পাল্টাচ্ছে সব!জীবন তেতো হয়ে উঠছে(১০% বেনিফিশিয়ারি লাজুক খ্যাকের জন্য)
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই কুশল আছেন।আলহামদুলিল্লাহ,আমিও ভালো আছি।এই ভালো থাকাটা আসলে ভালো থাকার মতো না।ভেতর থেকে জোর করেই একটা হাসি বের করে রাখছি অন্যদের দেখানোর জন্য।
গতবছর রোজার সময়।বিকাল ৪ টার ওদিক থেকে ইফতারের তোরজোর শুরু হতো বাসায়।হয়তো এবারো হয়।আমি বাসায় তেমন ইফতার করতাম না।মসজিদেই করতাম।বিকেলে হুজুরের সাথে বসে আপেল,শসা,মালটা এগুলো কাটতাম।সময়টাও ভালো কাটতো আর সওয়াব ও কামাই হতো ভালোই।মসজিদের ভেতর ৩০/৩৫ জন একসাথে ইফতার করতাম।অন্যরকম একটা তৃপ্তি পাওয়া যেতো ইফতার করে।ইফতার শেষে মাগরিবের নামাজ পরে পারার ছোট বড় ভাই ব্রাদার মিলে মসজিদের মাঠে একটু গল্প করতাম।বাসায় ফিরে বাবা আর আম্মুর সাথে ভাত খেতাম,এরই মধ্যেই ওরা এসে ডাকতো তারাবির নামাজে যাওয়ার জন্য।তাড়াহুড়ো করে ভাতটুকু খেয়ে অলস দেহ নিয়ে ওদের সাথে যেতাম নামাজে।আমক ৮ রাকাত নামাজ পরে বাইরে এসে দাড়াতাম অন্যদের জন্য,ওদের নামাজ হয়ে গেলে আবার একসাথে আসতাম বাসায়।
বাবা আবার সাহারি একটু তাড়াতাড়িই করে।তাই,আমাদেরও তাড়াতাড়ি করতে হতো।৩ টার আগে থেকে আম্মু আমায় ডাকতো,এই ওঠ ওঠ!ঘুম চোখে তাকাতাম আম্মুর দিকে আর বলতাম, যাচ্ছি।
ঘটনার প্রবাহ এবারে ১৮০° ঘুরে গেছে।আমার পাশে না আছে বাবা-মা,না আছে মসজিদের হুজুর আর না আছে সেই ভাই ব্রাদার।হুজুরও বলেন,আসো একসাথে এই সেই কাজ করি।ভাই ব্রাদাররাও ডাকতে আসেনা নামাজের জন্য।আম্মুও ডাকেনা,এই ওঠ ওঠ!
মোবাইলের এলার্মে অনেক কষ্টে নিজের ঘুম ভাঙ্গাই।ফ্রেশ হয়ে মিল নিতে গিয়ে যখন দেখি,আমার পছন্দ নয় এমন খাবার দিয়েছে-তখন জাস্ট চুপসে গিয়ে হজম করে ফেলি খাবারগুলো।উপায় নাই তো!আমি এখানে না খেলেও কারো কিছু এসে যায় না।আমার মা আমার পাশে নাই যে,আমি না খেলে আমায় জোর করে তুলে খায়িয়ে দেবে।
প্রাইভেট-কলেজ-প্রাইভেট এই করেই দিন কাটছে।মেসে ফিরে আমি একা।ইফতারের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ঘরের এক কোনায় বসে থাকি আর ভাবি,পরিস্থিতিই বোধয় সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করে!
এবার ইফতারে আগের মতো সেই মজাটা নেই।নিজে যতটুকু পারি তাই দিয়েই ইফতার চালিয়ে নেই।বাড়ি থেকে ফোন করলে দু একটা বাড়িয়েই বলি,যেন আমি আগের থেকে এখনি ভালো আছি।
এতো বড় একটা মসজিদ!তবুও শান্তি পাইনা,কোথায় যেন মনে হয় যে কিছু একটা নেই।
দুজন ছিলাম মেসে।দুজনের জন্য ইফতার সাজায়ছিলাম গতকাল।ওর ঘরে ছিল খই আর আমার কাছে মুড়ি,দুই মিশিয়েই ইফতার চালাইছিলাম।ঘটনাগুলো মনে পরলে,আবেগ আর সামলাতে পারিনা।
সাহারি করতে উঠি,পাশে কাউকে পাইনা!আম্মু বা বাবা ফোন দেবে একবার।বাবা খেয়েছো?হুম খাইছি!আচ্ছা,নামাজ পরে এসে ঘুমাইও,তার আগে কিন্তু ঘুমানো যাবেনা।ব্যাস,এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ।
সাহারি করতে বসলে,আম্মু আমার পাতে জোর করে আর কিছু তুলে দিতে পারেনা,খেতে না চাইলে তুলেও খাওয়াতে পারেনা।আমি নিজে যা করি,তাতেই আমায় চলতে হয় সারাটাদিন।
সবমিলিয়ে একটা কথাই বলবো,মেনে নিতে শিখছি।নিয়তি হয়তো এমনই!
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবার আশা পূরন করুক,ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
cc.@farhantanvir
Shot on. Oppo f19 pro
Location
Date.04/04/22
আসলেই যায় দিন ভালো যায়,আসে দিন খারাপ।কত সুন্দর করে আগের দিননগুলো কাটিয়েছেন।মা, বাবা কিংবা মসজিদে ইফতার করেছেন।এখন যান্ত্রিক জীবন চলছে।একটা সময় সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেই, যান্ত্রিক জীবনই বটে🙂,দম ফেলার ফুরসত নেই।
আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য 😍
পরিবারকে ছেড়ে বাইরে কাটানোর জীবনটা অনেক কষ্টের । তবে জীবনে ভালো কিছু করতে হলে পরিবার ছেড়ে সব সময় বাইরে থাকতে হয় । পরিবারকে ছাড়া অনেক কিছু একাই একাই করতে হয় । দোয়া করি ভাইয়া যেন এক সময় আপনার সবকিছু ঠিক হয়ে যায়
জি ভাইয়া,ভালো কিছু করার উদ্দেশ্য নিয়েই আমি এগোচ্ছি।
দোয়া রাখবেন😍🥰
বাস্তবতা কি এমনই। বিশেষ করে এই সময় কাটানো মুহূর্তগুলো সবসময় মনে পড়ে। আগে আমিও সুন্দর ভাবে এই সময়টাকে কাটিয়েছি। কিন্তু এখন খুব একা এই সময়টা কাটাচ্ছি। পাশে কেউ নেই শুধু আমি। তবুও বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সময়টা পার করে যাচ্ছি। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার অনুভূতি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
হয়তো ভাইয়া,বাস্তবতা বরাবরই কঠিন।মেনে নেওয়াটাও একটা যুদ্ধ।
ভালোবাসা নিয়েন 🥰
আসলে সব কিছুই ব্যস্ততার কারণে। আমরা ব্যস্ততার কারণে এতটা একঘেয়েমি হয়ে গিয়েছি যে স্রষ্টার ইবাদত তাও আর শান্তি মত করতে পারি না সেখানেও ব্যস্ততা। যাইহোক খুব সুন্দর লিখেছেন। ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য।
কি বলবো ভাইয়া,কোনো একটা কাজ যে একটু সময় দিয়ে ভালোভাবে করবো তাও পারিনা☹️
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য