পাত্রী দেখার গল্প।

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

হ্যালো সবাইকে

কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। পাত্রী দেখার গল্প আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্টটি ভালো লাগবে।

IMG-20230929-WA0103.jpg

আজকে আরও একটি গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। গল্প করতে এবং গল্প লিখতে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। আমার আজকের গল্পটির নাম হল পাত্রী দেখা। একটা খুবই গরীব পরিবারের মেয়ে, মা বাবা মারা যাওয়ার পর তার মামার বাড়িতে এসে থাকতো। ছোটবেলা থেকে মামার বাড়িতেই মানুষ হয়। মামা মামি ভালো মানুষ ছিল না। মেয়েটাকে লালন পালন খাওয়াতো ঠিকই কিন্তু সেটা খুবই অত্যাচার করে। সারা বাড়ির কাজকর্ম মেয়েটিকে দিয়ে করাতো। মেয়েটির মামার ঘরে একটা মেয়ে ছিল তার মামাতো বোন। একই বয়সের দুইজন বোন এক সাথে একই বাড়িতে মানুষ হয়েছে কিন্তু দুজনেরই জীবন আলাদা। মেয়েটির মামাতো বোন মেয়েটির উপর খুবই অত্যাচার করতো সারাক্ষণ বিভিন্ন ধরনের কাজ করাতেই থাকতো।

মেয়েটি সবকিছু মুখ বুঝে করে নিত কারণ মেয়েটির ছোটবেলা থেকেই মা-বাবা নেই। মা বাবার আদর যত্ন সে কখনোই চোখে দেখেনি। সেজন্য মামা মামি যাই করে তার কাছে সেটা ভালো লাগে। সে চিন্তা করে মামা মামি সবসময় তার ভালোর জন্যই এসব করে। একদিন সকালবেলা মেয়েটিকে বাজারে পাঠিয়েছে তার মামী বাজার করে নিয়ে আসার জন্য। বাজার করে আসার পথে রাস্তায় তার সাথে একটা ছেলের দেখা হয়। সেটা খুবই অন্যভাবে মেয়েটির রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় খুবই অন্যমনস্ক ছিল। তখন রাস্তার মাঝখানে একটা গাড়ি সামনে এসে পড়ে যায়। গাড়িওয়ালা গাড়ি থামিয়ে নাই মেয়েটিকে বাঁচিয়ে নেয়ার পরে খুবই চেঁচামেচি করছিল এভাবে চলছে কেন রাস্তায়। পরে গাড়ি থেকে একটা ছেলে বেরিয়ে আসে খুবই ভালো লেগে যায়।

এরপর মেয়েটি বাজার করে বাড়িতে চলে যায়।এত কষ্ট করে বাজার করে আনার পর বাড়িতে এসে তার মামি তাকে অনেক বকাবকি করতে লাগল সাথে তার সেই মামাতো বোনটি অনেক খারাপ কথা বলল। যে এত দেরি হল কেন বাজার করে বাড়ি আসতে। এরপর বাজার করে নিয়ে এসে মেয়েটি পরিবারের সবার জন্য রান্না বান্না করে। এর কিছুদিন পর রাস্তায় ছেলেটির সাথে তার দেখা হয়েছিল। তার বাড়ি থেকে মেয়েটির জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসে। ছেলেটির এক দেখাতেই মেয়েটিকে ভালো লেগেছে ছেলেটি তার পরিবার নিয়ে তার মেয়েকে দেখতে আসে। তার মামাকে ঘটক পাঠিয়ে বলে রেখেছিল আগে থেকে যে তাদের মেয়েকে দেখতে আসবে। মেয়েটির মামা মামি চালাকি করে মেয়েটিকে লুকিয়ে রেখে মেয়েটির মামাতো বোনকে ছেলেপক্ষের সামনে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়ে যায়।

ছেলেটি যখন তাকে দেখতে না পেয়ে তার মামাতো বোনকে দেখতে পায় তখন সে চিৎকার করে বলে ওঠে এই মেয়েকে তো বিয়ে করার জন্য আমি আসিনি। আমি এসেছি আরেকটা মেয়েকে বিয়ে করার জন্য। পরে এসব নিয়ে ঝামেলা হয়ে ছেলে পক্ষ চলে যায় বাড়ি থেকে। আর এসব ঘটনা ঘটার পর তার মামা-মামী খুবই রেগে যায় মেয়েটির উপর। তারপর তারা মেয়েটিকে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অনেক চেষ্টা করে। তাতেও সফল না হওয়ায় তারা লুকিয়ে লুকিয়ে ঠিক করে মেয়েটিকে মেরে ফেলবে। কারণ মেয়েটির জন্য তাদের মেয়ের বিয়ে হচ্ছে না। পরে বিভিন্নভাবে মামা মামি মেয়েটিকে মারতে চায় কিন্তু মেয়েটি তাদেরকে ধরে ফেলে।

