বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও গ্রীন হাউস ইফেক্ট। 10% লাজুক শিয়ালের জন্য।
আজ- ২২ জ্যৈষ্ঠ /৫ জুন | ১৪২৮, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিস্টাব্দ| রবিবার | গ্রীষ্মকাল |
আসসালামু-আলাইকুম।
আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ দিবসের এবারের থিম একটাই পৃথিবী (Only one Earth)। ১৯৭২ সালের ৫ জুন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে প্রথম আয়োজিত হয় বিশ্ব পরিবেশ বিষয়ক সম্মেলন। এরপর ১৯৭৩ সালের ৫ জুনকে জাতিসংঘ বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবার আশা যাক কেন এই বিশ্ব পরিবেশ দিবস এত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবাই জলবায়ু পরিবর্তন এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং সম্পর্কে কম বেশি জানি। এর জন্য মূলত দায়ী বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি। পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির এই প্রক্রিয়াটিকে অনেকেই গ্রীন হাউস ইফেক্ট নামে চিহ্নিত করে থাকেন।
গ্রীন হাউস ইফেক্ট কিঃ শীতের দেশগুলোতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে কোন উদ্ভিদ সেখানে টিকতে পারে না। তাই সেখানে চাষাবাদ করার জন্য এক ধরনের কাচের ঘর তৈরি করা হয়। যার নাম গ্রীন হাউজ। আমরা জানি কাচ তাপ প্রতিরোধী। তাই দিনের বেলায় ঘরগুলোতে সূর্যের আলো প্রবেশ করে আর সবুজ উদ্ভিদ তার পাতার সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে কিন্তু ঘরের দেয়াল কাঁচের তৈরি হওয়ার তাপ ঘর হতে বের হতে পারে না এবং ভেতরের পরিবেশ মোটামুটি উষ্ণ থাকে। এভাবেই বাইরের প্রচন্ড ঠান্ডার হাত থেকে মূল্যবান উদ্ভিদ গুলোকে রক্ষা করা হয়। আমাদের পৃথিবীও অনেকটা গ্রীন হাউজ এর মত। পৃথিবী প্রতিনিয়ত সূর্য থেকে তাপ গ্রহণ করে কিন্তু এর বায়ুমণ্ডল পৃথিবী থেকে বিকিরীত তাপ মহাকাশে ফিরে যেতে বাঁধা দেয়। যার ফলে একটু একটু করে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। এছাড়াও তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে আরও দায়ী ব্যাপকহারে বৃক্ষ নিধন। গাছপালা বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস শোষণ করে বিশুদ্ধ অক্সিজেন ত্যাগ করে কিন্তু নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে কার্বন ডাই অক্সাইডের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এবার আসা যাক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে কি ক্ষতি হতে পারে আমাদের। সৃষ্টিকর্তার অপরূপ সৃষ্টি এই পৃথিবীর সবকিছুতেই একটা সুনির্দিষ্ট ভারসাম্য আছে। এই ভারসাম্য নষ্ট হলে তার প্রভাব পড়বে সমগ্র জীবজগতের অস্তিত্বের টিকে থাকার উপর। আমাদের পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে ওজন নামে একটি গ্যাসীয় সুরক্ষিত আচ্ছাদন আছে যা আমাদের সমগ্র পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে। এই ওজোন গ্যাসের কাজ হচ্ছে সূর্য এবং মহাকাশ থেকে আগত নানা রকম ক্ষতিকর রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করতে বাঁধা প্রদান করা। এই ওজোন গ্যাসের আবরণটি যদি না থাকতো তাহলে প্রাণী জগৎ বিশেষ করে মানুষ ক্যান্সারসহ নানা রকম ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করত কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ওজন স্তর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আর যে বিষয়টি আমাদের কে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে তা হচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি। পৃথিবীর মেরু অঞ্চলে যে বিপুল পরিমান বরফ জমে আছে উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তা ক্রমান্বয়ে গলে গিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি করছে। ফলস্বরূপ সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল গুলো অচিরেই সাগরের পানিতে হারিয়ে যাবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চল সমূহ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, মারাত্মক শৈত্য প্রবাহ, তাপপ্রবাহ, মরুকরণ সহ আরও নানাবিধ লক্ষণ ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী নজরে আসতে শুরু করেছে এই উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে।
এই মহাবিশ্বে আমাদের এই একটাই পৃথিবী। যার সঙ্গে মিশে আছে আমাদের হাসি-কান্না, ভালোবাসা, ভালোলাগা,আর লক্ষ লক্ষ বছরের সভ্যতার ঐতিহ্য। মানুষের অপরিকল্পিত কর্মকাণ্ড ও ব্যাপক হারে বৃক্ষ নিধনের ফলে ক্রমান্বয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এই গ্রহটি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য সুন্দর পৃথিবী রেখে যেতে চাইলে এখনই সময় সিদ্ধান্ত নেয়ার। তাই এই বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আসুন সকলে অঙ্গীকার করি দূষণমুক্ত একটি সুস্থ ও সুন্দর পৃথিবী রেখে যাব পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
