ঈদ আনন্দ। ১০% লাজুক শিয়ালের জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ- ২৬ আষাঢ় /১০ জুলাই | ১৪২৯, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিস্টাব্দ| রবিবার | বর্ষাকাল |


আসসালামু-আলাইকুম। ঈদ মোবারক

ramadan-2366301__480.webp.png

Source

কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ পবিত্র ঈদুল আযহা। সারা বিশ্বের ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব এই পবিত্র ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে অনেকের এটা দ্বিতীয় ঈদ উদযাপন হলেও আমার জন্য আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুদের সঙ্গে এটাই আমার প্রথম কোরবানির ঈদ উদযাপন। ঈদ মানে আনন্দ। এই আনন্দ সকলের, ধনী গরিব প্রত্যেকটি মানুষের। আজ আমি শেয়ার করব আমার ঈদ অভিজ্ঞতা। বর্তমান এবং শৈশবের ঈদ আনন্দের পার্থক্য।

strawberry-dessert-2191973__480.jpg

Source

আমার শৈশব কেটেছে ৯০ এর দশকে। আর বর্তমান সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে আমার কাছে ওই সময়কে সব দিক দিয়েই চমৎকার মনে হয়। এমন একটা শৈশব আমরা পার করেছি যা এ সময়কার ছেলেমেয়েরা বুঝতেই পারবে না। আমার কাছে কোরবানির ঈদের চাইতে সব সময়ই রোজার ঈদ বেশি আনন্দদায়ক ছিল। তবে কোরবানির ঈদ যে একেবারে নিরানন্দ তা কিন্তু নয়। ঈদের আনন্দ শুরু হতো ঈদের আগের দিন বিকাল হতে। সন্ধ্যা হলেই তারাবাজি আর বিভিন্ন রকম পটকাবাজি নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম বাড়ির সামনের রাস্তায়। আর তার আগে এ বাজি গুলোকে কিনে প্রতিদিন দুপুরের রোদে শুকাতাম যাতে ড্যাম না পরে। বাজি ফুটানো শেষ হলে চলতো দল বেঁধে ঘোরাঘুরির পর্ব। আগের রাতের এই আনন্দ বিকেল থেকে শুরু করে রাত নটা দশটা অব্দি চলত। তারপর তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তাম কারণ কোরবানির ঈদের নামাজ অনেক সকালেই শুরু হয়। ঈদের দিনের প্রথম কাজ ছিল খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল করা। এলাকার সবচাইতে বড় পুকুর ঘাটে প্রায় সব মানুষ জমা হতো গোসল করার জন্য। সে ছিল এক হুলস্থুল কান্ড। ঝটপট গোসল শেষে বাসায় গিয়ে নতুন কাপড় পড়ে চলে যেতাম ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য। নামাজ শেষে শুরু হতো পশু কোরবানির পালা। আমাদের ছোটদের কাজ ছিল কিছুক্ষণ পরপর কোরবানির স্থান ভ্রমণ করা আর পর্যবেক্ষণ করা কতক্ষণে মাংস বানানো শেষ হবে তা দেখা। এভাবেই দুপুর গড়িয়ে যেত কোরবানির কাজ সম্পন্ন করতে করতে। আর বিকেল বেলা বের হতাম আত্মীয়স্বজনের বাড়ি দাওয়াত খেতে। রাতের সময়টা ছিল শুধুই টেলিভিশন দেখার জন্য।

