চলে গেলে এরপর আর কিছু করার থাকবে না। জার্মান সরকারের প্লাস্টিক সিদ্ধান্তটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো। আমাদের দেশের সরকারের উচিত এইরকম একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার। তাহলে হয়তো বা কিছুটা এই দূষণ থেকে বিরত থাকতে পারবো। এরকম একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

বোঝা যাচ্ছে আপনি আমার পোস্টটা সম্পন্ন পরেছেন। সে জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে উৎপাদন বন্ধ করাটা বেশি জরুরি। শুভকামনা আপনার জন্য

 2 years ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো‌‌। আপনি খুব বাস্তবসম্মত বিষয় আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আসলে বর্তমানে সব জায়গাতে প্লাস্টিক বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হলো এ প্লাস্টিক প্লাস্টিক ব্যবহার এবং এর ওপেক সম্পর্কে আমাদেরকে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে। এত অসাধারন পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

আসলে একজন কিংবা দুইজন মানুষের সচেতনতা এক্ষেত্রে কিছুই পরিবর্তন করতে পারবে না। দরকার একটি গণজাগরণ এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ। তাহলেই হয়তো পরিবেশ রক্ষা পাবে ধন্যবাদ।

 2 years ago 

বাংলাদেশের পরিবেশ দূষণের পদক্ষেপের দিক থেকে খুবই দুর্বল। আর এই দেশের জন্য যে ও পরিবেশ দূষণের জন্য যে উপাদানগুলো দায়ী তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে প্লাস্টিক পণ্য ও পলিথিন। আসলে এগুলো কিন্তু একেবারে মাটির সাথে মিশে যায় না, সেইজন্যই কিন্তু এটা পরিবেশ দূষণের অন্যতম একটি উপাদান হিসেবে কাজ করে।

 2 years ago 

আসলে এ দেশে সবাই যার যার স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। কেউ সমষ্টিগত বা পরিবেশের কথা চিন্তা করে না। নিজের লাভের জন্য আমরা যা খুশি তাই করতে পারি। ধন্যবাদ আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামতের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 68874.67
ETH 3743.28
USDT 1.00
SBD 3.72