পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখকর সময় বোধয় এটাই(১০% বেনিফিশিয়ারি লাজুক খ্যাকের জন্য)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম,আশা করি সবাই কুশল আছেন।আলহামদুলিল্লাহ,আমিও ভালো আছি।

আচ্ছা নিয়ম এমন কেন?যতই বড় হচ্ছি,বাবা মায়ের সাথে যেন দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে।আমি সম্পর্ক খারাপ হওয়া বা বিচ্ছেদের কথা বলছিনা,বলতে চাচ্ছি ছোট বেলায় কাটানো সময়গুলোর সাথে এখনকার পার্থক্য। ছোট বেলায় বাবার হাত ধরে সক্কাল সক্কাল বাজারে যেতাম,বাজার করার আগে হোটেলে পরাটা মিষ্টি খেয়ে বাজার করতে যেতাম।বাজার শেষে রিক্সা নিয়ে বাসায় ফিরতাম।মাঝে মাঝে ফুফুর সাথে রাস্তায় দেখা হতো,ফুফুও এটা সেটা কিনে দিতো।
আম্মুর হাত ধরে বিকেলের দিকে মার্কেটে যেতাম।দোকানে একটু দেরি হলেই কান্না জুড়ে দিতাম আর আমায় থামানোর জন্য আম্মু চকলেট বা খেলনা কিনে দিতো।ব্যাস,আমি চুপ।
তারপর একটু বড় হলাম।একটু একটু বুঝতে শিখছি।বাবার সাথে বাজারে যেতাম ঠিকই কিন্তু আগের মতো হোটেলে বসাটা আর সেভাবে হতোনা।তখন বাবা একটু একটু করে আমায় বাজার কিভাবে করতে হয় সেগুলো শেখাইতো।
ওদিকে আম্মুর সাথেও মার্কেটে ঠিকই যেতাম কিন্তু দেরি হলে কান্না আর করতাম না।
এভাবে চলতে চলতে আজ ১৯ বছরে এসেছি।বাবার সাথে বাজারেও যাওয়া হয়না,হোটেলের দিকেও যাওয়া হয়না।আর আম্মুর সাথে মার্কেটে যাওয়া সে তো হয়ই না।নিজের যখন যা প্রয়োজন,নিজে যাচ্ছি কিনতেছি।বাজারের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই,যখন যা লাগে আনতেছি,বাবার হাত আর ধরা হয়না।
আচ্ছা,নিয়মগুলো যদি এমন না হয়ে এমন হতো যে যতদিন বাচবো ততদিন বাবার নখ ধরে বাজারে যাবো।ততদিন মায়ের সাথে মার্কেটে গিয়ে এটা সেটা কিনবো!

দিনকেদিন যেন,দুরত্ব বেড়েই চলেছে।অনেকক্ষেত্রে তো এমন হয় যে,বাবা-মায়ের সাথে দুদন্ড বসে কথাও বলতে পারেনা অনেকে।অথচ,বাবার নখ ধরে বাজারে গিয়েছি সেই ছোটবেলায়,মায়ের হাত ধরে মার্কেটে।
IMG20220429165546.jpg

ইদের ছুটিতে বাসায় গিয়ে যত সময় কাটিয়েছি তার ভেতর এই সময়টুকুই ছিল আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান আর আবেগময়।মোটরসাইকেলে করে বাবার পিছে বসে গিয়েছিলাম দাদিবাড়িতে।যেতে যেতে কতই না কথা বাবার।এখানে ওর বাড়ি,ওখানে ওর বাড়ি।ইনি আমার এই হন,উনি আমার এই হন।এই জমি আমাদের,ওই জমি তাদের।এটা করলে এটা হবে,ওটা করলে এটা হবে।এভাবে বাবার সাথে সময় কাটাইনি অনেক বছর হলো।ক্লাস ফাইভ পাশ করার পর থেকেই যেন একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত।সেদিনের এই মুহুর্তটুকু যে কতটা স্বস্তিদায়ক ছিল আমার জন্য,তা বলে বুঝানোর মতো না।এই যে,মেসে বসে লিখছি এগুলো।বাবার কথা যে কতটা মনে পরছে আমিই জানি।
IMG20220429170817.jpg

IMG20220429165534.jpg

IMG20220429165538_BURST000_COVER.jpg

ওহ,আরেকটা কথা।ইদের জন্য বাবাকে যে শার্ট গিফট করা নিয়ে পোস্ট লিখেছিলাম অনেকেই বলেছিলেন শার্টটি পরিহিত অবস্থায় যেন বাবাকে দেখাই।উপরের ছবিতে বাবার পরা শার্টটিই আমি দিয়েছিলাম।
দোয়া রাখবেন,বাবা-মায়ের মুখে যেন হাসি ফোটাতে পারি।

cc.@farhantanvir
Shot on. Oppo f19 pro
Location
Date.08/05/22

Sort:  
 2 years ago 

খুব সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া, আপনার লেখাগুলো যেন আমি নিজের মধ্যেই খুঁজে পাচ্ছি। আগের সেই দিনগুলো এখন আর ফিরে পাওয়া যাবে না। পিতা-মাতার কাছে সন্তানরা যখন ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে তখন তাদের সাথে সন্তানেরও ধীরে ধীরে দূরত্ব বাড়তে থাকে। এটাই বাস্তবতা, আর এই বাস্তবতাকে আমরা সকলেই মেনে নিচ্ছি। তবে খুব আফসোস লাগে ছোটবেলায় বাবা মার সাথে কাটানো দিন গুলোর কথা মনে পড়লে। যাইহোক ভাইয়া, আপনার উপহার দেয়া শার্টটি আপনার বাবা পড়েছে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। বাবা ও ছেলের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

নিয়ম মেনেই চলা যাক তবে বিচ্ছেদ যেনো কখনো না হয়।
বেচে থাকুক সকল মা-বাবা🌼

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 68797.43
ETH 3730.18
USDT 1.00
SBD 3.76