পিৎজা খেতে ছুটির দিনে পিৎজা হাটে ||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
  • ২৬ভাদ্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
  • ১০সেপ্টেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৩ সফর, ১৪৪৪ হিজরি
  • শনিবার
  • শরৎকাল

আমার বাংলা ব্লগের সবাইকে ঋতুর রানী শরতের শুভেচ্ছা, শত ব্যস্ততার মাঝে আশা করছি আপনারা সবাই ভাল আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সামনে আমার নতুন একটি লেখা নিয়ে হাজির হয়েছি।সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে গতানুগতিক খাবারের বাইরে বিশেষ করে ডিনারে ভিন্ন কিছু খাওয়ার চেষ্টা করি। সে অনুযায়ী এবার পিৎজা হাটে গিয়েছিলাম পিৎজা খেতে। পিৎজা বরাবরই আমার পছন্দের একটি খাবার। চলুন বন্ধুরা কথা না বাড়িয়ে আপাদের সাথে শেয়ার করি ছুটির দিনে পিৎজা হাটে পিৎজা খাবার অভিজ্ঞতা,আশা করছি আমার লেখা আপনাদের ভালো লাগবে।

httpswww.freeimages.comphotopizza-hut-and-cutlery-1474009.jpg
লোকেশন
ছুটির সকালটা বরাবরের মতোই দেরি করে ঘুম থেকে উঠা হয় এবং দেরি করে সকালের নাস্তা খাওয়া হয়। নাস্তা খেতে খেতে আমার ওয়াইফ এর কাছ থেকে জেনে নিলাম সেদিনের দুপুরের খাবারের মেনু। কথা বলতে বলতে রাতের খাবার প্রসঙ্গে বললাম আজ বাইরে খাবো কিন্তু কি খাব তখন সিদ্ধান্ত নেইনি। দুপুরে খাবার পরে কিছুটা সময় বিশ্রাম নেয়ার পর সন্ধ্যার আগে আমরা বের হলাম। কোথায় যাব সে ধরনের কোন পরিকল্পনা ছিলনা তাই প্রথমে হাতিরঝিলের দিকে যাওয়ার জন্য রিক্সা নিলাম। হাতির-ঝিলে দুইজনে ঘণ্টা খানেক হাঁটাহাঁটি করেছিলাম। ওই দিনটা একটু গরম বেশি থাকার কারণে হাঁটাহাঁটি করতে বেশি ভালো লাগছিলো না। রাতে যেহেতু বাইরে খাবো সেজন্য আমার ওয়াইফকে জিজ্ঞাসা করলাম কি খাবে এবং কোথায় খাবে। তার উত্তর কি হবে তা আমি আগে থেকেই জানতাম, বরাবরের মতই উত্তর দিল তুমি কি খাবে? আমি বললাম চলো আজ রাতে পিৎজা খেতে যাই, আমার কথা শুনে একটু মৃদু হেসে বললো চলো। আমার আর বুঝতে বাকি রইল না তার পছন্দের খাবারের জন্য তাকে অফার করা হয়েছে ।

পিৎজা খাওয়ার জন্য সব সময় আমার পছন্দের রেস্টুরেন্ট হল পিৎজা হাট, তাই এবারও ঠিক করলাম পিৎজা হাটে গিয়ে পিৎজা খাবো। আমি বেশিরভাগ সময় পিৎজা খেয়েছি বেইলি রোডে অবস্থিত পিৎজা হাট রেস্টুরেন্টে। বেইলি রোডে যাওয়ার জন্য আমরা রামপুরা ব্রিজ থেকে রিক্সা ঠিক করলাম। প্রচণ্ড যানজট অতিক্রম করে প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর আমরা বেইলি রোডে এসে পৌঁছলাম। এই জায়গাটা আমার খুব পরিচিত, বন্ধুদের সাথে অনেকবার এখানে এসে আড্ডা দিয়েছি। ঢাকার মধ্যে খুবই ব্যস্ততম একটি রোড এটি, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর এখানে প্রচুর পরিমাণের লোক সমাগম ঘটে।

IMG_20190519_182133.jpg
লোকেশন
পিৎজা হাট বেইলি রোড এর অবস্থান হল, দ্বিতীয় তলা, গোল্ড হান্ট শপিং কমপ্লেক্স নিউ বেইলি রোড, ১০ নাটক সারণি, ঢাকা ১২১৭। এর আগে কয়েকবার আমি এখানে এসেছি কিন্তু এই প্রথম আমার সহধর্মিণী আমার সাথে এসেছে। আমরা সিঁড়িদিয়ে দোতালায় ওঠার পরে চোখে পড়ল পিৎজা হাট এর সাইনাস সম্বলিত গেট। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একজন হোস্ট দরজা খুলে দিল এবং একটি মেনু নিয়ে আমাদের দুজনের একটা টেবিলে বসতে দিল। ডিনারের সময় হওয়ার কারণে প্রচুর পরিমানের ক্রাউড ছিল সেখানে, প্রায় সবগুলো টেবিলেই কাস্টমারে পরিপুর্ণ ছিল।

IMG_20190519_183624.jpgIMG_20190519_183627.jpg

লোকেশন

যে আইটেমগুলো অর্ডার দিয়েছিলাম

ইতোমধ্যে আমরা মেনু দেখে কিছু আইটেম পছন্দ করে রেখেছি, কিছু সময় পর আমাদের টেবিলের অর্ডার নেওয়ার জন্য একজন ওয়েটার আসলেন। আমরা অর্ডার দিয়েছিলামঃ

