কারাগারের বাহিরে (১০% টু শাই ফক্স)
আসসালামু আলাইকুম,
চার দেয়ালের বাইরে নিজেকে কল্পনা করা যেন নিজের কাছেই আকাশ-কুসম লাগে এখন।শনিবা-শুক্রবার একই রুটিন।৬ টায় ঘুম থেকে উঠে সারাদিন প্রাইভেট কলেজ করে আবার ৫ টায় রুমে ফেরা।
একটা সময় ছিল যখন পুরা বিকেলবেলাটা ফাকা রাখতাম বা রাখতে পারতাম খেলার জন্য।হয়তো ৩/৪ টা অব্দি স্কুল প্রাইভেট পড়তাম আর তারপর বাকি সময় খেলতাম সবাই মিলে।
বলতে গেলে ক্লাস টেন থেকেই খেলাধূলার বাহিরে আছি।টেনে যখন পড়তাম,তখন বিকেলে ৫ টা থেকে একটা প্রাইভেট থাকতো।আমি প্রায় প্রতিদিনই প্রাইভেটে ব্যাগ রেখে হাওয়া হয়ে যেতাম আর প্রাইভেটের পাশে মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলতাম।স্যার যখনই যেতো হয় অন্যদিক লুকাইতাম নাহলে কোনোদিন চলেও আসতাম।এমনে করে ক্লাস টেনেও খেলেছি।কিন্তু তারপর থেকে এখন অব্দি দুইদিন ব্যাট হাতে নিয়েছি কিনা জানা নেই।
গত বৃহস্পতিবার রাতে গিয়েছিলাম খালার বাসায় চাল আনার জন্য।তো প্ল্যান অনুযায়ী ওই রাত ওখানে থেকে পরেরদিন সকালেই মেসে আসার কথা ছিল।সকালবেলা ৯ টার ওদিকে ঘুম থেমে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া সারার পর দেখি ১০ টা পেরিয়ে গেছে।খালাতো ভাই সিয়াম বললো,পিছনে বাশ ঝাড়ের ভেতর সবাই ক্রিকেট খেলছে।ওর বলা আর আমার যাইতে যা দেরি।প্ল্যান ক্যান্সেল করে ভাবলাম,বিকেলেও খেলবো আর সন্ধ্যায় মেসে যাবো।
ছবিতে-সিয়াম ও আমি
বাড়ি থেকে বের হয়ে একদম ওদের খেলার ওখানে গেলাম।ওরা অপেক্ষা করছিলো আরো কয়েকজনের আসার জন্য।হাত থেকে ব্যাটটা নিয়ে সিয়ামের হাতে বল দিয়ে বললাম,কয়েকটা বল কর।
ও বল করতেছে বাট আমার ব্যাটে লাগছেনা।আবার লাগলেও হয়তো যেভাবে চাচ্ছি সেভাবে হচ্ছেনা।বুঝতে পারলাম যে,নিয়মিত কয়েকদিন না খেললে আগের হালে ফেরা সম্ভব নয়।
একটু পর ওকে ব্যাট দিয়ে বলটাই হাতে নিয়েছিলাম।তখন আবার বেশিরভাগ বলই ওয়াইড হচ্ছিলো।পাচ্ছিলামই না ভালোভাবে বল করতে।
সবাই আসলে প্রতি দলে ৫ জন করে নিয়ে খেলা শুরু করা হয়েছিল।
প্রথম ম্যাচে ফার্স্ট ইনিংসে বল পেয়ে এক ওভারে দিয়েছিলাম ৪ টা ওয়াইড আর দুইটা ছয় খেয়েছিলাম।ওদের ওখানে অতিথি হিসেবে গিয়েছিলাম জন্যই হয়তো গালি খাইনি নাহলে হয়তো বাকি সবাই এসে ইচ্ছামতো ঝারতো।
৫ ওভারে দিলো ৬৭ টার্গেট।ওয়ান-ডাউনে নেমে প্রথম বলেই মিডল স্ট্যাম্প উড়ে গিয়েছিল 😑।
করুণভাবে প্রথম ম্যাচ হারার পর দ্বিতীয় ম্যাচ শুরু করেছিলাম।ওই ম্যাচে দুই বলে দুইটা চার মেরে পরের বলে রান আউট হয়েছিলাম।ওই ম্যাচটা অবশ্য জিতেছিলাম মাত্র ৪৬ এর টার্গেট দিয়েই।
বিকালে ৩ টার পরেই গিয়েছিলাম আবার। বিকালে বলতে গেলে একটু ভালোই খেলেছিলাম।
সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত খেলে বাড়িতে এসে একটু রেস্ট নিয়ে মেসের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম।
খেলতে পারি আর নাই পারি,এতোদিন পর খেলার সুযোগ হয়েছিল,সেটাই আমার কাছে অনেক বড়।ভাইরে ভাই,এক সময় খেলা ছাড়া কিছু বুঝিনি আর সেই আমি এখন মাঠের মুখও দেখিনা।
আর সত্যি বলতে কি,জাতীয় টিমগুলোর খেলাও আর দেখা হয়না।অথচ,কিছুদিন আগেও যখন খেলা দেখে মনে রাখতাম কোন বল কই যেতো, কে ধরতো।
