তোমাদেরকে ছাড়া ভালো নেই(১০% বেনিফিশিয়ারি লাজুক খ্যাকের জন্য)
আসসালামু আলাইকুম,আশা করি সবাই কুশল আছেন।আলহামদুলিল্লাহ,আমিও ভালো আছি।
গত মাসেও আমার জীবন এমন ছিলনা।আনন্দ,হাসি,দুঃখ সবই ছিল এবং সবাই ছিল।সবার সাথে হাসি খুশিতেই দিন কাটতো।তবে এখন আমি চার দেয়ালের ভেতর বন্দী🙂।কাউকে চিনিনা,জানিনা।পরিবেশটাও অচেনা।শুধু সময় হলে প্রাইভেটে যাই আর আসি।প্রাইভেটের রাস্তা ছাড়া আর তেমন কোনো রাস্তাও চেনা নেই।সারাটাদিন কাটে চার দেয়ালের ভেতর।মেসে তেমন ছেলে পেলেও নেই যে মিশবো।সকালটা কোনোরকম কেটে যায়।কিন্তু বিকেল হলেই যন্ত্রনা শুরু হয়ে যায়।ফাপরে দু চোখ দিয়ে পানি চলে আসে🙂।
বাসায় সকাল থেকে দুপুর যেমনই কাটতো না কেন,বিকেল হলেই ফুডুল চলে আসতো কাছে☺️।সময় কোন দিক দিয়ে যেত বুঝতামই না🙂।বাপ-মায়ের থেকেও ওকেই বেশি মিস করি।যখনই ভিডিও কলে কথা হয়,কই থেকে যেন ফ্রেমের ভেতর এসে বলে আমায় দাও,মামার সাথে কথা বলবো🙃।মামা মামা করে দুই একবার ডাকবে আর তারপর বলবে,আমায় দোকানে নিয়ে গিয়ে চকলেট কিনে দিবা।ওর এই কথাটা শোনার পরই মনটা ভেতর থেকে চিৎকার দিয়ে ওঠে।মনে হয়,দৌড়ে গিয়ে জড়াই ধরে দোকানে নিয়ে যাই😅।
ইশামের স্কুলের জন্য ড্রেস বানাইতে দিয়েছিল।ইশাম পড়ার আগে ওই গায়ে দিয়েছে🤣।
বাসায় থাকলেও হয়তো বাবা-মার সাথে খুব বেশি কথা হতো না,তাও তো তারা বাবা-মা।তাদের মনে হলে ঘরের ভেতর থাকা আর জেলখানায় থাকা আমার কাছে এক হয়ে যায়।বাবা ফোন করে বলবে,খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো হচ্ছে তো?বুয়া ঠিক সময় খাবার দেয় তো?প্রাইভেট কেমন লাগছে?ঘুম ঠিকঠাক হয়?পুরুষ মানুষ তো,তাই শক্তভাবেই কথা বলে।
কিন্তু আম্মু যে তা পারেনা সেটা এমনিতেই বোঝা যায়।আম্মুর সাথে কথা বলতে গেলে খুব বেশি কথা বলতেই পারেনা।কথা শুরুতে যেমন ভয়েস থাকে,দুইটা কথা না বলতেই সেই ভয়েস পালটে গিয়ে নরম হয়ে যায়😅।আমিও বুঝতে পারি যে কত অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে,নিজে থেকেই কল কেটে দেই🙂।
আর যার কথা না বললেই নয়,তিনি হলেন আমার বড় ফুফু।মানে আপনাদের শুভ ভাইয়ের মা।আমার বাবা-মায়ের পর আমার অভিভাবক তিনিই।প্রতিটাদিন সকাল ৭ টার ভেতর আর রাত ৯ টার ভেতর কল দিবেই।আমি সালাম দেয়ার আগে ফুফুই আমায় সালাম দিবে।তারপর কেমন আছি খাইছি কিনা কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা সব খোজ নিবে।আর তারপর যেটা বলবে তা হলো নামাজ।নামাজের বিষয়ে ফুফু খুব স্ট্রিক্ট।যদি শোনে যে নামাজ পড়িনি,বাপরে বাপ আমায় একদম খেয়ে ফেলবে।
পরিবারের লোক ছাড়াও কিছু লোক থাকে,যারা আপনার জীবনকে সুন্দর রাখে।আমারো বেশ কয়েকজন আছে।শয়তান বুড়ি (আদর করে ডাকি)তাদের একজন🙂।আসল নাম হলো সানভি,ভাড়াটিয়া আপুর মেয়ে।মামা মামা বলে কান ঝালাপালা করে দেয়।কাছে আসলেই বলে,মামা মেকাপ সুন্দরী গান শুনবো😂।
শাড়ি পরে আসছিলো,ভাবলাম ঘ্যাচাং করে ফ্রেমে বন্দী করে নেই।
![InShot_20211011_161745679-01.jpeg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZQVWunJCa54zG5EUWVBScTKi7vWCmLETf2DkgBBCXKAc/InShot_20211011_161745679-01.jpeg)
এবার আছে আরেক ভাগ্নে।এও অবশ্য প্রতিবেশি আপুর ছেলে।আব্দুর রহমান বাসিদ।টুনি প্যাকেট বলে ডাকি আমি😁।এখনো খুব বেশি কথা বলতে শেখেনি।কোনোরকম শুধু মা মা করে।অথচ আমায় খুব ভালোভাবেই চেনে।হাত বাড়ায় দিলেই কাছে চলে আসবে বিদ্যুৎ গতিতে।
আমার দিকে কি ধরে আছেরে মামা?
