একটুখানি পারিবারিক বিনোদন। ১০% লাজুক শিয়ালের জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ- ১৯ আষাঢ় /৩ জুলাই | ১৪২৯, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিস্টাব্দ| রবিবার | বর্ষাকাল |


আসসালামু-আলাইকুম।

কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। কয়েকদিন আগে আমরা বন্ধুরা কয়েকজন মিলে পরিকল্পনা করেছিলাম টাঙ্গুয়ার হাওর যাব ঘুরতে। হাউজবোটে থাকবো কয়েক রাত আর ঘুরে বেড়াবো সুনামগঞ্জ জেলার বিস্তৃত হাওর এলাকা। পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি একটি ট্যুর কোম্পানির সঙ্গে আলোচনাও চূড়ান্ত হয়ে যায়। এমনকি অগ্রিম টাকাও দিয়েছিলাম তাদের হাতে কিন্তু বিধি বাম। কপালে না থাকলে আসলে কিছুই হয় না। সেটাই আবার হাতেনাতে প্রমাণ পেলাম। সিলেটের স্মরণ কালের ভয়াবহ বন্যায় আমাদের ভ্রমণ পরিকল্পনাটি ভেস্তে গেল। যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ পানি বন্দি হয়ে দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছে সেখানে ঘুরতে যাওয়া মোটেই কোন মানবিক চিন্তাভাবনা নয়। আমরাও তাই পরিকল্পনা বাদ দিতে বিন্দুমাত্র আফসোস বোধ করিনি। ব্যক্তিগতভাবে, এলাকার মসজিদ থেকে এমনকি আমাদের এই কমিউনিটি থেকেও চেষ্টা করেছিলাম যত সামান্য সহযোগিতার মাধ্যমে সিলেটবাসীর পাশে দাঁড়াতে।

20220702_165255.jpg

20220702_165231.jpg

বন্যার প্রকোপ অনেকটাই কমে এসেছে কিন্তু ভ্রমণে যাওয়ার মত পরিবেশ এখনও সেখানে তৈরি হয়নি। বাড়িতে বসে থাকতে থাকতে অনেকটাই হাপিয়ে উঠেছি। সত্যি বলতে কি ঘুরতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। সেটা কাছে আর দূরে যেখানেই হোক না কেন। বিশেষ করে অজানা জায়গায়, অচেনা রাস্তায় ঘোড়ার যে একটা অন্যরকম মজা সেটা বলে বোঝানো যাবে না। এদিকে বন্ধু রূপক ঢাকা গিয়ে বসে ছিল অনেকদিন তাই আমার ঘোরাফেরাও বলতে গেলে বন্ধ ছিল বেশ কয়েক সপ্তাহ। বৃষ্টির এই দিনগুলোতে বিকেল বেলা ঘরে বসে থাকা আমার জন্য অনেকটা হাজত বাসের মত। তাই গতকাল বিকেলে আকাশের অবস্থা একটু ভালো বোধ করাতেই বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম পার্শ্ববর্তী উপজেলা সদরপুর এর উদ্দেশ্যে। ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে সাথে থাকলো স্ত্রী এবং পুত্র।

iMarkup_20220703_210929.jpg

20220702_165752.jpg

20220702_165326.jpg

সদরপুর উপজেলা সদরে প্রবেশের পূর্বেই রাস্তার বাম পাশে ছোট্ট একটা নদীর উপরে গড়ে উঠেছে একটি রেস্টুরেন্ট। নাম গাঙ বিলাস। কয়েকদিন আগে বন্ধু রূপকের সঙ্গে গিয়েছিলাম এর রেস্টুরেন্টটিতে। তখন নদীতে পানি ছিল না। বাইক নিয়ে পৌঁছাতে প্রায় ৪০ মিনিট লেগে গেল। কাঠের তৈরি এই রেস্টুরেন্টটি মূলত ছোট ছোট কয়েকটি ঘরের সমষ্টি। একপাশে আছে বাচ্চাদের জন্য ছোট্ট একটি খেলার জায়গা। আর অন্যপাশে খোলা বিস্তৃত মাঠ। খাবারের অর্ডার দিয়ে যখন চেয়ার টেবিলে বসলাম আশেপাশের প্রকৃতি বিশেষ করে আকাশ এত সুন্দর লাগছিল যা বলার মত নয়। আমরা অর্ডার করেছিলাম একটা চিকেন আইটেম সঙ্গে ছিল নান রুটি আর কোল্ড ড্রিংকস। খাবারের স্বাদটাও মুখে লেগে থাকার মত। আর রেস্টুরেন্টের কর্মচারীদের আচার ব্যবহার ও বেশ ভদ্র সন্তোষজনক। প্রায় এক ঘন্টা সময় নিয়ে ভোজন বিলাসের পর ফিরতি পথ ধরলাম বাড়ির দিকে। সব মিলিয়ে বিকেলটা চমৎকার কেটে ছিল এই রেস্টুরেন্টে।

