ড্রিম হলিডে পার্ক ভ্রমণ( প্রথম পর্ব)। ১০% লাজুক-শিয়ালের জন্য।
আজ- ১০ কার্তিক /২৬ অক্টোবর | ১৪২৯, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিস্টাব্দ| বুধবার | হেমন্তকাল |
আসসালামু-আলাইকুম।
কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। গত দুই দিন যাবত নরসিংদী এসেছি একটি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে। বাড়ি থেকে যখন বের হই তখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি যা চলতে থাকে ফরিদপুর থেকে নরসিংদী পৌঁছানো পর্যন্ত। বলতে গেলে সমস্ত রাস্তা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে এসেছি। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর কারণে সারা বাংলাদেশে প্রায় 24 ঘন্টা একটানা বৃষ্টিপাত হয়েছিল সেদিন। আমার দীর্ঘদিনের একটি অভ্যাস আর তা হচ্ছে যেখানে যাব সেখানকার দর্শনীয় সমস্ত এলাকা ভিজিট করা। উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় জায়গা গুলো নিজের চোখে না দেখলে কেমন যেন একটা অতৃপ্তি থেকে যায় সব সময়। তাই চেষ্টা করি যতটা সম্ভব সবকিছু দেখে আসার। নরসিংদীতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
নরসিংদীর আকর্ষণীয় জায়গাগুলোর কথা বললে প্রথমেই যেটি আসে তা হচ্ছে গ্রীন হলিডে পার্ক। প্রতিবছর সারা দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে পর্যটক এখানে আসে পিকনিক করতে। খুবই সুন্দর সাজানো গোছানো দর্শনীয় একটি পিকনিক স্পট এটি। যদিও এখানে সবকিছুই কৃত্রিম। নরসিংদী শহর থেকে কিছুটা দূরে পাঁচদোনা নামক স্থানে ঢাকা সিলেট হাইওয়ের পাশে গড়ে উঠেছে এই ড্রিম হলিডে পার্ক। আমরা নরসিংদী শহরের সাহে প্রতাপ এলাকা থেকে মিনিবাসে করে পৌঁছেছিলাম পার্কের গেটের সামনে। ভাড়া জনপ্রতী 15 টাকা। সময় লাগে খুব বেশি হলে ২০ মিনিট। পর্যটন মৌসুম না হওয়ায় এবং ঝড়ের কারণে পার্কে ভ্রমণার্থীদের সংখ্যা ছিল না বললেই চলে। পার্কে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে বিশাল আকৃতির একটি নাগরদোলা। যার জন্য বহু দূর থেকেই পার্কটিকে সনাক্ত করা যায়। এছাড়াও প্রবেশপথের দুপাশে আছে বিশাল আকৃতির দুটি পাথরের তৈরি বাঘ। পার্কে প্রবেশ ফি প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেকের জন্য ৩২০ টাকা আর আট বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকেট ২২০ টাকা।
টিকিট কেটে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে একটি বড় মানচিত্র। যেখানে সহজ ভাবে পার্কের কোথায় কি আছে তা দেখানো আছে। এই পার্কটি মূলত বেশ কয়েকটি অংশে বিভক্ত। তবে ওয়াটার ওয়ার্ল্ড অংশটি সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে আবারো ৩২০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হবে। এছাড়া নতুন কিছু অংশ এখনও নির্মাণাধীন আছে। যেখানে ভলকানো এবং রিভার বোট কায়াকিং ব্যবস্থা থাকবে। সমগ্র পার্কটিতে দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাইড এর ব্যবস্থা। প্রত্যেকটি রাইডের এন্ট্রি ফি ৬০ টাকা থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত। ৫০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই পার্কের সম্পূর্ণ অংশ ঘুরে দেখতে হলে আপনাকে যথেষ্ট এনার্জিটিক হতে হবে। এছাড়া চাইলে গাড়িতে চড়েও পার্কে ঘোড়ার ব্যবস্থা আছে। পার্কের ভেতরে বাইরের খাবার নিয়ে প্রবেশ সম্পন্ন নিষিদ্ধ। ভেতরে বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট এবং স্নাক্স বার আছে। যদিও বাইরের তুলনায় দাম এখানে অনেকটাই বেশি। আমরা প্রথমে পায়ে