![IMG20210813102543.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmaKphcDoXFKnWDWsnyjoonLiaw3zsg4frV7ZSBbUgP9qp/IMG20210813102543.jpg)
পিপিপ,সাইড সাইড।টুনি প্যাকেট যাচ্ছে🥰।
![IMG20211228165852.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmadCRyqbNS8CrdXHsMUxAyBAbmJpJiCa92PYwKsHGekPa/IMG20211228165852.jpg)
সময়গুলো কম-বেশি এদের সাথেই কাটতো আমার।তিনজনকে যখন একসাথে পেতাম,আর কোনো কথাই ছিলনা।একটাকে ঘাড়ে আর দুইটাকে কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম😊।খুব বেশিই মিস করি এদের🙂।ফুডুলের চকলেট,শয়তান বুড়ির মেকাপ সুন্দরী গান,টুনি প্যাকেটকে সাইকেল চালানো শেখাতে আর বাবা মাকে মন ভরে দেখতে খুব শীঘ্রই যাবো একদিন🙂।
ভালো থেকো সবাই,আমিও আছি একরকম।
cc.@farhantanvir
Shot on. Oppo f19 pro
Location
Date.25/02/22
পরিবারের মানুষের সাথে কাটানো প্রত্যেকটা মুহূর্ত জীবনের সবথেকে এক আনন্দঘন মুহূর্ত হয়ে থাকে। কিন্তু যখন একটি পরিবারের সাথে থাকা হয় তখন সেটি বুঝতে পারা যায় না। যখনই তাদেরকে ছেড়ে দূরে চলে আসা হয় তখন বোঝা যায় তাদেরকে কতটা মিস করছি। আমার ক্ষেত্রেও ঠিক একই অবস্থা হয়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন সুন্দর কিছু আনন্দঘন স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক যেমন দাত থাকতে দাতের মর্যাদা বুঝিনা😅
ভালোবাসা নিয়েন 🥰
আসলে পরিবারের সদস্য নিয়ে থাকার মজাই আলাদা।আর যদি ছোট ছোট ভাগ্নে, ভাগিনা, ভাতিজি থাকে তাহলে তো কথাই নাই। ওরা যদি বিরক্ত করে তখন খারাপ লাগে আর না করলেও খারাপ লাগে।যাই হোক একটা সময় মেসে যখন অনেক বন্ধু হবে,তখন ওদের ছেড়ে থাকতে খারাপ লাগবে।আশা করি একটা সময় ভালো লাগবে।ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ হয়তোবা তাই।সময়ের অপেক্ষা 🙂।
ধন্যবাদ আপনাকেও☺️
বাবা-মাকে ছেড়ে বাইরে থাকা আসলে অনেক কষ্টের একটা বিষয়। বাড়িতে থাকলে সবাই মিলে অনেক আনন্দ হইহুল্লোড় করে সময় চলে যায় আমরা বুঝতেই পারিনা। যখন বাইরে থাকি তখন আমাদের সময় গুলো কাটতেই চাই না বারবার প্রিয়জনদের কথা মনে পরতে থাকে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চারা বাড়ির প্রত্যেকটা কোনায় দৌড়ে বেড়ায় আনন্দে ভরিয়ে রাখে। বাড়িতে থাকলে আমরা যেখানেই যাই জানিনা দিনশেষে বাসায় ফিরে বাবা মাকে দেখতে পারি তখন আমাদের মনে একটা প্রশান্তি চলে আসে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্রামে গিয়ে বাবা মাকে দেখে আসার চেষ্টা করবেন। ধন্যবাদ।
আসলেই ভাই,এর আগে কখনো বাবা মাকে ছেড়ে এভাবে থাকিনি।যখন তাদের কথা মনে হয় জাস্ট দুনিয়াটা অন্ধকার লাগে।
ইনশাআল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি যাবো তাদের কাছে।ভালোবাসা নিয়েন🥰