বিয়ের আগের দিনের কিছু মুহূর্ত।
হ্যালো সবাইকে
কেমন আছেন সবাই ? আশা করি ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে। হাজির হয়েছি আজকে খুবই স্পেশাল একটি দিনের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। একটি বিশেষ দিনের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
দিনটি ছিল অক্টোবর মাসের ২১ তারিখ। এই দিনটি ছিল আমার বিয়ের আগের দিন। আজকে বিয়ের আগের দিনের কিছু মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আমি গ্রাম অঞ্চলে থাকি। গ্রামাঞ্চলের নিয়ম বিশেষ করে মুসলিম বিয়ের কিরকম হয় আপনাদের সাথে শেয়ার করব। মুসলিম বিয়ের শুরু হয় গ্রামাঞ্চলে বিয়ের আগের দিন বিকাল থেকে। বিকেলবেলা কনেকে গোসল করানো হয়। সবাই মিলে একসাথে গায়ে হলুদ মেখে গোসল করানো হয়। আমাকেও সবাই মিলে একসাথে গায়ে হলুদ মেখে গোসল করিয়েছে ।অনেক দুষ্টামি হাসি মজা সবাই মিলে আসলো কথা বলল অনেক দুষ্টামি করলো এবং আমাকে গোসল করালো অনেক মজা হয়েছিল। গোসল করে মেয়েকে শাড়ি পড়ানো হয় একটা নতুন শাড়ি পড়ানো হয় আর সেই শাড়িটি প্রথমে পড়ায় কনের মা। আমাকে আমার মা শাড়ি পরিয়ে দিল।
এরপর আমি ঘরে চলে আসি মেহেদি লাগানো হয়।আমাকেও মেহেদি লাগিয়েছে আমার একটা বোন। আমাকে মেহেদী লাগিয়ে দিয়েছে। আমি নিজের মেহেদী লাগাতে পছন্দ করি।কিন্তু বিয়ের দিন আর সেটি সম্ভব হয়ে ওঠে না, অন্যজনে আমাকে মেহেদি লাগিয়ে দিয়েছিল। তবে আমি কি করে নিজের হাতে নিজে মেহেদী না লাগাই। দুহাতের মধ্যে একহাতে আমি মেহেদি লাগিয়েছিলাম আরেক হাতেআমার একটা বোন মেহেদী লাগিয়ে দিয়েছিল। এরপর সবাই মেহমানরা আসতে শুরু করে। আমার বিয়ের অনুষ্ঠানের সেরকম বড় করে হচ্ছে না । সেজন্য বিয়ে বাড়ি অনেক ঠান্ডা ঠান্ডা ছিল । সেরকম কিছু জাঁকজমকপূর্ণ হয়নি। নরমাল শুধু খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল।
এরপর আমি হলুদের শাড়ি পড়েছিলাম ।বরের পক্ষ থেকে হলুদ রঙের শাড়ি ব্লাউজ এবং হলুদের গয়না এবং যাবতীয় জিনিসপত্র পাঠানো হয়েছিল। সবকিছু দিয়ে আমি রেডি হয়ে নিলাম। আমি মেকআপ করতে অনেক ভালবাসি সেজন্য আমি নিজের মেকআপ টা নিজেই করেছি ।আমি শাড়ি পড়তে পারি না । আমার বড় খালা আমাকে শাড়ি পড়তে সাহায্য করে দিয়েছিল এবং আমাকে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিল। এরপর আমি নিজে মেকআপ করে শাড়ি পড়ে রেডি হয়ে নিলাম।
ফটোগ্রাফারের একজনকে বলেছিলাম ফটোগ্রাফি করার জন্য । সে এসে পড়ুক আমার রেডি হবার জন্য অপেক্ষা করলো। আমি রেডি হয়ে গেলাম তারপর আমার ফটোগ্রাফি করা শুরু করল। আমার ফটোগ্রাফিটা ভালোই ছিল । রাতের অনেকক্ষণ পর্যন্ত ফটোগ্রাফি চলতে লাগলো। এরপর একটা কেক কাটা হলো হলুদের কেক। ফটোগ্রাফি করার সময় ফটোগ্রাফার প্রথমে আমার ফটোগ্রাফি করেছে আমার সিঙ্গেল ফটোগ্রাফি করেছে। তারপর আমার খালা আমার আম্মু আমার ভাইদের সাথে একসাথে ফটোগ্রাফি করেছে । তারপর আমার বোনদের সাথে ফটোগ্রাফি করেছেন।