হেঁটে সমস্ত পার্কটি একবার চক্কর দেই। এরপর একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট থেকে দুপুরের খাবার সেরে নেই। খাবারের মান যথেষ্ট ভালো হলেও দাম অনেকে বেশি ছিল। পার্কটিতে আমার কাছে সবচাইতে আকর্ষণীয় যেটা লেগেছে তা হচ্ছে ভূতের বাড়ি। কেউ ভয় পেতে চাইলে নির্দ্বিধায় প্রবেশ করতে পারেন এখানে। ভয় পাবার সবরকম ব্যবস্থাই এখানে আছে। এখানে প্রবেশ করতে চাইলে আপনাকে খরচ করতে হবে ১১০ টাকা। তবে মনে হয় টাকাটা বৃথা যাবে না। অসুস্থ এবং হার্ট দুর্বল মানুষ এখানে প্রবেশ না করাই ভালো ।
আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
Photographer | @ferdous3486 |
---|---|
Device | Samsung M21 |
Location | Dream Holiday Park, Narsingdi |
ড্রিম হলিডে পার্ক এর কথা আগে শুনিনি দেখে বেশ যাক জমক মনে হলো ডেকোরেশন অনেক সুন্দর করেছে।মূর্তি গুলোও বেশ লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে দারুন এই পোস্টি শেয়ার করার জন্য।
হ্যা অনেক সুন্দর আর গোছানো একটি পার্ক। তবে খরচ অনেক বেশি। সামনের পর্বে আরো অনেক কিছু দেখতে পাবেন ইনশাল্লাহ।
কোথাও গেলে সেখানকার দর্শনীয় স্থান দেখা এটা একটা ভাল গুণ।আমিও এটাই করি।পার্কটির এন্ট্রি ফি এত বেশি কেন? রাইড এর খরচ কি টিকিটের সাথে যোগ করা? নতুন একটি জায়গা সম্পর্কে জানতে পারলাম আপনার পোস্ট থেকে।ধন্যবাদ ভাই শেয়ার করার জন্য।
আমারে কাছেও প্রবেশ ফি টা অনেক বেশি মনে হয়েছে। এছাড়াও ভেতরে প্রতিটি রাইডের জন্য আলাদা আলাদাভাবে টিকেট কাটতে হয়।
পার্কে নিশ্চয়ই অনেক সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। ড্রিম হলিডে পার্ক ভ্রমণের আজকের পর্ব দেখে খুব ভালো লাগলো। পার্কের ভিতরে অংশ খুবই সুন্দর। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক ভালো লেগেছে আমার। দর্শনীয় স্থান অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষা রইলাম।
পার্কটি অনেক সুন্দর। বিশেষে করে শীতের সময় আসলে অনেক গোছানো থাাকে আর প্রচুর দর্শনার্থীও থাকে। তবে খরচের ধাক্কাটা অনেক বেশি।
ড্রিম হলিডে পার্কে আমিও গিয়েছি ভাইয়া তবে আমি যখন গিয়েছি তখন সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়নি। তখন দেখতে এতটা সুন্দর ছিল না আপনার ফটোগ্রাফি গুলোতে দেখে বোঝা যাচ্ছে এখন দেখতে খুবই সুন্দর পার্কটা । আর খুব সুন্দর সুন্দর পাথরের মূর্তি বসিয়েছে। আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে স্পিডবোটে উঠার পর। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মনে হচ্ছে আপনি খুব ভালো একটা সময় পার করেছেন ড্রিম হলিডে পার্কে। আপনার সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমি প্রথম বার গেলাম তবে ভিতরে দেখতে পেলাম নতুন আরো কিছু অংশ তৈরী করা হচেছ। সব মিলিয়ে অনেক ভালো মানের একটি পার্ক, শুধু খরচটা একটু বেশি।
ড্রিম হলিডে পার্কে ঘুরার যে আনন্দঘন মুহূর্তগুলো আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সত্যি আমার কাছে যথেষ্ট ভালো লেগেছে। তবে এই ধরনের পার্ক গুলোতে টিকেটের পরিমাণটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। এত টাকার টিকিট নেওয়ার পর আলাদা আলাদা রাইড এর জন্য টিকেট কাটা এটা আমার হিসাবে অযৌক্তিক একটা বিষয়। যাই হোক যারা যাবেন তারা অবশ্যই দেখার চেষ্টা করবে, ঘুরার চেষ্টা করবে আনন্দঘন মুহূর্ত গুলো কাটানোর চেষ্টা করবে। টাকার দিকে আর কয়জনই বা দেখবে। ধন্যবাদ ভাই আপনার ড্রিম হলিডে পার্কে ঘুরার আনন্দঘন মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
