ফুফুর সাথে
আসসালামু আলাইকুম,
আশা করি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি।
মাঝে মাঝে নিজেকে নিয়ে একটু ভেবে বসি আমি।আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করে হয়তো শেষ করা যাবেনা।আত্মীয়-স্বজনরা এতো ভালো আর এতো কেয়ারিং যা ভাষায় বোঝানোর মতো না।কারো সাথে কারো তুলনা হয়না,নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রত্যেকেই সেরা।আমার মায়ের ছোট খালা,মানে আমার নানির বোন-তিনি পর্যন্ত আমায় বা আমাদের এতোটা আদর স্নেহ করেন যা কল্পনাতীত।মাঝে মাঝে একটা জিনিস ভেবে আবার ভয় হয়,এই মানুষগুলোর সাথে আবার কোনোদিন খারাপ ব্যবহার না করে ফেলি!মানে,মানুষ তো পালটে যায়।আজ নাহয় আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ কিন্তু এমন কোনোদিন যেন না আসে যেন আমি অমানুষ হয়ে যাই।আশেপাশে অনেককেই দেখেছি এমনভাবে পালটে যেতে,আল্লাহ যেন আমায় ওমন কিছুর স্বাক্ষী না বানায়।
হ্যাঁ,আমি স্বীকার করছি আমার প্রত্যেক আত্মীয়ই অনেক বেশি কেয়ারিং।তবে তারপরেও দুই তিনজন তো থাকেই যাদের কথা আলাদা করে না বললেই নয়।তেমনই একজন হলেন,আমার বড় ফুফু।এনার সম্পর্কে যদি বলতে যাই তাহলে বলবো,দাদি মারা যাওয়ার পর থেকে আমাদের ফ্যামিলির বটগাছ ইনিই।
এই মানুষটাকে নিয়ে কিছু বলে শেষ করা যাবেনা।নিজের সন্তানদের থেকেও তার ভাই-বোনের সন্তানদের প্রতি বেশি সেনসিটিভ থাকেন সবসময়ই।প্রতিটা দিন আমায় ফোন করবে আর আমার পড়াশুনা,খাওয়া-দাওয়ার খোঁজ নেওয়া তার ডিউটি।তবে যখন শুনে যে,নামাজ মিস গেছে।তখন দশটা কথা শোনাতেও ছাড়েন না।তবে আমি বিষয়টা উপভোগ করি।যিনি আদর করবেন,শাসন করার অধিকার তার শতভাগ আছে।একজন ফুফু হিসেবে মানুষ এতো ভালো হতে পারে আশেপাশের পরিবেশ দেখে আমি কখনোই ভাবিনা।
ব্যাংকের কিছু কাজের জন্য সেদিন ফুফু বগুড়ায় এসেছিলেন।আমি আগে থেকে ওনার আসার বিষয়টা জানতাম না।বগুড়ায় আসার পর তিনি আমায় ফোন করে ডেকেছিলেন তার কাছে যাওয়ার জন্য।তখন সূর্য একদম মাথার উপরে।গোসল সেরে এসে একটু রেস্ট নিচ্চছিলাম।তখনই ওনার ফোন পেয়ে আর দেরি না করে বেরিয়ে পরেছিলাম ঘর থেকে।
সাতমাথায় তার সাথে দেখা হওয়ার পর একসাথে গিয়েছিলাম ব্যাংকে।ওখানে প্রায় ২০/২৫ মিনিট লেগেছিল আমাদের কাজ শেষ করতে।তারপর ফুফু বলেছিল,দুপুরের খাবারটা একসাথে হোটেলে খাওয়ার জন্য।
বিরিয়ানি,পোলাও এগুলো খেতেই আমি বেশি ভালোবাসি।তবে আমার থেকেও বেশি ভালোবাসে আমার ফুফু।ওনার খাওয়ার কথা নাহয় আরেকদিন বলবো।মানুষটা এতো খাদ্যরসিক যে তার ছোট ভাই-বোনরাও তার সাথে খাওয়ায় পেরে উঠেনা।
তবে তিনি সেদিন পোলাও বা বিরিয়ানি কোনোটাই খাননি।বাসে জার্নি করতে হবে তো, তাই বলেছিলেন বাবা আমি খাবোনা এখন।শুধু ডাল ভাত হলেই চলবে এখন।
উনি ছোট মাছের চরচরি,ডিম আর ডাল দিয়েই খেয়েছিলেন।আর আমি মোরগ পোলাও নিয়েছিলাম।মেসে থাকার জীবনে মাঝে মাঝে এমন খাওয়ার সুযোগ আসলে ইদের চেয়েও বেশি খুশি লাগে মনে।
খাওয়া দাওয়া শেষ করার পর দুজনে ওখানে বসে একটু গল্প করেছিলাম নিজেদের মতো।তারপর বিল পে করে হোটেল থেকে বের হয়েছিলাম।রুম থেকে বের হওয়ার আগে রুম একদম পরিষ্কার করে এসেছিলাম,কারণ আমি ভেবেছিলাম হয়তোবা তিনি মেসে আসবেন।কিন্তু সময় বেশি লেগে যাওয়ায় আর আসেননি।হোটেল থেকে বের হয়ে আমায় বিদায় জানিয়েছিলেন।
এই মানুষগুলোকে আল্লাহ তায়ালা হাজার বছরের আয়ু দান করুক।কোনোদিন এনাদের হারিয়ে ফেললে হয়তোবা,আমার ভেতরে পুরোটাই মরুভূমি হয়ে যাবে।ভালোবাসি এনাদের সবাইকে।
