আমার জীবনের একটি বিশেষ দিন(২২ শে অক্টোবর ২০২২ শনিবার)।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

হ্যালো সবাইকে

কেমন আছেন সবাই । আশা করি ভালো আছেন । আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে । আজকে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি । আজকে আমার জীবনের ঘটে যাওয়া একটি বিশেষ দিনের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আমার জীবনের অসাধারণ একটা দিন ছিল সেই দিনটি। আমার বিয়ের দিনের এক্সপিরিয়েন্স এবং বিয়ের দিনের কিছু মুহূর্ত এবং ফটোগ্রাফি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

2022-11-07_20.41.51.jpg

দিনটি ছিল ২২ শে অক্টোবর ২০২২ শনিবার ।আমার বিয়ের দিন ছিল । এতদিন আমার বিয়ের দিনের মুহূর্তগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারিনি কারন নতুন একটি ফ্যামিলিতে গিয়েছি অনেক ব্যস্ত থাকি অনেক ধরনের কাজ করতে হয় তাই।খুবই বিশেষ একটি দিন আমার জীবনের। অদ্ভুত অনুভূতির এই দিনটি কখনো ভুলতে পারবো না। তবে অন্য মানুষের বিয়ের দিনের থেকে আমার বিয়ের দিন আমার বিয়ের অনুভূতিগুলো ছিল খুবই আলাদা। আর অনুভূতিগুলো আজকে আপনি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। বিয়ের দিনটি সব মেয়ের কাছে খুবই স্পেশাল হয়ে থাকে। আমার বিয়ের দিনটি যেরকমই কাটুক আমার বিয়ের দিনটা আমার কাছে অনেক অনেক স্পেশাল।

received_851850905823654.jpeg

received_444202047821315.jpeg

দিনটি শুরু হলে ব্যস্ততার মাঝে কাজের মাঝে ।এরপর শুরু হল সাজগোজ নিয়ে । জীবনে প্রথমবার বউ সাজতে যাচ্ছি খুবই আনন্দ হচ্ছিল ।পার্লারে চলে গিয়েছে সাজার জন্য । সেখানে তারা আমাকে সাজানোর জন্য রেডি করছিলাম। আর একই দিনে অনেক কিছুই প্রথম হয়ে গেল জীবনে। ভ্রু প্লাক টা জীবনে প্রথমবার করেছিলাম তখন। করতে গিয়ে কি যে ভয় পেয়েছিলাম। আমি ভ্রু প্লাক করার কোন ইচ্ছে আমার আগেও ছিল না বিয়ের সময়ও ছিল না এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না আশা করি। কিন্তু পার্লার লোকজনরা ছাড়তে চাইছিল না । বলল ভ্রু প্লাক মেকআপ করা যাবে না। তাই বাধ্য হয়ে করতে হলো। আমি এই প্রথমে একটু চিৎকার করেছিলাম ভয়ে যে আমার এগুলা উঠিয়ে দেবে কি করবে না করবে অনেক টেনশনেও ছিলাম । আমাকে সুন্দর করে সাজাবে না আমাকে ভূত করে দেবে।

received_1435690703620070.jpeg

received_877995183554812.jpeg

পার্লারে বেশ অনেকটা সময় তারা নিয়ে সাজিয়েছে। আমার কাছে তাদের আচার-আচরণ আমার খুবই ভালো লেগেছে । তারা খুবই সুন্দর করে আমার সাথে কথাবার্তা বলেছে। খুবই সুন্দর কেটেছে পার্লারের সময়টা। পার্লারে আবার আমার একটা ননদ এসেছিলাম আমার সাথে দেখা করতে । তার সাথে দেখা করলাম অনেক মজা করলাম। আমি রেডি হওয়ার পর পার্লারের মানুষেরা আমার কিছু ছবি তুলে রেখেছে তাদের কাজের জন্য। এরপর আমি রেডি হয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছি । রেডি হয়ে বাড়ির দিকে আস্তে আস্তে দুপুর হয়ে গিয়েছে।

