খেলনা
সাল ২০১৫,সরকার ঘোষনা দিলেন যে এই বছর থেকে শিক্ষায় সৃজনশীল পদ্ধতি চালু হবে।তখন আমি পি,এস,সি পরিক্ষার্থী ছিলাম।সাল ২০১৮,এ বছর থেকে জে,এস,সি থেকে ফোর সাবজেক্ট তুলে দেয়া হয়।যেই বছর আমি নিজেই জে,এস,সি পরিক্ষার্থী ছিলাম।
সাল ২০২১ আমি এবার এস,এস,সি পরিক্ষার্থী।মাশাল্লাহ,আপনারা সবাই জানেন যে এখন আমি তথা আমাদের পুরো এস,এস,সি ব্যাচটাই কি অবস্থায় আছে।কাহিনীটা দুঃখের নাকি আনন্দের তার সঠিক কোনো ব্যাখা আমার কাছে নেই।হয়তো কারো কাছে আনন্দের আবার কারো কাছে একটু কষ্টের।
SOURCE
২০২০ সালের ১৭ই মার্চ স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।প্রথম প্রথম একটু ভালোই লাগতেছিলো যে ,যাক বাবা এবার তাও একটু স্বস্তি পাওয়া যাবে।কিন্তু সরকার আমাদের স্বস্তির জন্য যে এত্তো ভাবেন তা আমার কল্পনাতীত।এখন পর্যন্ত আনুমানিক ১০ বার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা আসছে।প্রতিবারই সবাই উৎসাহ নিয়ে ছিল।অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় বোধয় এস,এস,সি এবং এইচ,এস,সি পরিক্ষার্থীরাই বেশি উৎসুক এবং চিন্তিত ছিলাম।নাটক চলতে চলতে দুই পরিক্ষার জন্য যে নির্ধারিত সময় থাকে তা কয়েকমাস আগে পার হয়ে গেছে।কি হবে এবার? এরই মাঝে শড়কার বলে উঠলো;ডোন্ট ওয়ারি, মে হু না। কমিয়ে দিলো পরিক্ষার সিলেবাস।সবাই ভাবলো যাক,তাও তো পরিক্ষা হবে।এরই মাঝে কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে সবার পড়ার অবস্থা বেহাল।বইয়ের পাতা থেকে চোখটা সরে গিয়ে ফোনের স্ক্রিনের উপর জায়গা করে নিয়েছে।বাবা মারাও কিছু বলেনি।কারণ অনলাইন ক্লাস চলছে যে।কাহিনী এভাবেই এগোচ্ছে।পরিক্ষার্থী জানে তারা পরিক্ষা দেবে, বাবা-মা জানে তার সন্তান অনলাইন ক্লাস করছে।
গতকাল মানে ১৪ জুলাই ২০২১ ,জানা গেলো যে এস,এস,সি এবং এইচ,এস,সি পরিক্ষার বিষয়ে ১৫ জুলাই সকাল ১১ টায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে সরকার।বাহ বাহ,সবাই তো খুশি।ট্রলও শুরু হয়ে গেলো ফেসবুকে।কেউ স্যাড পোস্ট দিচ্ছে আবার কেউ হ্যাপি পোস্ট।অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষন।১১ টা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই সময় চ্যানেলের লাইভে যুক্ত হইলাম।শুধু আমি না আমার তিন বন্ধুকেও লিঙ্ক দিলাম যাতে তারাও লাইভটা দেখে।শিক্ষা মন্ত্রী আসলেন,তার ভাঙ্গা ক্যাসেট থেকে কিছু কথা বললেন।মানে যেই কথাগুলো ফর্মালিটিস আরকি।কিছুক্ষন পর মূল কথায় আসলেন।তখন তিনি বললেন; এস,এস,সি হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ এবং এইচ,এস,সি ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ।আরো অনেক কথা বললেন এবং শেষে জানালেন,পরিস্থিতি অনুকূল না হলে পরিক্ষার বিকল্প পদ্ধতি হতে পারে।
আচ্ছা আমরা কি খেলনা?বয়স কি বসে থাকবে?আচ্ছা আমাদের কথা বাদ দিলাম।অন্য যেই পরিক্ষার্থী ব্যাচগুলো আছে তাদের সময়সীমাও তো পার হয়ে যাচ্ছে বা যাবে।এর পাশাপাশি সবচেয়ে বড় কথা হলো,শতকরা ৩ ভাগ শিক্ষার্থী নিজের অবস্থান বজায় রেখে এখনো পড়াশুনা করে যাচ্ছে এবং বাদ বাকি সবারই অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছিলো একটি জরিপে।দেশ কি শিক্ষা ক্ষেত্রের এই ব্যাপক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে?আমি ছোট মানুষ।আমার চিন্তা ধারা যতদূর বলে সেই অনুযায়ী দেশে মানসম্পন্ন শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তির পরিমাণ কমে যেতে সময়টা বোধয় খুব বেশি লাগবেনা।এখন দেখার বিষয় যে,সূর্য কবে ওঠে।
ধৈর্য্য ধারণ করো ভাই ।যাইহোক ভালো লিখেছো তুমি। শুভেচ্ছা রইলো তোমার জন্য।
অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই
আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।