প্রত্যাবর্তন। ১০% লাজুক শিয়ালের জন্য।
আজ- ২৮ আশ্বিন/১৩ অক্টোবর | ১৪২৯, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিস্টাব্দ| বৃহস্পতিবার | শরৎকাল |
আসসালামু-আলাইকুম।
কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। দীর্ঘ বিরতি শেষে অবশেষে আবার ফিরে এলাম প্রাণের আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে। সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখে একটি খণ্ডকালীন চাকুরীর প্রয়োজনে প্রায় দুই মাসের জন্য যেতে হয়েছিল সিলেট জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায়। প্রচন্ড ব্যস্ততার কারণে কোনভাবেই সম্ভব ছিল না কমিউনিটিতে কাজ করা। তাই নিতান্ত বাধ্য হয়েই দুই মাসের ছুটি নিয়েছিলাম কমিউনিটি থেকে। আপনারা সবাই জানেন এবছরের মাঝামাঝি সময় স্মরণকালের সবচাইতে ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়েছিলেন সিলেটবাসী। বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিল বিভিন্ন দেশী এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা। তেমনি একটি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে সিলেট জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় বন্যার্ত মানুষের মাঝে দেড় মাস ব্যাপী একটি ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পেরে নিজেকে সত্যিই অনেক ভাগ্যবান লেগেছিল। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা( WHO)জাতীয় পর্যায়ের একটি এনজিওকে দিয়ে পরিচালনা করে এই কার্যক্রম। অসাধারণ কিছু অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে আমার এই কাজের মাধ্যমে যা পরবর্তীতে ধীরে ধীরে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব।
সিলেট জেলার তাহিরপুর এবং জামালগঞ্জ উপজেলা মূলত বিখ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওরের জন্য। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই হাওর বিস্তৃত বেশ কয়েকটি উপজেলা জুড়ে। দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে এটি একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। অনেকদিন যাবত আমাদের কয়েক বন্ধুর পরিকল্পনা ছিল হাউস বোটে করে টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের কিন্তু নানা রকম প্রতিকুলতার কারণে এখন পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাই খন্ডকালীন এই চাকরির সুযোগ পাওয়া মাত্রই লুফে নিয়েছিলাম। একই সঙ্গে রথ দেখা আর কলা বেচা দুটোই হবে ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ১১ তারিখে আমার রিপোর্টিং ডেট হলেও আমাকে কনফার্ম করা হয় 9 তারিখ বিকেল বেলা তাই যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করে ১০ তারিখ ভোরে অন্ধকার থাকতেই বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ি। মাত্র দুই ঘন্টায় পৌঁছে যাই সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে কিন্তু পরবর্তী ভ্রমণ অংশটুকু ছিল খুবই ক্লান্তিকর। সায়দাবাদ বাস স্ট্যান্ড থেকে শ্যামলী পরিবহনের একটি নন এসি বাসে টিকিট কাটি সুনামগঞ্জ জেলার। সকাল দশটায় বাস ছাড়লেও সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত নয়টা বেজে যায়। দূরের যাত্রা পথে টাকা বেশি লাগলেও ভালো পরিবহনের বিকল্প নেই তা আরেকবার অনুভব করলাম। আমাদের ট্রেনিং সেন্টারটি ছিল সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর উপজেলা সদরে কিন্তু রাত বেশি হয়ে যাবার কারণে সেখানে যাওয়া আর তখন আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে একটি হোটেলে রাত কাটিয়ে পরের দিন সকালেই বেরিয়ে পড়লাম তাহেরপুর উপজেলার উদ্দেশ্যে।
রাস্তার দুপাশে দিগন্ত বিস্তৃত হাওরের সৌন্দর্য দেখলে আসলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। টাঙ্গুয়ার হাওর সত্যিই এক অসাধারণ সুন্দর জায়গা। চোখে না দেখলে যার সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে আমার কাজটি ছিল প্রচন্ড ব্যস্ততার, অবসর পাওয়া যায়নি বললেই চলে। এরই মধ্য দিয়ে উপভোগ করার চেষ্টা করেছি এই অপার সৌন্দর্য। পরবর্তীতে হাওর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে থাকবে আমার বিস্তারিত। আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
Photographer | @ferdous3486 |
---|---|
Device | Samsung M21 |
Location | Doulatdia Ferighat, Rajbari |
যাক অবশেষে ছুটি শেষ করে ফিরে এসেছেন আমাদের মাঝে দেখে ভালো লাগছে। আসলে এই বন্যার্তদের সাহায্য করতে পেরেছেন সত্যিই একটি সৌভাগ্যের কাজ। তাছাড়া আপনার হাওরে ঘোরার ইচ্ছাও পূরণ হয়েছে একসঙ্গে। জার্নির ক্ষেত্রে আমার হাসবেন্ড কখনোই কম্প্রোমাইজ করতে রাজি নয়। যত টাকাই লাগুক সে সব থেকে ভালো পরিবহনের জার্নি করতে চায় সব সময়। কারণ অল্প কিছু টাকার জন্য অনেক বেশি কষ্ট করার কোন মানে হয় না। কত টাকাই তো কত ভাবে নষ্ট হয়ে যায়। নদী এবং আকাশের ছবি গুলো খুবই চমৎকার হয়েছে। যাক সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফিও দেখতে পারবো সামনে।
ভাইয়ার সীদ্ধান্তের সঙ্গে আমিও একমত, কিছু কিছু ব্যাপারে আসলে কখনই কম্প্রোমাইজ করা উচিৎ নয় আর তা করলে আমার মত ভুক্তভোগী হতে হয়। উৎসাহ দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।