লাইফে ম্যাচুরিটি আসবে,ব্যস্ততা বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।তিতা হলেও এটাই মেনে নিতে হয় আর আমাদের এটাই করতে হয়।চেনা জীবদ্দশা অচেনা হয়ে যাবে এগুলোই স্বভাবিক।
অনেকদিন পর গতকাল নিজেকে একটু ফ্রি বার্ড মনে হচ্ছিলো।মনে যে একটা প্রশান্তির হাওয়া উড়ছিল তা সত্যই অনেকদিন পর পেয়েছিলাম।
দিনশেষে এখন একটাই চাওয়া,জীবনের এতো পরিবর্তনের জন্য হলেও যেন আল্লাহ তায়ালা আমার স্বপ্ন পূরন করে দেন❤️।
সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
🌼আল্লাহ হাফেজ 🌼
cc.@farhantanvir
Shot on. Oppo f19 pro
Location
Date.19/11/22
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমারো ক্লাস টেনের পর আর খেলা হয়নি।খুবই মিস করি, এখনকার ছেলেপেলেরা তো খেলেই না।সবাই মোবাইলে ব্যস্ত।অনেক দিন পর খেলতে দেখে ভাল লাগল।কয়েকদিন খেললেই হাত ঠিক হয়ে যাবে।
ওইদিনই শেষ। আর খেলাধূলা হয়নি,আগামীতে কবে হবে জানা নেই।
ভাই আসলে মানুষের ছেলে বেলা যেমন কাটে বড় হলে কিন্তু সময় তেমন কাটে না। ছোটবেলায় সবাই সারাদিন খেলার পেছনে ছুটেছে কিন্তু বড় হওয়ার পর দেখা যায় খেলতেও মন চায় না খেলার সময়ও থাকে না। আসলে মানুষের ছেলেবেলায় অন্যরকম কাটে। এখন হচ্ছে ভার্চুয়াল যুগ যা খেলে সব মোবাইলে এবং মোবাইলে কাজ করে।
হ্যাঁ একদমই।ওই ৬ ইঞ্চির স্ক্রিনের বাইরে যেন আর কিছুই দেখেনা এখন।তবে এটা ভয়াবহ।
অনেকদিন পর তাও খেলার সুযোগ পেয়েছেন। আস্তে আস্তে এমন ব্যস্ততা শুরু হবে যে তখন ক্রিকেট বল খেলার কথা ভুলেই যাবেন। ক্রিকেট খেলার লোভে পরে ম্যাসে যাওয়া ক্যানসেল করে বিকাল পর্যন্ত রয়ে গেলেন। তারপর অনেকদিন না খেলার কারণে ফর্ম নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যাক রান করতে পারেন আর না পারেন অনেকদিন পর খেলে যে আনন্দ পেয়েছেন তাই অনেক। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
এতো সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ আপু❤️ভালোবাসা নিবেন।
ভাইয়া আপনার ক্রিকেট খেলার ছবি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। আমরাও ঠিক বাসায় থেকে লুকিয়ে বের হয়ে গিয়ে। সব বন্ধুরা মিলে বাঁশবাগান গিয়ে ক্রিকেট খেলেছি। আজকে আপনার পোস্ট ভিজিট করে সেই মজার মুহূর্ত গুলো মনে পড়ে গেলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
জেনে ভালো লাগলো যে আপনারাও এভাবে সময় কাটাতেন।
ভালোবাসা নিয়েন ❤️🩹
বাড়ি থাকলে এখনো হয়তো খেলাধুলা চলমান থাকতো প্রতিদিন বিকেলে এবং শুক্রবার সকাল এবং বিকেল। আমরা ফুটবল খেলতাম কিছুদিন আগে। এখনতো শীতের মৌসুম এখন ব্যাডমিন্টন খেলার কথা। কিন্তু আছি আপু বাড়ি তাই আর কোন খেলায় হচ্ছে না। তবে বাড়িতে থাকলে হয়তো ব্যাডমিন্টন খেলা হতো। আসলে অনেকদিন কোন কিছু অভ্যাস না থাকলে এমনিতেই আমরা ভুলে যাই। যাইহোক আপনার অনেক দিন পর ক্রিকেট খেলার অনুভূতিটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। তবে আমি ক্রিকেট খেলা পারি না আর আমার ভালো লাগে না ততটা। ধন্যবাদ।
যার কাছে যেটা ভালো লাগে ভাইয়া!তবে আমি কম-বেশি সব খেলাই ইনজয় করি।
ধন্যবাদ আপনাকে।