ফোন ও কিছু জানা কথা(১০% বেনিফিশিয়ারি লাজুক খ্যাকের জন্য)
গতকাল রাতে এই বিষয়টা নিয়ে বেশ অনেকক্ষণ সময় ভেবেছিলাম।তবে হাজার ভেবেও কোনো কূল-কিনারা পাইনি।
দিন দিন আমরা কি যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছিনা?হয়তো বলবেন,এটা আর এমন কি!এটা তো জানা কথা।হ্যাঁ,অবশ্যই জানা কথা।
কিন্তু,বিষয়টা এতোদিন আমায় সেভাবে ভাবায়নি।চোখের সামনে কিছু খারাপ প্রভাব দেখার পর বিষয়টা আমার ভেতর একটু দাগ কেটেছে।যান্ত্রিক বলতে তো সব ধরনের যন্ত্রই বুঝায়,তবে আমি মূলত ফোনটা নিয়েই একটু বলতে চাই।
Location
বিছানা থেকে ওঠেননি তখন থেকে শুরু করে রাতে চোখ বন্ধ করার ১ সেকেন্ড আগে পর্যন্ত ফোনটা আমাদের চোখের সামনে থাকে।
ফোনের এলার্মের শব্দে ঘুম ভেঙে গেছে,চোখ ভালোভাবে খোলেইনি,তাতেই ফোন অন করে যাবতীয় নোটিফিকেশন চেক করতে হবে।একে-ওকে রিপ্লাই দিতে হবে।ফ্রেশ হয়ে এসে যদি খবর শুনতে মন চায় তাও সেই ফোনেই।
আচ্ছা,এর ব্যবহার নিয়ে কি বলবো।সব জানেনই।খোকা বুঝানো কথা বলে লাভ নেই।
একটু আগে বলেছি কিছু খারাপ প্রভাবের কথা।আমি সেগুলোই বলি,শুনুন।
Location
এই যে সকাল থেকে সন্ধ্যা একটা জিনিস নিয়ে সবসময় পরে থাকি আমরা,এটা কি খুব ভালো কিছু বয়ে আনছে?হ্যাঁ,উপকারে তো আসছে বলতেই পারেন।বাট ব্রাদার,আমাদের মস্তিষ্ক যে এটার সাথে নিজেকে সেট করে ফেলছে তার কি হবে? আমাদের ভেতর অনেকেই আছেন,যারা এই ফোন ছাড়া ৫ টা মিনিটও বসে থাকতে পারেন না। বর্তমানে এই ফোনের কল্যানেই প্রায় সবকিছুই ভার্চুয়ালি হচ্ছে।তো এইজন্যই কিন্তু আমাদের চিন্তা-ধারাতেও পরিবর্তন আসছে এবং স্বাভাবিক যে কাজগুলো আমরা করি তাতেও এর প্রভাবটা পরছে।একটু সহজভাবে বলি-
এই কাহিনী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখছি এবং আমার নিজের ক্ষেত্রেও অনেক হয়েছে তাই এটাই পারফেক্ট হবে।এখন তো সিমে কল করে কথা বলার চেয়ে মেসেজিংটাই বেশি চলছে।
Location
আপনি এপারে থেকে ওপারে থাকা লোকটাকে একটা ম্যাসেজ দিলেন।কোনো কারণে লোকটা রিপ্লাই করতে পারেনি যদিও ম্যাসেজ ডেলিভার্ড হয়েছিল।এখন তার উপর আপনার রাগ চলে এসেছে।ম্যাসেজ ডেলিভার্ড হলো অথচ তুই আমার ম্যাসেজের রিপ্লাই দিসনি,ঠিকই তো অনলাইন ছিলি।
বাট আমরা খুব কম সংখ্যক লোকই আছি যারা এটা বুঝি যে ওপারের লোকটা হয়তো ব্যস্ত ছিল।
পরবর্তীতে হয় কি,যখন সামনাসামনি দেখা হয় তখন দুজনের মাঝে সর্বপ্রথম এই বিষয়টা নিয়েই তর্কাতর্কি হয় যে,কেন রিপ্লাই লেট হলো বা কেন রিপ্লাই করলোই না।
হ্যাঁ ভাই,এই বিষয়টা শুনতে বাচ্চা টাইপের মনে হলেও এটা কিন্তু আমাদের জন্য মারাত্মক লেভেলের ক্ষতি সাধন করতে পারে।আর হয়তোবা, এর পরিনতিও ভালোভাবেই জানেন।
যেহেতু,এখন জামানা এভাবেই চলছে সেজন্য আপনার ডোপামিনও এর সাথে নিজেকে সেভাবেই সেট করে নিয়েছে।আপনার চিন্তা-ধারাতেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অত্যন্ত ভালোভাবে গেথে গেছে।
রাস্তায় বের হোন,আমার পোস্টে এতো লাইক-এতো কমেন্ট,এতোগুলো ফলোয়ার্স।শুধু এগুলোই।এগুলো নিয়ে কথা বলতে বলতেই দেখা যায় নিজেদের মাঝে ঝামেলা পাকায় ফেলে।
এমন অনেক কথাই আছে যেগুলো বলতে গেলে শেষ হবেনা।
Location
আমার কথা হচ্ছে,আমরা তো মানুষ।আর এই যন্ত্রগুলো মানুষই বানিয়েছে।তো এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা তো আমাদেরই।উলটে এগুলোই আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে।দিন দিন এগুলো যত উন্নত হচ্ছে তত ভালোভাবে আমাদের মস্তিষ্কে জায়গা দখল করছে।মানুষের আচরণে অস্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে।মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকছে সবসময়।