যেহেতু আমার বিয়েটা নরমাল হচ্ছিল। তাই কোন বিয়ে বাড়ি সাজানো হয়নি সেজন্য বাড়ির উঠোনে ফটোগ্রাফাররা ফটোগ্রাফি করেছেন ।ফটোগ্রাফিতে আমি ছাড়া আর কোন জিনিসই দেখা যাচ্ছে না। কারণ সবকিছু নরমাল ছিল আমি শুধু হলুদের সাজে সেজেছি। বিয়ের সময় আমার আব্বুকে খুব মিস করেছি। আমার আব্বু ছিল না আমার আব্বা বাইরে থাকে সেজন্য আমার বিয়েটা থাকতে পারেনি ।আমাদের ফ্যামিলিতে আগামী ১০ বছর বা 15 বছরের মধ্যেও আর কোন বিয়ে নেই ।কারণ আমার ভাইরা ছোট ছোট তারা বিয়ে করতে এখনো অনেক দেরি রয়েছে। আমার বিয়ে হয়ে গেল এরপর আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে কোন বিয়ে নেই। আমি আমার আব্বুর একমাত্র মেয়ে অনেক মানুষেরই আশা থাকে মেয়ের বিয়ে দিবে নিজে। কিন্তু আমার আব্বু সেটা পারেনি পরিস্থিতির কারণে।
আমার আব্বু হচ্ছে আমাদের পরিবারের একমাত্র ইনকাম করা মানুষ। আমি স্টিমিট কাজ করি ঠিক আছে তবে আমার স্টিমিট থেকে অতটাও ইনকাম করতে পারি না যাতে আমি আমার ফ্যামিলিতে কিছু দিব। আশা করি একদিন স্টিমিট ভালো করে কাজ করে ফ্যামিলির পাশে থাকতে পারবো। যাই হোক খুবই মিস করছিলাম আব্বুকে। এরপর আমরা ফ্যামিলির সবাই মিলে ফটোগ্রাফি করে নিয়েছি।
রাত অনেকটা হয়েছিল ফটোগ্রাফারদেরও ফটোগ্রাফি কমপ্লিট হয়ে গেল । এরপর যারা টুকটাক মেহমানরা এসেছিল তাদের জন্য বিরিয়ানি রান্না করা হয়েছিল। আমাদের গ্রাম অঞ্চলের বিয়েতে হলুদের দিন অর্থাৎ বিয়ের আগের দিন রাতে মেহমানদের বিরিয়ানি খাওয়ানো হয় । এটা কোথাকার নিয়ম আমি জানিনা তবে অনেক আগে থেকেই দেখছি এটা চলে আসছে। তো বিরিয়ানি রান্না করা হয়ে গেল বিরিয়ানি খেয়ে নিয়েছিল সবাই ।
রাত অনেকটা হয়েছিল আমি ও জামা কাপড় চেঞ্জ করে বিরিয়ানি খেয়ে নিয়েছি। রাত তখন ২টা থেকে ৩ টা বাজে। রাত যত বাড় ছিল নিজেকে তো অসহায় মনে হচ্ছিল। অনেক টেনশন হচ্ছিল কারণ বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান সবকিছু সামলাতে অবশ্যই লোকজন লাগে। আমাদের কোন লোকজন ছিল না। আমার আম্মু একা সব করছিল বাইরে বাবুচিরা রান্না করছিল । তাদের অনেক কিছু প্রয়োজনও ছিল।কিন্তু আমার মা তাদের সাথে গিয়ে কথা বলছিল। তারা রাতে যে কাজ করবে তাদের সাথে একজন মানুষ থাকতে হয়।কিন্তু আমাদের সেরকম কোনো মানুষ নেই। আমার আম্মু একা মহিলা মানুষ বাবুচিদের সাথে রাতে থাকা ও সম্ভব না কারণ গ্রামাঞ্চলের পরিবেশ এখন উন্নতি হয়নি অতটা।আমার ছোট ভাইটা বয়স ৮ বছর।সে বসে আছে রাত ৩টা বাজে বাবুচিদের সাথে । আমার খুবই কষ্ট লাগছিল তখন একজন মানুষ নেই।
যাইহোক বাবুচিটা খুবই ভালো ছিল। আমার ছোট ভাইটা সেখানে অনেকক্ষণ বসে ছিল।সে কিছুই বুঝেনা তারপরও সে তাদের সাথে বসে ছিল। এরপর আর আমিও কিছুক্ষণ বসে ছিলাম । তারপর মা বলল তোকে আর এত জেগে থাকতে হবে না তুই ঘুমিয়ে যা। আমি আমার রুমে এসে ঘুমাতে এলাম।কিছুতেই ঘুম আসছিল না টেনশন লাগছিল। আমার আম্মু কিভাবে এত কিছু একা সামলাবে সেগুলাই টেনশন করতে ছিলাম । কি আর করার আমার আম্মুকে সব কাজ একা করতে হয়েছে খুবই টেনশন হয়েছে । এভাবেই আমার বিয়ের দিনটি শেষ হল।
শ্রেণী | বিয়ের আগের দিনের কিছু মুহূর্ত |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @fasoniya |
ডিভাইস | Vivo Y15s |
লোকেশন | ফেনী |
আমার পরিচয়
আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।