IMG_20221107_205318.jpg

received_2358776107596800.jpeg

রেডি হয়ে গাড়িতে আসার সময় শুধু ভয় লাগছিল । মনে মনে যতটা গাড়ি যাচ্ছিল ছিল ততটা আমি ভয় পাচ্ছিলাম। অনেক সময় গাড়িতে থাকার পরও শেষে বাড়িতে এসে পৌঁছেছি। আজকে তো আমি বউ আমি গাড়ি থেকে নামার পর সবাই বির করল আমাকে দেখতে আমি তারপর ঘর গিয়েছি। ঘরে গিয়ে কিছুক্ষণ বসলাম আত্মীয়-স্বজন সাথে কথা বললাম দেখা করলাম। ফটোগ্রাফারের জন্য অপেক্ষা করলাম এবং ফটোগ্রাফার কে কল দিলাম। কিছুক্ষণ পর ফটোগ্রাফার আসলো তারপর ফটোগ্রাফি করা শুরু করলাম।

2022-11-07_20.37.37.jpg

সত্যি বলতে ফটোগ্রাফিটা বেশ ভালো হয়নি বিয়ের দিনে । কারণ আমার মন অনেক খারাপ ছিল ।অনেক খারাপ ছিল কারণ নতুন জায়গায় যাব নিজের পরিবারকে ছেড়ে অন্য একটা পরিবারে যাব সেটা ভেবে আমার মন অনেক খারাপ ছিল। যাইহোক ফটোগ্রাফার এসে আমার ফটোগ্রাফি শুরু করতে লাগলো। আমার মন ভালো ছিল না ফটোগ্রাফারের সাথে ছিল সে আমার মন ভালো করার জন্য বিভিন্ন কথা বলছিল । কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি আমার মনটা সেই খারাপ খারাপই রয়ে গেল। ফটোগ্রাফারের ও মনটা খারাপ হয়ে গেল কারণ সে ভালোভাবে ফটোগ্রাফি করতে পারছিল না এটা তার পেশা। যাইহোক আমি বললাম কোন সমস্যা নেই যতটা ফটোগ্রাফি হয়েছে তাতেই অনেক হবে। যেখানে আমি মন থেকে ফটোগ্রাফি করতে পারছি না বা ফটোগ্রাফির জন্য রেডি নয় সেখানে আর তো কিছু করার নেই।

received_674242990720371.jpeg

ফটোগ্রাফি করার একটা সময় আমার শ্বশুর বাড়ি থেকে লোকজন চলে এসেছিল। তাদের সাথে অনেক ফটোগ্রাফি করেছি। তারপর আমার ফটোগ্রাফির আসল মানুষ চলে এসেছে আমার জীবন সঙ্গী। এবার শুরু হলো তার সাথে ফটোগ্রাফি । তার সাথে ফটোগ্রাফ তো আমি দু-তিন মিনিটের বেশি করিনি । কারণ আমার এমনিতেই মন খারাপ তার ওপর খুবই লজ্জা লাগছিল তার সাথে একসাথে ফটোগ্রাফি করতে। চারপাশে বড় রা ছিল তাকে বড়দের সামনে ধরে ফটোগ্রাফি করতে আমার খুবই লজ্জা লাগছিল।

received_654167039717261.jpeg

তার সাথে কিছু ফটোগ্রাফি করেছি। আসলে আমার বিয়ের দিনের ফটোগ্রাফি টা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট ছিলাম না ফটোগ্রাফার ও সন্তুষ্ট ছিল না কারণ ফটোগ্রাফার কাজটা ঠিক করে করতে পারেনি আর আমিও ফটোগ্রাফি ঠিক করে করতে পারেনি। এটা আমারই ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু কিছু করার ছিল না কারো মন খারাপ হলে তো আর কিছু করার থাকে না। আমার সেদিন অনেক ভয় লেগেছে অনেক কষ্ট লেগেছে নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাব এটার অনেক ভয় লাগছিল।

received_939003020398049.jpeg

এরপর শ্বশুর বাড়ির সবাই খাওয়া দাওয়া করল। বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান হল বিয়ের সময় যে আচার অনুষ্ঠানগুলো হয় সেগুলো হল । তবে খুবই সিম্পলভাবে হয়েছে বিয়ের মধ্যে যে অনুষ্ঠানগুলো হয় জাঁকজমক পূর্ণভাবে সেটা হয়নি। কোন এক সময় যখন আমার কাছে অনেক অনেক টাকা থাকবে তখন কোন এক বিবাহ বার্ষিকীর দিন আবার বিয়ে করবো আমরা । আবার আগের মতো করে বিয়ের অনুষ্ঠান করব এই আশায় ভবিষ্যতে বেঁচে থাকব। আশা করি আমার এই আশা পূর্ণ হবে।