20220702_173202.jpg

20220702_164856.jpg

20220702_164839.jpg

আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

Photographer@ferdous3486
DeviceSamsung M21
LocationLink
Sort:  
 2 years ago 

আমি কিছুদিনের মাঝেই সিলেটে যাওয়ার প্লান করেছি। এর আগেও আমি দুইবার গেছিলাম কিন্তু ছোট থাকায় ঘুরাঘুরি ঠিক মত করতেই পারিনি।
আপনার আজকের পোস্টটি ভালো ছিল। আসলে একঘেয়েমি কাটাতে প্রতি সপ্তাহে একদিন পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়া উচিৎ।
ধন্যবাদ ভাইয়া। আনন্দময় মুহুর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আমার মনে হয় আর কিছুদিন পরে সিলেট যাবার পরিকল্পনা করলে সেটা ভালো হবে। কারণ এখন যে পরিস্থিতি তাতে কোন কিছুতেই খুব একটা মজা পাবেন না। উল্টো বন্যার্ত মানুষদের কষ্ট আপনাকেও কষ্ট দেবে। ধন্যবাদ ভাই

Hi there. This is Alegnita. One of the moderators of the New community of travel and I invite you to join there in order to share great content about your trips. Regards from my part.

https://steemit.com/trending/hive-163291

 2 years ago 

যাক সিলেটে যাওয়ার পরিকল্পনা বাদ দিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। এখন যে অবস্থা তাতে ওখানে যাওয়া একদমই বুদ্ধিমানের মতো কাজ হতো না।
পরিবার নিয়ে চমৎকার একটি জায়গায় ঘুরতে এসেছেন, খেলার জায়গাও আছে দেখছি। আসলে পরিবার নিয়ে এভাবে ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা।
ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই, আসলে যেখানে যাব সেখানকার মানুষদের কষ্টের মাঝে আমাদের আনন্দ করা একেবারেই অনুচিত একটি কাজ হবে। তাই না যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর ঘর ঠিক রাখতে হলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে মাঝে মাঝে এমন ভ্রমণের বিকল্প নেই🤪

 2 years ago 

অনেক পরিকল্পনা করেও আপনাদের প্লান শেষমেশ ভেস্তে গেছে জেনে খারাপ লাগলো। তারপরও একটি ভালো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন এই অবস্থায় ঘুরতে না গিয়ে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া একটানা অনেকদিন ঘরে থাকলে আসলেই হাজার বাসের মত লাগে। এজন্যই তো আমিও ছুটির দিন পেলেই কোথাও না কোথাও ঘুরতে চলে যাই। আপনি পরিবারের সঙ্গে খুব সুন্দর একটি জায়গায় ঘুরতে গিয়েছেন এবং বেশ খাওয়া-দাওয়া করেছেন। নিচের ছবি দুটি দেখে মনে হচ্ছে যে জায়গাটি আসলেই খুব চমৎকার ছিল। এর পরের বার গেলে এই রেস্টুরেন্টে দাওয়াত দিবেন আমাদেরকে😛।

 2 years ago 

টেকনিক্যাল সমস্যা সমাধান করতে পারলে অবশ্যই আপনাদেরকে নিয়ে যাব, কথা দিলাম। আর জায়গাটা আহামরি সুন্দর না হলেও আশা করি খারাপ লাগবে না।

পরিবারের সাথে অনেক ভালো একটি মুহূর্ত সৃষ্টি করেছেন। বৃদ্ধ বয়সে এই মুহূর্ত গুলোই খুব সুন্দর স্মৃতি হিসেবে আপনার চোখে ভেসে উঠবে। গাং বিলাস রিসোর্স টি খুব সুন্দর। সাথে গাং বিলাস রেস্টুরেন্টের তুলনা হয় না। খাবারগুলো দেখতে লোভনীয়। আলোকচিত্র গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন, আসলে সবারই উচিত এভাবে পরিবারের সবাইকে নিয়ে মাঝে মাঝে ঘুরতে যাওয়া। আর রেস্টুরেন্টটিতে মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে ভালো আয়োজন ছিল। ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 63177.41
ETH 2439.37
USDT 1.00
SBD 2.58