  • লেমন আইস টি
  • গ্রীন অ্যাপেল মোহিত
  • গার্লিক ব্রেড উইথ স্পাইসি সুপ্রিম
  • পাস্তা মিন্ট সালাদ
  • ট্রপিক্যাল চিকেন পিৎজা

ওইটার আমাদের অর্ডার নেয়ার সময় বলেছিল আগে ড্রিংস গুলো, তারপর স্টাটার হিসেবে সালাদ এবং গার্লিক ব্রেড স্পাইসি সুপ্রিম, সবশেষে মেইন আইটেম হিসাবে পিৎজা সার্ভ করবে। কিন্তু আমরা তাকে বলেছিলাম ড্রিংস গুলো প্রথমে দিয়ে বাকি খাবার গুলো পিৎজা হলে একসাথে দেয়ার জন্য। আমাদের ওইটার সে অনুযায়ী প্রথমে ড্রিঙ্ক দিয়েছিল। আমি আগেই বলেছি লেমন আইস টি আমার খুব পছন্দের একটি ড্রিঙ্ক, আমি পিৎজা হাটে আসলেই এটা খাওয়ার চেষ্টা করি। আমার ওয়াইফের ড্রিংকসে আপেল ফ্লেভার এর সাথে পুদিনা পাতার মিশ্রন যা তার কাছে নাকি বেশ ভালোই লেগেছে। ড্রিংস পান করতে করতে আমরা রেস্টুরেন্টের পরিবেশটা দেখছিলাম। ওই সময়টায় প্রচুর পরিমানের ভিড় ছিল, রেস্টুরেন্টের ডেকোরেশন আমাদের কাছে বেশ চমৎকার লেগেছে।

IMG_20190519_183834.jpg
লোকেশন
যাইহোক গল্প করতে করতে প্রায় ২০ মিনিট পর আমাদের খাবার গুলো একসাথে আমাদের টেবিলের সার্ভ করা হল। এরপর আমরা খাওয়া শুরু করলাম, প্রথমে গার্লিক ব্রেড স্পাইসি সুপ্রিম দিয়ে শুরু করলাম। এটা ফ্রেন্স কাট ব্রেড এর উপর মোজোরোলা চিজ এর সাথে কাঁচা মরিচ এবং পিয়াজ কুচি ছিল, যা চিলি সস দিয়ে দারুণ স্বাদ লেগেছে। পাস্তা মিন্ট সালাদ আমার কাছে বরাবরের মতোই পছন্দের, এটাতে রয়েছে ম্যাকারনি পাস্তার সাথে আনারস, কালো জলপাই, ক্যাপসিকাম এবং পুদিনা পাতার কুচি মিক্স করা। লেটুস পাতা দিয়ে আমাদের পরিবেশন করেছে ,আমাদের দুজনের কাছেই এর স্বাদ অসাধারণ লেগেছে। এরপর আমরা খাওয়া শুরু করলাম আমাদের পছন্দের প্যান পিৎজা ট্রপিক্যাল চিকেন। যেখানে পিৎজার টপিং হিসেবে রয়েছে মোজোরোলা চিজ এর সাথে ঝাল মুরগির মাংস, কাঁচা মরিচ, আনারস, ক্যাপসিকাম। এটি আমার পছন্দের একটি পিৎজা এর স্বাদ ও গন্ধ অতুলনীয় যা আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না। এটি ছিল অনেক চিজি এবং ঝাল মিষ্টি'র চমৎকার সংমিশ্রণ এক কথায় অসাধারণ। আমরা দুজনই সব খাবারগুলো তৃপ্তি সহকারে পেট ভরে খেয়েছিলাম। খাবার শেষে আমরা আইসক্রিম খাওয়ার কথা ভেবেছিলাম কিন্তু পেটে খাবার মত জায়গা ছিল না। যাই হোক আমরা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে কিছু সময় অপেক্ষা করার পর ওয়েটারকে বিল কপি দিতে বললাম। আমাদের মোট বিলের পরিমান সবকিছু মিলে ১৭৮০ টাকা হয়েছিল। বিল পরিশোধ করার পর আমরা ওয়েটারকে কিছু টাকা বকশিশ হিসাবে দিয়েছিলাম। এরপর আস্তে আস্তে দুজনে আমাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।

সবকিছু মিলিয়ে চমৎকার একটি সময় পিৎজা হাটে উপভোগ করেছিলাম। আমি এবং আমার ওয়াইফ পিৎজা হাটে খাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে যদি রেটিং করি তাহলে ড্রিংস এ দিব ১০/৯, স্টাটার এ ১০/৮, পিৎজাতে ১০/১০,সার্ভিস এবং পরিবেশনে ১০/১০ । বন্ধুরা আজ এখানেই শেষ করছি, পরবর্তী সময়ে আবার আপনাদের সামনে আমার নতুন লেখা নিয়ে হাজির হব, সে পর্যন্ত সবার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে
Sort:  
 2 years ago 

প্রচণ্ড যানজট অতিক্রম করে প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর আমরা বেইলি রোডে এসে পৌঁছলাম

এই মূহুর্ত গুলোতে এই যানজট গুলো এতো বিরক্তি করে বলে বোঝাবার না। পিৎজার পাশাপাশি অন্য খাবারের বাহার ছিল দেখছি ভাই। আপনার রেটিং দেখেই বোঝা যাচ্ছে খাবারগুলো বেশ সুস্বাদু ছিল এবং মান ভালো ছিল।

 2 years ago 

জি ভাই খাবার গুলো অনেক মজা ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59404.52
ETH 2610.92
USDT 1.00
SBD 2.41