মামা মামি তাকে মারতে চাই যেন ও তাদেরকে ক্ষমা করে দেয় এবং তাদের সাথে একই সাথে থাকে । একদিন তার মামাতো বোন খুব অসুস্থ হয়ে যায় আর মেয়েটি তার মামাতো বোনকে খুবই আদর যত্ন সেবা যত্ন করে ঠিক করে তোলে। আর এসব দেখে মামা মামীর মনে মেয়েটির জন্য দয়া মায়া জাগে। এরপর তার মামা মামি ওই ছেলেটার সাথে মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার কথা ঠিক করে এবং মেয়েটির সাথে ছেলেটির বিয়ে দেয়। ছেলেটির সাথে বিয়ে হওয়ার পর মেয়েটির জীবনে সুখ ফিরে আসে। মা-বাবা হারা মেয় এতদিন মামা মামির ঘরে কষ্ট করে এখন খুবই ভালো একটা জীবনসঙ্গী পেয়েছে যে তাকে সুখী রাখতে পারবে। এই ছিল আমার আজকের গল্প। আশা করি আপনাদের কাছে আমার আজকের এই গল্প ভালো লাগবে।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীজেনারেল
ফটোগ্রাফার@fasoniya
ডিভাইসVivo Y15s
লোকেশনবাংলাদেশ


আমার পরিচয়

1664774022741.jpg

আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।


1 (1).png

IMG-20221013-WA0015.jpg

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 11 months ago 

চমৎকার একটি গল্প আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে খুবই রহস্যকর মনে হল পাত্র যখন বলে বসলো এই মেয়েকে বিয়ে করার জন্য আমি পাথরে দেখতে আসিনি এটা কিন্তু একটি ভালো লাগার মত বিষয়। হয়তো এ রহস্যটা অনেকের মনে থাকবে দীর্ঘদিন।

 10 months ago 

খুবই ভালো লাগলো ভাই আপনি আমার গল্পটি পড়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে কমেন্ট করার জন্য।

 11 months ago 

পোস্ট টি পড়ে প্রথমে খারাপ লাগলো বাবা, মা হারা মেয়ের উপর তার মামা,মামীও মামাতো বোনের অত্যাচারের ঘটনা পড়ে।তারপর বাজার করতে যাওয়া,এবংঅন্যমনস্ক হয়ে ছেলেটির গাড়ির সামনে যাওয়াও ছেলেটির পছন্দ। মেয়েটিকে লুকিয়ে রেখে মামাতো বোনকে দেখানোএবং অবশেষে মেয়েটির সাথেই ছেলেটির বিয়েও সুখে শান্তিতে থাকা সব মিলে খুব সুন্দর গল্প হয়েছে।

 10 months ago 

আপনি আমার গল্পই পড়েছেন দেখে খুবই খুশি হলাম আপু ।সব গল্পেরই শেষটা খুব সুন্দর হয়।

 11 months ago 

যাদের ছোটকাল থেকে মা বাবা না থাকে তারা বুঝে পৃথিবীর কত কষ্টের। আপনার গল্পটি পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। মেয়েটির মা বাবা না থাকার কারণে মামা মামির কাছে ছিলেন। তারা সবসময় মেয়েটির উপর অত্যাচার করতেন এবং তাকে দিয়ে কাজ করাতেন। ভাগ্য কমে আসার সময় বাজার থেকে একটি ছেলে দেখেছে এবং মেয়েটিকে সেই পছন্দ করেছে। এবং লাস্ট পর্যন্ত ওই ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে মেয়েটির কপালে সুখ আসলো। আসলে মেয়েটি বিয়ের পর সুখে আসে শুনে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। গল্পটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব সুন্দর করে উপস্থাপনা করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

হ্যাঁ আপু ছেলেটা সাথে বিয়ে হয়ে মেয়েটার জীবনটা বদলে গেল। সবার জীবনেই কারো না কারো হাত ধরে এভাবে বদল আসে। ধন্যবাদ আপনাকে কমেন্ট করার জন্য।

 11 months ago 

আপনার পাত্রী দেখার গল্পটি পড়ে সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। ছোটকালের যাদের মা বাবা মারা যায় তারা বুঝে মা-বাবা কি জিনিস। আপন মামা এবং মামীর কাছে সেই অবহেলার পাত্রী হলো। তাকে দিয়ে তার মামী সম্পূর্ণ কাজ করাই এবং তাকে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া দেয় না। তবে ভাগ্য ভালো বাজার করে আসার সময় একটি ছেলে তাকে দেখে পছন্দ করেছে। যদিও প্রথমে তাকে না দেখিয়ে তার মামাতো বোনকে দেখিয়েছে। পরবর্তীতে সেই ছেলেটির কাছে বিয়ে দেওয়ার কারণে সেই এখন সুখেই আছে। এ ধরনের গল্প গুলো পড়তে অনেক খারাপ লাগে। যাইহোক গল্পটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 10 months ago 

আপনি একদমই ঠিক বলেছেন ভাইয়া যারা মা-বাবা হারা ছোটবেলায় তারাই বুঝে পৃথিবীতে বেঁচে থাকা কত কঠিন। আপনি আমার পুরো গল্পটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59934.86
ETH 2666.82
USDT 1.00
SBD 2.45