বুক রিভিউ (শেষ চাল)। 10% লাজুক শেয়ালের জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আজ- ২৭ মাঘ | ১৪২৮ , বঙ্গাব্দ | বৃহস্পতিবার | শীতকাল |


আসসালামু-আলাইকুম।

কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আমি হাজির হয়েছি আমার পছন্দের একটি বইয়ের রিভিউ নিয়ে। অ্যাডভেঞ্চার আর থ্রিলারধর্মী বই যাদের পছন্দ তাদের কাছে কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম মোটেই অপরিচিত নয়। সবার কাছে যিনি পরিচিত কাজীদা নামে। বাংলাদেশের সাহিত্য জগতে স্পাই ত্রিলারকে জনপ্রিয় করতে সবচাইতে বেশি ভূমিকা বোধহয় এই লোকটির। মাসুদ রানা চরিত্রটি তার অমর সৃষ্টি। কাল্পনিক এই চরিত্রটির মধ্যে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন অবিস্মরনীয় দেশপ্রেম, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, দুরন্ত সাহস আর অসম্ভব কে সম্ভব করার এক অদম্য মানসিকতা। প্রয়াতঃ এই লেখকের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে আজ আমি তার একটি বইয়ের রিভিউ লিখতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

20220210_153702.jpg

গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ

বইয়ের নামশেষ চাল
লেখকের নামকাজী আনোয়ার হোসেন
প্রকাশকসেবা প্রকাশনী
খণ্ড সংখ্যা
ধরনস্পাই থ্রিলার
ভাষাবাংলা

কাহিনী সংক্ষেপঃ

শুরুতেই বলে নেয়া ভালো মাসুদ রানা সিরিজের প্রতিটি গল্পই বিদেশি কাহিনী অবলম্বনে রচিত। শেষ চাল উপন্যাসটি মূলত লেখা হয়েছে বিখ্যাত ব্রিটিশ-আফ্রিকান লেখক উইলবার স্মিথ এর রিভার গড এবং সেভেন্থ স্ক্রল উপন্যাস এর ছায়া অবলম্বনে। কাহিনীর শুরু মিশরের একটি গ্রামে কায়রো মিউজিয়ামের ডিরেক্টর আলী হাসলান এর খুনের মধ্য দিয়ে। প্রাচীন মিশরীয় ভাষা হায়ারোগ্লিফিক্স এ অভিজ্ঞ আলী হাসলান ও তার ভাতিজি নীমা হাসলান একটি মিশরীয় সমাধি খনন করে আবিষ্কার করেন প্যাপিরাসে লিখিত এক অসামান্য স্ক্রল। প্রায় চার হাজার বছর পূর্বে কোন এক বিখ্যাত ফারাও রাজার ব্যক্তিগত ভৃত্ত ছিল টাইটা নামের এক অসাধারণ প্রতিভাধর ব্যক্তি। যার রচিত এই স্ক্রল। প্রাচীন মিশরীয় রীতি অনুযায়ী রাজার মৃত্যুর পর তার বিপুল ধন-সম্পদ এর বেশিরভাগই তার সঙ্গে তার কবরে দিয়ে দেয়া হতো। প্রাচীন সেই স্ক্রল থেকে আলী হাসলান যখন জানতে পারেন বিপুল ক্ষমতাশালী এক ফারাও রাজার যাবতীয় ধন-সম্পদ আজও লুকিয়ে আছে মানুষের চোখের আড়ালে ঠিক তখনই তিনি খুন হয়ে যান ভাড়া করা আততায়ীদের হাতে। এরপর কোনরকমে প্রাণে বেঁচে যাওয়া তার ভাতিজি রহস্য উন্মোচনের জন্য শরণাপন্ন হন গল্পের নায়ক মাসুদ রানার কাছে। একে একে তারা বিভিন্ন প্রতিকূলতা আর রহস্য উন্মোচনের মধ্য দিয়ে পৌঁছে যায় নীল নদের উৎপত্তিস্থলে যেখানে লুকিয়ে আছে সকল রহস্যের সমাধান। আ্যবে নামক একটি গিরিখাতের গভীরে ভয়ঙ্কর খরস্রোতা নদীর তলদেশে লুকিয়ে থাকা ফারাও মামোসের বিপুল বিত্ত-বৈভব একসময় তারা আবিষ্কার করেন। সমস্ত আর্টিফ্যাক্ট গুলো যখন তারা উদ্ধারের শেষ পর্যায়ে এমন সময় আবির্ভাব হয় গল্পের ভিলেন এক জার্মান ধনকুবের হোসে ডুগার্ডের। যিনি তার বিপুল ক্ষমতা প্রয়োগ করে ছিনিয়ে নিতে চান সবকিছু। কিন্তু বুদ্ধির খেলায় হেরে গিয়ে তার সমাধি হয় নীলনদের নিচে ফারাও রাজার কবরে।

20220210_153737.jpg

ব্যক্তিগত মতামতঃ

অ্যাডভেঞ্চার আর থ্রিলার ধর্মী বইয়ের অসামান্য একটি উদাহরণ হচ্ছে এই উপন্যাসটি। গল্পের পোলট মিশর, ইথিওপিয়া আর ইংল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গা কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠলেও লেখকের অসামান্য প্রতিভার গুণে মনে হচ্ছিল যেন সবকিছু চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি। বিশাল একটি উপন্যাসের অতি সংক্ষিপ্ত একটি রিভিউ করেছি আমি। যে কারণে ঘটনার প্রায় ৮0 শতাংশই বাদ পড়ে গেছে। বিশালাকৃতির হওয়া সত্বেও বইটি পড়তে আপনাদের একটুও অনাগ্রহ লাগবে না বলে আমি মনে করি। কেননা বইয়ের প্রতি পাতায় পাতায় আছে শ্বাসরুদ্ধকর আকর্ষণ। আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলো এবং নীলনদের ভৌগলিক বর্ণনাগুলো দেয়া হয়েছে অনেক সুন্দর ভাবে যা থেকে এই এলাকার মানুষ, পরিবেশ এবং ভৌগোলিক অবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব।

20220210_153721.jpg

ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৮/১০

আজকের মত এ পর্যন্তই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
Photographer@ferdous3486
DeviceSamsung M21

Sort:  
 3 years ago 

অনেক সুন্দর করে বইটির রিভিউ দিয়েছেন ভাইয়া। আমি এই বইটি পড়িনি। তবে এখন পড়ার ইচ্ছা পোষণ করছি। এডভেঞ্চার, বুদ্ধির খেলা, গোয়েন্দাকাহিনী এসব আমার খুব ভাল লাগে।

 3 years ago 

আপু লেখার পরিমান বেশি হলে আমাদের কমিউনিটিতে এমনিতেই কেউ পড়তে চায় না। আর যদি হয় বুক রিভিউ তাহলে তো কথাই নেই। আমি ধরেই নিয়েছিলাম আমার এই পোস্টে কোন কমেন্টস আসবেনা। আপনার মত আমিও এগুলো খুব পছন্দ করি। আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি, পড়ে দেখুন বইটি আপনারও ভালো লাগবে। মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 57495.90
ETH 2348.52
USDT 1.00
SBD 2.36