অনেক তথ্যবহুল একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে গ্রীন হাউস ইফেক্ট নিয়ে আপনার লেখাগুলোর প্রশংসা করতেই হয়। আসলে আমাদের অপরিকল্পিত জীবনযাত্রার কারণেই আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের বিপদ ডেকে আনছি। গ্রীন হাউস ইফেক্ট এর কারনে আমাদের পরিবেশের তাপমাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যারফলে আমাদের অতিবৃষ্টি ও অনাবৃষ্টির মত সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গত কয়েক দশকে হিমালয় পর্বতের উচ্চতা কমে যাওয়া বেশ আশঙ্কাজনক। যার ফলে আমাদের সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে এই মুহূর্ত থেকে যদি আমরা পরিবেশ দূষণ বায়ু দূষণ রোধ করতে না পারি তাহলে খুব শীঘ্রই আরো ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হব।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে এ বিষয়গুলো আমরা শুধু বইপত্রে পড়ি তাই সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারিনা। যখন সত্যি সত্যি দুর্যোগ দেখা দেবে তখন আর কিছু করার থাকবে না। অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে পোস্টটি পড়ার জন্য।
সত্যি কথা বলতে অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার আজকের পরিবেশ সম্পর্কে পোস্টটি। কারণ আপনি পরিবেশ সম্পর্কে খুব বিস্তর আলোচনা করেছেন। সত্যি কথা বলতে কি ভাই আমরা আসলে নিজেরাই নিজের ক্ষতি করতেছি। পরিবেশে তাপমাত্রা কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাড়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে আমরা নিজেদের নিজেরাই। কারণ বন-জঙ্গল উজাড় করে ফেলছি আমরা। এতে করে পরিবেশের হাজার কোটি ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু আসলে কে শোনে কার কথা। ধন্যবাদ ভাই এরকম সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য।
একটা হলিউড মুভি তে দেখেছিলাম মানুষ হচ্ছে পৃথিবীর জন্য ভাইরাসের মত। যে ভাইরাস ক্রমেই বংশবৃদ্ধি করে চলেছে। পৃথিবীতে মানুষ না থাকলে নিঃসন্দেহে পৃথিবী সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকতো কোটি কোটি বছর কিন্তু আমরাই এটাকে ধ্বংসের দিকে দ্রুত নিয়ে যাচ্ছি। যাই হোক অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য।
বেশ ভালো কিছু তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে চমৎকার পোস্টটি করলেন। সত্যি বলতে এটা গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা ভয়াবহ ক্ষতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ মিটিং মিছিল হলেও কোন কাজে আসছে না। যাক সচেতন হতে হবে সবাইকে।
ধন্যবাদ ভাই চমৎকার পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন, গণসচেতনতা না আসলে ব্যক্তিবিশেষ সচেতন হয়ে কিছুই করার নেই। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে হয়তো সবাই সচেতন হবে কিন্তু তখন আর কিছু করার থাকবে না। ধন্যবাদ ভাই।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পোষ্ট শেয়ার করেছেন ভাই। আসলে এরকম পোস্টগুলো পড়তেও ভাল লাগে। ঠিক বলেছেন যে দিনে দিনে আমাদের পরিবেশ দূষিত হয়ে যাচ্ছে। সেটা নতুন প্রজন্ম এর জন্য খুবই ক্ষতিকর তাই তাদের জন্য সুন্দর একটা পৃথিবী গড়ে তুলতে হলে এখনি আমাদের পরিকল্প নেওয়া উচিৎ। আর আমাদেরকে অবশ্যই বেশি বেশি গাছ রোপন করা উচিত। তাহলে আমাদের পরিবেশ দূষণ মুক্ত থাকবে।
সত্যি বলতে কি এই ধরনের বিশেষ দিবসগুলোতে আমরা কয়েক দিনের জন্য একটু সচেতন হবার ভাব করি। এরপরে আবার সব আগের মত। শুভকামনা আপনার জন্য
ভাই আপনার এই তথ্য বহুল পোষ্ট থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম। অনেক কিছুই অজানা ছিল, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আপনি অসাধারণ একটি পোস্ট রেখে গেছেন আমাদের জন্য। তবে হ্যাঁ কিছু কথা না বললেই নয়। যে পরিমাণে পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইড বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে করে আমাদের দিনদিন ক্ষতির দিক টাই বেড়ে চলেছে। আমাদেরকে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করলে বেঁচে যাবে আমাদের জীবনগুলো। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য সুন্দর একটি পোষ্ট উপহার দেওয়ার জন্য।
আমার কেন যেন মনে হয় আগামী দশ বছরের মধ্যে ঢাকা শহরে আর কোন মানুষ বসবাস করতে পারবে না শুধুমাত্র পরিবেশগত বিপর্যয় এর কারনে। ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
অলরেডি গ্রীন হাউজ ইফেক্ট এর তীব্রতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে শুরু করে। মানুষে বসবাসের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে এই পৃথিবী। স্টিফেন হকিং এজন্যই বলেছেন বিকল্প বসতি স্থাপনের কথা যেখানে মানুষ বাস করতে পারবে
আমার ধারণা স্টিফেন হকিং এর কথা একদিন বাস্তবে সত্য প্রমাণিত হবে। হয়তো এখন না হলেও 100 বছর পরে কিন্তু বিকল্প বসতি একসময় মানুষের জন্য খুঁজতেই হবে। যদি মানব সভ্যতা টিকে থাকে। ধন্যবাদ ভাই
গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ।আসলেই পৃথিবীর পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে হলে আমাদের সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত। নিজের জীবনের রক্ষার্থে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে হবে।
সমস্যা হচ্ছে বিপদ আমাদের ঘাড়ে না আসা পর্যন্ত আমরা বিপদের গুরুত্ব বুঝতে পারি না। তাই এ ব্যাপারে কারো তেমন কোনো চিন্তা নেই। ধন্যবাদ ভাই মন্তব্যের জন্য।