//🎤পাহাড় চুড়ায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা 🎤//আবৃত্তি আমি //১০% লাজুক খ্যাকের জন্য)
পাহাড় চূড়ায় – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
অনেকদিন থেকেই আমার একটা পাহাড় কেনার শখ।
কিন্তু পাহাড় কে বিক্রি করে তা জানি না।
যদি তার দেখা পেতাম,
দামের জন্য আটকাতো না।
আমার নিজস্ব একটা নদী আছে,
সেটা দিয়ে দিতাম পাহাড়টার বদলে।
কে না জানে, পাহাড়ের চেয়ে নদীর দামই বেশী।
পাহাড় স্থানু, নদী বহমান।
তবু আমি নদীর বদলে পাহাড়টাই
কিনতাম।
কারণ, আমি ঠকতে চাই।
নদীটাও অবশ্য কিনেছিলামি একটা দ্বীপের বদলে।
ছেলেবেলায় আমার বেশ ছোট্টোখাট্টো,
ছিমছাম একটা দ্বীপ ছিল।
সেখানে অসংখ্য প্রজাপতি।
শৈশবে দ্বীপটি ছিল আমার বড় প্রিয়।
আমার যৌবনে দ্বীপটি আমার
কাছে মাপে ছোট লাগলো। প্রবহমান ছিপছিপে তন্বী নদীটি বেশ পছন্দ হল আমার।
বন্ধুরা বললো, ঐটুকু
একটা দ্বীপের বিনিময়ে এতবড়
একটা নদী পেয়েছিস?
খুব জিতেছিস তো মাইরি!
তখন জয়ের আনন্দে আমি বিহ্বল হতাম।
তখন সত্যিই আমি ভালবাসতাম নদীটিকে।
নদী আমার অনেক প্রশ্নের উত্তর দিত।
যেমন, বলো তো, আজ
সন্ধেবেলা বৃষ্টি হবে কিনা?
সে বলতো, আজ এখানে দক্ষিণ গরম হাওয়া।
শুধু একটি ছোট্ট দ্বীপে বৃষ্টি,
সে কী প্রবল বৃষ্টি, যেন একটা উৎসব!
আমি সেই দ্বীপে আর যেতে পারি না,
সে জানতো! সবাই জানে।
শৈশবে আর ফেরা যায় না।
এখন আমি একটা পাহাড় কিনতে চাই।
সেই পাহাড়ের পায়ের
কাছে থাকবে গহন অরণ্য, আমি সেই অরণ্য পার হয়ে যাব, তারপর শুধু রুক্ষ
কঠিন পাহাড়।
একেবারে চূড়ায়, মাথার
খুব কাছে আকাশ, নিচে বিপুলা পৃথিবী,
চরাচরে তীব্র নির্জনতা।
আমার কষ্ঠস্বর সেখানে কেউ শুনতে পাবে না।
আমি ঈশ্বর মানি না, তিনি আমার মাথার কাছে ঝুঁকে দাঁড়াবেন না।
আমি শুধু দশ দিককে উদ্দেশ্য করে বলবো,
প্রত্যেক মানুষই অহঙ্কারী, এখানে আমি একা-
এখানে আমার কোন অহঙ্কার নেই।
এখানে জয়ী হবার বদলে ক্ষমা চাইতে ভালো লাগে।
হে দশ দিক, আমি কোন দোষ করিনি।
আমাকে ক্ষমা করো।
তবে প্রকৃতির প্রতি কবির যে ভালোবাসা ছিল, তা হয়তো কবি এখানে একটু অন্যভাবে দেখার চেষ্টা করেছে। চেষ্টা করেছে প্রকৃতির মাঝে মানুষজাতী প্রচুর অহংকারী ও স্বার্থপর । তারপরেও সে সবাইকে সাক্ষী রেখে বলার চেষ্টা করেছে, এই অহংকারী মানুষ গুলোর ভিতর সহানুভূতির মনোভাব জাগ্রত হোক এবং পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসুক হয়তো এমনটাই কামনা করেছিলেন । হয়তো এভাবে চিন্তা করেছিলেন যেখানে, মানুষ নিরহংকারী হবে, যেখানে কোনো বৈষম্যবোধের ব্যবধান থাকবে না ।
তাই হয়তো কবি, তার মনের কথাগুলো কবিতার ভাষায় বলার চেষ্টা করেছেন। এতো সুন্দর একটি কবিতার আয়োজন করার জন্য @black দাদা কে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
সুন্দর চেষ্টা করেছেন । শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
জি ভাইয়া বেশি ভালো পারি না তবে চেষ্টা করেছি। ইনশাআল্লাহ দোয়া করবেন সামনে ভালো কিছু করবো।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার কন্ঠে কবিতা আবৃত্তি টি অনেক সুন্দর লাগছে আপু। আপনার কবিতা বলার ধরণ টা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।।
শুভকামনা রইল আপনার জন্য।।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
আজকে আপনি আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর ভাবে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পাহাড় চূড়ায় কবিতাটি আবৃত্তি করে শেয়ার করেছেন আপু। আপনার কন্ঠে এই কবিতাটি অনেক ভালো লেগেছে। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় ভালো ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে আমার কবিতা আবৃত্তি শোনে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
দারুন ছিল গলা । চেষ্টা করলে সামনে সুদিন আসবে। সত্যি বলতে কবিতাটি একটি কঠিন অর্থ বহন করে । যাই হোক শুনতে ভাল লেগেছে কবিতা খানি আপনার কন্ঠে । ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ দাদা।