মুসলিম বিয়ে বাড়ি সম্পর্কে আমার একদমই আইডিয়া ছিল না। আপনার পোস্ট পড়ে যা একটু আইডিয়া করতে পারলাম। তবে মনে হয়েছে মোটামুটি সব কিছুই একইরকম। আপনার বাবা কাছে থাকলে হয়তো আপনার মায়ের কষ্টটা একটু কম হতো। আপনিও যেমন আপনার বাবাকে মিস করেছেন তেমনি আপনার বাবা ও আপনাকে অনেক বেশি মিস করেছে বিয়ের দিন। যাই হোক আপনার বিবাহিত জীবন সুখের হোক এই কামনা করি।
আপনাদের পবিত্র বিয়ের বন্ধন যেন সারা জীবন অটুট থাকে এই আশাবাদ ব্যক্ত করি। আপনাদের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। গায়ে হলুদের কিছু সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। দেখে খুব ভালো লাগলো। আসলে এই মুহূর্তগুলো জীবনে আর কখনো ফিরে আসবে না ।জীবনে স্মৃতির পাতায় এই মুহূর্তগুলো রয়ে যাবে। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
সম্ভবত আপনার বিয়েরই কেনাকাটা করতে দেখেছিলাম রকি ভাইয়ের এবং আপুর পোস্টে। পুরো লেখাটা পড়ার পরে আপনার বাবার কথা শুনে সত্যি বেশ খারাপ লাগলো। আপনারা যেমন মিস করেছেন, আপনার বাবাও হয়তো তার থেকে বেশি মিস করেছেন সেদিনের এই আয়োজনটা। আপনার মা একা হাতে পুরোটা বেশি দক্ষতার সাথে সামলিয়েছেন। প্রিয় মানুষটাকে নিয়ে অনেক ভালো থাকবেন আপু। অনেক শুভেচ্ছা আর শুভকামনা রইল পরবর্তী দিনগুলোর জন্য।
প্রথমেই আপনার বিবাহিত জীবন অনেক সুখী হোক এই কামনা করি। আপনার বিয়ের আগের দিনের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালোই লাগলো। আশা করি,আপনি স্টিমিট-এ কাজ করে ভবিষ্যতে আপনার ফ্যামিলিকে সাহায্য করতে পারবেন। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার বিয়ের আগের দিনের ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার বিবাহিত জীবনের জন্য রইল অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।
বিয়ের আগের এই সময় গুলো এক অন্যরকম অনুভূতিতে কাটে। এটা সত্যি কাউকে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। খুব সুন্দর লাগছে আপনাকে এই হলুদ সবুজে রঙিত শাড়িতে। এরকম হাসি মাখা মুখ যেন সারা জীবন বয়ে থাকে আপনার জীবনে। আর অনেক দোয়া করি আপনার বিবাহিত জীবন যেন সুখের হয়।
আপনি অনেক সুন্দর করে আপনার বিয়ের আগের দিনের কথা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আসলে প্রত্যেকের জীবনে বিয়ের বিশেষ কিছু মুহুর্ত থাকে যেগুলো সারা জীবন মনে থাকে।আপনার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান সিম্পল হয়েছে তাতে কি হয়েছে।বাড়ির সব আত্মীয়-স্বজন তো ছিল।সবাই মিলে অনেক আনন্দ করেছেন, কেক কেটেছেন, হাতে মেহেদি পরিয়েছেন।অনেক সুন্দর আয়োজন করেছেন পারিবারিকভাবে।আপনার নতুন জীবনে যাত্রা শুভ হোক এই কামনা করি।
বিবাহিত জীবন সুখের হোক,সারাজীবন নিজের জীবনসঙ্গীকে নিয়ে ভালো থাকো এটাই কামনা করি।যদিও বিয়ের পর ব্যস্ততায় পোস্ট লেট হয়েছে,তবে দেখতে পেরে ভালো লাগলো।
নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। খুবই ভালো লেগেছে আপনার শুভ কামনা পেয়ে।
আপু হলুদের সাথে আপনাকে বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে। আপনার নতুন জীবনের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। আপনার বরের ছবি দিলেন না আপু, দিবেন আপু দেখবো।সাথে আপনার কনে সাজার ছবি ও।🥰🥰