রাঙ্গামাটির ছাদে একদিন। 10% প্রিয় লাজুক খ্যাক এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আজ- ১০পৌষ | ১৪২৮ , বঙ্গাব্দ | শনিবার | শীতকাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আশা করি সবাই ভাল আছেন।

অনেকদিন ধরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হচ্ছিল না। যাই যাই করেও কিছুতেই আর ঘর হতে বের হতে পারছিলাম না। করোনা কালীন সময়ে প্রায় দুই বছর গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় ভিশন হাঁপিয়ে উঠেছিলাম বাইরে যাবার জন্য। তাই বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া নিতান্তই জরুরি হয়ে পড়েছিল আমার জন্য কিন্তু চাইলেই তো আর সব হয়না। বন্ধুরা সবাই ভীষণ ব্যস্ত। সবার পক্ষে একসাথে কিছুতেই সময় সময় বের করা সম্ভব নয়। তাই নিতান্তই বাধ্য হয়ে, একজন মাত্র বন্ধুকে সঙ্গী করেই ঘুরতে বের হয়ে পড়লাম সাজেক এর উদ্দেশ্যে। যাকে বলা হয় রাঙ্গামাটির ছাদ বা পাহাড়ের রানী।

20211222_090108.jpg

দীঘিনালা আর্মি ক্যাম্পে সাজেকের উদ্দেশ্যে যাত্রার অপেক্ষায়

Location

সাজেক সম্পর্কে যারা খুব বেশি জানেন না তাদের উদ্দেশ্যে বলে রাখি, বাংলাদেশের সুন্দরতম স্থান গুলোর মধ্যে সাজেক অন্যতম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় 2,000 ফুট।রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন হচ্ছে সাজেক। যদিও সাজেক এর অবস্থান রাঙ্গামাটি জেলায় কিন্তু খাগড়াছড়ি জেলা দিয়েই সাজেকে যেতে হয়।

20211222_153437.jpg

কংলাক পাহাড়ের চূড়ায়

Location

খাগড়াছড়ি হতে চাঁদের গাড়ীতে সাজেকে যাবার অভিজ্ঞতা এককথায় বর্ণনাতীত। প্রথমে ধুঁকতে ধুঁকতে পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ আবার পরমুহূর্তেই তীব্র বেগে নিচের দিকে নেমে যাওয়া। প্রতিটি মুহূর্তে ভয় হতে থাকবে এই বুঝি রাস্তা থেকে ছিটকে খাদে পড়ে গেলাম। বিশেষ করে সাজেকের চূড়ায় আরোহণের মুহূর্তটি সবচাইতে উত্তেজনাকর। পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সর্বোচ্চ শিখরে আরোহন করতে হলে যথেষ্ট সাহসের দরকার। তবে চাঁদের গাড়ি গুলো আপাতদৃষ্টিতে দেখতে ভাঙাচোরা আর অচল বলে মনে হলেও এর ইঞ্জিনগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী। আর চালকদের দক্ষতার প্রশংসা না করলেই নয়। যাইহোক খাগড়াছড়ি হতে সাজেক ভ্যালি পর্যন্ত প্রায় 4 ঘন্টার এই কষ্টকর ও রোমাঞ্চকর ভ্রমণের শেষ পর্যায়ে আমরা যখন সাজেকের চূড়ায় পৌছলাম তখন নিমিষেই আমাদের সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে গেল। প্রকৃতির এমন রূপসজ্জা যেকোনো কষ্টকেই ভুলিয়ে দেবে নিমিষে।

20211223_111810.jpg

ফেরার পথে

Location

20211222_142858.jpg

সাজেকের একটি রিসোর্ট

Location

সাজেক ভ্যালির পাশেই আছে কংলাক পাহাড়। যার উচ্চতা সাজেকের চাইতে কিছুটা বেশি। যেখান থেকে আপনি দেখতে পাবেন আপনার চারপাশের সাদা মেঘের ভেলা আর আবহাওয়া যখন থাকবে পরিষ্কার তখন আপনি দেখতে পাবেন আদিগন্ত বিস্তৃত সবুজের সমারোহ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সাজেকে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু সুন্দর সুন্দর কটেজ। এছাড়াও আছে ব্যক্তি মালিকানাধীন থাকার ব্যবস্থা। সাজেকে আমরা উপভোগ করেছিলাম আদিবাসীদের বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ সেইসঙ্গে দেখতে পেয়েছিলাম তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবনধারার কিছু অংশ। সব মিলিয়ে আমার সাজেক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ। আজকের মতো এতোটুকুই বাকিটা রেখে দিলাম আপনাদের নিজ চোখে দেখে আসার জন্য। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় শেষ করছি।

Photographer@ferdous3486
DeviceSamsung M21
Sort:  
 2 years ago 

আপনার সাজেক ভ্রমন অভিজ্ঞতা সুন্দরভাবে আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। সাজেকের বর্ণনাও খুব সুন্দর ভাবে দিয়েছেন। নতুন ইউজারদের মধ্যে আপনার লেখায় আমার কাছে সব থেকে বেশি আকর্ষণীয় মনে হল। ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে অনেক দূর এগিয়ে যাবেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

ভাই এগিয়ে যেতে পারি বা না পারি আপনাদের দোয়া এবং সহযোগিতা থাকলেই আমি খুশি। উৎসাহ দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

  • ভাই আপনার সাজেক ভ্রমণ দেখে তো আমার লোভ লেগে গেলো ইনশাল্লাহ আমি যাব এই জানুয়ারি মাসে ভাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আর আপনি খুব সুন্দর ভ্রমণ করেছেন দেখে বোঝা যাচ্ছে সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন আমাদের মাঝে।
 2 years ago 

ভাই, আসলে ভ্রমণ কাহিনী গুলো কেউ খুব একটা পড়ে না। তবে আমি নিশ্চিত সাজেক ভ্রমণ করলে আপনার অর্থ এবং পরিশ্রম বৃথা যাবেনা। অবশ্যই আপনারও ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

সাজেক অনেক সুন্দর জায়গা। একবার যাওয়ার সৌভাগ্য হয় ছিলো। আমার কাছে মনে কেউ যদি সাজেক ঘুরতে যায় তার মন ভালো হতে বাধ্য। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্যে ভরপুর সাজেক ভ্যালি।

 2 years ago 

আমিও আপনার সংগে একমত। মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।।

 2 years ago 

আপনার পোস্টটি সুন্দর হয়েছে।

তবে কিছু সাজেশন হলো,

  • ১. পোস্টে ছবির পরিমাণ একটু বাড়াবেন।
  • ৩. লিখার পরিমাণ ঠিক আছে তবে আরেকটু বাড়ালে ভালো হয়।
  • ৩. আপনার পোস্ট সম্পর্কীয় ট্যাগটি ট্যাগের প্রথমে দেওয়ার ট্রাই করবেন, এরপরে অন্য ট্যাগ।
 2 years ago 

আপু, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান পরামর্শ গুলোর জন্য। বিষয়গুলো আমার মনে থাকবে এবং পরবর্তীতে আপনার পরামর্শগুলো অবশ্যই কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।

Coin Marketplace

STEEM 0.29
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 62934.09
ETH 3118.65
USDT 1.00
SBD 3.85