cheers-204742__480.webp

Source

ঈদ আসে ঈদ যায়, সঙ্গে সঙ্গে বয়সটাও বেড়ে যায়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আনন্দের ধরণও পাল্টে যায়। একসময় মাথার উপর বাবা ছিল বট বৃক্ষের মত। তখন শুধুই ছিল আনন্দ, ছিল না দায়িত্ববোধ বা কর্তব্য। আসলে প্রত্যেকটি মানুষই প্রচন্ড রকম আত্মকেন্দ্রিক। বেশিরভাগ মানুষই তার নিজের গণ্ডির বাইরে চিন্তা করতে পারে না। খুব বেশি হলে পরিবার বা তার আত্মীয়-স্বজন হচ্ছে তার গণ্ডি। এর বাইরেও যে অসংখ্য মানুষ আছে, যাদের কাছে ঈদ অন্য আর আট দশটি দিনের মতই। ঈদ তাদের কাছে আলাদা কোন আনন্দ বয়ে আনে না। কারণ ঈদের আনন্দ উপভোগ করার মতো সামর্থ্য তাদের নেই। বিশেষ করে বর্তমানে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের মানুষের দিকে তাকালেই আমরা এ ব্যাপারটি স্পষ্ট দেখতে পাব। যাইহোক ঈদের দিন আর বাড়তি কথা না বাড়াই। ঈদের আনন্দ হোক সবার জন্য। সকলেই যেন সমানভাবে এই আনন্দের অংশীদার হতে পারে এটাই প্রত্যাশা। এর জন্য আমাদের প্রত্যেকের উচিত যার যার অবস্থান থেকে তার আশেপাশের দরিদ্র অসহায় মানুষদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া। তাহলেই আমরা সত্যিকার অর্থে ঈদের আনন্দের সার্থকতা খুঁজে পাবো। আজকের মত এতোটুকুই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় শেষ করছি।
Sort:  
 2 years ago 

ঠিক বলেছেন যত ইচ্ছা তত মানুষের বয়স ও বেড়ে যায় তার সাথে সাথে প্রতিনিয়ত ঈদের আনন্দ অন্য রকমের হয়ে থাকে। ঈদ নিয়ে আপনার আজকের বিশেষ পোস্ট আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

ঈদের আনন্দ আমি খুব বেশি মিস করছি। বিশেষ করে আমি এই ঈদে বেশি মিস করলাম। আজকে যে ঈদ শুরুতে আমার মনেই হচ্ছিল না। আগের মত ঈদের আনন্দ আর নাই। আগে দশ দিন আগে থেকে দিন গণনা করতাম কবে ঈদ আসবে। সেই সময় গুলো হারিয়ে গেছে😥😥 যাই হোক,

ঈদ মোবারক 🐂

 2 years ago 

যেকোনো উৎসব খুবই আনন্দের।ধনী-গরিব সকলের জন্যই উৎসব সমান ভূমিকা পালন করে।ঈদ সুন্দরভাবে ও আনন্দে কাটান এটাই প্রত্যাশা করি ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আসলে আপনি ঠিক বলেছেন সেই সময়ের ঈদের আনন্দগুলো ছিল অন্যরকম। এখনকার ছেলে মেয়েরা বেশিরভাগই থাকে ঘরে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত। তাই তারা আনন্দগুলো ভালোভাবে উপভোগ করতে পারেনা আমি মনে করি। সেই সময়ে একে অপরের বাড়িতে যেত দাওয়াত খেত অন্যরকম অনুভূতি ছিল। এখনকার মানুষের মনে হয় যেন ওই ধরনের মেলামেশাগুলো কমে গেছে।

 2 years ago 

প্রথমেই ঈদের শুভেচ্ছা জানাই 🕌

ছোটবেলার ঈদ আর এখনকার ঈদের মাঝে আকাশ পাতাল ফারাক 😕
ঈদ বলতে আমার মধ্যে তেমন কোন আনন্দ আর খুঁজে পাইনা। তবে এখন পরিবারকে কিছুটা ভালো রাখার জন্য প্রানপন চেষ্টা করে যাই। এটাই কিছুটা আনন্দের। তবে সবাই সবার দিকে খেয়াল রাখলে হয়তো কিছু মানুষ আনন্দে থাকতে পারতো, বিশেষ করে সিলেটের বন্যা কবলিত মানুষের কথা বলছি😕
যাক সবার উপর শান্তি আর আনন্দ বর্ষিত হোক এই কামনা করছি।

 2 years ago 

আমার শৈশবের সময় কোরবানির ঈদ হতো ঠান্ডার সময়। প্রচন্ড শীত কে উপেক্ষা করে গোসল করতে হতো সকালে। মাঝেমধ্যে গোসল করতে খুবই ভয় পেতাম। তবে টি বলের পাশে ভিড়তাম না।। পুকুরে লাফ মারতাম, যা হবার পুকুরে হোক। তিন-চারটা ডুব মেরে দ্রুত উঠে চলে আসতাম। যাইহোক বেশ ভালো লাগলো আপনার ঈদের অনুভূতিটা পড়ে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60950.68
ETH 2607.83
USDT 1.00
SBD 2.65