একটি মাছ ধরার গল্প। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাক এর জন্য।
আসসালামু আলাইকুম
আমার অনেকগুলো শখের মধ্যে একটি হচ্ছে মাছ ধরা। ছিপ আর বর্শি দিয়ে মাছ ধরার মধ্যে আছে এক অন্যরকম আনন্দ। বেশ কিছুদিন যাবৎ কাজের চাপ না থাকায় বাড়িতেই বসে আছি। হাতে অফুরন্ত সময়। কাজের মধ্যে শুধু আমার বাংলা ব্লগে লেখালেখি আর বিভিন্ন পোস্ট পড়া। তাই চিন্তা করলাম গ্রামের বাড়ি থেকে ঘুরে আসা যাক। গ্রাম দেখাও হবে সেইসঙ্গে মাছ ধরাও হবে। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। ছেলে আর বউকে নিয়ে বাইকে করে রওনা হলাম গ্রামের বাড়ি। ছিপ আর বর্শি নিয়ে বসে গেলাম পুকুর পাড়ে। মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলাম দোকান থেকে কিনে আনা পাউরুটি।
বর্শি দিয়ে মাছ ধরা সম্পর্কে যাদের একটু ধারনা আছে তারা জানেন এটি একটি প্রচন্ড ধৈর্যের কাজ। কখনো কখনো ঘন্টার পর ঘন্টা বড়শি নিয়ে বসে থাকলেও কপালে মাছ জোটে না। আবার কখনও কখনও অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক মাছ ধরা পড়ে। যাইহোক ধৈর্যের আমার অভাব নেই। বিশেষ করে মাছ ধরার ব্যাপারে। যখন সবে মাত্র দুইটি মাছ ধরেছি হঠাৎ শুনতে পেলাম আমার ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। উল্লেখ্য তার বয়স মাত্র তিন বছর কিন্তু এ বয়সেই সে ভীষণ দুষ্টু। অতঃপর মাছ ধরা বাদ দিয়ে শুরু হলো খোঁজা খুঁজি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর উৎকণ্ঠা যখন চরম পর্যায়ে তখন তাকে পাওয়া গেল রান্না ঘরের এক কোনায়। আপনারা জানেন কিনা জানিনা গ্রামের বাড়িগুলোতে রান্নাঘর সাধারণত থাকে মূল বাড়ির বাইরে আলাদাভাবে। কাজেই রান্নাঘরে খোঁজার কথা সহজে কারো মাথায় আসেনি। রান্নাঘরে তাকে যে অবস্থায় পাওয়া গেল তার একটা ছবি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম।
আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি তিনি তার চাচাতো বোনের কাজল চুরি করে রান্নাঘরে গিয়ে সেটা ব্যবহার করেছেন এবং সেখানেই লুকিয়ে ছিলেন। যাই হোক এরপর আবার মাছ ধরার মনোনিবেশের চেষ্টা। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আটটি তেলাপিয়া মাছ ধরতে পারলাম। পুকুরে মৃগেল, রুই, সিং, সরপুঁটি এবং আরো অনেক রকমের মাছ থাকলেও উপযুক্ত টোপ এর অভাবে অন্য কোন মাছ কপালে জুটল না।তেলাপিয়া মাছ কিছুটা রাক্ষসে প্রকৃতির হওয়ায় এরা যে কোন টোপ দেখলেই ছুটে আসে। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা তেলাপিয়া আর পুকুরে প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে ওঠা তেলাপিয়া মাছের স্বাদ এর মধ্যে অনেক পার্থক্য।
এর পরের অংশ কাটাকুটি এবং রন্ধন। কাটাকুটি আমি পারিনা তাই এই দায়িত্ব সহধর্মিনীর উপর ছেড়ে দিলাম। কাটাকুটি শেষে মাছ গুলো পরিষ্কার করে ধোয়ার পরে এবার তৈরি করব তেলাপিয়া মাছের দোপেয়াজা। সেই অংশটি তোলা রইলো আরেক দিনের জন্য। একটি উত্তেজনাপূর্ণ সুন্দর দিন অতিবাহিত করার পর এবার ফেরার পালা।
বিভিন্ন প্রয়োজনে আমরা গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসি। তারপর আস্তে আস্তে গ্রামকে ভুলে যাই কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রত্যেক মানুষের শিকড়ই রয়ে যায় গ্রামে। তাই গ্রাম ছেড়ে আসলেও গ্রামকে ভালোবাসা উচিত। গ্রামকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়। কারণ গ্রামগুলোর হচ্ছে আমাদের সব খাদ্যদ্রব্যের যোগানদাতা। গ্রামের নির্মল প্রকৃতি কিছু সময়ের জন্য হলেও আপনাকে ভুলিয়ে দেবে শহরের কোলাহল আর ব্যস্ততা।
আবার কথা হবে অন্য কোনো সময় অন্য কোন বিষয় নিয়ে। ততদিন পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনা করি। ধন্যবাদ সবাইকে।
Photographer | @ferdous3486 |
---|---|
Device | Samsung M21 |
বাবুটা তো লাজুক। তাছাড়া ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। আর মাছ ধরার গল্পটা বেশ লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ সময় নিয়ে পোষ্টটি পড়ার জন্য