received_1295344344339207.jpeg

বিকেলের দিকে আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো। একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে আমি যখন আমার শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলাম গাড়িতে করে তখন আমার খুবই মন খারাপ হচ্ছিল বাড়ি থেকে গাড়িতে উঠতে চাইছিলাম না একদম। মানে কি বলবো আমার মাথায় কাজ করছিল না হাত-পা চলছিল না এরকম অবস্থা হয়ে গিয়েছিল । এরপর যখন আমি আমার শ্বশুরের এলাকায় ঢুকেছি তখন রাস্তাঘাট পরিচিত লাগছিল । তার একটাই কারণ তা হলো আমি স্টিমিট পোস্টের মাধ্যমে তাদের এলাকার সব ছবি দেখেছি। রাস্তাঘাটের ছবি দেখেছি এবং সব চেনা চেনা লাগছিল ।এটা খুবই মজার ব্যাপার ছিল।

received_3293762410912083.jpeg

আর এইভাবে আমার বিয়ের দিনটি শেষ হয় ।মনের মধ্যে নিজের বিয়ে নিয়ে সব মেয়েরই একটা স্বপ্ন থাকে। আমারও একইভাবেই নিজের বিয়ে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল । সে স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পারিনি। ভবিষ্যতে কাজ করে টাকা ইনকাম করে সে স্বপ্নগুলো পূরণ করব ইনশাল্লাহ । আশা করি আপনাদের সবার কাছে আমার বিয়ের মুহূর্ত গুলো জেনে ভালো লাগবে।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীবিয়ের দিনের কিছু মুহূর্ত
ফটোগ্রাফার@fasoniya
ডিভাইসVivo Y15s
লোকেশনফেনী


আমার পরিচয়

1664774022741.jpg

আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।


1 (1).png

Sort:  
 2 years ago 

সত্যি আপু আপনার পোস্ট পড়ার মাধ্যমে ভিন্ন অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলাম। আসলে বিয়ে নিয়ে একেকজনের মাঝে একেক রকনের কৌতূহল থাকে। আপনার পুরো দিন জুড়ে বিভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলো দুজনকে একসাথে দেখে। আপনাদের নতুন জীবনের পথ চলা আরো বেশি সুন্দর হোক এই দোয়া করি। আর আপনি যেন নিজের বাকি স্বপ্নগুলো পূর্ণ করতে পারেন এই প্রার্থনা করি সবসময়।

 2 years ago 

আপনাদের দুজনের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। এই পবিত্র বন্ধন সারাজীবন যেন অটুট থাকে সৃষ্টিকর্তার কাছে এই আশাবাদ ব্যক্ত করি। নিশ্চয়ই এমরান ভাইয়ের মতোন ভালো মানুষ হয় নাই। আপনি নিঃসন্দেহে একজন ভালো মানুষের সাথে জীবনের সুন্দর মুহূর্ত গুলো পার করতে পারবেন। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভালো লাগলো। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

আপু আপনার বিয়ের দিনের এক্সপেরিয়েন্স এর পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলে বিয়ের দিন মেয়েদের মনটা একটু খারাপই থাকে কারণ তারা বাবা মা ভাই বোন সবাইকে ছেড়ে চলে যাবে এটা চিন্তা করলেই মনটা খারাপ হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে আপনার মনটা খারাপ হলেও আপনাকে দেখতে কিন্তু অনেক সুন্দর লাগছে। দুজনকে খুব ভালই লাগছে। আপনাদের নতুন জীবন সুখের হোক এই কামনা করছি। আপু আপনি আপনার স্বপ্নগুলো যাতে পূরণ করতে পারেন আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।

 2 years ago 

প্রথমেই আমি চালাতে চাই আপনাদের নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা। মেয়েদের প্রতিটি মেয়ের মন খারাপ থাকে কারণ এতদিন সে যে পরিবারে থাকতো সেখান থেকে অন্য পরিবারের চলে যেতে হয়। নতুন পরিবারের সাথে আপনার পথ চলাটা আরো সুন্দর হোক সেই কামনাই করি।

 2 years ago 

আসলে বউ দেখার জন্য মানুষ এতটা উপচে পড়ে যে মনে হয় কোনো জাদুর বাক্স বউ।যাইহোক বউ সেজে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে ।তবে বাংলা ব্লগ বাসি বিয়ের দাওয়াত টা পেলে ভালো হতো।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60836.32
ETH 2449.94
USDT 1.00
SBD 2.65