চোখে মেঘ জমে,তবু বৃষ্টি আসেনা! (১০% বেনিফিশিয়ারি লাজুক খ্যাকের জন্য)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

ছোটবেলার সেই চাওয়াটাকে ইদানীং মনে হয় সবচেয়ে ভুল চাওয়াগুলোর মধ্যে অন্যতম।যখন বয়স ছিল ৪/৫/৬।বড়দের অনেক কাজ দেখে ভাবতাম আমি যে কবে বড় হবো!মাঝে মাঝে রাতে ঘুম আসার আগে আম্মুকে এমনও বলতাম,দেখবা কাল সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমি ইয়া বড় হয়ে গেছি।সেসময় আমার আর দশটা চাওয়াগুলোর থেকে বড় হতে চাওয়াটাই ছিল শীর্ষ স্থানে।


IMG20211227151344.jpg
Location
দিন গেছে,মাস গেছে এভাবে একটা যুগই কেটে গেছে।আলহামদুলিল্লাহ,ছোট বেলার সেই চাওয়া বলতে গেলে পূরনই হয়ে গেছে।এখন মনে হচ্ছে,সবচেয়ে ভুল চাওয়া ছিল এটিই।যদিও আমি না চাইলেও প্রকৃতির নিয়মেই আমায় এমনিতেও বেড়ে উঠতেই হতো,তবে নিজে থেকে চাওয়া খানিকটা আগ্রহের সাথে নিজের গলা নিজেই কেটে ফেলার মতো হয়েছে।
তখন তো বুঝিনি জীবন কি!হেসে খেলে লাফালাফি করে জীবন যেতো তখন।তাই ভাবতাম,হয়তো বড়দের জীবনও তাই।কিন্তু কে জানতো,জীবন এতো নিষ্ঠুর!
জানিনা,জীবন আসলেও নিষ্ঠুর কিনা।কিন্তু আমার কাছে জীবন পুরোপুরিভাবেই নিষ্ঠুর।ছোটবেলায় কখনো বুঝিনি,দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়াটা কি।যেহেতু ঠেকে যাওয়াই বুঝিনি,তো সেখান থেকে বেরিয়ে আসার কৌশল জানা তো দূরের কথা।আর এ সময় এসে,একটা মুহুর্ত যেন পিঠ এবং দেয়াল পরস্পরকে বিকর্ষণ করছে না।যতই দেয়াল থেকে দূরে আসার চেষ্টা করছি দেয়াল যেন ততই কাছে টেনে নিচ্ছে।
Snapchat-260700979.jpg
Location

সামাজিক রীতিনীতি,পরিবারের চাহিদা,একটা ভালো পজিশন এই অদৃশ্য চাপগুলোকে অতিক্রম করে ছোটবেলার মতো নিজের মনের খাম-খেয়ালি গুলোকে একটু ডানা মেলে উড়তে দেওয়ার কথা ভাবাটাই এখন যেন পাপের বিষয়।মস্তিষ্কটাকে একটুও অন্যদিকে নিতে পারিনা।কেউ হঠাৎ এসে বলে,এই যে অকর্মাটা কাজ ছেড়ে কি করছে দেখো!বলি,এমনে করলে কি চলবে?সময় তো বসে নেই,দুনিয়া থেমে নেই।সবাই তো এগিয়ে গেলো।
ব্যাস,যন্ত্র আবার চালু।পুষ্টিদায়ক একটা রুটিন গুলে খায়িয়ে ছেড়ে দিলো যন্ত্রটাকে।যন্ত্রকে এখন ঠিক ওই পুষ্টিদায়ক রুটিন অনুযায়ীই কাজ করতে হবে।একটু হের-ফের হলেই সেই অদৃশ্য চাপগুলো এসে আবার স্ক্রু টাইট দিয়ে চলে যাবে।
যন্ত্রটার একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে।ভেতরে বোধয় চাপ সহ্য করার কোনো একটা সার্কিট নষ্ট হয়ে গেছে।থেকে থেকেই অতিরিক্ত চাপে পাগলের মতো নিজের মাথার চুল নিজে টানে।এদিক থেকে ওদিক যায়,ওদিক থেকে এদিক আসে।যন্ত্র তো,মালিকদেরকে মুখ ফুটে কিচ্ছু বলতে পারেনা।
মালিকদের অনেক আশা যন্ত্রটাকে নিয়ে।বেশিরভাগ মালিকই আশা পূরনের জন্য হয়তো যন্ত্রের যত্ন নেয়।যুত সামান্য কিছু মালিকই আছে যারা যন্ত্রের ভেতরে থাকা সেই সার্কিটটাকে ভালো রাখার জন্য যত্ন নেয়।
যন্ত্রগুলোর সার্কিট নানাভাবে নষ্ট হয়েছে এবং হচ্ছে।কারো হয়তো মালিকদের আশা পূরন করতে গিয়ে,কারো আবার নষ্ট হয়েছে মালিকের অত্যাধিক আদরে।অত্যধিক আদরে নষ্ট হওয়া সার্কিটওয়ালা যন্ত্রের সংখ্যা একদমই কম।মালিককে ভালো রাখতে গিয়ে নিজের সার্কিট অকেজো করে ফেলেছে এই ধরনের যন্ত্র অলিত-গলিতে বিরাজমান।
IMG20220318112405.jpg
Location