মধ্যবিত্ত বা দরিদ্র মানুষের জন্য আসলেই পার্কের খরচ অনেক বেশি। এছাড়া ভেতরে প্রতিটি রাইডের জন্য আলাদা আলাদা টিকেট কাটতে হয়। যাইহোক সময়টা কিন্তু বেশ ভালোই কেটেছে। ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।
ড্রিম হলিডে পার্ক ভ্রমণ করতে গিয়ে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ভাইয়া। আমিও অনেক দিন আগে ড্রিম হলিডে পার্ক ভ্রমণ করতে গিয়েছিলাম অফিস থেকে। আজকে আপনার পোস্ট ভিজিট করে আবার ও যাওয়ার ইচ্ছা হলো। অবশ্যই একদিন সময় করে যাবে। চমৎকার একটি পার্ক। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো ভালো ছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
আবার যদি যান তাহলে অবশ্যই শীতকালে যাবেন কারন অন্য সময় পার্কে খুব বেশি লোকজন থাকেনা এবং পার্কের সংস্কারের কাজ চলে । সব মিলিয়ে সময় কাটানোর জন্য ভালো একটি জায়গা।
আমি ড্রিম হলিডে পার্কে গিয়েছিলাম প্রায় ছয় থেকে সাত বছর আগে সম্ভবত। এখন দেখছি অনেক কিছুই নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। সামনের বছর হয়তো আবার যাওয়া হতে পারে। আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে ড্রিম হলিডে পার্কের নতুন কিছু জিনিস দেখলাম। পার্কটি আসলেই খুব সুন্দর। পার্কের প্রবেশ ফি কিছুটা বেড়েছে দেখছি। আমি যখন গিয়েছিলাম তখন আরও কম ছিল। দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক সুন্দর মুহূর্ত পার করেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ।
পার্কে দেখলাম আরো নতুন নতুন কিছু রাইড তৈরি করা হচ্ছে সেংসঙ্গে আয়তনেও বেশ কিছুটা বাড়ানো হচ্ছে। শুধু খরচের ব্যাপারটা আরেকটু কম হলে আসলেই ভালো একটা বিনোদন স্থান।
আসলে এমন সুন্দর জায়গায় ভ্রমণ করলে কি আর টাকা বৃথা যায়। পালটা তো অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে দেখছি। ৫০ একর জমির উপর তৈরি করা এত বড় একটি পার্ক যে এত সুন্দর করে সাজানো তা সত্যি ভাববার বিষয়। আর এত বড় পার্ক ভ্রমণ করলে তো একটু ক্লান্তি চলে আসবেই।
এ ধরনের পার্কে ভ্রমনের আমার তেমন কোন অভিজ্ঞতা নেই। নন্দন বা ফ্যান্টাসি কিংডমে যেতে পারলে হয়ত তুলনা করতে পারতাম। তবে সব মিলিয়ে আমার কাছে খারাপ লাগেনি।
আপনার গ্রীনভিউ পার্কের ভ্রমণের কাহিনীটা পড়ে আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা জানতে পারলাম। তবে ওয়াটার ওয়াল্ডের প্রবেশ ফি আমার কাছে একটু বেশি মনে হচ্ছে এবং এন্ট্রি ফি আরেকটু কম হলে ভালো হতো। বাহিরের খাবার নেওয়া যাবে না এটা একটা বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। কারণ ভিতরের খাবারের দাম সব সময়ই অনেক বেশি হয়। ভূতের বাড়ির কথা শুনে মনে হচ্ছে যদি একবার দেখতে পারতাম তাহলে ভালো লাগতো। তারপর ও পার্কটা আপনার ভালো লেগেছে শুনে ভালো লাগলো।
আসলেই এখানে বেশি রকমেরই টাকা খরচ হয়। ভিতরের খাবার হোটেলগুলো রীতিমত ডাকাতি করে। আর প্রবেশ ফিটাও আমার কাছে অনেক বেশি মনে হয়েছে।
মাঝে মাঝে নিজেদের এবং বাচ্চাদের মন পরিবর্তনের জন্য এই ধরণের অ্যামিউজিং পার্ক ভীষণ এফেক্টিভ।আমাদের কলকাতাতেও যেমন নিকো পার্ক আছে।আপনাদের এই পার্কে এন্ট্রি ফি টাও বেশ কমই দেখছি। এটা ভালো কাজ। সবরকম মানুষ ই আসতে পারবে।তবে জনসংখ্যা একটু কম দেখছি।অফ সিজন চলছে নাকি? সব মিলিয়ে দারুণ পরাবেশ।
জি দিদি, আসলে এখনো সিজন শুরু হয়নি তাছাড়া ঝড় হবার কারনে ঐ দিন ভিজ খুব কম ছিল। বাংলাদেশে পর্যটন মৌসুম শুরু হয় নভেম্বর থেকে আর শেষ হয় বলতে গেলে ফেব্রুয়ারী। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।