রাত দেয়া হয়েছে ঘুমানোর জন্য।সে রাত জেগে থেকে আমরা ঘুমাই দিনে।এটা মোটেও আমাদের শরীরের জন্য কল্যাণকর নয়।বায়োলজিকাল ডিমান্ড বলে একটা কথা আছে।আপনার শরীরের দৈনিক যেই চাহিদাটা আছে সেটা যদি পূরণ না হয় তবে তা আপনার জন্য অনেক বড় সমস্যার হুমকিস্বরূপ।
যা যা বলেছি এতোক্ষন সবই জানেন সবাই।আসলে ভাই নিয়মটাই এমন হয়ে গেছে আমরা চাইলেও এইসব থেকে দূরে থাকতে পারিনা।আমাদেরকে আষ্টেপৃষ্টে ধরে রেখেছে এগুলো।অনেকসময় তো এগুলো ছাড়া এক কদম এগোনোও মুশকিল হয়ে পড়ে।
চেষ্টা করতে হবে ভাই।ধীরে ধীরে এগুলো থেকে নিজেদের দূরে রাখতে হবে।নিজের মস্তিষ্ককে একটু সময় দিন।এই ফোন টোন যা আছে এগুলোকে একটু সাইডে রেখে মস্তিষ্ককে একটু রেস্ট দিন।অন্য কাজে ব্যবহার করুন।হ্যাঁ, আমি নিজেও ব্যাপক আসক্ত ছিলাম তবে এখন অনেকটাই কামব্যাক করেছি এগুলো থেকে।দেখেন,এগুলো সময় নষ্ট করা ছাড়া আপনার আর কিছুই করছে না।
Location
একটা কথা আছে-হয়ার সামথিং ইজ ফ্রি ইউ আর দ্যা প্রোডাক্ট।এখানে আপনি সব ফ্রি পাচ্ছেন,টাইম ওয়েস্ট করছেন কিন্তু এর দ্বারা অন্যদের যে কত লাভ হচ্ছে আর আপনার আমার যে কি পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তা বুঝছিনা।
সবশেষে ভাই এটুকুই বলতে চাই,নিয়ন্ত্রণ আনুন।যন্ত্রগুলোকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করুন।যতক্ষন আপনার কাজ আছে,ততক্ষনই এগুলোতে সময় দিন।এভাবে চলতে থাকলে সুস্থ মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে আসবে।এটা আমার কথা না,অনেক সাইক্রেটিস্টই এটা বলেছেন।
cc.@farhantanvir
Date.31/10/22
আপনার প্রতিটি কথা একেবারে বাস্তবসম্মত। সবকিছু বুঝার পরও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কষ্টকর। পাঁচ মিনিট মোবাইল ছাড়া থাকা সত্যিই কষ্টকর। আসলেই আমরা মোবাইলকে নিয়ন্ত্রণ না করে মোবাইলই আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করছে । আর আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। আসলে সবকিছুর একটি সীমাবদ্ধতা থাকা দরকার। খুব ভালো লিখেছেন বিষয়টি নিয়ে।
ছেড়ে থাকাও যায়না আপু,প্রতিটা কাজেই যে লাগে।যাবেন কোনদিকে!
প্রত্যেকটি কথাই ন্যায্য ও বাস্তবসম্মত।এখন যেন ডিভাইস গুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে।এগুলো ছাড়া আমাদের একমুহুর্ত ও চলে না।এদের প্রতি নির্ভরশীলতা এত টাই বেড়ে গেছে।আপনার শেষের কথাগুলো অনেক ভাল ছিল।ধন্যবাদ ভাইয়া দারুন কিছু চিন্তাভাবনা শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকেও, ভালোবাসা নিয়েন।
ঠিকই বলেছেন ভাই এভাবে চলতে থাকলে সুস্থ্য মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে আসবে। যার প্রভাব সব ক্ষেএে পড়বে। এইরকমভাবে কখনো ভেবে দেখিনি। কিন্তু কথাগুলো একেবারে বাস্তব😢।
এই কাজটা আমি করি প্রতিদিন করি।
মর্নিং সোজ দা ডে।ঘুম থেকে উঠেই নিউজফিডে খারাপ কিছু দেখলে দিনটাই মাটি।
চেষ্টা করবেন অভ্যাসটা বদলানোর।
সত্যি আমরা যেনো ফোনের ভিতর ঢুকে যাচ্ছি। বিষয় গুলা আমাদের সমাজে অনেক খারাপ দিক তৈরি করছে। ঘুম থেকে উঠে আবার ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মোবাইল ছাড়া যেনো আমাদের কিছুই হয়না। মোবাইল ফোনের সু ব্যবহার থেকে অপব্যবহার বেশি হচ্ছে আমার কাছে মনে হয়।
হ্যাঁ ভাই,ইদানীং অপব্যবহারের মাত্রাই বেড়ে গেছে।কয়দিন পর যে কি অবস্থা হবে,আল্লাহ পাক জানেন।