আপনার মাছ ধরার গল্প পড়ে আমার সত্যিই একটি দিনের কথা মনে পড়ে গেল। যেদিন আমি এবং আমার বড় ভাই মাছ ধরতে গিয়ে ছিলাম। বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে অনেক মজা লাগে। আমরা বিশাল বড় একটি বোয়াল মাছ ধরে ছিলাম।
খুব বড় মাছ অবশ্য আমি কখনো পাইনি। বরশি দিয়ে ধরা আমার সবচাইতে বড় মাছের ওজন ছিল 1.6 কেজি
পুকুরে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে আমার খুব ভালো লাগে ।আমাদের বাসায় যে পুকুরটা আছে প্রায় প্রায় আমি মাছ ধরতাম বড়শি ফেলে। আপনার আজকের পোষ্টটি দেখে আমার বাসার কথা মনে হলো ।আপনি বরশি দিয়ে মাছ ধরার সুন্দর অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে বর্ণনা করেছেন ।আপনিতো মাছ ধরেছেন। আমি অবশ্য তেমন মাছ ধরতে পারতাম না তবে ধৈর্য ধরে বসে থাকতাম।
মাছ পেলে বসে থাকা যায় কিন্তু না পেলে খুবই বিরক্তি লাগে তবে মাছ ধরার ক্ষেত্রে ধৈর্যই আসল চাবিকাঠি।
মাছ ধরার অভ্যাস আমার নিজেরও আছে ভাই। অসম্ভব ধৈর্য নিয়ে মাছ ধরতে হয়। তাছাড়া আমি খালে বিলে নিজের হাতে অনেক মাছ ধরার অভিজ্ঞতা রয়েছে অসম্ভব ভালো লাগে মাছ ধরার সময় গুলো মনে পড়লে।
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাই আমাদের সবারই গ্রামকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমরা গ্রামের আসল মাটি গন্ধ শুকে বড় হয়েছি তাই মূলত আমাদের সকলের শিকড় গ্রামেই রয়েছে।
তবে যখনই বললেন আপনার ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না একটু মনটা খারাপ হয়ে উঠল। কিন্তু পুরো পোস্টটি পড়ে একটু কিন্তু পরে যখন আপনার ছেলেকে রান্নাঘরের পাওয়া গেল ঠিক ঐ অবস্থায় তখন ভালোই মজা পেলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর ভাবে আপনার অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্য
মাছ ধরার খুব সুন্দর একটি অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করলেন ভাই। তবে আপনার ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না শুনে বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তবে তাকে খুব সহজে খুঁজে পেয়েছেন দেখে অনেকটা স্বস্তি পেলাম ।অনেকগুলো মাছ ধরেছেন আপনি দেখতে পাচ্ছি ।আপনার দিনের অভিজ্ঞতা গুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল ভাই আপনার জন্য।
আসলে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিটা এখন হয়ে গেছে আমাদের অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানের কেন্দ্রবিন্দু। প্রতিদিন কত মানুষের কত নিত্য নতুন অভিজ্ঞতার কথাই না এখান থেকে আমরা জানতে পারছি। ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে
চেষ্টা করবেন প্রত্যেকটি ছবির নিচে লোকেশন ব্যবহার করার জন্য। আপনার পোস্টটি সত্যি অনেক চমৎকার হয়েছে। আমি তো মাঝখানে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আপনার ছেলেকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে অনেক স্বস্থি পেলাম।
ফটোগ্রাফি পোস্ট বাদে অন্য ছবিগুলোতেও যে লোকেশন দিতে হবে বিষয়টি জানা ছিল না। পরের বার থেকে দিব ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ বিষয়টি জানানোর জন্য। আর সত্যি বলতে কি আমিও অনেক ভয় পেয়েছিলাম
ভাইয়া আপনার মাছ ধরার গল্পটা আমার অনেক ভাল লাগল। তবে মাছ ধরতে অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন। আমি এক সময় আমার মামা আর আমি বরশি দিয়ে মাছ ধরছিলাম । শুভকামনা রইল ভাইয়া এরকম সুন্দর সুন্দর গল্প আমাদের সামনে উপস্থাপন করার জন্য।
বরশি দিয়ে মাছ ধরা আমারও খুব শখ। গ্রামের বাড়িতে গেলে মাঝে মাঝে বরশি দিয়ে মাছ ধরতে বসি পুকুরপাড়ে। যদিও এটা খুব ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। তবে মজাদার ও বটে। বরশি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
জি ভাই বরশি দিয়ে মাছ ধরা একটা নেশার মত।
অনেক দিনের নতুন আপডেট। ভাল ছিল।