যন্ত্র যদি মালিককে খুশি করে তাহলেই যন্ত্র ভালো আর নাহলে যন্ত্র ব্যাটা কোনো কাজেরই না।যন্ত্রটাকে পয়দা করাই ভুল হয়েছে।অথচ,মালিককে ভালো রাখতে গিয়ে যন্ত্রটাকে যে কি পরিমাণ প্যারা নিতে হয়,নিজের সাথে নিজের যুদ্ধ করতে হয় সেদিকে মালিকরা খেয়ালই রাখেনা।যন্ত্রটাও আবার সেটাকে কষ্ট না ভেবে মালিকের মুখে একটু হাসি আর প্রশংসা শুনেই সব প্যারা ভুলে যায়।যন্ত্র বুঝতে শিখেছে,যতদিন বাচতে হবে ততদিন এভাবেই বাচতে হবে।

গোপনে গোপনে যন্ত্র ভীষনভাবে চায় সেই আগের মতো একটা জীবন পেতে।যেই জীবনে সেই অদৃশ্য চাপগুলো নেই।মনের খামখেয়ালি গুলোকে উড়ে নিয়ে বেড়াতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

Cc.@farhantanvir.
Shot on. Oppo f19 pro
Date.11/06/22

Sort:  
 2 years ago 

ভাই দারুন লিখেছেন আপনার লেখার কৌশলটা আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে ভাই। তবে আমার মনে হয় আপনি একটু একচেটিয়া ভাবেই চিন্তা ভাবনা করে গেছেন, সবাই কিন্তু একরকম নয় সব যন্ত্র একরকম নয় বা সব মালিক একরকম নয়, ভালো-মন্দ নিয়ে আসলে দুনিয়ায়। বেশিরভাগ মালিক তার যন্ত্রের ভবিষ্যৎ চিন্তা ভাবনা করেই হয়তো চাপ সৃষ্টি করে, হ্যা এটা বলতে পারেন কিছু কিছু মালিক আছে তার নিজের স্বার্থের কথা ভেবে যন্ত্রকে অনেক চাপ দেয়। বেশ ভালো লেগেছে ভাই সব মিলিয়ে অসাধারণ ছিল অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ওই যে বললাম না,মস্তিষ্ক অন্যদিকে ঘুরানোর জো নেই।
দশের দিক তাকাতে গেলেই এদিক থেকে এসে বলে,অকর্মাকে দিয়ে কিচ্ছু হবেনা,হ্যানত্যান।

ভালোবাসা নিয়েন ভাই💙💜

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.031
BTC 60666.02
ETH 2636.73
USDT 1.00
SBD 2.60