সবার দীর্ঘায়ু কামনা করে বিদায় নিচ্ছি,
🌼আল্লাহ হাফেজ।🌼
©@farhantanvir
Shot on. Oppo f19 pro
Location
Date.18/03/23
এমন কেয়ারিং আত্মীয় পাওয়া খুবই ভাগ্যের বিষয়। তাদের প্রতি তোমার কৃতজ্ঞতা দেখে ভাল লাগল। আমার ফুফু নেই,এমন আদর গুলো খুবই মিস করি।তোমাদের আত্মীয়তার বন্ধন টিকে থাকুক সারাজীবন এই দোয়া করি।
ধন্যবাদ দাদা😊💗।
প্রত্যেকটা পরিবারে সেই সদস্যগণ পরিবারে কাউকে না কাউকে একটু বেশি ভালোবেসে থাকে। আর ওই সদস্যার মধ্যে যারা স্পেশালভাবে বেশি ভালোবাসে তাদেরকে সত্যি ভুলা যায় না। ব্যাংকে কিছু কাজের জন্য আপনার ফুফু বগুড়া এসেছিলেন। হোটেলে একসাথে খাবার খেয়েছেন বসে কিছুক্ষণ গল্প করেছেন। সব মিলে খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন ফুফুর সাথে। যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকুক সবার পরিবারের একে অপরের ভালোবাসা।
দোয়া রাখবেন ভাই,ভালোবাসা নিয়েন🤍।
সবারই পরিবারে এমন একজন থাকে যে নিজের পরিবারটাকে আগলে রাখেন। আপনার দাদি মারা যাবার পর থেকে আপনার ফুফু আপনাদের খেয়াল রাখে শুনে ভীষণ ভালোই লাগলো। নিজের সন্তানদের থেকেও আপনাদেরকে নিয়ে বেশি চিন্তা করে তিনি। এমন ফুফু পাওয়া আসলেই ভাগ্যের ব্যাপার। আমাদের তো ফুফু নেই তাই ফুফুর ভালবাসা কখনো পাওয়া হয়নি। আপনার ফুফু আপনার থেকেও বিরিয়ানি খেতে পছন্দ করে শুনে ভালো লেগেছে। আমারও খেতে ভীষণ ভালো লাগে। অনেক সুন্দর ভাবে পুরো পোস্টটি আমাদের মাঝে গুছিয়ে শেয়ার করলেন।
ধন্যবাদ আপু,অশেষ ভালোবাসা।
আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকলে এরকম কেয়ারিং আত্মীয় স্বজন পাওয়া যায়। আপনার ভাগ্য আসলেই ভালো যে এত কেয়ারিং আত্মীয়-স্বজন পেয়েছেন। তাছাড়া আপনার ফুপু ঠিকই বলেছেন জার্নি করার আগে ভারী খাবার না খাওয়াই ভালো। হালকা খাবার খেয়ে উনি ভালো কাজ করেছেন। এই ফাঁকে আপনি ঠিকই মজাদার মোরগ পোলাও খেয়ে নিয়েছেন দেখছি। ফুপুর কাজের উছিলায় বেশ ভালো খাওয়া দাওয়া করে নিলেন। ভালো লাগলো দেখে।
মেসের ডাল ভাত খেতে খেতে যখনই ভালো খাবারের সুযোগ আসে,ইদের আনন্দ লেগে যায় আমার😁।
খুব ভাল লাগলো আপনার ফুপুর কথা জেনে। সবার মাঝে এমন দু একজন আসলে থাকে যারা আমাদের কাছের মানুষ হলেও একটু বেশি স্পেশাল।আপনার ফুপু আপনার খোঁজ খবর নেন ভালবাসা থেকেই।আপনিও তার খোঁজ খবর নেবেন সব সময়। শুভেচ্ছা দুজনের জন্য। ❤️
দোয়া রাখবেন আপু🥰,ভালোবাসা সবসময়।
আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকলে খুবই ভালো হয়। আপনার পোস্টটি পড়ে বুঝা যাচ্ছে আপনার ফুপুর সঙ্গে আপনার বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে।যাইহোক বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন আপনারা। ভালই হয়েছে ,জার্নি করে অত তেল মশলার জিনিস খুব একটা খাওয়া যায় না।যাইহোক ফুপুর আশায় বাসাটা একটু ঘুচিয়েছেন। এমনিতেই মেসের ছেলে মেয়েরা খুব একটা গোছালো না।
আমি আবার ওতোটাও অগোছালো না😁।ধন্যবাদ আপু।
ঠিক বলেছেন ভাই মানুষ পরিবর্তনশীল। তবে কখনো যেন তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করেন এই ভাবনা টা নিজের মধ্যে থাকা ভালো। আশাকরি আপনি কখনো তাদের অবাধ্য হবেন না বা তারা অপছন্দ করে এমন কাজ করবেন না। ফুফুর ডাকে চলে গিয়েছেন এটা প্রমাণ করে আপনি আপনার ফুফুকে কতটা ভালোবাসেন এবং শ্রদ্ধা করেন। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
ভালোবাসা নিয়েন ভাই ❤️🩹।